hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রোযার ফযীলত ও শিক্ষা আমাদের করণীয়

লেখকঃ মোঃ আব্দুল কাদের

১৮
৫.রমযান ধৈর্য ও সংযমের মাস
বাস্তব জীবনে ধৈর্যের প্রয়োজন অনেক বেশী। তাই আল্লাহ রমযানকে ধৈর্যের একটি বিজ্ঞানসম্মত কর্মসূচী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। মাঝে মাঝে ধৈর্য কমে যায়। তখন পানাহার ও যৌন চাহিদা থেকে দীর্ঘ এক মাস বিরত রাখার মাধ্যমে তাকে মজবুত করা হয়। দাওয়াতে দ্বীন ও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর কষ্ট সহ্য করার জন্য ধৈর্যের ভীষণ প্রয়োজন। শত্রুরা কিংবা অজ্ঞ লোকেরা গালি-গালাজ ও হাসি-ঠাট্টা করবে। ধৈর্যের সাথে এর মোকাবিলা করে হেকমতের সাথে দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যেতে হবে। জিহাদে জান-মালের কোরবানীর জন্য সর্বাধিক ধৈর্য ধারণা না করে উপায় কি? কিন্তু তা কত কঠিন! ধৈর্য ধারণ করতে পারলে তাদের জন্য আল্লাহ পুরষ্কারে সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেন:

﴿ وَبَشِّرِ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٥٥ ٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَٰبَتۡهُم مُّصِيبَةٞ قَالُوٓاْ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّآ إِلَيۡهِ رَٰجِعُونَ ١٥٦ ﴾ [ البقرة : ١٥٥، ١٥٦ ]

‘সরবরাহকারীদেরকে সুসংবাদ দিন যারা বিপদগ্রসস্ত হলে বলে, অবশ্যই আমরা আল্লাহর জন্য এবং তাঁরই দিকে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে।’ (সূরা আল বাকারা:১৫৫-১৫৬)

কোনো কিছু হারিয়ে গেলেও ধৈর্য ধারণ করতে হবে। বিভিন্ন বিপদ-মুসিবতে ধৈর্যের প্রয়োজন রয়েছে। অভাব-অনটন ও দারিদ্র দেখা দিলে হারাম আয়ের প্রাচুর্যের দিকে না গিয়ে সীমিত হালাল রোজগারের উপর ধৈর্য ধারণ করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেছেন:

﴿وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ ﴾ [ الطلاق : ٢، ٣ ]

‘যারা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে ও তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলে, তিনি তাদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।’ (সূরা আত তালাক:২-৩)

বাস্তব জীবনের প্রতিটি পদের ধৈর্যের প্রয়োজন। যার ধৈর্য বেশী, তার পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি বেশি। তিনি সবার কাছে প্রিয়পাত্রে পরিণত হবেন। পক্ষান্তরে, যার ধৈর্য কম তিনি সবার কাছে অপ্রিয়, খিটখিটে মেজাজ কিংবা বদমেজাজী বলে পরিচিত হবেন। লোকেরা তার কাছ থেকে দূরে সরতে চাইবে।

একজন মুসলিম থেকে যদি অন্যরা দূরে সরে যায় তাহলে তিনি কিভাবে দাওয়াতী কাজ ও সমাজ সংশোধনের দায়িত্ব আঞ্জাম দেবেন?

ধৈর্য মুমিনের সাফল্যের চাবিকাঠি। তাই প্রবাদ আছে, ‘ধৈর্য প্রশস্ততার চাবিকাঠি।’ রোযার অপর নাম হচ্ছে সবর। এতে বুঝা যায়, রমযানের সাথে ধৈর্যের মূল অর্থ ও তাৎপর্যের বিরাট মিল রয়েছে। রোযায় আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজগুলো পরহেজ করে চলতে হয়। এটা হচ্ছে ধৈর্যের অর্ধেক। অপর অর্ধেক হচ্ছে তাঁর আনুগত্য ও ইবাদত করা। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন:

﴿ إِنَّمَا يُوَفَّى ٱلصَّٰبِرُونَ أَجۡرَهُم بِغَيۡرِ حِسَابٖ ١٠ ﴾ [ الزمر : ١٠ ]

‘ধৈর্য ধারণকারীদেরকে বিনা হিসেবে তাদের পুরষ্কার দেওয়া হবে।’ (সূরা যুমার:১০)

ধৈর্যের পুরষ্কার কত বিরাট আমরা সহজেই তা অনুমান করতে পারি। আল্লাহ তাদেরকে বেহিসাবে পুরষ্কারে ভূষিত করবেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٥٣ ﴾ [ البقرة : ١٥٣ ]

‘আল্লাহ ধৈর্য ধারণকারীদের সাথে আছেন।’ (সূরা আল বাকারা:১৫৩)

ধৈর্যের সাথে রমযানের সম্পর্ক কি তা আমাদেরকে বুঝতে হবে। ধৈর্য তিন প্রকার। ১. আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদতের কষ্ট স্বীকারের ধৈর্য, ২. আল্লাহর নিষিদ্ধ ও হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকার জন্য যে কষ্ট হয় সে ব্যাপারে ধৈর্য, ৩. তাকদীর বা ভাগ্যের কষ্টদায়ক জিনিসের মোকাবিলায়ও ধৈর্য ধারণ করতে হয়।

রমযানের মধ্যে এই তিন ধরনের ধৈর্যই পাওয়া যায়। কেননা, রমযানে আল্লাহর আদেশের আনুগত্য করা এবং নিষিদ্ধ ও হারাম কাজ থেকে বিরত থাকার কষ্ট আছে। এছাড়াও ক্ষুধা-পিপাসা, শারীরিক দুর্বলতাসহ ভাগ্যলিপির যন্ত্রণা এবং কষ্টও রয়েছে। এজন্য রমযানকে ধৈর্যের মাস বলা হয়েছে। তাই এ মাসে ধৈর্যের প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং পরবর্তীতে তার বাস্তবায়ন করতে হবে।

ধৈর্যের আরো অনেক ফযীলত আছে। বিপদ আসলে সবরের প্রশ্ন দেখা দেয়। সেই বিপদে মুমিনকে ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিতে হয়। সকল পরীক্ষা ও বিপদ-আপদে সবরের প্রশ্ন জড়িত। রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনে রয়েছে ধৈর্যের উত্তম নমুনা। তিনি যখন দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্যে তায়েফে গিয়ে প্রহৃত হন, তখন তাদের জন্য অধৈর্য হয়ে বদ দো‘আ করেননি। বরং বলেছেন, হে আল্লাহ! তারা অজ্ঞ, তারা জানে না, আপনি তাদেরকে হিদায়াত করুন।

হিজরতের গোপন অভিযানের সময় এক পাহাড় কষ্টের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও বদদো‘আর একটিমাত্র বাক্যও উচ্চারিত হয়নি তাঁর পবিত্র মুখ থেকে। শুধু ধৈর্য দিয়েই তিনি এ কঠোর পর্যায় অতিক্রম করেছেন।

অনুরূপভাবে, মক্কায় তাকে জাদুকর, গণক ও পাগল বলে গালি-গালাজের ঝড়ের মুখে অটল পাহাড়ের মতো ধৈর্য ধারণ করেছেন। নবী ইবরাহীম (আ) কে নমরুদের অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপের সময় তাঁর কোনো পেরেশানী ছিল না। সন্তুষ্টিচিত্রে ও হাসিমুখে তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন।

খুবাইব ইবনে আদী রাদিয়াল্লাহু আনহু কে মক্কার কুরাইশরা যখন হত্যার উদ্দেশ্যে শূলে চড়ানোর প্রস্তুতি নেয় তখন চরম ধৈর্য ছাড়া তাঁর মুখ থেকে আর কোনো শব্দ ও পেরেশানী উচ্চারিত হয়নি।

একদিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মসজিদে হাঁটার সময় তাঁর পা এক শোয়া ব্যক্তির গায়ে লাগে। লোকটি বললো, তুমি কি পাগল? ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু উত্তর দিলেন, ‘না’। খলীফা ওমরের রক্ষীরা বললেন, হে আমীরুল মোমিনীন! এই বে’আদব লোকটিকে শাস্তি দেওয়া দরকার। খলীফা বললেন, সে জিজ্ঞেস করেছে আমি পাগল কিনা, আমি উত্তর দিয়েছি, ‘না’। এরপর আর শাস্তির কি থাকতে পারে?

ব্যক্তি,পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক জীবনকে সুখী ও উত্তেজনামূক্ত রাখার জন্য ধৈর্যের প্রয়োজন। আর রমযান ও ধৈর্যের সওগাত নিয়েই বছরে একবার আমাদের দুয়ারে হাজিরা দেয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন