hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রোযার ফযীলত ও শিক্ষা আমাদের করণীয়

লেখকঃ মোঃ আব্দুল কাদের

১৬
৩.রমযান এখলাসের মাস
সকল প্রকার ইবাদত, আনুগত্য ও নেক কাজ কবুলের জন্য শর্ত হলো, এখলাস। এখলাস ছাড়া যে কোনো কাজ এমনকি নেক আমলও ধ্বংস টেনে আনে।

এখলাস অর্থ হচ্ছে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের মুক্তির উদ্দেশ্যে নেক কাজ করা। অন্য কোনো উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য নেক কাজ করা যাবে না। সাময়িক ও জাগতিক স্বার্থে কিংবা কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দল, সম্প্রদায়, সংস্থা ও কোনো নেক লোকের সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে কোনো নেক কাজ করা যাবে না। এগুলোর উদ্দেশ্যের মাধ্যমে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা যাবে না। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোনো মাধ্যমকে সন্তুষ্ট করার টার্গেট করা যাবে না। কুরআন, হাদীস এবং ইসলামী শরীয়ত ছাড়া আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আর কোনো উসিলা নেই। কোনো নেক ব্যক্তির কবর, আস্তানা, দেবতা, পুরোহিত এবং দরবেশ আল্লাহর সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি ও তার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম হতে পারে না। তাদের কাছ থেকে ইসলামের বিপরীত নয় এমন সব শিক্ষাই শুধু গ্রহণ করা যেতে পারে, এর বেশী নয়। কুরআন ও হাদীসের বর্ণিত পন্থায়ই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে।

রমযান হচ্ছে, প্রশিক্ষণের মাস। তাই ইতোপূর্বে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও কেবলমাত্র সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে রমযানের রোযা রাখে, আল্লাহ তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেন।

এখানে কেবলমাত্র সওয়াবের কথা বলার উদ্দেশ্য হলো, এখলাসের সাথে রোযা রাখতে হবে। সওয়াব ও আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পরকালের মুক্তির নিয়ত ছাড়া রোযা রাখার পেছনে আর কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারবে না। যেখানে এখলাস ও একনিষ্ঠতা থাকবে সেখানে ‘রিয়া’ বা লোক দেখানোর মনোভাব থাকতে পারবে না। লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোনো নেক কাজ করলে আল্লাহ তা কবুল করেন না। রমযানের রোযা আমাদেরকে লোক দেখানোর মনোবৃত্তি দূর করার ট্রেনিং দেয়।

যে কোনো ইবাদত অন্য লোক দেখতে পায়। যেমন- নামায, যাকাত, হজ্জ, কুরআন পাঠ ইত্যাদি। এমনকি গোপনে দান করলেও দাতা এবং দান গ্রহীতা কমপক্ষে দুই ব্যক্তি জানতে পারে। কিন্তু রোযার বিষয়টি বান্দা ও আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানতে পারে না। কেউ রোযার মাসে গোপনে কিছু খেলে, কিংবা পানিতে ডুব দিয়ে পানি পান করলে কারুর দেখার সাধ্য নেই। একমাত্র আল্লাহর ভয় এবং তার সন্তুষ্টির জন্যই মানুষ রোযা রাখে। সেখানে লোক দেখানোর উদ্দেশ্য নয়; বরং এখলাসের ভিত্তিতে পুরষ্কার লাভ করাই উদ্দেশ্য।

আমাদের অতীতের নেক বান্দাগণ এখলাসের কারণে নেক কাজকে গোপন রাখতেন। হাম্মাদ ইবন যায়েদ প্রখ্যাত তাবে‘ঈ আইউব সাখতিয়ানী সম্পর্কে বলেছেন, আইউব হাদীস বর্ণনা করার সময় খুবই নরম হয়ে যেতেন এবং একদিকে মোড় নিয়ে নাকের শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতেন। তিনি বলতেন, কি কঠিন সর্দি। কান্না গোপন করার কারনেই বাহ্যিকভাবে মনে হতো যে তার সর্দি হয়েছে। [কাইফা নাঈসু রামাদান- আব্দুল্লাহ সালেহ, দারু ওয়াতান প্রকাশনী রিয়াদ, প্রকাশ- ১৪১১ হি:।]

মুহাম্মদ ইবন ওয়াসে‘ বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে এমন পেয়েছি যিনি তার স্ত্রীর সাথে একই বালিশে শয়ন করতেন। তার চোখের পানিতে বালিশ ভিজে যেত কিন্তু স্ত্রী টেরও পেতেন না। আমি আরো এমন ব্যক্তিকে দেখেছি যিনি একই কাতারে নামায পড়ছেন, চোখের পানিতে তার গাল ভেসে গেছে কিন্তু পার্শ্বের মুসল্লী আদৌ টের পাননি। তাবে‘ঈ আইউব সাখতিয়ানী সারা রাত জেগে ইবাদত করতেন, তিনি তা গোপন করার জন্য সকাল বেলায় এমনভাবে আওয়াজ দিতেন যেন তিনি এইমাত্র ঘুম থেকে জেগেছেন। ইবনে আবি আদী বর্ণনা করেছেন, দাউদ ইবন আবি হিন্দ ৪০ বছর নফল রোযা রেখেছেন, তার স্ত্রী আদৌ টের পাননি। তিনি ছিলেন কর্মকার। সকাল বেলা সাথে খাবার নিয়ে যেতেন এবং রাস্তায় তা দান করে দিতেন এবং সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে রাতের খানা খেতেন।

মুখলেস লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:

﴿ إِلَّا ٱلَّذِينَ تَابُواْ وَأَصۡلَحُواْ وَٱعۡتَصَمُواْ بِٱللَّهِ وَأَخۡلَصُواْ دِينَهُمۡ لِلَّهِ فَأُوْلَٰٓئِكَ مَعَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَۖ وَسَوۡفَ يُؤۡتِ ٱللَّهُ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ أَجۡرًا عَظِيمٗا ١٤٦ ﴾ [ النساء : ١٤٦ ]

‘যারা তাওবা করে, সংশোধন করে, আল্লাহকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে এবং নিজেদের দ্বীনকে এখলাস ও নিষ্ঠাপূর্ণ করে, তারা মুমিনদের সাথে রয়েছে। আল্লাহ শীঘ্রই মুমিনদেরকে মহান বিনিময় দান করবেন।’ (সূরা নিসা: ১৪৬)

এই আয়াতে আল্লাহ এখলাস সহকারে নেক কাজের মহান বিনিময়ের কথা ঘোষণা করেছেন।

এখলাসের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। মুখলেস লোকদের জন্য সুসংবাদ। তারা হেদায়েতের বাতি এবং তাদের উপর থেকে সকল অন্ধকারাচ্ছন্ন ফেতনা কেটে যায়।

দাহহাক ইবন কায়েস থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

" أخلصوا أعمالكم لله ، فان الله لا يقبل إلا ما خلص له "

‘তোমরা তোমাদের আমলকে এখলাস ও নিষ্ঠাপূর্ণ করো। আল্লাহ এখলাস ছাড়া কোনো আমল কবুল করেন না।’ [কানযুল উম্মাল,খ৩,পৃ২৩,হাদীস নং৫২৫৮।]

অতএব, আল্লাহ এখলাস ও তার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিবেদিত আমল ছাড়া অন্য কোনো আমল কবুল করেন না।’

বুখারী ও মুসলিম শরীফে ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আগের যুগের উম্মাহর গুহায় অবরুদ্ধ তিনজন লোকের এখলাসের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তাতে তারা তিনজন এমন এমন তিনটি নেক কাজের দোহাই দিয়ে আল্লাহর কাছে গুহার মুখ থেকে পাথর সরিয়ে তাদেরকে মুক্ত করার ফরিয়াদ জানিয়েছিলেন, যাতে এখলাস ও আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। এর দ্বারাও বুঝা যায় যে, এখলাস বিপদ দূর হওয়ার অন্যতম হাতিয়ার।

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, এখলাস ছাড়া কোনো আমল গ্রহণযোগ্য হবে না, তাই এই মহান রমযান মাসে এখলাস ও একনিষ্ঠতা অর্জনের প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের সবাইকে মুখলেস হতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন