hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযান মাসের ৩০ আসর

লেখকঃ শায়খ মুহাম্মদ ইবন সালেহ ইবন উসাইমীন রহ.

পঞ্চম আসর: কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তাঁর দরজার দিকে আহ্বান করেন, যাকে চান তিনি সঠিক পথের দিশা দেন, নিজের কিতাব নাযিলের মধ্য দিয়ে যিনি নেয়ামতধন্য করেন, যে কিতাব ‘মুহকাম’ ও ‘মুতাশাবিহ’ সংবলিত, ফলে যাদের অন্তরে রয়েছে সত্যবিমুখ প্রবণতা তারা মুতাশাবিহ্ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে। আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ক, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম। আমি তাঁর প্রশংসা করি এ জন্য যে তিনি আমাকে সুপথের সন্ধান দিয়েছেন এবং এর উপায়-উপকরণ সহজলভ্য করেছেন।

আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, এমন সাক্ষ্য দিচ্ছি যা দ্বারা আমি তাঁর শাস্তি থেকে নাজাত প্রত্যাশা করি, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, যিনি পৃথিবীতে আগমন ও পৃথিবী থেকে গমনকালে কার্যক্ষেত্রে ছিলেন সবচে পূর্ণাঙ্গ মানুষ।

দরূদ বর্ষিত হোক তাঁর ওপর, গারে হেরায় তার পরম সঙ্গী শ্রেষ্ঠ সাহাবী আবূ বকরের ওপর, উমরের ওপর যার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর দীনকে সম্মানিত করেছেন এবং দুনিয়াকে তার দ্বারা অবিচল রেখেছেন, উসমানের ওপর যিনি নিজ বাসায় ও নিজ মিহরাবে শহীদ হয়েছেন, আলীর ওপর যিনি ইলমী বিষয়ের জটিলতা নিরসন ও অপ্রকাশ্য গূঢ় বিষয় উন্মোচনকারী, আর নবীর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর ওপর যারা তাঁর প্রিয়জন ছিলেন। আর তাঁর উপর যথাযথ সালাম প্রদান করুন।

আমার ভাইয়েরা!

* আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَتۡلُونَ كِتَٰبَ ٱللَّهِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ سِرّٗا وَعَلَانِيَةٗ يَرۡجُونَ تِجَٰرَةٗ لَّن تَبُورَ ٢٩ لِيُوَفِّيَهُمۡ أُجُورَهُمۡ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضۡلِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ غَفُورٞ شَكُورٞ ٣٠ ﴾ [ فاطر : ٢٩، ٣٠ ]

‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে, আমার দেয়া রিযিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে এমন ব্যবসার, যা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবেনা, কারণ আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিদান দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরো অধিক দান করবেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ {সূরা আল-ফাতির, আয়াত: ২৯-৩০}

আল্লাহর কিতাবের তিলাওয়াত দু’প্রকার। যথা-

১। প্রথম প্রকার: হুকমী তিলাওয়াত। এটা হলো আল্লাহর কথাকে বিশ্বাস করা, তাঁর নির্দেশ মেনে নিয়ে তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ থেকে বর্জন করে কিতাব তথা আল কুরআনের সকল হুকুম-আহকাম বাস্তবায়ন করা। এ বিষয়ে অন্য আসরে বিস্তারিত আলোচনা আসবে ইনশাআল্লাহ।

২। দ্বিতীয় প্রকার: শাব্দিক তিলাওয়াত। এটা হলো আল কুরআন পাঠ করা। এর ফযীলতের ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহ হতে অনেক দলীল প্রমাণ রয়েছে। ফযীলত হয়তো পুরা কুরআনের ব্যাপারে আবার হয়তো নির্দিষ্ট কোনো সূরার ব্যাপারে রয়েছে আবার কখনো হয়তো নির্দিষ্ট কোনো আয়াতের ব্যাপারে রয়েছে।

* যেমন বুখারী ও মুসলিমে উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ القُرْآنَ وَعَلَّمَهُ»

“তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যিনি কুরআন মাজীদ শিক্ষা করেন এবং অন্যকে শিক্ষা দেন।” [বুখারী: ৫০২৭।]

* বুখারী ও মুসলিমে আরো বর্ণিত হয়েছে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«الْمَاهِرُ بِالْقُرْآنِ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَالَّذِى يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَيَتَتَعْتَعُ فِيهِ وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقٌّ لَهُ أَجْرَانِ » .

“আল-কুরআনে দক্ষ ও পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ সম্মানিত পুণ্যবান ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবেন। যে ব্যক্তি কুরআন আটকে আটকে তিলাওয়াত করে এবং তা তার জন্য কষ্টকর হয়, তার জন্য দু’টি প্রতিদান রয়েছে।” [বুখারী: ৪৯৩৭; মুসলিম: ৭৯৮।]

দুটি প্রতিদানের প্রথমটি হলো: তিলাওয়াতের, দ্বিতীয়টি হলো: পাঠকারীর কষ্টের।

* অনুরূপভাবে বুখারী ও মুসলিমে আবু মূসা আল-আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَثَلُ المُؤْمِنِ الَّذِي يَقْرَأُ القُرْآنَ كَمَثَلِ الأُتْرُجَّةِ، رِيحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا طَيِّبٌ، وَمَثَلُ المُؤْمِنِ الَّذِي لاَ يَقْرَأُ القُرْآنَ كَمَثَلِ التَّمْرَةِ، لاَ رِيحَ لَهَا وَطَعْمُهَا حُلْوٌ، »

“যে মুমিন কুরআন তিলাওয়াত করে তার দৃষ্টান্ত কমলালেবুর মত, যা সুস্বাদু ও সুঘ্রাণযুক্ত। আর যে মুমিন কুরআন তিলাওয়াত করে না, তার দৃষ্টান্ত খেজুরের ন্যায় যার কোনো ঘ্রাণ নেই কিন্তু তার স্বাদ মিষ্টি।” [বুখারী: ৫৪২৭; মুসলিম: ২৪৩।]

* তাছাড়া সহীহ মুসলিমে আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ» .

“তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর। কেননা কুরআন কিয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে।” [মুসলিম: ৮০৪।]

* অনুরূপভাবে সহীহ মুসলিমে উকবা ইবন ‘আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَفَلَا يَغْدُو أَحَدُكُمْ إِلَى الْمَسْجِدِ فَيَعْلَمُ، أَوْ يَقْرَأُ آيَتَيْنِ مِنْ كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، خَيْرٌ لَهُ مِنْ نَاقَتَيْنِ، وَثَلَاثٌ خَيْرٌ لَهُ مِنْ ثَلَاثٍ، وَأَرْبَعٌ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَرْبَعٍ، وَمِنْ أَعْدَادِهِنَّ مِنَ الْإِبِلِ»

“তোমাদের কেউ কি এরূপ করতে পার না যে, সকালে মসজিদে গিয়ে মহান আল্লাহ্‌র কিতাব থেকে দুটো আয়াত জানবে অথবা পড়বে; এটা তার জন্য দু’টো উষ্ট্রীর তুলনায় উত্তম। আর তিনটি আয়াত তিনটি উষ্ট্রী থেকে উত্তম, চারটি আয়াত চারটি উষ্ট্রী থেকে উত্তম। আর (শুধু উষ্ট্রীই নয়, বরং একইসাথে) সমসংখ্যক উট লাভ করা থেকেও তা উত্তম হবে।” [মুসলিম: ৮০৩।]

* তদ্রূপ সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, তিনি বলেন, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ تَعَالَى، يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ، إِلَّا نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ، وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ، وَحَفَّتْهُمُ الْمَلَائِكَةُ، وَذَكَرَهُمُ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ»

“যখন আল্লাহর কোনো ঘরে (মসজিদে) লোকজন একত্রিত হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করে এবং নিজেদের মাঝে তা অধ্যয়ণ করে, তখন তাদের ওপর প্রশান্তি অবতীর্ণ হয়, আল্লাহর রহমত তাদেরকে আবৃত করে রাখে, ফেরেশতাগণ তাদের বেষ্টন করে রাখেন এবং আল্লাহ তাঁর কাছে অবস্থিত ফেরেশতাদের কাছে তাদের আলোচনা করেন।” [মুসলিম: ২৬৯৯; আবু দাউদ, ১৪৫৫।]

* তাছাড়া আরো এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«تَعَاهَدُوا هَذَا الْقُرْآنَ، فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَهُوَ أَشَدُّ تَفَلُّتًا مِنَ الْإِبِلِ فِي عُقُلِهَا» .

“তোমরা কুরআনের যথাযথ যত্ন নাও, তা হিফাযত ও সংরক্ষণ কর। ওই সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন, অবশ্যই উট তার রশি থেকে যেমন দ্রুত পালিয়ে যায় তার চেয়েও আরো তীব্র বেগে এ কুরআন চলে যায়। (অর্থাৎ কুরআনের প্রতি যত্নবান না হলে কুরআন স্মৃতি থেকে দ্রুত চলে যাবে।)” [বুখারী: ৫০৩৩; মুসলিম: ৭৯১। অর্থাৎ একটু গাফেল ও কুরআনের প্রতি অযত্নবান হলে কুরআন মুখস্থ থেকে দ্রুত চলে যাবে।]

* রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:

«لَا يَقُلْ أَحَدُكُمْ نَسِيتُ آيَةَ كَيْتَ وَكَيْتَ، بَلْ هُوَ نُسِّيَ»

“তোমাদের কেউ যেন না বলে আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি। বরং তাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে।’ [মুসলিম: ৭৯০।]

হাদীসে نسيت ‘আমি ভুলে গেছি’ এ কথা বলবে না এজন্য যে, এতে করে কুরআন মুখস্থ করার পর গুরুত্বহীনতার কারণে ভুলে গেছে বুঝা যায়। তাই এভাবে বলা যাবে না।

* অনুরূপ আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا، لَا أَقُولُ الم حَرْفٌ، وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلَامٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ»

“যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ (অক্ষর) পাঠ করবে, তাকে একটি নেকী প্রদান করা হবে। আর প্রতিটি নেকী দশগুণ বৃদ্ধি করা হবে। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মীম একটি হরফ।” [তিরমিযী: ২৯১০।]

* আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেন:

«إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ مَأْدُبَةُ اللَّهِ فَاقْبَلُوا مِنْ مَأْدُبَتِهِ مَا اسْتَطَعْتُمْ إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ حَبْلُ اللَّهِ، وَالنُّورُ الْمُبِينُ، وَالشِّفَاءُ النَّافِعُ عِصْمَةٌ لِمَنْ تَمَسَّكَ بِهِ، وَنَجَاةٌ لِمَنْ تَبِعَهُ، لَا يَزِيغُ فَيُسْتَعْتَبَ، وَلَا يَعْوَجُّ فَيُقَوَّمُ، وَلَا تَنْقَضِي عَجَائِبُهُ، وَلَا يَخْلَقُ مِنْ كَثْرَةِ الرَّدِّ، اتْلُوهُ فَإِنَّ اللَّهَ يَأْجُرُكُمْ عَلَى تِلَاوَتِهِ كُلَّ حَرْفٍ عَشْرَ حَسَنَاتٍ، أَمَا إِنِّي لَا أَقُولُ الم حَرْفٌ، وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلَامٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ» .

‘নিশ্চয়ই এ কুরআন আল্লাহর দস্তরখান। তোমরা যথাসম্ভব তার দস্তরখান থেকে গ্রহণ কর। এ মহাগ্রন্থ আল-কুরআন আল্লাহর মজবুত রশি, সুদীপ্ত জ্যোতি, উত্তম নিরাময়কারী, যে তা আঁকড়ে ধরবে তার জন্য কুরআন ত্রাতা, যে অনুসরণ করে তা তার জন্য নাজাত ও মুক্তির মাধ্যম। সে সত্য থেকে এমনভাবে বিচ্যুত হবে না যে তাকে ভর্ৎসনা করা হবে। সে বক্র পথে এমনভাবে যাবে না যে তাকে সোজা করতে হবে। কুরআনের বিস্ময়ের শেষ নেই। অধিক পুনরাবৃত্তির কারণে তা পুরাতন হয় না (অর্থাৎ কুরআনের আয়াতের পুনরাবৃত্তি হলেও তাতে নতুনত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। কারণ তার আবেদন চিরন্তন।) তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করো, কারণ আল্লাহ তোমাদেরকে তিলাওয়াতকৃত প্রতিটি হরফের বিনিময়ে দশটি করে নেকী দেবেন। জেনে রাখ, আমি বলি না আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ, বরং আলিফ একটি, লাম একটি, এবং মীম একটি হরফ।” [হাদীসটির সূত্র দুর্বল। যা হাকেম তার মুস্তাদরাকে বর্ণনা করেছেন, ১/৫৫৫, হাদীস নং ২০৪০। ইবনুল জাওযী রহ. বলেন, এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস নয়, সম্ভবত এটি আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর উক্তি। [আল-ইলাল আল-মুতানাহিয়া: ১/১০১]]

আমার ভাইয়েরা! এই হলো আল-কুরআন পাঠের ফযীলত। অল্প আমলে অধিক সাওয়াব, তবে তা শুধু সে লোকের জন্যই যে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর পক্ষ থেকে সাওয়াব কামনা করে। সুতরাং প্রতারিত ও প্রবঞ্চিত সেই ব্যক্তি যে কুরআনের ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করে। আর সে লোকই তো ক্ষতিগ্রস্ত যে লাভ এমনভাবে হাতছাড়া হয়ে গেছে যে সে সেটাকে আর কাটিয়ে উঠতে পারে নি। এই যে ফযীলতসমূহের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তার গোটা কুরআনকেই শামিল করে।

আর কুরআনের সুনির্দিষ্ট সূরার ফযীলতের ব্যাপারেও অনেক হাদীস বর্ণিত রয়েছে।

সেসবের মধ্যে সূরা ফাতেহা অন্যতম:

* সহীহ বুখারীতে আবু সাঈদ ইবনুল মু‘আল্লা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন:

«لَأُعَلِّمَنَّكَ سُورَةً هِيَ أَعْظَمُ سُورَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ الَّذِي أُوتِيتُهُ» .

‘অবশ্যই আমি তোমাকে কুরআনের বড় সূরাটি শেখাবো। সেটা হলো সূরা আল-ফাতেহা ‘‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’’ এটাই ‘সাব‘উল মাসানী’ (বা বারবার পঠিত ৭টি আয়াত) এবং মহা কুরআন যা আমাকে দেওয়া হয়েছে।” [বুখারী: ৫০০৬।]

* সূরা ফাতিহার এ ফযীলতের কারণেই সালাতের মধ্যে এ সূরা পাঠ করা সালাতের রুকন হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে; যা ছাড়া সালাত শুদ্ধ হয় না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ .

‘সূরা ফাতিহা যে ব্যক্তি পড়ল না তার সালাতই পূর্ণ হবে না।’ [বুখারী: ৭৫৬; মুসলিম: ৩৯৪।]

* আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ صَلَّى صَلَاةً لَمْ يَقْرَأْ فِيهَا بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَهِي خِدَاجٌ» يقولها ثَلَاثًا . فَقِيلَ لِأَبِي هُرَيْرَةَ إِنَّا نَكُونُ وَرَاءَ الْإِمَامِ، فَقَالَ اقْرَأْ بِهَا فِي نَفْسِكَ ...

“যে ব্যক্তি এমন কোনো সালাত পড়ল যাতে সে সূরা ফাতিহা পাঠ করে নি সেটা অসম্পূর্ণ।” কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। তখন আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আমরা ইমামের পেছনে থাকলে কী করবো? তিনি বললেন: তখন তা মনে মনে পাঠ করবে।’ [মুসলিম: ৩৯৫।]

অনুরূপ সুনির্দিষ্ট সূরার মধ্যে সূরা বাকারা ও সূরা আলে ইমরান অন্যতম।

* নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«اقْرَءُوا الزَّهْرَاوَيْنِ الْبَقَرَةَ وَسُورَةَ آلِ عِمْرَانَ فَإِنَّهُمَا تَأْتِيَانِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُمَا غَمَامَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا غَيَايَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا فِرْقَانِ مِنْ طَيْرٍ صَوَافَّ تُحَاجَّانِ عَنْ أَصْحَابِهِمَا اقْرَءُوا سُورَةَ الْبَقَرَةِ فَإِنَّ أَخْذَهَا بَرَكَةٌ وَتَرْكَهَا حَسْرَةٌ وَلَا تَسْتَطِيعُهَا الْبَطَلَةُ»

“তোমরা যাহরাওয়াইন তথা পুষ্পদ্বয় পাঠ করো, তা হলো সূরা বাকারা ও সূরা আলে ইমরান। কারণ এ দুটো সূরা কিয়ামতের দিন দু’টি মেঘমালার ন্যায় অথবা দু’দল পাখির ঝাঁকের মতো সারিবদ্ধভাবে উড়বে এমতাবস্থায় যে, তারা তাদের পাঠকদের পক্ষ নিয়ে বাক-বিতণ্ডা করবে। (জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য অথবা জাহান্নামের ফিরিশতা যাবানিয়াদের সাথে)। তোমরা সূরা বাকারা পাঠ করো। কারণ তা গ্রহণ (করা বা মুখস্থ) করায় রয়েছে বরকত আর তা পরিত্যাগ করায় রয়েছে পরিতাপ। আর কোনো ‘বাতালা’ অর্থাৎ জাদুকর এটা অর্জন করতে পারে না।’ [মুসলিম: ৮০৪।]

* আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

«إِنَّ البَيْتَ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ البَقَرَةُ لَا يَدْخُلُهُ الشَّيْطَانُ»

‘যে ঘরে সূরা বাকারা পাঠ করা হয় সেখানে শয়তান প্রবেশ করে না।’ [তিরমিযী: ২৮৭৭। যদিও গ্রন্থকার বলেছেন যে এটা ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন। বস্তুত ইমাম মুসলিমের শব্দ হচ্ছে, (৭৮০) «إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ الْبَيْتِ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ» ]

আর শয়তান এজন্য ঘরে প্রবেশ করে না; কারণ তাতে আয়াতুল কুরসী রয়েছে।

* আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত আছে যে,

«أَنَّ من قرأها في ليلة لم يزل عليه من الله حافظ ولا يقربه شيطان حتى يصبح» .

“যে ব্যক্তি এ আয়াতুল কুরসী রাত্রি বেলায় পাঠ করল, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য একজন সংরক্ষণকারী সার্বক্ষণিকভাবে থাকবে এবং শয়তান সকাল হওয়া পর্যন্ত তার কাছে আসতে পারবে না।” [বুখারী: ২৩১১।]

* অনুরূপভাবে ‘আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,

«أن جبرئيل قال وهو عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذَا بَابٌ قد فتح من السماء ما فتح قط، قال : فَنَزَلَ مِنْهُ مَلَكٌ فأتى النبي صلى الله عليه وسلم أَبْشِرْ بِنُورَيْنِ أُوتِيتَهُمَا لَمْ يُؤْتَهُمَا نَبِيٌّ قَبْلَكَ فَاتِحَةُ الْكِتَابِ وَخَوَاتِيمُ سُورَةِ الْبَقَرَةِ لَنْ تَقْرَأَ بِحَرْفٍ مِنْهُمَا إِلَّا أُعْطِيتَهُ» .

“জিব্রাঈল আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে থাকা অবস্থায় বললেন, এই দেখুন এটা একটা দরজা আকাশ থেকে খোলা হয়েছে- ইতোপূর্বে কখনো তা খোলা হয়নি। রাবী বললেন, এরপর ওই দরজা থেকে একজন ফেরেশতা নাযিল হয়ে আল্লাহর নবীর সম্মুখে হাযির হয়ে বললেন: আপনি দু’টো নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন যা আপনার পূর্বে কোনো নবীকে দেয়া হয়নি, সেটা হলো (১) সূরা ফাতিহা। (২) সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো, আপনি এ দুটো তিলাওয়াত করে যে কোনো হরফ দ্বারা যা চাইবেন তা আপনাকে দেয়া হবে।” [মুসলিম: ৮০৬।]

যে সমস্ত সূরা বিশেষ ফযীলতের জন্য সুনির্দিষ্ট সূরা ইখলাস (কুল হুয়াল্লাহু আহাদ) তাদের অন্যতম।

* সহীহ বুখারীতে আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সূরার ব্যাপারে বলেছেন:

«وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ إنها تَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ» .

‘সেই সত্তার কসম করে বলছি যার হাতে আমার জীবন নিহিত, নিশ্চয়ই এ সূরা ইখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।’ [বুখারী: ৫০১৩।]

অবশ্য ফযীলতের ক্ষেত্রে এটা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান এ কথাটির অর্থ এই নয় যে তা পুরো কুরআনের বিকল্প। এজন্য যদি কেউ এ সূরা সালাতে তিনবার পড়ে তা তার জন্য সূরা ফাতেহার বিকল্প হিসেবে গ্রহণীয় হবে না। বস্তুত কোনো কিছু ফযীলতের ক্ষেত্রে অন্য কিছুর সমপর্যায়ের হলেই এটা আবশ্যক নয় যে তা অপরটার বিকল্প হবে। যেমন সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, আবূ আইয়ুব আল আনছারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

من قال لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ عَشَرَ مَرَّات كَانَ كَمَنْ أعتق أربعة أنفسٍ من ولد إسماعيل .

“যে ব্যক্তি বলল,

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ .

‘একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, সকল রাজত্ব তাঁর, তাঁর জন্য সকল প্রশংসা।’ এ দো‘আ বা যিকরটি ১০ বার পড়ে, সে যেন ইসমাইল ‘আলাইহিস সালামের সন্তানদের মধ্যে চারজন গোলামকে আযাদ করে দিল।” [বুখারী: ৬৪০৪; মুসলিম: ২৬৯৩।]

তাবরানীর বর্ণনায় বলা হয়েছে,

« كُنَّ لَهُ كَعِدْلِ عَشَرِ رِقَابٍ مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ»

‘তা তার জন্য ইসমাঈল ‘আলাইহিস সালামের বংশধরদের মধ্য হতে চারজনকে আযাদ করার সমতুল্য হবে।’ [তাবরানী, আল-মু‘জামুল কাবীর ৪/১৬৫, নং ২০৪০।]

এ দো‘আর এ ফযীলত সত্ত্বেও যদি কারো উপর ৪ জন গোলাম আযাদ করার কাফফারা ধার্য হয় তখন সে এ যিকরটি করলে গোলাম আযাদের জন্য যথেষ্ট হবে না; যদিও ফযীলত বা সওয়াবের দিক থেকে মান সমান হয়।

ফযীলত সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট সূরার মধ্যে সূরা মুয়াওয়াযাতাইন তথা (কুল ‘আউযু বিরাব্বিল ফালাক) ও (কুল ‘আউযু বিরাব্বিন নাস) উল্লেখযোগ্য।

* ‘উকবা ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَلَمْ تَرَ آيَاتٍ أُنْزِلَتْ اللَّيْلَةَ لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ قَطُّ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ»

“তুমি কি দেখনি? আজ রাত্রিতে নাযিল হওয়া সেই আয়াতসমূহ! এরূপ আয়াত আর লক্ষ্য করা যায় না। সেগুলো হলো সূরা ফালাক ও সূরা নাস। তথা কুল ‘আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল ‘আউযু বিরাব্বিন নাস।” [মুসলিম: ৮১৪।]

* নাসাঈতে এসেছে,

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَمَرَ عقبة أن يقرأ بهما» ثم قال النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «مَا سَأَلَ سَائِلٌ بِمِثْلِهِمَا وَلَااسْتَعَاذَ مُسْتَعِيذٌ بِمِثْلِهِمَا» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উকবা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে নির্দেশ দিলেন এ সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করার জন্য।” তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “কোনো প্রার্থনাকারী এ দুটো সূরায় বর্ণিত প্রার্থনার মত প্রার্থনা করে না। আর কোন আশ্রয়কারীও এ সূরায় বর্ণিত বিষয়ের মত আশ্রয় চায় না।” [নাসাঈ ৮/২৫৩, ২৫৪।]

সুতরাং হে আমার ভ্রাতৃবৃন্দ! বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াতে রত থাকুন। বিশেষ করে এ মাসে যাতে কুরআন নাযিল হয়েছে। কারণ এ মাসে অধিক কুরআন তেলাওয়াতের বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

জিব্রাঈল (আলাইহিস সালাম) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামের কাছে প্রত্যেক বছর রমযান মাসে একবার পুরো কুরআন পেশ করতেন, পুনরাবৃত্তি করতেন। অবশেষে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর বছর তিনি সেটা দু’বার পেশ করেন; যাতে তা রাসূলের হৃদয়ে স্থায়ী ও স্থির হয়ে যায় এবং পাশাপাশি বিষয়টি জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এমনটি করেছেন। [বুখারী: ৪৯৯৮।]

অনুরূপভাবে সালাফে সালেহীন তথা আমাদের নেককার পূর্বসুরীগণ রমযান মাসে সালাতে ও সালাতের বাইরে কুরআন বেশি বেশি তিলাওয়াত করতেন।

* ইমাম যুহরী (রহ.) রমযান মাস আগমন করলে বলতেন, এটা তো শুধু কুরআন তিলাওয়াত ও মানুষকে খাবার খাওয়ানোর মাস।

* এ মাহে রমযান আগমন করলে ইমাম মালেক (রহ.) হাদীস পাঠ, ইলমী মজলিস পরিত্যাগ করতেন এবং মুসহাফ থেকে কুরআন তেলাওয়াতের প্রতি মনোনিবেশ করতেন।

* কাতাদা (রহ.) সর্বদা প্রতি সপ্তাহে একবার কুরআন খতম করতেন। আর রমযানে প্রতি তিন দিনে একবার খতম করতেন এবং রমযানের শেষ দশ দিন প্রতিদিন এক খতম করে পড়তেন।

* ইব্রাহীম নাখ‘য়ী (রহ.) রমযানে প্রতি তিন রাত্রিতে কুরআন খতম করতেন এবং শেষ দশ রাত্রিতে প্রতি দুই রাত্রিতে খতম করতেন।

* আসওয়াদ (রহ.) প্রতি মাসেই দুই রাত্রিতে পুরা কুরআন পাঠ করতেন।

ভ্রাতৃবৃন্দ! আপনাদের প্রতি আল্লাহ রহম করুন। অতএব আপনারা এসব পুণ্যবান মনীষীদের অনুসরণ করুন, তাঁদের পথে অনুগামী হয়ে পূতঃহৃদয় পুণ্যবান ফেরেশতাদের সঙ্গী হোন। আর রাত ও দিনের সময়গুলো এমন কিছুতে কাজে লাগান যা আপনাদেরকে প্রতাপশালী ক্ষমাশীল রবের নৈকট্যশীল করবে; কেননা বয়স দ্রুতই নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, সময় দ্রুত বয়ে যাচ্ছে, এ যেন দিনের এক মুহূর্তকাল মাত্র!

হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সেভাবে কুরআন তিলাওয়াতের তাওফীক দিন যেভাবে করলে আপনি খুশি হবেন এবং এর মাধ্যমে আপনি আমাদের শান্তির পথ দেখান, এর দ্বারা আমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোয় বের করে আনুন, আর একে আমাদের বিপক্ষে নয় আমাদের পক্ষে প্রমাণ বানিয়ে দিন হে সৃষ্টিকুলের পালনকর্তা।

হে আল্লাহ আপনার আপন করুণায় এ কুরআনের মাধ্যমে জান্নাতে আমাদের উঁচু স্তর প্রদান করুন এবং জাহান্নামের স্তরসমূহ থেকে নাজাত দিন। আর আমাদের যাবতীয় গুনাহের ক্ষতিপূরণ করে দিন। আমাদেরকে এবং পিতা-মাতা ও সকল মুসলিমকে ক্ষমা করুন হে পরম করুনাময়! আর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার ও সকল সাহাবীর ওপর।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন