মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন—আমি রাসূল সা.-এর সাথে একবার ঈদের জামাতে অংশ গ্রহণ করলাম। আজান-একামত ব্যতীত তিনি খুতবার পূর্বেই সালাত আরম্ভ করলেন। সালাত শেষে বেলাল রা.-এর কাঁধে ভর দিয়ে দন্ডায়মান হলেন। সকলকে আল্লাহর তাকওয়ার আদেশ দিলেন, তার আনুগত্যের উৎসাহ প্রদান করলেন। মানুষকে ওয়াজ-নসিহত করলেন।
অত:পর নারীদের নিকট গমন করে তাদের উদ্দেশ্যে নসিহত করে বললেন : তোমরা সদকা কর, তোমাদের অধিকাংশই হবে জাহান্নামের ইন্ধন। বিবর্ণ-ফ্যাকাশে মুখমন্ডল নিয়ে নারীদের মধ্য হতে একজন দাঁড়িয়ে বলল, কেন, হে আল্লাহর রাসূল? রাসূল বললেন, কারণ তোমরা অধিক অভিযোগ কর, স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও।
জাবের বলেন, অত:পর তারা তাদের অলংকারাদি সদকা করতে আরম্ভ করল। তাদের কানের দুল ও আংটি বেলালের বিছানো কাপড়ে ছুঁড়ে ফেলতে লাগল। [বোখারি-৯৭৮, মুসলিম-৮৮৫]
হাদিসের বর্ণনাকারি :
প্রখ্যাত আনসারি সাহাবি জাবের বিন আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন হারাম। তিনি ও তার পিতা উভয়ে রাসূলের সাহাবি হওয়ার সৌভাগ্য অর্জনে সক্ষম হন। শেষ আকাবার বায়আতে তিনি তার পিতার সঙ্গী ছিলেন। তার পিতা ছিলেন রাসূলের নিয়োগকৃত দলপতিদের অন্যতম। অনেকগুলো যুদ্ধে তিনি রাসূল সা.-এর সঙ্গী হবার সৌভাগ্য অর্জন করেন—এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি রাসূলের সাথে উনিশটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। হাদিস বর্ণনার সংখ্যায় তিনি রাবীদের মাঝে অন্যতম। মসজিদে নববীতে তার একটি ক্লাস ছিল, তার সান্নিধ্যে বিদ্যার্জনের জন্য মানুষের বিপুল সমাগম হত সেখানে। তিনি ছিলেন দীর্ঘজীবী—মদীনায় মৃত্যুবরণ কারী সর্বশেষ সাহাবিদের তিনি ছিলেন একজন। ৯৪ বছর বয়সে, ৭৮ হিজরি সনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
শব্দ প্রসঙ্গে আলোচনা :
يَوْمَ العِيْدِ : দিনটি ছিল ঈদুল ফিতরের দিন।
مِنْ سِطَةِ النِّسَاءِ : س শব্দে যের ط শব্দে যবর হবে। অর্থ : মধ্যবর্তী স্থান। নারীদের মধ্যে অবস্থানকারী একজন মহিলা উঠে দাঁড়ালেন। কেউ কেউ বলেন, سطة النساء দ্বারা উদ্দেশ্য নারীদের মাঝে যিনি মাননীয়া, তিনি উঠে দাঁড়ালেন। তবে, এ মতটি পূর্বেরটির তুলনায় অগ্রহণযোগ্য।
سُفَعَاءَ الخَدَّيْنِ : অর্থাৎ, দু:খ, ভয় ও হতাশার ফলে তার গন্ড-দ্বয়ের তবক বিবর্ণ হয়ে পড়েছিল।
وَتَكْفُرْنَ العَشِيْرَ : আভিধানিক অর্থে العشير হচ্ছে মিশুক। অধিকাংশ আলেম উক্ত হাদিসে একে স্বামী অর্থে গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ বিবেক-শূন্যতা ও জ্ঞানের দুর্বলতার দরুন অধিকাংশ স্ত্রী তার স্বামীর এহসানকে অস্বীকার করে।
حُلِيِّهِنَّ : হাত ইত্যাদিতে নারীরা যে সমস্ত অলংকারাদি পরিধান করে।
أقْرُطَتِهِنَّ : قرط শব্দের বহুবচন। স্বর্ণের হোক কিংবা অন্য কিছুর—কানে পরিধান করার অলংকার।
আহকাম ও ফায়দা :
১-হাদিসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঈদের সালাতের আহকামের বর্ণনা রয়েছে এতে। যথা : —
হাদিসটি প্রমাণ করে যে, ঈদের সালাতের আজান কিংবা একামত নেই।
জুমার খুতবায় আলোচ্য বিষয় হবে আল্লাহ-ভীতি, আল্লাহর আনুগত্যের উৎসাহ এবং নসীহত—ইত্যাদি।
ঈদের সালাতের খুতবার সময় হচ্ছে সালাতের পর, জুমার মত পূর্বে নয়। জুমা এবং ঈদের সালাত—উভয় ক্ষেত্রেই খুতবা দুটি ; কিন্তু ঈদের ক্ষেত্রে তার নির্ধারিত সময় নামাজের পর। এভাবেই রাসূল সা. ও খোলাফায়ে রাশিদীন পালন করেছেন।
দুই ঈদের সালাত, বিশুদ্ধতম মতানুসারে, ওয়াজিব। সুতরাং, মুসলমানের উচিত গুরুত্ব সহকারে তা আদায় করা, এবং উপস্থিত হয়ে খুতবা শ্রবণ করা। যাতে সে প্রভূত সওয়াবের অধিকারী হতে পারে, এবং ইমামের খুতবা হতে শিক্ষা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়।
২-ইসলাম নারীর বিষয়টিতে অশেষ গুরুত্বারোপ করেছে, ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে তার জন্য নির্ধারণ করেছে উঁচু ও সম্মানীয় স্থান। এ হাদিসে নারী সংক্রান্ত বিভিন্ন আহকাম ও দৃষ্টিকোণের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। যথা :—
রাসূল সা. ঈদের জামাতের শেষে নারীদের জন্য স্বতন্ত্রভাবে খুতবা প্রদান করেছিলেন। এর ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে, ঈদের জামাতে ইমামের উচিত নারী মুসল্লিদের জন্য স্বতন্ত্রভাবে খুতবা প্রদান করা, যাতে তিনি একান্তভাবে তাদের নিজস্ব বিষয়গুলো সম্বন্ধে ওয়াজ-নসিহত ও দিক-নির্দেশনা প্রদান করবেন। তবে, সাধারণ সকলের জন্য প্রদত্ত খুতবা যদি তারা শ্রবণে সক্ষম না হন, তবে এই হুকুম। অন্যথায় ইমাম তার খুতবার একাংশে একান্তভাবে তাদের জন্য বয়ান রাখবেন।
হাদিসটি প্রমাণ করে, পুরুষদের সাথে স্বাভাবিক মেলামেশাও নারীদের জন্য হারাম। হোক তা মসজিদ বা অন্য কোথাও। তারা তাদের জন্য নির্ধারিত কক্ষে অবস্থান করবেন। ফেতনা ও হারাম বিষয়ের উদ্রেককারী যাবতীয় বিষয়কে এড়ানোর জন্যই এই হুকুম প্রদান করা হয়েছে। নারীদের বিষয়ে ইসলামের এ হুকুম নারী ও তার অভিভাবকদের অনুধাবন করা কর্তব্য—এর উপর নির্ভর করে নানা সামাজিক উপকারিতা।
নারী হোক কিংবা পুরুষ—শিক্ষার্জন সকলের অধিকার। ধর্মীয় জ্ঞানাহরণের ব্যাপারে তাই নারীদের আগ্রহ ও আকর্ষণ থাকা আবশ্যক। এর একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে—বিজ্ঞ আলেমের নসিহত শ্রবণ ও সে বিষয়ে প্রশ্নোত্তর—হাদিসটি যেমন প্রমাণ করে।
হাদিসটিতে নারীদের যে সকল দোষের উল্লেখ রয়েছে, তা এই যে—অধিক অভিযোগ করা, স্বামীদের প্রতি অকৃতজ্ঞ থাকা। এ খুবই গর্হিত অভ্যাস, যা নারীকে জাহান্নামের দিকে টেনে নেয়। সুতরাং, নারীদের উচিত এ বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা।
মুসলিম নারীর পরিচয় হল—সে সতত কল্যাণের প্রতি ধাবিত হবে, ঈমানের যে কোন প্রকার আহবানে সাড়া দেবে।
সম্পত্তির মালিকানা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সিদ্ধ। এ ব্যাপারে ব্যয়ের অধিকারও তাদের উভয়ের জন্যই সংরক্ষিত। তাই, সাহাবি নারীগণ তাদের স্বামীদের অনুমতি ব্যতীতই সদকা করতে তৎপর হয়েছেন। স্বাধীনভাবে নারী ব্যয় করতে পারবে, স্বামীর অনুমতি ব্যতীতও সদকা করতে পারবে। রাসূল উক্ত হাদিসে নারীদের এ ব্যয়কে সমর্থন করেছেন।
৩- খতিব ও ওয়ায়েজের রয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আল্লাহর পক্ষ হতে তিনি মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন হালাল-হারামের বিধান। হাদিসটি প্রমাণ করে, এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ খতিব ও ওয়ায়েজের কর্তব্য। মানুষ যা জানে, তা পালনে তিনি তাদের উদ্বুদ্ধ করবেন, যা সম্পর্কে অজ্ঞ, তা জ্ঞাত করাবেন। কল্যাণ ও ভালো কাজের ব্যাপারে তাদের উৎসাহিত করবেন। সতর্ক করবেন মন্দ-কর্মে।
৪-সদকার রয়েছে বিবিধ উপকারিতা ও কল্যাণ। ঐহিক ও পারত্রিক জীবনে তার নানা সুফল রয়েছে। জাহান্নামের আগুন হতে বান্দাকে তা রক্ষা করে—রাসূলের একটি হাদিস বিষয়টিকে আরো জোড়াল করে, তিনি মন্তব্য করেছেন—
اتقوا النار و لو بشق تمرة .
একটি খেজুরের অর্ধেক দান করে হলেও তোমরা আগুন থেকে আত্মরক্ষা কর। [বোখারি-১৪১৩ ও মুসলিম-১০১৬]
৫-অন্যের সাথে সুস্থ আচার-আচরণের প্রতি ইসলাম মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে—এমনকি, যদি তা হয় একেবারে নিকটাত্মীয়ের সাথেও। ইসলাম শিক্ষা দেয়—সম্মানিতদের প্রতি জ্ঞাপন করবে পরিপূর্ণ সম্মান, স্বীকার করে নিবে হকদারদের হক। সম্পত্তির ব্যাপারে কার্পণ্য করবে না, মানুষের জন্য যা অকল্যাণকর, তা এড়িয়ে যাবে সযত্নে। অশ্লীল কথোপকথন পরিহার করবে, অপরের প্রতি অকৃতজ্ঞ হবে না।
৬- ইলম অর্জনে প্রয়াসী সর্বদা তার জ্ঞানকে বৃদ্ধি করার প্রতি মনোনিবেশ করবে। যা জটিল ও দুর্বোধ্য, সে ব্যাপারে তার শিক্ষককে প্রশ্ন করে জেনে নিবে। তবে, প্রশ্ন করার ব্যাপারে শিক্ষকের প্রতি প্রদর্শন করবে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/353/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।