মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহর ভয়ে কান্না করার প্রধান উপায় হচ্ছে, আল্লাহর পরিচয় ও তাঁর গুণাবলি সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত হওয়া। কেননা যে ব্যক্তি এরূপ করবে, তার মনে আল্লাহর ভয় জেগে উঠবে এবং সে তার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। ফলে তার অন্তর নরম হয়ে যাবে এবং চোখ দিয়ে পানি ঝরবে। কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি তার প্রতিপালক সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে, তাহলে তার অন্তর কঠিন হয়ে যায় এবং তার চক্ষু শুকিয়ে যায়। তাছাড়া যখন আল্লাহ তা‘আলা কোন বান্দাকে পরিত্যাগ করেন, তখন সেই বান্দা থেকে তাঁর ভয়ে ক্রন্দন করার বৈশিষ্ট্যটি ছিনিয়ে নেন। ফলে তার অন্তর কঠিন হয়ে যায়।
আল্লাহ অসীম অনুগ্রহের মালিক। তার রহমতের শেষ নেই। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট থেকে শুনেছি যে, আল্লাহ যেদিন রহমত সৃষ্টি করেছেন সেদিন রহমতকে একশত ভাগে ভাগ করে একভাগ সমস্ত সৃষ্টিকে দিয়েছেন, আর বাকি নিরানববই ভাগ নিজের কাছে রেখেছেন। আল্লাহর নিকট যে রহমত আছে যদি কোন কাফির তার পরিমাণ সম্পর্কে জানত, তাহলে সে জান্নাতের ব্যাপারে নিরাশ হতো না। (অপরপক্ষে) আল্লাহর কাছে যে শাস্তি রয়েছে কোন মুমিন যদি তার পরিমাণ সম্পর্কে জানত, তবে (জাহান্নামের) আগুন থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করত না। [সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৯।]
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَاللهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيْمِ﴾
আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল। (সূরা আলে ইমরান- ৭৪)
﴿وَرَبُّكَ الْغَفُوْرُ ذُو الرَّحْمَةِ﴾
আর তোমার প্রতিপালক পরম ক্ষমাশীল ও দয়াবান। (সূরা কাহফ- ৫৮)
আর আমার অনুগ্রহ প্রত্যেক বস্তুর উপর বিস্তৃত। সুতরাং আমি সেটা তাদের জন্য নির্ধারণ করব যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং আমার নিদর্শনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। (সূরা আ‘রাফ- ১৫৬)
আল্লাহকে ভালোবাসা এবং তাঁর ব্যাপারে ভয় ও আশা পোষণ করা :
ঈমানের বিষয়সমূহ হচ্ছে, ভালোবাসা, ভয় এবং আশা। আর এ তিনটি গুণই প্রত্যেক মুসলিমকে ক্রন্দন করার দিকে আহবান করে। কেননা ভালোবাসার ব্যক্তি তার ভালোবাসা পাওয়ার জন্যই ক্রন্দন করে থাকে, ভয়কারী ব্যক্তি পৃথক হওয়ার ভয়েই ক্রন্দন করে থাকে, আবার আশা পোষণকারী ব্যক্তি আকাঙ্খিত জিনিস পাওয়ার জন্যই ক্রন্দন করে থাকে।
সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভালোবাসবে সে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার জন্যই ক্রন্দন করবে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করবে সে আল্লাহর থেকে পৃথক হওয়ার ভয়েই ক্রন্দন করবে, আবার যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগ্রহ পাওয়ার আশা পোষণ করবে সে তা পাওয়ার জন্যই ক্রন্দন করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
তোমরা ভয় ও আশা নিয়েই একমাত্র আল্লাহকে ডাকো; নিশ্চয় আল্লাহর রহমত নেক লোকদের অতি নিকটে। (সূরা আ‘রাফ- ৫৬)
ইসলামের হুকুম-আহকাম মেনে চলা :
ইসলামের হুকুম-আহকাম মানুষকে তাকওয়ার দিকেই ধাবিত করে। আর তাকওয়া অর্জন করতে পারলেই অন্তরে ক্রন্দনের ভাব সৃষ্টি হয়। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করতে চাইলে অবশ্যই ইসলামের সকল হুকুম-আহকাম মেনে চলা জরুরি। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
হে মুমিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং তোমরা যখন তার কথা শ্রবণ কর তখন তা হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। আর তোমরা তাদের ন্যায় হয়ো না, যারা বলে- শ্রবণ করলাম; বস্তুত তারা শ্রবণ করে না। (সূরা আনফাল- ২০, ২১)
আল্লাহর নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে চিন্তা করা :
আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছুই আল্লাহর নিদর্শন। এসব নিদর্শন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে আল্লাহর পরিচয়, তার ক্ষমতা, তার দয়া ও কোমলতা ইত্যাদি বিষয় পরিষ্ফুটিত হয়ে যায়। এতে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি অন্তর নরম হয়ে যায় এবং তাকওয়া বৃদ্ধি পায়। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করতে হলে আল্লাহর নিদর্শনসমূহ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা খুবই জরুরি। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
তুমি কি লক্ষ্য করনি? আল্লাহ আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। তারপর আমি তা দিয়ে নানা বর্ণের ফলমূল উৎপন্ন করি। আর পর্বতমালারও রয়েছে বিভিন্ন বর্ণের গিরিপথ- সাদা, লাল ও ঘোর কালো। আর এভাবে মানুষ, বিভিন্ন প্রাণী ও চতুষ্পদ জন্তুও বিভিন্ন বর্ণের হয়ে থাকে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপ্রতাপশালী ও পরম ক্ষমাশীল। (সূরা ফাতির- ২৭, ২৮)
আল্লাহর অনুগ্রহ সম্পর্কে চিন্তা করা :
পৃথিবীটা আল্লাহর অনুগ্রহের ভান্ডার। তিনি আমাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। আমরা তাঁর অনুগ্রহের কাছে একেবারেই অসহায়। আল্লাহর এসব অনুগ্রহের কথা চিন্তা-ভাবনা করলেও অন্তর তাঁর প্রতি বিনয়ী হয়ে উঠে। আর বিনয়ী অন্তরেই কান্নার ভাব জাগ্রত হয়। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করতে হলে সর্বদাই তাঁর অনুগ্রহের কথা চিমত্মা করা উচিত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
তিনিই আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন। তাতে তোমাদের জন্য রয়েছে পানীয় এবং তা হতে জন্মায় উদ্ভিদ, যাতে তোমরা পশুচারণ করে থাক। তিনি তোমাদের জন্য তার দ্বারা জন্মান শস্য, যায়তুন, খেজুর, আঙ্গুর এবং সর্বপ্রকার ফল। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন। তিনিই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রজনী, দিবস, সূর্য এবং চন্দ্রকে। আর নক্ষত্ররাজিও অধীন হয়েছে তাঁরই নির্দেশে। অবশ্যই এতে বোধশক্তিসম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিশ্চিত নিদর্শন। আর তিনি নানা রঙের বস্তু তোমাদের জন্য পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিশ্চিত নিদর্শন সে সম্প্রদায়ের জন্য, যারা উপদেশ গ্রহণ করে। তিনিই সমুদ্রকে অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা তা হতে তাজা মৎস আহার করতে পার এবং তা হতে সংগ্রহ করতে পার রত্নাবলি, যা তোমরা ভূষণরূপে পরিধান কর। তোমরা দেখতে পাও যে, তার বুক চিরে নৌযান চলাচল করে। আর এটা এজন্য যে, যেন তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পায়। তিনি পৃথিবীতে সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে আন্দোলিত না হয় এবং স্থাপন করেছেন নদ-নদী ও পথ, যাতে তোমরা তোমাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পার এবং পথ নির্ণায়ক চিহ্নসমূহও। আর তারা নক্ষত্রের সাহায্যেও পথের নির্দেশ পায়। সুতরাং যিনি সৃষ্টি করেন, তিনি কি তার মতো হবেন যে সৃষ্টি করে না? তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না? তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে সেটার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। অবশ্যই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা নাহল, ১০-১৮)
খারাপ সঙ্গী বর্জন করা :
আল্লাহর ভয়ের অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে, খারাপ সঙ্গী বর্জন করে সৎ সঙ্গীদের নিকবর্তী হওয়া। কেননা খারাপ সঙ্গী সর্বদা আল্লাহর অবাধ্যতার দিকে আহবান করে। পক্ষান্তরে সৎসঙ্গী আল্লাহভীতির দিকে আহবান করে এবং এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও। (সূরা তাওবা- ১১৯)
হালাল খাদ্য খাওয়া :
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করার উপায় হিসেবে হালাল খাদ্য ভক্ষণ করার ভূমিকাও অপরিসীম। কেননা ইবাদাত কবুলের পূর্বশর্ত হচ্ছে হালাল খাদ্য ভক্ষণ করা। হারাম খাদ্য ভক্ষণ করলে মানুষের অন্তর ক্রমেই হারামের দিকে ঝুকে পড়ে। আর মানুষ যখন হারামের দিকে ঝুকে যায় তখন তার অন্তর থেকে আল্লাহর ভয় উঠে যায়। ফলে তার পক্ষে কান্না করা সম্ভব হয় না। হাদীসে এসেছে
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, হে লোকসকল! নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া কোনকিছু গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা‘আলা নবীদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুমিনদেরকেও একই নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘‘হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র জিনিস খাও এবং নেক আমল করো। নিশ্চয় তোমরা যা কর সে বিষয়ে আমি অবগত আছি।’’ (সূরা মু’মিনূন- ৫১)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন, ‘‘হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দান করেছি তা থেকে তোমরা পবিত্র জিনিস খাও।’’ (সূরা বাকারা- ১৭২)
অতঃপর তিনি এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন যে দীর্ঘ সফর করে, এলোমেলো কেশবিশিষ্ট, ধূলোমলিন শরীর, সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং হারামের দ্বারা সে প্রতিপালিত হয়েছে; সুতরাং কিভাবে তার দু‘আ কবুল হবে? [সহীহ মুসলিম, হা/ ২৩৯৩; মিশকাত, হা/ ২৭৬০।]
উপদেশ শ্রবণ করা :
যেসব বিষয় মানুষকে প্রভাবিত করে, তার মধ্যে উপদেশ শ্রবণ করাও হচ্ছে অন্যতম। রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন মানুষকে কঠিন ভাষায় উপদেশ প্রদান করতেন, তখন সাহাবীগণ খুবই প্রভাবিত হতেন এবং কান্না করতেন। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করতে হলে অবশ্যই বেশি বেশি উপদেশ শ্রবণ করা প্রয়োজন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আর তুমি উপদেশ প্রদান করো, কেননা উপদেশ দেওয়ার মধ্যে মুমিনদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। (সূরা যারিয়াত- ৫৫)
ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা :
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে, ইসলাম সম্পর্কে অধিক জ্ঞান অর্জন করা। কেননা জ্ঞানীরাই আল্লাহকে বেশি ভয় করে থাকে। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
নিশ্চয় আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপ্রতাপশালী ও পরম ক্ষমাশীল। (সূরা ফাতির- ২৮)
কুরআন তিলাওয়াত করা এবং তা নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা :
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করার একটি উত্তম উপায় হলো, বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা এবং তা নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা। কেননা এরূপ করলে আল্লাহর পরিচয় ব্যক্তির অন্তরে স্পষ্ট হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে আল্লাহর ভয় অন্তরের মধ্যে গেঁথে যায়। আর এ কারণেই প্রকৃত আলেমদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কুরআন তিলাওয়াত শুনে ক্রন্দন করা। আল্লাহ তা‘আলা পূর্ববর্তী সৎ আলেমদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
নিশ্চয় ইতিপূর্বে যাদেরকে (কিতাবের) জ্ঞান দেয়া হয়েছে, যখনই তাদের নিকট তা (কুরআন) পাঠ করা হয়, তখনই তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। তারা বলে, আমাদের প্রতিপালক পবিত্র। আর আমাদের প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবেই। আর তারা কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে। (সূরা বনী ইসরাঈল, ১০৭-১০৯)
বিনয়ী হওয়া :
বিনয়ী হওয়াটা আল্লাহভীরু লোকদের অন্যতম গুণ। একমাত্র বিনয়ী ব্যক্তির পক্ষেই আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করা সম্ভব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আমি যদি এ কুরআন পর্বতের উপর অবতীর্ণ করতাম তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ হয়ে গেছে। (সূরা হাশর- ২১)
কিয়ামতের ভয়াবহতা সম্পর্কে চিন্তা করা :
কিয়ামতের দিনের পরিস্থিতি হবে খুবই ভয়াবহ। পৃথিবীতে আগত সকল মানুষকে এ সময় একত্রিত করা হবে এবং সকলকে তাদের কৃতকর্মের পুরস্কার প্রদান করা হবে। যার কারণে সকলেই নিজ নিজ আমলনামা নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকবে। সেদিন বিচারকের আসনে বসবেন আল্লাহ তা‘আলা নিজেই। আর তিনি কারো প্রতি অবিচার করবেন না। কিয়ামতের দিনের এসব কঠিন পরিস্থিতির কথা চিন্তা করলেও অন্তরে আল্লার ভয় সৃষ্টি হয় এবং কান্নার ক্ষেত্র তৈরি হয়। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করতে হলে কিয়ামতের ভয়াবহতা সম্পর্কে চিন্তা করাও অত্যাবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
হে মানুষ সকল! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো। নিশ্চয় কিয়ামতের কম্পন এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার। যেদিন তোমরা সেটা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন প্রত্যেক সত্মন্যদানকারিণী তার শিশুকে দুধ পান করাতে ভুলে যাবে, প্রত্যেক গর্ভবতী গর্ভপাত করে ফেলবে এবং মানুষকে দেখবে মাতাল অবস্থায়, যদিও তারা মাতাল নয়। বস্তুত আল্লাহর শাসিত্ম খুবই কঠিন। (সূরা হজ্জ- ১, ২)
মৃত্যুকে স্মরণ করা :
মৃত্যু একটি চিরসত্য বিষয়, যার কবলে প্রত্যেকটি প্রাণীকেই পড়তে হবে। আর তা মানুষের যাবতীয় কর্মকান্ডকে থামিয়ে দেবে এবং এমন জীবনের সূচনা হবে যেখানে বিপদে কোন সাহায্যকারী থাকবে না । তাই এই ভয়াবহ যাত্রার কথা স্মরণ করলেই অমত্মর নরম হবে এবং কান্না চলে আসবে। হাদীসে এসেছে,
সাফিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা একজন মহিলা আয়েশা (রাঃ) এর নিকট এসে অমত্মর কঠিন হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ করল। অতঃপর আয়েশা (রাঃ) বললেন, তুমি বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করো তাহলে তোমার অমত্মর নরম হবে এবং তুমি তোমার প্রয়োজন পূরণে সক্ষম হবে। সাফিয়া (রাঃ) বলেন, অতঃপর মহিলাটি তাই করল। ফলে তার অমত্মর নরম হয়ে গেল। তারপর সে আয়েশা (রাঃ)-কে কৃতজ্ঞতা জানাতে তাঁর বাড়ি আসল।
কবর যিয়ারত করা :
কবর যিয়ারত করা সুন্নাত। এর দ্বারা মৃত্যু ও আখিরাতের কথা স্মরণ হয় এবং হৃদয় বিগলিত হয়। হাদীসে এসেছে,
ইবনে বুরায়দা (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর যিয়ারত করো; কেননা তা আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়। [আবু দাউদ, হা/৩২৩৭; সহীহ মুসলিম, হা/২৩০৫; তিরমিযী, হা/১০৫৪; নাসাঈ, হা/৪৪২৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩০০৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩১৬৮; মুসনাদুল বাযযার, হা/৪৪৩৫; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/৬৭০৮; মিশকাত, হা/১৭৬২।]
জাহান্নামের আগুনের কথা স্মরণ করা :
জাহান্নামের আগুনের ভয়ে ক্রন্দন করাটা আল্লাহ ভীতির অন্যতম পরিচয়। যাদের অন্তরে ঈমানের দৃঢ়তা রয়েছে এবং যারা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহকে ভয় করে থাকে, কেবল তাদের পক্ষেই এ ধরনের ক্রন্দন করা সম্ভব। কেননা তারা জানে যে, দুনিয়ার আগুনের চেয়ে জাহান্নামের আগুন ৬৯ গুণ বেশি উত্তপ্ত। হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের ব্যবহৃত আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ। সাহাবীরা বললেন, জ্বালানোর জন্য তো এ আগুনই যথেষ্ট। নবী ﷺ বললেন, তা সত্ত্বেও পৃথিবীর আগুনের চেয়ে জাহান্নামের আগুন ৬৯ গুণ বেশি শক্তিশালী। [সহীহ বুখারী, হা/৩২৬৫; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৮০৪; সহীহ মুসলিম, হা/৭৩৪৪; তিরমিযী, হা/২৫৮৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১০০৩৩; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭৪৬২; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪৩৯৮; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩৬৬৬; মুসনাদে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক, হা/১২৯; মিশকাত, হা/৫৬৬৫।]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ اَشَدُّ حَرًّا﴾
বলো, জাহান্নামের আগুন আরো প্রচন্ড গরম। (সূরা তাওবা- ৮১)
অতএব আমাদের উচিত জাহান্নামের আগুনের ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে ক্রন্দন করা এবং এর থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
পাপ থেকে বেঁচে থাকা :
ইতিপূর্বেই বর্ণিত হয়েছে, বেশি বেশি পাপ করাটা কান্না না আসার অন্যতম কারণ। সুতরাং যথাসম্ভব পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকতে পারলেই অন্তরে কান্নার স্থান তৈরি হবে।
ইবনে আবু মুলাইকা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) এর সাথে হিজর নামক স্থানে বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেন, তোমরা কান্না করো। যদি তোমরা এতে সক্ষম না হও, তাহলে কান্না করার ভান করো। কেননা প্রকৃত বিষয় যদি তোমরা জানতে তবে তোমাদের কেউ কেউ এমন দীর্ঘ করে নামায আদায় করত যে, তার পৃষ্ঠদেশ ভেঙে যেত এবং এতই কান্না করত যে, তার কণ্ঠ বন্ধ হয়ে যেত। [মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮৭২৩; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩৩২৮।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/179/13
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।