HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কান্নার ফযীলত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

নবী ﷺ এর কান্না
নবী ﷺ তাঁর মেয়েকে দাফন করার সময় কান্না করেছেন :

যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কন্যা উম্মে কুলসুম (রাঃ) মৃত্যুবরণ করেছিলেন, তখন তিনি তার কবরের পাশে ছিলেন এবং তাঁর চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَنَسٍ قَالَ شَهِدْنَا بِنْتَ رَسُوْلِ اللهِ وَرَسُوْلُ اللهِ جَالِسٌ عَلَى الْقَبْرِ فَرَأَيْتُ عَيْنَيْهِ تَدْمَعَانِ فَقَالَ هَلْ فِيْكُمْ مِنْ أَحَدٍ لَمْ يُقَارِفِ اللَّيْلَةَ فَقَالَ أَبُوْ طَلْحَةَ أَنَا قَالَ فَانْزِلْ فِيْ قَبْرِهَا فَنَزَلَ فِيْ قَبْرِهَا

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী ﷺ এর মেয়ে (উম্মে কুলসুম) এর জানাযায় উপস্থিত হয়েছিলাম। রাসূলুল্লাহ ﷺ কবরের পাশে বসা ছিলেন। আমি দেখলাম, তাঁর দু’চোখ থেকে পানি ঝরছে। অতঃপর তিনি সাহাবীদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে এ রাতে স্ত্রীর সাথে সহবাস করেনি? আবু তালহা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আছি। তিনি তাকে বললেন, তুমি তার কবরে নামো। তখন তিনি তার কবরে নামলেন। [সহীহ বুখারী, হা/১৩৪২; বায়হাকী, হা/৭২৯৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৪০৭; মিশকাত, হা/১৭১৫।]

কারো মৃত্যুর অবস্থা দেখলে নবী ﷺ এর চক্ষু হতে পানি বের হতো :

আবু উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উসামা ইবনে যায়েদ (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, নবী ﷺ এর মেয়ে তাঁর (নবী ﷺ এর) কাছে খবর পাঠালেন যে, আমার একটি ছেলে মুমূর্ষ; সুতরাং আপনি আমাদের নিকট আসুন। নবী ﷺ সালাম দিয়ে খবর পাঠালেন যে, আল্লাহ যা গ্রহণ করেন তা তাঁরই এবং সেটাও তাঁরই যা তিনি দান করেন। বস্তুতঃ প্রত্যেক জিনিসের জন্য তাঁর নিকট একটা নির্ধারিত সময়সূচী রয়েছে। অতএব সে যেন পূর্ণ ধৈর্য ধারণ করে এবং পুরস্কারের প্রত্যাশা রাখে।

অতঃপর তিনি (নবী ﷺ এর মেয়ে) আবার এ শপথ দিয়ে পাঠালেন যে, নবী ﷺ যেন অবশ্যই তার নিকট আসেন। অতঃপর তিনি রওয়ানা হলে সা‘দ ইবনে উবাদাহ, মু‘আয ইবনে জাবাল, উবাই ইবনে কা‘ব, যায়েদ ইবনে সাবেত (রাঃ) এবং আরো অনেকেই তাঁর সঙ্গী হলেন। ছেলেটিকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কোলে তুলে দেয়া হলো, তখন তার জীবন চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয় উসামা এ কথাও বলেছেন, যেন তার শ্বাস মশকের মতো (শব্দ হচ্ছিল)। আর নবী ﷺ এর চক্ষু দু’টি হতে পানি বের হতে লাগল। সা‘দ বলে উঠলেন, এটা কী হে আল্লাহর রাসূল? উত্তরে তিনি বললেন, এটা আল্লাহ তা‘আলার দয়া-মমতা, যা আল্লাহ তাঁর প্রত্যেক বান্দার অন্তরে রেখেছেন। স্মরণ রাখবে, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মাঝে দয়াশীলদেরকেই অনুগ্রহ করেন। [[দ্র.হা. ৫৬৫৫, ৬৬০২, ৬৬৫৫, ৭৩৭৭, ৭৪৪৮] (আধুনিক প্রকা. ১২০১, ই. ফাউন্ডেশন ১২০৯)]

মায়ের কবর যিয়ারত করার সময় নবী ﷺ কান্না করেছেন :

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ তাঁর মায়ের কবর যিয়ারত করতে গেলেন। সেখানে তিনি কাঁদলেন এবং আশেপাশের সবাইকে কাঁদালেন। তিনি বললেন, আমি আমার প্রভুর নিকট মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চাইলাম। কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হলো না। তবে তার কবর যিয়ারত করার জন্য অনুমতি চাইলে আমাকে অনুমতি দেয়া হলো। অতএব তোমরা কবর যিয়ারত করো। কেননা কবর যিয়ারত তোমাদেরকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। [(ই.ফা. ২১২৮, ই.সে. ২১৩১)]

শুকরিয়া আদায় করার জন্য নবী ﷺ কান্না করতেন :

আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে অনেক নিয়ামত প্রদান করেছেন, তা বর্ণনা করে শেষ করার মতো নয়। আর এ নিয়ামতগুলো এত গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলোর অনুপুস্থিতিতে আমাদের পক্ষে পৃথিবীতে বসবাস করা অসম্ভব। সুতরাং আল্লাহর এসব নিয়ামতের কথা স্মরণ করে ক্রন্দন করা উচিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ আল্লাহর এসব নিয়ামতের কথা স্মরণ করে নামায আদায়ের সময় অধিক ক্রন্দন করতেন। একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ আয়েশা (রাঃ)-কে বললেন, হে আয়েশা! আমাকে ছেড়ে দাও- আমি আমার প্রতিপালকের ইবাদাত করব। আয়েশা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! যেমনিভাবে আমি আপনার নৈকট্য লাভ করাকে ভালোবাসি, তেমনিভাবে আপনার আনন্দিত হওয়ার বিষয়গুলোকেও ভালোবাসি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ অযু করলেন এবং নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেন। তারপর তিনি তাতে কান্না শুরু করে দিলেন, এমনকি তাঁর গাল ভিজে গেল। তারপর তিনি আরো কান্না করলেন, এমনকি তাঁর দাড়ি ভিজে গেল। তারপর তিনি আরো কান্না করলেন, এমনকি এতে জমিন ভিজে গেল।

অতঃপর বেলাল (রাঃ) ফজরের নামাযের আযান দেয়ার জন্য অনুমতি চাইতে আসলেন এবং তিনি তাঁকে কান্না অবস্থায় পেলেন। তখন তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কাঁদছেন কেন? আল্লাহ তা‘আলা তো আপনার পূর্বের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তখন তিনি বললেন, আমি কি শুকরিয়া আদায়কারী বান্দা হব না? তারপর তিনি বললেন, আজ আমার উপর এমন একটি আয়াত নাযিল হয়েছে, যে ব্যক্তি এটা পড়বে অথচ এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে না তার জন্য ধ্বংস। আয়াতটি হচ্ছে-

﴿إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَاٰيَاتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ﴾

নিশ্চয় আসমান ও জমিন সৃষ্টির মধ্যে এবং রাত ও দিনের পরিবর্তনের মধ্যে চিন্তাশীল লোকদের জন্য রয়েছে অনেক নিদর্শন। [সূরা আলে ইমরান- ১৯, সহীহ ইবনে হিববান, হা/৬২০।]

নামায আদায় করার সময় নবী ﷺ কান্না করতেন :

নামায হচ্ছে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সবচেয়ে উত্তম মাধ্যম। আর এ সময় যদি ক্রন্দন করা হয়, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তা অধিক মূল্যায়ন করেন। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রায়ই নামাযের মধ্যে ক্রন্দন করতেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شِخِّيْرٍ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ وَهُوَ يُصَلِّيْ وَلِجَوْفِه أَزِيْرٌ كَأَزِيْرِ الْمِرْجَلِ يَعْنِيْ يَبْكِيْ

আবদুল্লাহ ইবনে শিখখির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে এসে দেখি তিনি নামায আদায় করছেন এবং (আল্লাহর ভয়ে) কান্নার দরুন তাঁর পেট থেকে হাঁড়ির মতো আওয়াজ বের হচ্ছে। [নাসাঈ, হা/১২১৪; শু‘আবুল ঈমান, হা/৭৭৪; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭৫৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৯৭১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৩৫৫।]

কুরআন পাঠ শ্রবণ করে নবী ﷺ কান্না করতেন :

কুরআন হচ্ছে আল্লাহর বাণী। এর কোন কোন জায়গায় রয়েছে আল্লাহর রহমতের আলোচনা, আবার কোথাও ভয়াবহ শাস্তির আলোচনা এবং কোথাও কিয়ামতের কঠিন পরিস্থিতির বর্ণনা। কুরআন পাঠকারীর উচিত এসব আয়াত তিলাওয়াতকালে ক্রন্দন করা এবং আল্লাহর কাছে এর থেকে আশ্রয় চেয়ে প্রার্থনা করা। রাসূলুল্লাহ ﷺ কুরআন শ্রবণকালে ক্রন্দন করতেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ لِيَ النَّبِيُّ اِقْرَأْ عَلَيَّ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ اَقْرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ قَالَ نَعَمْ فَقَرَأْتُ سُوْرَةَ النِّسَاءِ حَتّٰى أَتَيْتُ إِلٰى هٰذِهِ الْاٰيَةِ ﴿ فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ ۢبِشَهِيْدٍ وَّجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰۤؤُلَآءِ شَهِيْدًا﴾ قَالَ حَسْبُكَ الْاٰنَ فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَإِذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ

আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী ﷺ আমাকে বললেন, তুমি আমার সম্মুখে (কুরআন) পাঠ করো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সম্মুখে (কুরআন) পাঠ করব? অথচ এটা আপনার উপর অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বললেন, হ্যাঁ। সুতরাং আমি সূরা ‘নিসা’ তিলাওয়াত করলাম, যখন আমি এই আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলাম; ‘‘অতঃপর চিন্তা করো যে, আমি যখন প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে একজন করে সাক্ষী উপস্থিত করব এবং এসকল ব্যাপারে তোমাকে (হে মুহাম্মাদ!) সাক্ষী হিসেবে পেশ করব তখন তারা কী করবে’’। নবী ﷺ বললেন, আপাতত এতটুকুই যথেষ্ট। অতঃপর আমি তাঁর চেহারার দিকে তাকালাম এবং দেখতে পেলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছে। [সহীহ বুখারী, হা/৫০৫০; সহীহ মুসলিম, হা/২৪৮; আবু দাউদ, হা/৩৬৭০; তিরমিযী, হা/৩০২৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৬০৬; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭৩৫; মিশকাত, হা/২১৯৫।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন