hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রোযার ফযীলত ও শিক্ষা আমাদের করণীয়

লেখকঃ মোঃ আব্দুল কাদের

১৯
৬.রমযান কঠোর শ্রম ও প্রশিক্ষণের মাস
রমযান হচ্ছে কঠোর পরিশ্রম ও শ্রম সাধনার প্রশিক্ষণের মাস। পরবর্তী এগার মাসে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানার জন্য এই মাসে বার্ষিক প্রশিক্ষণের ৩০ দিনব্যাপী দীর্ঘ কোর্স সমাপ্ত করতে হয়। এটা হচ্ছে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ কোর্স। আমরা জানি, যে কোনো কাজের জন্য পরিশ্রম প্রয়োজন। লেখা-পড়ায় পরিশ্রম আছে। রুজি-রোজগারেও পরিশ্রম আছে। কৃষিকাজ, চাকুরী, ব্যবসা-বাণিজ্য, সন্তানের প্রতিপালন ও শিক্ষা-দীক্ষা, সৎকাজের আদেশ ও মন্দ কাজের প্রতিরোধ, যুদ্ধ, সন্ধি, দাওয়াতে দ্বীন, দ্বীনি আন্দোলন ও জিহাদ ইত্যাদি কাজে পরিশ্রম রয়েছে। বরং যে যত বেশী পরিশ্রম করবে তার সাফল্যও ততবেশী হবে। গোটা বছরের ইবাদত তথা নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাতসহ অন্যন্য ইসলামী দায়িত্ব পালনেও কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন। রোযা মানুষকে কিভাবে এই কঠোর শ্রমের ট্রেনিং দেয়?

দুনিয়ায় মানুষের চেষ্টা তদবীরকে দুইভাবে ভাগ করা যায়।

ভোগ-বিলাসের জন্য কামাই-রোজগারের চেষ্টা।

পারলৌকিক শাস্তি ও মুক্তির জন্য আল্লাহর ইবাদতের চেষ্টা-প্রচেষ্টা।

মানুষ সাধারণতঃ প্রথমোক্ত কাজেই নিজের বেশীরভাগ সময়, মেধা ও যোগ্যতাকে ব্যবহার করে। উদ্দেশ্য হলো, গাড়ী-বাড়ি ও শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সম্পদের প্রাচুর্য অর্জন করা। আর এক সকল কিছুর মূলে হচ্ছে, ভালভাবে পানাহার করা, সুস্বাদু ও ভাল খাবার গ্রহণ করা এবং নিজের রসনা পূর্ণ করা ও ক্ষুন্নিবৃত্তি নিবারণ করা। কিন্তু রোযা মানুষের এই সর্বাধিক প্রিয় চাহিদার লাগাম টেনে ধরে পুরো দিন সুস্বাদু খাবার থেকে বিরত থাকতে বলে।

যেই খাবারের জন্য গোটা দুনিয়ায় মানুষে হন্যে হয়ে ঘুরছে এবং লড়াই-ঝগড়া মারামারিতে লিপ্ত রয়েছে, সেই মানুষকে খাবার থেকে পুরো দিন বিরত রাখা যে কি কষ্ট তা আমরা অন্য মাসে তুলনা করে বুঝতে পারবো। অন্য মাসে সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবার যদি নির্ধারিত সময়ের চাইতে ঘন্টা দেরী হয় তখন আমরা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ি এবং আর কাজ করা যাবে বলে মত প্রকাশ করি। তখন এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকেও আমরা খাওয়ার কথা বলে বিরতি নিতে পারি। একবেলা খাওয়া বন্ধের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া কি হবে তা দেরীতে খাবারের ক্লান্তি ও দুর্বলতার মানসিকতা থেকেই সহজে অনুমান করা যায়। অথচ রমযানে একাধারে দুই বেলা খাওয়া বন্ধ রাখা হয়। এতে অবশ্যই কষ্ট আছে। সেই কষ্ট ২দিন, ৪দিন কিংবা ১ সপ্তাহ পর্যন্ত হলেও মানকে শান্ত্বনা দেওয়া যেত। কিন্তু দীর্ঘ ১টি মাস এভাবে পরিশ্রম করতে হয়।

পানির পিপাসার কষ্ট তো খাবারের চাইতেও মারাত্মক। কোনো পরিশ্রম বা কাজ করে আসার পর খানা একটু দেরীতে হলেও চলে। কিন্তু পিপাসায় বুকের ছাতি ফেটে যায়। রোদ থেকে আসলে তো আরো ভয়াবহ অবস্থা! কিন্তু রোযার মধ্যে তো দিনে খাদ্য ও পানীয় নিষিদ্ধ। দীর্ঘ ৩০ দিন যাবত একটানা এত কঠোর পরিশ্রম। এ ছাড়াও রয়েছে মানুষের পরবর্তী প্রিয় ও প্রয়োজনীয় বিষয় যৌন বাসনা পূরণ করা। কিন্তু রোযার মধ্যে দিনে তা নিষিদ্ধ। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাঁধার প্রাচীর তুলে নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার অভ্যাস সৃষ্টি করা হয় দীর্ঘ এক মাসব্যাপী এই রমযানে।

সন্ধ্যায় সূর্য ডুবার সাথে সাথে ইফতার। কিন্তু শরীরের অবস্থা হচ্ছে খুবই দুর্বল ও অবসাদগ্রস্ত। তখন যদি ইফতারের পর শুয়ে আরাম করা যেত, কতইনা ভাল হতো! কিন্তু সামান্য পরেই একামতে বলা হচ্ছে, ‘কাদ কামাতিস সালাহ’ অর্থাৎ নামায শুরু হয়ে যাচ্ছে। ক্লান্তির দাবী ছিল, মাগরিব না পড়া ও রমযানে তা মাফ করে দেওয়া কিন্তু তাতো হয়নি।

মাগরিব থেকে আসার পর শরীরের দাবী হচ্ছে, পূর্ণ বিশ্রাম তথা ঘুম। কিন্তু একটা পরেই রয়েছে এশা ও তারাবারী নামাযের আহবান। অবসাদগ্রস্ত শরীরের যেখানে এশা পড়াই দায়, সেখানে আবার রয়েছে তারাবীর মতো অতিরিক্ত নামাযের ব্যবস্থা। তাও যদি ২/৪ রাকাত হতো, তাহলে কোনো রকম চলতো। কিন্তু তা কমপক্ষে ৮/১০ রাকাত থেকে ২০ রাকাত পর্যন্ত। যদি তা সংক্ষিপ্ত সূরার মাধ্যমে শেষ করা হতো, তাহলে বাঁচা যেত। কিন্তু তাতেও আবার খতমে কুরআন উত্তম। বলতে গেলে পরিশ্রমের উপর পরিশ্রম এবং কষ্টের উপর কষ্ট। যাকে বলে শাঁকের উপর আঁটির বোঝা।

তারাবীর নামায শেষ করে ফিরে এসে ফজর পর্যন্ত একটানা শুয়ে থাকা হচ্ছে ক্লান্ত শরীরের অনিবার্য দাবী, কিন্তু তাও পূরণ করা যাচ্ছে না। ভোর রাত্রে উঠে সেহরী খাওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে সারা রাত জেগে জেগে ইবাদত ও তাহাজ্জুদ পড়ার তাগিদ। এর দ্বারা কি এ কথা বুঝা যায় না যে, রমযানে আরামের সর্বশেষ চিহ্নটুকুকেও মুছে দেয়ার চেষ্টা কার্যকর আছে? পরিশ্রমের উত্তম কর্মসূচী এর চাইতে আর কি হতে পারে? দীর্ঘ একমাস একটানা এই কঠোর শ্রম-সাধনার পেছনে আল্লাহর যে ইচ্ছা কাজ করে, তা হলো, মুসলিম মিল্লাত কখনো অলস, শ্রম বিমুখ ও নিষ্ক্রিয় হতে পারে না। জগতের চাকাকে সচল রাখার জন্য তাদেরকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। তাহলে, আল্লাহর কোনো আদেশ নিষেধই তাদের কাছে কঠিন মনে হবে না।

একাকী ও ব্যক্তিগতভাবে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই প্রশিক্ষণের সুযোগ দিলে কারুর পক্ষেই ৩০ দিনব্যাপী রোযা রাখা সম্ভব হতো না। কিন্তু রমযানের বরকতে আল্লাহ এ সকল কষ্ট এতো সহজ করে দিয়েছেন যে, রমযান কিভাবে শেষ হয়ে যায় রোযাদারেরা তা টেরও পায় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন