hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে ২শতাধিক প্রশ্নোত্তর সহ নাজাত প্রাপ্ত দলের আকীদাহ

লেখকঃ হাফেয বিন আহমাদ আল-হাকামী

১৩৭
প্রশ্নঃ (১৩৫) শাফাআত কত প্রকার? সবচেয়ে বড় শাফাআত কোন্টি?
উত্তরঃ শাফাআত কয়েক প্রকার। যথাঃ

(১) শাফাআতে উযমা বা সবচেয়ে বড় সুপারিশঃ শাফাআতে উয্মা হবে হাশরের মাঠে। এটি হবে বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে আল্লাহ্ তাআলা যখন হাশরের ময়দানে আগমণ করবেন। এটি আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর জন্যে নির্দিষ্ট। আর এটিই হচ্ছে ‘মাকামে মাহমুদ’ তথা প্রশংসিত স্থান, যা আল্লাহ্ তাআলা তাঁর নবীকে প্রদান করার অঙ্গিকার করেছেন। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا

‘‘আপনার প্রতিপালক আপনাকে অচিরেই একটি প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন’’। (সূরা বানী ইসরাঈলঃ ৭৯) মানুষ যখন দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে অস্থির হয়ে যাবে এবং ঘামের মধ্যে হাবুডুবু খাবে তখন তারা দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করার জন্যে পর্যায়ক্রমে আদম, নুহ, ইবরাহীম, মুসা ও ঈসা ইবনে মারইয়ামের কাছে গমণ করবে। সকলেই অক্ষমতা প্রকাশ করে বলবেঃ نَفْسِيْ نَفْسِيْ অর্থাৎ আমি নিজের চিন্তায় ব্যস্ত আছি। পরিশেষে তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমাকে শাফাআতের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আরশের নিচে সিজদায় পড়ে আল্লাহর প্রশংসায় লিপ্ত থাকবেন। আল্লাহ তাঁকে মাথা উঠাতে বলবেন এবং যা চাওয়ার তা চাইতে বলবেন। এ পর্যায়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের মাঝে দ্রুত ফয়সালা ও বিচার কার্য সমাধা করার জন্যে সুপারিশ করবেন। তাঁর সুপারিশে আল্লাহ হাশরের মাঠে নেমে এসে মানুষের মাঝে দ্রুত বিচার-ফয়সালা সম্পন্ন করবেন। [- বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুর্ রিকাক, শরহুল আকীদাহ আত-তাহাবীয়াহ, পৃষ্ঠা নং- ২০৪।]

২) জান্নাতের দরজা খোলার জন্যে শাফাআ’তঃ সর্বপ্রথম আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতের দরজা খুলবেন। সকল উম্মাতের মধ্যে তাঁর উম্মাতগণ সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

آتِي بَابَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَسْتَفْتِحُ فَيَقُولُ الْخَازِنُ مَنْ أَنْتَ فَأَقُولُ مُحَمَّدٌ فَيَقُولُ بِكَ أُمِرْتُ لَا أَفْتَحُ لِأَحَدٍ قَبْلَكَ

‘‘কিয়ামতের দিন আমি জান্নাতের দরজায় এসে দরজা খুলতে বলব। জান্নাতের দারোয়ান বলবেঃ কে আপনি? আমি বলবঃ মুহাম্মাদ। দারোয়ান বলবেঃ আপনার জন্যেই দরজা খোলার আদেশ দেয়া হয়েছে এবং আপনার পূর্বে অন্য কারো জন্যে জান্নাতের দরজা খুলতে নিষেধ করা হয়েছে’’। [- মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান।]

(৩) কিছু গুনাহগারকে জাহান্নামে না দেয়ার শাফাআ’তঃ এক শ্রেণীর তাওহীদপন্থি অপরাধী লোক তাদের কৃতকর্মের জন্যে কিয়ামতের দিন জাহান্নামের হকদার হয়ে যাবে। তাদেরকে জাহান্নামে পাঠানোর ফয়সালা হবে। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের জন্য শাফাআ’ত করবেন। ফলে তারা জাহান্নাম থেকে রেহাই পেয়ে যাবে। [- শরহুল আকীদাহ আল-ওয়াসিতিয়াহ, পৃষ্ঠা নং- ১৪২।]

(৪) জাহান্নামে প্রবেশকারী একদল লোককে বের করার জন্যে শাফাআ’তঃ আমরা বিশ্বাস করি, যে সমস্ত তাওহীদপন্থী মু’মিন আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি, কিন্তু তারা গুনাহ ও পাপের কাজে লিপ্ত হয়েছে তাদের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ আল্লাহর হাতে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে শাস্তি দিবেন অথবা ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ

‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করেন না। শির্ক ব্যতীত অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করে থাকেন’’। (সূরা নিসাঃ ৪৮) কুরআন ও হাদীছে পাপী মু’মিনদের এমন অনেক আমলের বর্ণনা এসেছে যাতে তাদের জন্যে শাস্তির কথা উল্লেখ হয়েছে তবে উহা তাদের চিরস্থায়ী জাহান্নামী হওয়া আবশ্যক করেনা। তাদের এক শ্রেণীর লোক কিয়ামতের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর শাফাআ’তের মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে বের হয়ে আসবে। তিনি বলেনঃ

( شَفَاعَتِي لِأَهْلِ الْكَبَائِرِ مِنْ أُمَّتِي )

‘‘আমার উম্মাতের কবীরা গুনায় লিপ্ত ব্যক্তিদের জন্যে আমার শাফাআ’ত’’। [- তিরমিযী, অধ্যায়ঃ কিতাবু সিফাতিল কিয়ামাহ, সিলসিলায়ে সাহীহা, হাদীছ নং- ৫৫৯৮।] তিনি আরো বলেনঃ

( لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ فَتَعَجَّلَ كُلُّ نَبِيٍّ دَعْوَتَهُ وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لِأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَهِيَ نَائِلَةٌ إِنْ شَاءَ اللَّهُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِي لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا )

‘‘সকল নবীর জন্যে এমন একটি দু’আ রয়েছে, যা আল্লাহ কবুল করবেন। দুনিয়াতে সকল নবী আল্লাহর কাছে দু’আ করে নিয়েছেন। আর আমি কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতের সুপারিশের জন্যে দু’আটি রেখে দিয়েছি। আমার উম্মাতের যে ব্যক্তি শিরক না করে মৃত্যু বরণ করবে সে ব্যক্তি ইনশা-আল্লাহ তা পাবে’’। [- মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান।]

সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাওহীদপন্থী এমন একদল লোকের জন্যে শাফাআত করবেন, যারা জাহান্নামে প্রবেশ করেছে, তাদের শরীরের চামড়া আগুনে পুড়ে গেছে এবং আগুনে পুড়ে তারা কয়লার ন্যায় হয়ে গেছে। জাহান্নাম থেকে বের করে তাদেরকে ‘আবে হায়াতে’ তথা নতুন জীবন দানকারী নদীতে গোসল করানো হবে। সেখানে তারা এমনভাবে বেড়ে উঠবে যেমনভাবে বন্যার পানিতে ভেসে আসা আবর্জনার মাঝে বীজ থেকে তৃণলতা উৎপন্ন হয়ে থাকে’’। [- বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান।]

উপরের তিন প্রকারের সুপারিশ শুধু আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর জন্যে নির্দিষ্ট নয়। অন্যান্য নবীগণ, ফেরেশতাগণ, আল্লাহর অলীগণ এবং মুসলমানদের শিশু সন্তানগণও এপ্রকারের শাফাআত করবেন। তবে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই প্রথমে এ প্রকার শাফাআত করবেন।

অতঃপর আল্লাহ্ তাআলা স্বীয় অনুগ্রহে অনেক লোককে বিনা শাফাআতে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার সঠিক হিসাব আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কেউ অবগত নয়।

(৫) জান্নাতের ভিতরে মর্যাদা বৃদ্ধির জন্যে শাফাআ’তঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক প্রকার জান্নাতীদের জন্যে শাফা’আত করবেন। এতে তাঁরা তাদের আমলের তুলনায় অধিক বিনিময় লাভ করবেন। এমর্মেও অনেক সহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। [- শরহুল আকীদাহ আত্ তাহাবীয়া, পৃষ্ঠা নং- ২০৫।]

(৬) আবু তালেবের জন্যে শাফাআ’তঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিয়ামতের দিন তাঁর চাচা আবু তালেবের শাস্তি হালকা করার জন্যে আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবেন। সহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, আববাস (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ

( يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَفَعْتَ أَبَا طَالِبٍ بِشَيْءٍ فَإِنَّهُ كَانَ يَحُوطُكَ وَيَغْضَبُ لَكَ قَالَ نَعَمْ هُوَ فِي ضَحْضَاحٍ مِنْ نَارٍ وَلَوْلَا أَنَا لَكَانَ فِي الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ )

‘‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আবু তালেবের কোন উপকার করতে পারলেন? সে তো আপনাকে শত্রুদের অনিষ্ট হতে হেফাযত করতো এবং আপনার জন্যে মানুষের সাথে রাগান্বিত হত। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, ঠিক আছে। সে এখন জাহান্নামের আগুনের উপরিভাগে অবস্থান করছে। আমি না থাকলে সে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করত। [- মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান।] আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

( لاَ تَزَالُ جَهَنَّمُ يُلْقَى فِيهَا وَتَقُولُ : هَلْ مِنْ مَزِيدٍ حَتَّى يَضَعَ رَبُّ الْعِزَّةِ فِيهَا قَدَمَهُ فَيَنْزَوِي بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ وَتَقُولُ قَطْ قَطْ بِعِزَّتِكَ وَكَرَمِكَ )

‘‘কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হতে থাকবে। জাহান্নাম বলবেঃ هَلْ مِنْ مَزِيْدٍ ‘‘আরো আছে কি?’’ পরিশেষে মহান রাববুল আলামীন তাতে নিজ পা রাখবেন। এতে জাহান্নাম সংকুচিত হয়ে যাবে এবং বলবেঃ ‘‘আপনার ইজ্জত ও সম্মানের শপথ! যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে’’। [- বুখারী, অধ্যায়ঃ আইমান ওয়ান্ নুযুর।]

এছাড়াও শাফাআতের বিষয়ে আরো অসংখ্য দলীল-প্রমাণ রয়েছে। যে ব্যক্তির ইচছা সে আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাত হতে সংগ্রহ করে নিতে পারে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন