HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কান্নার ফযীলত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২
যেসব কারণে কান্না আসে না
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করাটাও হচ্ছে একটি বিশেষ নিয়ামত। তবে কিছু কারণ রয়েছে, যা মানুষকে কান্না থেকে বিরত রাখে। নিম্নে উক্ত বিষয়সমূহ উল্লেখ করা হলো :

১. বেশি কথা বলা :

এ কথা স্পষ্ট যে, বেশি কথা বলা মূর্খতার পরিচায়ক। কেননা মূর্খরা আল্লাহ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে না এবং তাকে ভয় করে না। সুতরাং তাদের পক্ষে আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করাও সম্ভব হয় না। আর এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা অতিরিক্ত কথা বলাকে অপছন্দ করেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ الشَّعْبِيِّ حَدَّثَنِيْ كَاتِبُ الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ كَتَبَ مُعَاوِيَةُ إِلَى الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ أَنْ اكْتُبْ إِلَيَّ بِشَيْءٍ سَمِعْتَهُ مِنْ النَّبِيِّ فَكَتَبَ إِلَيْهِ سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ إِنَّ اللهَ كَرِهَ لَكُمْ ثَلَاثًا قِيْلَ وَقَالَ وَإِضَاعَةَ الْمَالِ وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ

শা‘বী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে মুগীরা ইবনে শু‘বার লেখক হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একবার মুয়াবিয়া (রাঃ) মুগীরা ইবনে শু‘বাকে পত্র লিখলেন যে, আমাকে এমন কিছু (কথা) লিখে প্রেরণ করো যা তুমি নবী ﷺ হতে শুনেছ। তখন তিনি (মুগীরা) তাকে (মুয়াবিয়াকে) লিখলেন, আমি নবী ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তোমাদের জন্য তিনটি কাজ পছন্দ করেন না। (১) অপ্রয়োজনীয় কথা বলা, (২) সম্পদ নষ্ট করা, (৩) এবং বেশি বেশি প্রশ্ন করা। [সহীহ বুখারী, হা/১৪৭৭; সহীহ মুসলিম, হা/৪৫৮০; বায়হাকী, হা/১১৬৭৪; সুনানে দারেমী, হা/২৮০৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮১৪৭; মিশকাত, হা/৪৯১৫।]

২. বেশি বেশি হাসাহাসি করা :

মানুষ অনেকটাই হাসিপ্রবণ। হাসাহাসির মধ্যে ডুবে থাকতে তারা বেশি পছন্দ করে। কিন্তুত্মুত্মুত্মু অতিরিক্ত হাসাহাসি করা তাদের জন্য ক্ষতির বড় কারণ। রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে বেশি হাসাহাসি করা থেকে নিষেধ করেছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ لَا تُكْثِرُوا الضِّحْكَ فَإِنَّ الضِّحْكَ تُمِيْتُ الْقَلْبَ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা বেশি হাসাহাসি করো না। কেননা অতিরিক্ত হাসাহাসি অন্তরকে মেরে ফেলে। [ইবনে মাজাহ, হা/৪১৯৩; তিরমিযী, হা/২৩০৫; শু‘আবুল ঈমান, হা/৯৫৪৩; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৬২৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৪০৮১; মিশকাত, হা/৫১৭১।]

অত্র হাদীসে বর্ণিত অন্তর মরে যাওয়া বলতে ঐ অন্তরকে বুঝানো হয়েছে, যা সর্বদা কঠোরতা অবলম্বন করে এবং যে অন্তর আল্লাহর ভয়ে ভীত হয় না। আর যে অন্তর এরূপ পর্যায়ে চলে যায়, সে অন্তরে কখনো কান্না আসতে পারে না।

একদা হাসান এক যুবকের পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। সে সময় ঐ যুবক মজলিসে বসে হাসাহাসির মধ্যে মগ্ন ছিল। তখন তিনি তাকে বললেন, হে যুবক! তুমি কি পুলসিরাত পার হয়েছ? সে বলল, না। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান যে, তোমার গমন জান্নাতের দিকে হচ্ছে নাকি জাহান্নামের দিকে? সে বলল, না। এরপর তিনি বললেন, তাহলে এই হাসি কিসের? এরপর থেকে ঐ যুবককে আর হাসতে দেখা যায়নি। [আবু তারেক, আল-বুকা মিন খাসিয়াতিল্লাহ, পৃ: ১৪।]

৩. বেশি আহার করা :

আহার করাটা হচ্ছে মানুষের জীবনধারণের প্রধান মাধ্যম। তবে অতিরিক্ত আহার করাটা ক্ষতির অন্যতম কারণ। কেননা এরূপ আহার করলে মানুষ ক্রমেই এর দিকে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং তার কাছে ঈমান ও ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। বিশর ইবনে হারিস (রহ.) বলেন- দুটি অভ্যাস আছে, যা অন্তরকে কঠিন করে দেয়। একটি হচ্ছে, বেশি কথা বলা। অপরটি হচ্ছে বেশি আহার করা। [আবু তারেক, আল-বুকা মিন খাসিয়াতিল্লাহ, পৃ: ১৪।]

হাদীসে এসেছে,

عَنْ مَيْمُوْنَةَ قَالَتْ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : اَلْمُؤْمِنُ يَأْكُلُ فِي مِعًى وَاحِدٍ، وَالْكَافِرُ يَأْكُلُ فِي سَبْعَةِ أَمْعَاءٍ .

মায়মূনা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি এক নাড়িতে আহার করে। আর কাফির সাত নাড়িতে আহার করে। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/১৬৪৭; সহীহ বুখারী, হা/৫৩৯৩; সহীহ মুসলিম, হা/৫৪৯৩; তিরমিযী, হা/১৮১৮; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৫৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৪৭১৮।]

মুহাদ্দীসগণ এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, মুমিন ব্যক্তির খাবারের প্রতি লোভ কম থাকে। এজন্য সে অল্প খেয়েও তৃপ্তি লাভ করে। আর কাফির ব্যক্তির খাবারের প্রতি লোভ বেশি থাকে। এজন্য সে বেশি খেলেও তৃপ্ত হয় না।

৪. বেশি পাপ করা :

পাপ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। যারা নিয়মিত পাপ কাজ করে থাকে, তাদের অন্তরে কালো দাগ পড়ে যায়, এমনকি সেটা তাদের অন্তর ছেয়ে ফেলে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ قَالَ إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا أَخْطَأَ خَطِيْئَةً نُكِتَتْ فِيْ قَلْبِهٖ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ فَإِذَا هُوَ نَزَعَ وَاسْتَغْفَرَ وتَابَ سَقَلَ قَلْبُه وَإِنْ عَادَ زِيْدَ فِيْهَا حَتّٰى تَعْلُوْ قَلْبُه وَهُوَ الرَّانُ الَّذِيْ ذَكَرَ اللهُ ﴿ كَلَّا بَلْ رَانَ عَلٰى قُلُوْبِهِمْ مَّا كَانُوْا يَكْسِبُوْنَ﴾

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, বান্দা যখন কোন গুনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে। অতঃপর যখন সে তা হতে বিরত হয়, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তওবা করে তখন তার অন্তর খালি হয়। কিন্তুত্মুত্মুত যদি সে আবার পাপ করে তাহলে ঐ দাগ আরো বাড়তে থাকে। এমনকি ঐ দাগে তার অন্তর ছেয়ে যায়। আর এটাই হচ্ছে সেই দাগ যার কথা কুরআনের এ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘সাবধান! তারা যে পাপ অর্জন করেছে তার ফলে তাদের অন্তরে মরিচা ধরে গেছে’’ (সূরা মুতাফফিফীন- ১৪)। [তিরমিযী, হা/৩৩৩৪।]

মূলত যেসব অন্তরে কালো দাগ পড়ে যায়, সেসব অন্তর আল্লাহর ভয়ে ভীত হয় না। বরং সেসব অন্তর সর্বদা আল্লাহর অবাধ্যতায় মত্ত থাকে। তাই এসব অন্তরও আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে না। এজন্যই রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে নিজেদের পাপের কারণে বেশি বেশি কান্নাকাটি করতে বলেছেন, যাতে করে আমাদের হৃদয় নরম হয়। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ : قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا النَّجَاةُ ؟ قَالَ أمْسِكْ عَلَيْكَ لِسَانِكَ وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ وَابْكِ عَلٰى خَطِيْئَتِكَ

উকবা ইবনে আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূল ﷺ এর সাথে সাক্ষাতের সময় আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! নাজাতের পথ কী? তিনি বললেন, তুমি তোমার জিহবাকে আয়ত্তে রাখবে, নিজেকে ঘরে আবদ্ধ রাখবে এবং তোমার পাপের জন্য কান্নাকাটি করবে। [তিরমিযী, হা/২৪০৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪৮৮; মিশকাত, হা/৪৮৮৭।]

৫. খারাপ লোকদের সঙ্গী হওয়া :

আল্লাহর ভয়ে কান্না না আসার অন্যতম কারণ হচ্ছে খারাপ লোকদের সাথে চলাফেরা করা। যারা সর্বদা আল্লাহর অবাধ্যতায় ব্যস্ত থাকে, তারা তাদের বন্ধুকে সেদিকেই আহবান করে। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে এমন লোক কখনো খারাপ লোকদের সঙ্গী হতে পারে না। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ مُوسٰى عَنِ النَّبِيِّ قَالَ مَثَلُ الْجَلِيْسِ الصَّالِحِ وَالسَّوْءِ كَحَامِلِ الْمِسْكِ وَنَافِخِ الْكِيْرِ فَحَامِلُ الْمِسْكِ إِمَّا أَنْ يُحْذِيَكَ وَإِمَّا أَنْ تَبْتَاعَ مِنْهُ وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيْحًا طَيِّبَةً وَنَافِخُ الْكِيْرِ إِمَّا أَنْ يُحْرِقَ ثِيَابَكَ وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ رِيْحًا خَبِيْثَةً

আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, সৎসঙ্গী এবং অসৎ সঙ্গীর উদাহরণ হলো এমন দু’ব্যক্তির মতো- যার একজন হলো মিশকে আম্বর বহনকারী এবং অন্যজন হলো কামারের হাঁপড় চালনাকারী। মিশকে আম্বরওয়ালা হয় তোমাকে নিজের থেকেই কিছুটা দিয়ে দেবে, না হয় তুমি তার থেকে কিনে নেবে অথবা তুমি তার থেকে এমনিতেই সুঘ্রাণ লাভ করবে। অপর দিকে কামারের হাঁপড় চালনাকারী হয় তোমার কাপড় জ্বালিয়ে দেবে, না হয় তুমি তার থেকে এমনিতেই দুর্গন্ধ পাবে। [সহীহ বুখারী, হা/৫৫৩৪; সহীহ মুসলিম, হা/৬৮৬০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৯৬৬০; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৬১।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন