মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সপ্তম আসর: সিয়ামের বিধানের দিক থেকে মানুষের প্রকারভেদের অবশিষ্ট আলোচনা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/126/9
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সমকক্ষের উর্ধ্বে, সব ধরনের ত্রুটি ও বৈপরিত্ব থেকে মুক্ত, স্ত্রী ও সন্তানদের থেকে পবিত্র, দৃঢ় সপ্তক (সাত আসমান) উত্তোলনকারী, খুঁটিবিহীন ওপরে স্থাপনকারী, ভূমণ্ডলকে সমতলকারী, মজবুত পেরেকসমূহ (পর্বতমালা) দ্বারা সুস্থিরকারী, মনের গোপনীয়তা ও অন্তরের ভেদ সম্পর্কে অবগত, সঠিক-ভ্রান্ত পথিক যা হয়েছে ও হবে তার নির্ধারণকারী, তাঁর স্নেহসমুদ্রে বান্দাদের বাহনগুলো চলাচল করে এবং তাঁর ভালোবাসার ময়দানে সংসারবিরাগী বান্দাদের ঘোড়াগুলো বিচরণ করে। তিনিই তালাশকারীদের তালাশস্থল এবং পথিকদের গন্তব্যস্থল। বহনকারীরা তাঁর জন্যই বহন করে এবং প্রচেষ্টাকারীরা তাঁর জন্যই চেষ্টা করে। অন্ধকারে কালো পিঁপড়ের পদবিক্ষেপও তিনি দেখেন। গোপন চেতনা থেকে নফসে যে কুমন্ত্রণার জন্ম তিনি তারও খবর রাখেন। প্রার্থনাকারীদের প্রতি তিনি বদান্যতা দেখান এবং তাদের পাথেয় আরও বাড়িয়ে দেন। আর লক্ষ্য পানে নিষ্ঠকর্মীদের তিনি অধিক দান করেন। আমি তাঁর স্তুতি গাই সকল সংখ্যা ছাড়িয়ে এবং তাঁর নেয়ামতের উপর শুকরিয়া জানাই, আর যখনই তার শোকর আদায় করা হয় তখনই তা যায় বেড়ে।
আর আমি সাক্ষ্য প্রদান করি যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তিনিই মালিক ও বান্দাদের প্রতি দয়ালু, আমি আরও সাক্ষ্য দেই যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, যিনি সব দেশের সব মানুষের জন্য প্রেরিত হয়েছেন।
আল্লাহ সালাত পাঠ করুন তাঁর ওপর, তাঁর সাথী আবূ বকরের ওপর যিনি নিজের জান, মাল যথেষ্ট পরিমাণ ব্যয় করেছেন, উমরের ওপর যিনি ইসলামের বিজয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন এবং চমৎকার নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন, উসমানের ওপর যিনি কঠোর সময়ে সৈন্যবাহিনীকে রসদ সরবরাহ করেছেন, কিয়ামতের দিন তার কতই না গৌরব হবে! অনুরূপভাবে আলীর ওপর যিনি বীরত্ব ও নির্ভীকতায় সুবিদিত, আল্লাহ আরও সালাত পেশ করুন নবীর সকল পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথী ও কিয়ামত পর্যন্ত অনাগত সব সুন্দর অনুসারীর ওপর। আর আল্লাহ তাদের উপর যথাযথ সালামও পেশ করুন।
প্রিয় ভাইয়েরা! সিয়াম পালনের হুকুম আহকামের ব্যাপারে মানুষের পাঁচটি শ্রেণীর আলোচনা পূর্বে পেশ করেছি। এ আসরে এসব প্রকারের মধ্য থেকে আরেকটি দলের আলোচনা করবো:
ষষ্ঠ প্রকার: মুসাফির ব্যক্তি যিনি সাওম ভাঙ্গার কৌশল হিসেবে সফরের সংকল্প করেন নি।
যদি মুসাফির সাওম ভাঙ্গার কৌশল হিসেবে সংকল্প সফর শুরু করে তাহলে সাওম ভাঙ্গা তার জন্য হারাম হবে। তখন সাওম পালনই তার জন্য ফরয হয়ে যাবে।
পক্ষান্তরে সে যদি সফরকে কৌশল হিসেবে গ্রহণ না করে তবে সে সাওম পালন বা সাওম ভঙ্গ করার এখতিয়ার পাবে। তার সফরের সময়সীমা দীর্ঘ হোক কিংবা সংক্ষিপ্ত। হোক তার সফর কোনো উদ্দেশ্যে আকস্মিক কিংবা ধারাবাহিক। যেমন পাইলট বা ভাড়া গাড়ির ড্রাইভার। কারণ,
‘আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ বা মুসাফির, সে তার সিয়াম অন্য সময় আদায় করে নেবে। তোমাদের পক্ষে যা সহজ আল্লাহ তাই চান এবং তোমাদের জন্য যা কষ্টকর তা তিনি চান না।’ {সূরা আল-বাকারাহ্, আয়াত: ১৮৫}
* বুখারী ও মুসলিমে আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:
“তারা (সাহাবীগণ) মনে করতেন, যে নিজের মধ্যে শক্তি অনুভব করে ও সিয়াম পালন করে সেটা তার জন্য উত্তম। পক্ষান্তরে যে নিজের মধ্যে দুর্বলতা অনুভব করে ও সাওম ভঙ্গ করে সেটা তার জন্য উত্তম।’ [মুসলিম: ১১১৬।]
* সুনানে আবূ দাউদে হামযা ইবন আমর আল-আসলামী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:
“হে আল্লাহর রাসূল! আমি মালামাল বহনকারী পশুর মালিক, আমি তা সফরের জন্য পরিচর্যা করে থাকি এবং তা ভাড়া দেই। কখনো এ মাস রমযানও আমাকে সফরের মধ্যে পেয়ে বসে। আর আমি যুবক মানুষ, সাওম পালনের শক্তিও আছে। হে আল্লাহর রাসূল সাওম পালন আমার জন্য পরে পিছিয়ে রাখার চেয়ে অধিকতর সহজ। পরে সাওম পালন করলে এটা আমার কাছে ঋণের বোঝার মতো হয়ে যায়। তাহলে কি আমি বড় ধরনের সাওয়াবের আশায় সাওম পালন করবো নাকি ভেঙ্গে ফেলবো? তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে হামযা! যেটা ইচ্ছা তোমার সেটাই করতে পারো।” [আবূ দাঊদ: ২৪০৩। দুর্বল সনদে।] অর্থাৎ ইচ্ছা করলে সাওম পালন করতে পারো আবার ভাঙ্গতেও পার।
অতএব গাড়ির ড্রাইভার যিনি ভাড়ায় গাড়ী চালান এবং তাকে তা সর্বক্ষণই করতে হয়, রমযান মাসে সফর অবস্থায় তীব্র গরমের কারণে যদি তাঁর সাওম পালন করা কঠিন হয়ে পড়ে, তাহলে তিনি যখন আবহাওয়া ঠান্ডা হবে এবং তার জন্য সাওম পালন করা সহজ হবে এমন সময়ে সে সাওম (কাযা হিসেবে) পালন করতে পারবেন।
তবে মুসাফিরের জন্য সর্বোত্তম হলো সাওম পালন বা ভাঙ্গার মধ্যে যেটা তুলনামূলক সহজ হয় তাই করা।
যদি দু’টোই সমান হয় তাহলে সাওম পালনই শ্রেয়। কারণ এটা তাড়াতাড়ি জিম্মামুক্ত হতে সহায়ক এবং অন্যদের সঙ্গে হবার কারণে উৎসাহব্যঞ্জকও বটে। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমলও এমন।
* যেমন সহীহ মুসলিমে আবূ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-
‘আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে রমযান মাসে প্রচণ্ড গরমের দিনে বের হলাম। এমনকি আমাদের কেউ কেউ প্রচণ্ড গরমের কারণে তার হাত মাথার ওপর রাখে। আমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আব্দুল্লাহ ইবন রাওয়াহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ছাড়া আর কেউ রোযাদার ছিল না।’ [মুসলিম: ১১২২।]
আবার কখনও কখনও রাসূল সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যখন এ খবর পৌঁছল যে, সাওম হেতু সাহাবীগণের কষ্ট হচ্ছে, তখন তিনি তাঁর সাহাবীদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য করে সাওম ভেঙ্গে ফেললেন।
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বছর মক্কার উদ্দেশে বের হলেন। এরপর তিনি সাওম পালন শুরু করে কুরায়ে গামীম (নামক স্থানে) পৌঁছলেন। তাঁর সঙ্গে লোকজনও সাওম রাখলেন। অতঃপর তাঁর উদ্দেশে বলা হলো, লোকজনের সাওম রাখতে কষ্ট হচ্ছে। আপনি কী করছেন তারা তা লক্ষ্য করছে। তখন তিনি বাদ আসর পানির পেয়ালা আনতে বললেন। এরপর সবাইকে দেখিয়ে তিনি পানি পান করলেন।’ [মুসলিম: ১১১৩, ১১১৪।]
* আর আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীসে এসেছে,
‘নবী সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টির পানিসৃষ্ট এক নালার সম্মুখে গমন করলেন। তখন লোকজন গরমের দিনে পায়ে হেঁটে সাওম পালন করছিল। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা ছিলেন তাঁর একটি খচ্চরের পিঠে। এমতাবস্থায় তিনি বললেন, হে লোক সকল! তোমরা পানি পান করো। তারা পান করতে ইতস্তত করতে লাগলেন। তখন তিনি বললেন, দেখ আমি তোমাদের মত নই। আমি তোমাদের চেয়ে বেশ আরামে আছি। আমি তো আরোহী (আর তোমরা পদব্রজে)। তারপরও তাদের ইতস্ততভাব কাটলো না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন নিজ উরু মোবারক সরিয়ে খচ্চরের পিঠ থেকে নেমে পড়লেন। এরপর (সবার সামনে) পানি পান করলেন। আর (তাঁর দেখাদেখি) লোকজনও পানি পান করলো। আসলে তিনি পানি পান করতে চাইছিলেন না।’ [আহমদ: ৩/৪৬; ইবন খুযাইমা : ১৯৬৬।]
আর যখন মুসাফির ব্যক্তির জন্য সাওম পালন কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়, তখন সে সাওম ভেঙ্গে ফেলবে; সফরে সাওম পালন করবে না। যেমন,
* পূর্বোল্লিখিত জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হাদীসে উল্লেখ রয়েছে:
«أَنَّ النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لما افطر حين شق الصوم على الناس قيل له : أن بعض الناس قد صام، فَقَالَ أُولَئِكَ الْعُصَاةُ أُولَئِكَ الْعُصَاةُ» رواه مسلم
‘নবী সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে যখন লোকজনের রোযা রাখা কষ্টকর হলো তখন নিজে সাওম ভেঙ্গে ফেললেন। তাঁকে বলা হলো, কোনো কোনো লোক সাওম রেখেছে। তিনি বললেন, ওরাই অবাধ্য, ওরাই পাপী।’ [মুসলিম: ১১১৪।]
* সহীহ বুখারী ও মুসলিমে জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে আরও বর্ণিত হয়েছে:
‘নবী সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফরে ছিলেন, তিনি একস্থানে মানুষের জটলা দেখলেন, সেখানে তারা এক লোককে ছায়া দিচ্ছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কী হচ্ছে এখানে? তারা বললো, সাওম পালনকারী। উত্তরে তিনি বললেন, সফর অবস্থায় সাওম পালনে কোনো পুণ্য নেই।’ [বুখারী: ১৯৪৬; মুসলিম: ১১১৫।]
যদি সিয়াম পালনকারী দিনের মধ্যভাগে সফর করে এবং সিয়াম পূর্ণ করা তার জন্য কষ্টকর হয়, তাহলে নিজ শহর থেকে বের হবার পর তার জন্য সিয়াম ভঙ্গ করা জায়েয। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম পালন করেছেন এবং লোকেরাও তার সঙ্গে সিয়াম পালন করেছেন। অবশেষে ‘কুরা‘উল গামীম’ নামক স্থানে পৌঁছার পর তাঁর কাছে সংবাদ পৌঁছল যে, লোকদের জন্য সিয়াম পালন খুব কষ্টকর হচ্ছে। তখন তিনি সাওম ভঙ্গ করলেন এবং তাঁর দেখাদেখি অন্যরাও সিয়াম ভঙ্গ করল।’ [মুসলিম: ১১১৪।]
আর কুরা‘উল গামীম হলো হাররা বা কালো পাথরগুলোর পার্শ্বস্থিত একটি কালো পাহাড়; যা মাররূয-যাহরান ও ‘উসফান নামক স্থানের মধ্যভাগে অবস্থিত ‘গামীম’ নামক উপত্যকা পর্যন্ত প্রসারিত।
আর যদি মুসাফির রমযান মাসে স্বীয় শহরে দিনের বেলায় সিয়াম পরিত্যাগ অবস্থায় আগমন করে, ওই দিন তার জন্য বাকী সময়ের সিয়াম রাখা সহীহ হবে না। কেননা সে দিনের প্রথম ভাগে সিয়াম ভঙ্গকারী ছিল। আর ফরয সিয়াম সুবহে সাদিক উদয় হওয়ার সময় থেকেই কেবল সহীহ হয়।
তবে দিনের অবশিষ্টাংশ কি তার জন্য পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরী?
এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরাম একাধিক মত প্রকাশ করেছেন:
* কেউ বলেছেন, তার জন্য সময়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দিনের অবশিষ্টাংশ পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। আর তাকে এর কাযাও করতে হবে ওই দিনের সাওম শুদ্ধ না হবার কারণে। এটাই ইমাম আহমাদ রহ.-এর মাযহাবের প্রসিদ্ধ মত।
* আবার কোনো কোনো আলেম বলেছেন, দিনের বাকি অংশের সাওম পালন আবশ্যক নয়; কারণ যেহেতু তাকে সাওম কাযা করতে হবে। তাই বাকি দিন সাওম পালনে কোনো ফায়দা নেই। আর রমযান মাসের মর্যাদা রক্ষার বিষয়টি তো দিনের প্রারম্ভে প্রকাশ্য বা গোপনে তার বৈধভাবে রোযা ভাঙ্গার দ্বারাই শেষ হয়ে গেছে।
‘যে রমযানের দিনের প্রথম ভাগে খেল সে যেন শেষ ভাগেও খায়।’
অর্থাৎ শরয়ী ওযরের কারণে যার জন্য দিনের প্রথম ভাগে ভক্ষণ করা বৈধ হলো, তার জন্য দিনের শেষভাগে ভক্ষণ করাও বৈধ। এটা ইমাম মালেক রহ. শাফেয়ী রহ.-এর মাযহাব এবং ইমাম আহমদ রহ.-এরও একটি রেওয়ায়েত।
তবে তার রোযা ভাঙ্গার গোপনীয়তা রক্ষার জন্য পানাহারের কথা প্রকাশ করবে না। কারণ তার সম্পর্কে এতে ধারণা খারাপ হবে কিংবা তার অনুসরণ করা হবে।
সপ্তম প্রকার: এমন রোগী যার রোগমুক্তির আশা করা যায়।
এর তিনটি অবস্থা:
প্রথমত: যদি এমন হয় যে, সাওম তার জন্য কষ্টকর নয় আবার তার ক্ষতিও করবে না, তাহলে তার জন্য সাওম ফরয হবে। কারণ তার কোনো শর‘ঈ ওযর নেই যা সাওম ভাঙ্গাকে বৈধ করবে।
দ্বিতীয়ত: যদি এমন হয় যে, সাওম তার জন্য কষ্টকর, তবে তার ক্ষতি করবে না। এমতাবস্থায় সে সাওম ভঙ্গ করবে।
‘নিজের ও অন্যের ক্ষতি করা যাবে না।’ [ইবনে মাজাহ্: ২৩৪০; অনুরূপ মুসনাদে আহমাদ ৫/৩২৬, ৩২৭।]
ইমাম নাওয়াওয়ী বলেন, হাদীসটির বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে যেগুলো পরস্পরকে শক্তিশালী করেছে।
রমযান মাসে সাওম পালনকালে যদি তার অসুস্থতা দেখা দেয় আর সাওম পূর্ণ করা তার জন্য কষ্টকর হয়, তাহলে তার জন্য বৈধ কারণ থাকায় তার সাওম ভঙ্গ করা জায়েয।
পক্ষান্তরে রোযা ভঙ্গকারী অসুস্থ ব্যক্তি যদি রমযানে দিনের বেলা সুস্থ হয় তাহলে সেদিনের সাওম তার জন্য সহীহ হবে না। কারণ দিনের শুরুতেই সে সাওম ভঙ্গ করেছে। আর সাওম পালন সুবহে সাদিকের সময় থেকে করা ব্যতীত সহীহ হয় না।
কিন্তু ঐ দিনের বাকী অংশ কি তার সাওম পালন করতে হবে?
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামের মতবিরোধ রয়েছে, যা ইতোপূর্বে মুসাফির কর্তৃক সফর অবস্থায় নিজে দেশে সাওম ভঙ্গ করা অবস্থায় ফেরা সম্পর্কিত আলোচনায় গত হয়েছে।
যদি চিকিৎসা দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, সাওম রোগ বৃদ্ধি করবে, তাহলে রোগ থেকে বাঁচার জন্য শারীরিক সুস্থতার দিকে লক্ষ্য রেখে সাওম ভাঙ্গা জায়েয।
যদি এ ঝুঁকি দূর হয়ে যাওয়ার আশা করা যায় তাহলে দূর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। তারপর যেসব সাওম ভেঙ্গেছে তা কাযা করে নেবে। আর যদি তার রোগমুক্তির আশা করা না যায়, তাহলে তার হুকুম হবে পঞ্চম প্রকারের হুকুম; সাওম ভাঙ্গবে এবং প্রত্যেক দিনের পরিবর্তে একজন করে মিসকীন খাওয়াবে।
হে আল্লাহ! আমাদের এমন আমল করার তাওফীক দিন যা আপনাকে সন্তুষ্ট করে। আর আমাদেরকে আপনার অসন্তুষ্টি ও নাফরমানির কারণ থেকে দূরে রাখুন। আর আপনার বিশেষ অনুগ্রহে আমাদেরকে, আমাদের পিতা-মাতাকে এবং সকল মুসলিমকে ক্ষমা করে দিন। আর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর ওপর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/126/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।