মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি প্রশস্ত, মহান, বদান্য, দানশীল, দয়ালু। তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তা নিপুণভাবে নিরূপণ করেছেন। তিনি শরীয়ত নাযিল করেছেন আর তা সহজ করেছেন। তিনি মহাপ্রজ্ঞাবান ও সর্বজ্ঞাতা। তিনি সৃষ্টির সূচনা করেছেন অতঃপর তা সম্পন্ন করেছেন। [আর সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট পথে, এটা মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ (আল্লাহ)-র নির্ধারণ। আর চাঁদের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি মানযিলসমূহ, অবশেষে সেটি খেজুরের শুষ্ক পুরাতন শাখার মত হয়ে যায়। সূর্যের জন্য সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া, আর রাতের জন্য সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা, আর প্রত্যেকেই কক্ষ পথে ভেসে বেড়ায়।] {সূরা ইয়াছীন, আয়াত : ৩৮-৪০}
প্রশংসা করছি তিনি যা প্রদান করেছেন এবং হেদায়াত দিয়েছেন তার। কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি তাঁর অনুগ্রহ ও দানের। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। তিনিই মুনিব, উচ্চ ও সর্বোচ্চ। তিনি প্রথম তাঁর আগে কিছু নেই। তিনি শেষ তাঁর পরে কিছু নেই। তিনি বিজয়ী তাঁর ওপর কেউ নেই। তিনি নিকটে তাঁর চেয়ে কাছে কিছু নেই। তিনি সবকিছুই জানেন। আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, যাকে তিনি সকল সৃষ্টিকুল থেকে নির্বাচিত করেছেন।
আল্লাহ সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন তাঁর ওপর; তাঁর সাথী শ্রেষ্ঠতম সত্যবাদী আবূ বকরের ওপর; ধর্মকর্মে বীরত্বে খ্যাতিমান উমরের ওপর; দুষ্কৃতিকারীদের হাতে অন্যায়ভাবে নিহত উসমানের ওপর; সুনিশ্চিতভাবে সবচে নিকটাত্মীয় আলীর ওপর এবং তাঁর সকল পরিবার-পরিজন, সাহাবী ও কিয়ামত পর্যন্ত আগত সুচারুরূপে তাঁদের অনুসরণকারীদের ওপর।
ভ্রাতৃবৃন্দ! অতি শীঘ্রই রমযান মাস আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছে এবং নতুন একটি মাস আগমন করছে। কিন্তু রমযান মাস আমাদের আমল অনুযায়ী আমাদের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে সাক্ষী হয়ে থাকবে। এ মাসে যে ব্যক্তি ভালো আমল করতে পেরেছে, সে যেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। ও শুভ পরিণামের অপেক্ষায় থাকে। নিশ্চয় আল্লাহ ভালো আমলকারীর আমল নষ্ট করেন না। আর যে ব্যক্তি এ মাসে অন্যায় কাজ করেছে, সে যেন তা প্রভুর কাছে খালেস তাওবা করে। যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারীর তাওবা কবুল করেন।
আল্ল‘হ তা‘আলা আমাদের জন্য এ রমযানের শেষে কিছু ইবাদত নির্ধারণ করেছেন, যা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য বাড়িয়ে দিবে, ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং আমলনামায় অধিক সাওয়াব লেখা হবে।
আল্লাহ আমাদের জন্য প্রবর্তন করেছেন যাকাতুল ফিতর: যার বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে করা হয়েছে।
তিনি আমাদের জন্য প্রবর্তন করেছিন ‘তাকবীর’: রমযানের সময় পূর্ণ হওয়ার পর সূর্য ডোবার পর ঈদের চাঁদ উঠা থেকে শুরু করে ঈদের সালাত আদায় পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা।
‘যাতে তোমরা গণনা পূরণ করো এবং তোমাদের হেদায়াত দান করার দরুন আল্লাহ তা‘আলার মহত্ব বর্ণনা করো (তাকবীর বলো) আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারো।’ {সূরা আল-বাকারাহ্, আয়াত: ১৮৫}
তাকবীরের পদ্ধতি হলো: অধিকহারে নিম্নের এ তাকবীর পড়া:
«الله أكبر الله أكبر لا إِله إِلاَّ الله والله أكبر الله أكبر ولله الحمد»
আর সুন্নাত হচ্ছে, পুরুষগণ মসজিদে, বাজারে এবং ঘরে সকল জায়গায় উচ্চস্বরে তাকবীর দিবে, আল্লাহর মহত্বের ঘোষণা দেওয়া, তাঁর ইবাদত ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য।
আর মহিলারা তাদের স্বর নিচু করে তাকবীর দিবে। যেহেতু তার নিজেদেরকে ও নিজেদের কণ্ঠস্বরকে গোপন করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে।
কতইনা সুন্দর ঈদের দিনে মানুষের অবস্থা। তাদের সিয়াম সাধনার মাস শেষে তারা সর্বত্র তাকবীর ধ্বনী দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব প্রকাশ করে এবং তারা আল্লাহর তাকবীর, প্রশংসা ও একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে আকাশ-বাতাশ মুখরিত করে তোলে। তারা আল্লাহর রহমতের আশাবাদী এবং তাঁর আযাবের ভয়ে শংকিত !!
অনুরূপভাবে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তা‘আলা ঈদের দিন তাঁর বান্দাদের জন্য ঈদের সালাত প্রবর্তন করেছেন; যা মহান আল্লাহর যিকির বা স্মরণকে পূর্ণতা প্রদান করে। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাঁর উম্মতের নারী-পুরুষ সবাইকে এ আদেশ দিয়েছেন। আর নির্দেশ শিরোধার্য। কারণ,
‘হে ঈমানদারগণ! তেমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। তোমাদের আমলসমূহকে নষ্ট করো না।’ {সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৩৩}
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের ঈদের সালাত আদায়ের জন্য ঈদগাহে যেতে বলেছেন। যদিও তাদের জন্য ঈদের সালাত ছাড়া অন্যান্য সালাত ঘরে পড়াই উত্তম। যা প্রমাণ করে যে ঈদগাহে নারীদের উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য।
* উম্মে আতিয়্যাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণনা করেন:
‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে আমরা যুবতী, ঋতুবর্তী এবং পর্দানশীনা নারীদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহাতে সালাতের উদ্দেশ্যে বের করি। তবে ঋতুবতী নারীগণ সালাতে অংশ গ্রহণ করবে না। ঈদগাহে এক পাশে থাকবে, কল্যাণ প্রত্যক্ষ করবে এবং দো‘আয় শরীক হবে। তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের প্রত্যেকের জিলবাব বা বোরকা নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, সে তার বোনের বোরকা নিয়ে হলেও ঈদের সালাতে শরীক হবে।’ [বুখারী: ৩৫১; মুসলিম: ৮৯০।]
সুন্নাত হচ্ছে, ঈদুল ফিতরের সালাতে যাওয়ার পূর্বে খেজুর খাওয়া। তিন, পাঁচ বা ততোধিক বেজোড় সংখ্যায়। কারণ,
‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একটি রেশমী পোশাক বাজার থেকে এনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটা ক্রয় করে ঈদের দিন এবং মেহমানের উপস্থিতিতে ব্যবহার করুন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেশমী কাপড়ের দরুণ অসন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন: রেশমী পোশাক ওই সকল ব্যক্তিদের জন্য যারা আখেরাতের কিছুই পাবে না।’ [বুখারী: ৯৪৮।]
পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক বা স্বর্ণলঙ্কার ব্যবহার বৈধ নয় বিধায রাসূল এ কথা বলেছেন। এর থেকে বুঝা যায় যে, অন্য সুন্দর পোষাক পরা সুন্নাত।
পুরুষদের জন্য কোনো প্রকার রেশমী কাপড় এবং কোনো ধরনের স্বর্ণালঙ্কার পরিধান করা জায়েয নেই। কারণ এগুলো উম্মতে মুহাম্মাদীর পুরুষদের জন্য হারাম।
তবে নারীগণ, ঈদগাহে সাজ-সজ্জাহীন, আতর ব্যবহার ছাড়া, পূর্ণ পর্দাসহ যাবে। কারণ তাদেরকে বাইরে বের হওয়ার সময় উলঙ্গপনা, সৌন্দর্য প্রদর্শন এবং সুঘ্রাণ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং গোপনীয়তা ও পর্দার আদেশ করা হয়েছে।
ঈদের সালাত বিনয়াবনত ও একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ভয়-ভীতি সহকারে আদায় করবে। বেশি বেশি করে আল্লাহর যিকর করবে এবং দো‘আ পড়বে। তাঁর রহমতের আশা ও আযাবের ভয় করবে। ঈদগাহে সবাই একত্রিত হওয়ার বিষয়টিকে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর সামনে হাশরের মাঠে মহা অবস্থানস্থলে একত্রিত হওয়ার সাথে তুলনা করে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে। আর এ ঈদগাহ মাঠে মানুষের মধ্যকার মর্যাদার তারতম্যকে আখেরাতের সেদিন বড় ধরনের তারতম্য হবে সেটাও স্মরণ করবে।
‘হে নবী! আপনি লক্ষ্য করুন, আমরা কিভাবে তাদের একদলকে অন্যের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি, আখিরাত তো অবশ্যই মর্যাদায় মহত্তর ও শ্রেষ্ঠত্বে বৃহত্তর।’ {সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২১}
আর প্রত্যেকে যেন রমযানের মত আল্লাহর বড় নেয়ামত প্রাপ্তি এবং তিনি যে এতে বান্দাকে সালাত, সিয়াম, কুরআন তিলাওয়াত, সাদকা ইত্যাদি ইবাদত করা সহজ করে দিয়েছেন সে জন্য আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করে। কারণ তা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা আছে তা থেকেও উত্তম।
‘বলুন, ‘এটা আল্লাহর অনুগ্রহে ও তাঁর দয়ায়; কাজেই এতে তারা যেন আনন্দিত হয়।’ তারা যা পুঞ্জীভূত করে তার চেয়ে এটা উত্তম।’ {সূরা ইউনুস, আয়াত: ৫৮}
কারণ, ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমযানের সিয়াম ও কিয়াম গুনাহ মাফের ও পাপ থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়। সুতরাং মুমিনগণ রমযান মাস পেলে খুশি হয়। আর দুর্বল ঈমানদার রমযান মাস পূর্ণ হলে খুশি হয়; কারণ সে সাওম থেকে মুক্তি পেয়েছে যা তার উপর ভারী ছিল এবং যা নিয়ে তার অন্তর সংকীর্ণ ছিল। আর এ দু’দলের মধ্যে পার্থক্য যে বিরাট তা স্পষ্ট।
হে আমার ভাই সকল! রমযান মাস শেষ হয়ে গেল। কিন্তু মুমিনের আমল তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শেষ হবে না।
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর যথাযথ তাকওয়া অবলম্বন কর। আর তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ {সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১০২}
* আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ ... »
‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়।’ [তিরমিযী: ১৩৭৬।]
এখানে একমাত্র মৃত্যুকেই মানুষের আমলের পরিসমাপ্তি ধরা হয়েছে। সুতরাং রমযান মাসের সাওম শেষ হলেও ঈমানদারের আমল সিয়াম পালনের দ্বারাই বন্ধ হয়ে যাবে না; কারণ সিয়াম তো তারপরও প্রতি বছর থাকবে। আর আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। যেমন,
* সহীহ মুসলিমে আবূ আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
‘আমাকে আমার বন্ধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন।... এর মাঝে উল্লেখ করলেন: প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন। [বুখারী: ১১৭৮; মুসলিম: ৭২১।]
তবে উত্তম হচ্ছে, এ তিন দিনের সাওম أيام الْبِيض অর্থাৎ চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে হওয়া। কারণ,
‘হে আবূ যর! তুমি যখন প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন করবে তখন তা ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করবে।’ [আহমদ ৫/১৫০; তিরমিযী: ৭৬১।]
* অনুরূপভাবে সহীহ মুসলিমে এসেছে, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আরাফার দিনের সিয়ামের ফযীলত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি উত্তর দিলেন, ‘তা এক বছরের আগের গুনাহ ও এক বছরের পরের গুনাহের কাফ্ফারাস্বরূপ।’ আর তাঁকে আশুরার সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, ‘তা পূর্বের এক বছরের গুনাহ মাফ করে।’ আর প্রতি সোমাবারের সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি বললেন, ‘সোমবার আমি জন্মগ্রহণ করেছি ও সোমবার নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি এবং সোমবার আমার ওপর কুরআন নাযেল হয়েছে।’ [মুসলিম: ১১৬২।]
* তাছাড়া সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞেস করা হলো,
‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ছাড়া অন্য কোনো সময় পূর্ণ এক মাস সিয়াম পালন করতে দেখি নি। তেমনি শাবান মাস ছাড়া অন্য মাসে অধিক নফল সিয়াম পালন করতে দেখে নি।’ [বুখারী: ১৯৬৯; মুসলিম: ১১৫৬।]
* অন্য শব্দে এসেছে, ‘তিনি শা‘বানের অল্পকিছু ছাড়া পুরোটারই সাওম পালন করতেন।’ [মুসলিম: ১১৫৬।]
‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার সিয়াম পালন করার ব্যাপারে যত্নবান ছিলেন।’ [আহমাদ: ৬/৮০, ৮৯, ১০৬; তিরমিযী: ৭৪৫; নাসাঈ: ৪/২০২, ২০৩; ইবন মাজাহ: ১৭৩৯।] এ হাদীসটি আবু দাউদ ব্যতীত ছয় গ্রন্থকারের বাকী সবাই সংকলন করেছেন। আবু দাউদে তা উসামা ইবন যায়েদ থেকে বর্ণিত।
* আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘বনী আদমের আমল সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আমার আমল সিয়াম অবস্থায় পেশ হওয়া আমি পছন্দ করি।’ [তিরমিযী: ৭৪৭।]
রমযান মাস শেষ হওয়ার দ্বারা রাত জাগরণ কিন্তু শেষ হয়ে যায় না; বরং বছরে প্রত্যেক রাতে নফল সালাত ও তাহাজ্জুদ পড়ার মাধ্যমে রাতের কিয়াম শরীয়তে অনুমোদিত। আর আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে কথা ও কাজ দ্বারা সারা বছর তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের বিষয়টি প্রমাণিত।
* সহীহ বুখারীতে মুগীরাহ ইবন শু‘বা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে এত অধিক নফল সালাত আদায় করতেন যে, তাঁর পা মুবারক ফুলে যেত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, আমি কি শুকরগুজার বান্দা হব না?’ [বুখারী: ৪৮৬৩।]
‘হে লোকসকল! তোমরা সালামের প্রসার কর, খাদ্য খাওয়াও, আর যখন মানুষ ঘুমে থাকে তখন রাতে নফল সালাত আদায় কর, তাহলে তোমরা শান্তির সাথে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’ [তিরমিযী: ২৪৮৫; ইবন মাজাহ: ১৩৩৪।]
‘ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের (তাহাজ্জুদ) সালাত।’ [মুসলিম: ১১৬৩।]
আর রাতের সালাতে সব ধরনের নফল এবং বিতর অন্তর্ভুক্ত। রাতের সালাত দু’ দু’ রাকাত করে আদায় করতে থাকবে। সময় শেষ হওয়ার ভয় হলে এক রাকাত মিলিয়ে বিতর পড়ে নেবে। অথবা চতুর্থ আসরে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে সেভাবেও পড়া যেতে পারে।
* বুখারী ও মুসলিমে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রতি রাতে এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে (শেষ রাতে) প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, আমাকে কে ডাকবে যে আমি তার ডাকে সাড়া দেব? আমার কাছে চাওয়ার মত কে আছে যে আমি তাকে দান করবো? কে আছে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে যে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।’ [বুখারী: ১১৪৫; মুসলিম: ৭৫৮।]
তাছাড়া রয়েছে, দৈনিক ১২ রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। চার রাকাত জোহরের পূর্বে ও দু’রাকাত পরে। দু’রাকাত মাগরিবের পর। দু’রাকাত ইশার পর ও দু’রাকাত ফজরের সালাতের পূর্বে।
* উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে শুনেছি,
‘যদি কোনো মুসলিম বান্দা ফরয ছাড়া বার রাকাত সুন্নাত সালাত প্রতিদিন আদায় করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন।’ [মুসলিম: ৭২৮।]
আরও রয়েছে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাত আদায়ের পর কিছু যিকর। এ যিকর করতে আল্লাহ তাঁর কিতাবে নির্দেশ দিয়েছেন, অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
তাহলে তার গুনাহ সমুদ্র ফেনা পরিমাণ হলেও আল্লাহ তা মাফ করে দেবেন।’ [মুসলিম: ৫৯৭।]
সুতরাং হে আমার ভাইগণ! আপনারা পূণ্যের কাজে বেশি করে আত্মনিয়োগ করুন। পাপ ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকুন। যাতে আপনাদের পার্থিব জীবন সুখময় হয় আর মৃত্যুর পর চিরস্থায়ী শান্তির অধিকারী হতে পারেন।
‘পুরুষ ও নারীদের মধ্য থেকে যে ঈমানসহ সৎকর্ম করে, আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কার্যের উত্তম পুরস্কার দেব।’ {সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৯৭}
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ঈমানের ওপর মজবুত রাখুন এবং আমলে সালেহ করার তাওফীক দিন। হায়াতে তায়্যিবাহ দান করুন। আমাদেরকে পুণ্যবান ব্যক্তিদের সঙ্গী বানান।
আর সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব। আল্লাহ সালাত ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের ওপর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/126/32
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।