মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সা. বলেছেন, মানুষের দশটি প্রকৃতিগত স্বভাব, যথা—
১. মোচ কর্তন
২. দাঁড়ি বড় হতে দেয়া বা ছেড়ে দেয়া
৩. মেসওয়াক
৪. নাকের ভিতর শ্বাসের সাথে পানি নেয়া
৫. নখ কাটা
৬. আঙুলের গিরা ধৌত করা
৭. বগলের পশম উপড়ানো
৮. নাভির নিম্নদেশে ক্ষৌরকর্ম
৯. পায়খানা বা পেশাবের পর পানি ব্যবহার
১০. (সম্ভবত) কুলি করা।
হাদিসটি ইমাম মুসলিম রহ. তার উস্তাদ কুতাইবা ইবনে সাঈদ, আবু বকর ইবনে শাইবাহ ও যুহাইর ইবনে হারব প্রমুখগণ হতে শিক্ষা লাভ করেছেন, তারা সকলে ওয়াকী হতে, সে জাকারিয়া বিন আবু যায়েদা হতে, সে মুস‘আব বিন শাইবা হতে, সে তালক্ব বিন হাবীব হতে, সে আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের হতে, সে স্বীয় খালা আয়েশা সিদ্দিকা রা. হতে, আয়েশা রা. বলেন আমি রাসূল সা.-কে বলতে শুনেছি...আল হাদিস।
মুসআব বিন শাইবাহ তার ছাত্র জাকারিয়া বিন আবু যায়েদাকে বলেন, আমি দশমটি ভুলে গেছি, তবে তা কুলি করা হতে পারে।
আয়াজ রহ. বলেন—খুব সম্ভব দশমটি খতনা করা। এটাই অধিক যুক্তিযুক্ত। কারণ, যে সমস্ত হাদিসের ভিতর পাঁচটি স্বভাবের কথা উলেখ করা হয়েছে, সেখানে খতনার কথাও উলেখ রয়েছে।
হাদিসের শব্দ প্রসঙ্গে :
الْفِطْرَةِ : বিশেষজ্ঞ আলেমগণ শব্দটির নানা অর্থের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। খাত্তাবী বলেছেন—অধিকাংশ ওলামাদের মতে, এর অর্থ (মার্জিত রুচিবোধ সম্পন্ন সুস্থ মানুষের) স্বভাব বা আভিধানিক সুন্নত। অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম বলেছেন— الفطرة অর্থ নবীগণের সুন্নত। আর কেউ কেউ বলেছেন এর অর্থ দ্বীন বা ধর্ম।
জ্ঞাতব্য যে, হাদিসে বর্ণিত সবগুলো স্বভাব ওলামাদের মতে ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য নয়। কয়েকটির ব্যাপারে ওয়াজিব হওয়া না-হওয়া নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে। যেমন-খতনা করা, কুলি করা ও নাকে পানি দেয়া।
আরেকটি বিধান জানা প্রয়োজন : এক, নির্দেশের ভিতর আবশ্যক-অনাবশ্যক দু ধরনের হুকুম থাকতে পারে, যেমন—কোরআনে আছে—
‘এগুলোর ফল তোমরা খাও, যখন ফলন্ত হয় এবং হক দান কর কর্তনের সময়।’ [আল আনআম : ১৪১।]
অত্র আয়াতে প্রদানের নির্দেশ ওয়াজিব করা হয়েছে, খাওয়ার নির্দেশ নয়। অথচ একই নির্দেশে এবং একই শব্দের মাধ্যমে বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে।
قَصُّ الشَّارِبِ : মোচ কর্তন করা বা ছোট করা ; যাতে ঠোঁটের উপরের অংশ বের হয়ে যায়। বেড বা ক্ষুর জাতীয় জিনিসের মাধ্যমে মোচ কর্তন করা বা চাছাকে কেউ কেউ মাকরূহ বলেছেন।
اللِّحْيَةِ : উভয় গাল ও থুতনিতে গজানো লোমকে দাড়ি বলে।
السِّوَاكِ : লাকড়ি বা লাকড়ি জাতীয় কোন জিনিসকে মুখ ও দাঁতের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্যবহার করা।
وَاسْتِنْشَاقُ الْمَاءِ : নাকের ভিতর শ্বাসের সাথে পানি টেনে নেয়া।
الْبَرَاجِمِ : হাতের আঙুলের পৃষ্ঠদেশের গিরা।
الْعَانَةِ : ঐ সমস্ত লোম যা পুরুষাঙ্গের উপর ও তার দু’পাশে গজায়। তদ্রুপ নারীর যোনি বা গুপ্তাঙ্গেরে দু’পাশে যে লোম গজায়।
وَانْتَقَاصُ الْمَاءِ : প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা।
হাদিসের তাৎপর্য ও শিক্ষা :
১. ইসলাম পবিত্রতার ধর্ম। বাহ্যিক-অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধতার ধর্ম। প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য পরিচ্ছন্নতার ধর্ম। এ জন্যই রাসূল সা. উলেখিত স্বভাবসমূহ সুন্নত বা দ্বীনেরে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর কিছু আছে ওয়াজিব-অবশ্য পালনীয়। আর কিছু আছে মোস্তাহাব- যা করলে সওয়াব হবে।
২. মোচ কাটা বা ছাটা এবং দাড়িকে যত্ন করা ও লম্বা করা বা ছেড়ে দেয়া ওয়াজিব। এর মাধ্যমে মুসলমান অন্যদের থেকে স্বতন্ত্রতা লাভ করে, যার প্রমাণ ইবনে উমর রা.-এর হাদিস। রাসূল সা. বলেছেন—
‘রাসূল সা. বলেছেন, মোচ নিঃশেষ কর এবং দাড়ি বড় কর।’ তাই, দাড়ি চাছা বা ছোট করা হারাম। মোচ মূল হতে উপড়ানো মকরুহ।
৩. মানুষের স্বাভাবিক প্রকৃতি ও অবশ্য কর্তব্য সুন্নত হলো মেসওয়াক করা। অর্থাৎ লাকড়ি বা এ জাতীয় অন্য কোন জিনিসের মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য দাঁত ঘর্ষণ করা। অনেক হাদিসের ভিতর এ জন্য উৎসাহ প্রধান করা হয়েছে। যেমন—আবু হুরাইরা রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন—
لو لا أن اشق على أمتي لأمرتهم بالسواك عند كل صلاة . و في رواية عند وضوء . رواه مسلم (৩৭০)
‘যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্ট না হতো, আমি প্রতি নামাজের সময় মেসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম। অন্য বর্ণনায় আছে—প্রতি ওজুর সময়।’ [মুসলিম : ৩৭০]
আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেছেন—
যে সমস্ত জিনিসের মাধ্যমে মেসওয়াকের কাজ আদায় হয়, তা এর অন্তর্ভুক্ত। কিছু কিছু সময় মেসওয়াক করা অতীব জরুরি। বিশেষ করে ওজুর সময়, নামাজের সময়, বাড়িতে প্রবেশ করার সময়, কোরআন তিলাওয়াত করার সময়, ঘুম হতে উঠার পর, মুখের স্বাদ বিকৃত হলে—ইত্যাদি।
৪. অত্র হাদিসে নাকে পানি দেয়াকে সুন্নত উলেখ করা হয়েছে। ওজু-গোসলে তা ওয়াজিব, কারণ নাক চেহারার অন্তর্ভুক্ত। অপর দিকে যারাই রাসূল সা. এর ওজু বর্ণনা করেছেন—নাকে পানি দেয়াকে উলেখ করেছেন।
৫. নখ ছোট করা বা কাটা পবিত্রতার অন্তর্ভুক্ত। কারণ এতে ময়লা জমে অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা হয়ে যায়। কখনো এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, ওজুতে পানি পৌঁছানো আবশ্যক—এমন অংশে পানি পৌঁছোতে বাধার সৃষ্টি করে। আবার আমরা সবাই বাঁ হাতকে ময়লা পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করি, সে ক্ষেত্রে নখ বড় থাকলে ময়লা লেগে হাত নষ্ট হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে।
৬. মানুষের শরীরে এমন কিছু অংশ আছে যেগুলো যত্ন সহকারে পরিষ্কার রাখতে হয়। যেমন হাতের পৃষ্ঠদেশে আঙুলের গিরা, সেখানে ময়লা জমে থাকার সম্ভাবনা থাকে। সুতরাং এগুলোকে ভাল করে ধৌত করা ও পরিষ্কার করা জরুরি।
৭. আরো পবিত্রতার অন্তর্ভুক্ত : নাভির নীচের পশম মুন্ডানো ও বগলের নীচের পশম উপড়ানো। এর ভিতর হিকমত হলো এর দুর্গন্ধ হতে সৃষ্ট অনুভূতিগুলো নিঃশেষ করা বা হালকা করা। যাতে মুসলমানদের শরীরের ঘ্রাণ তার স্বভাবের মত পবিত্র তাকে। এখানে জেনে রাখা ভাল, বগলের পশম উপড়ানো জরুরি নয় বরং যে কোন জিনিসের মাধ্যমে দূর করাই যথেষ্ট।
৮. মুসলমানদের অবশ্য কর্তব্য পানির মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা। যাতে মলদ্বার ও পেশাবের স্থানে কোন ধরনের ময়লা না থাকে। কারণ পরিষ্কার ব্যতীত রেখে দিলে শরীর নাপাক হতে পারে। যার ফলে তার নামাজ বিশুদ্ধ না হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে।
৯. ইসলামি শিষ্টচারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, অপরকে সম্মান করা, ইজ্জত দেয়া, দুর্গন্ধের মাধ্যমে তাদের কষ্ট না দেয়া। সুতরাং, মুসলমানদের উচিত শরীরের ভাল সুগন্ধি ব্যবহার করা। শরীর পরিষ্কার রাখা। তদুপরি শরীরকে দুর্গন্ধের মত বিরক্তিকর জিনিস হতে সংরক্ষণ করা—বন্ধু-বান্ধব ও সাথি-সঙ্গীদের সাথে সদ্ব্যবহারের শামিল। এ জন্য ইসলাম এ স্বভাবগুলোকে প্রকৃতিগত সুন্নতের স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
১০. মুসলমান স্বীয় অবয়ব, বাহ্যিক পোশাক-আশাক এবং ভিতরে-বাহিরে এক অনন্য স্বতন্ত্রতা লালন করে। যেমন—সে বিশ্বাস, আচার-ব্যবহার এবং মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে ইসলামকে পারংগমতার সাথে অনুসরণকারী, তদ্রূপ সে বাহ্যিক শশ্রুধারী, পরিমিত মোচ বিশিষ্ট ইসলামি আদর্শ বহনকারী। এর ভিত্তিতেই সে ইহুদি-নাসারা ও অগ্নিপূজকদের আদর্শের বিরুদ্ধবাদী তথা প্রতিবাদী ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণকারী বলে গণ্য হবে।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে সুন্দর গঠনে সৃষ্টি করেছেন এবং বলে দিয়েছেন, সে যেন এতে বিকৃতি আরোপ করে কুৎসিত না করে এবং এর সৌন্দর্য রক্ষায় যত্নবান হয়। বস্ত্তত এগুলো রক্ষা করা রুচিবোধের পরিচয়। কারণ, মানুষ যখন মার্জিত বেশ ভুষায় আত্মপ্রকাশ করে, অন্যান্য সকলে তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত ও প্রফুল থাকে। তার কথা গ্রহণ করে। এর বিপরীত হলে ফলাফলও বিপরীত হবে।
১২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে ডান দিক প্রাধান্য দেয়া সুন্নত। সুতরাং নখ কাটার সময় ডান দিক থেকে আরম্ভ করবে। মোচ ছোট করার সময় ডান পাশকে প্রাধান্য দেবে। এভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজ করবে।
১৩. ওলামায়ে কেরাম উলেখ করেছেন, প্রয়োজন মোতাবেক নখ কাটবে, মোচ ছোট করে ছাঁটবে, নাভির নিচের পশম মুন্ডাবে ও বগলের পশম ওপড়াবে। নখ, মোচ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত রেখে দিবে না-যাতে লম্বা হতেই থাকে। কেউ কেউ প্রতি জুমআতে এ সমস্ত আমল সম্পাদন করা মোস্তাহাব বলেছেন। কারণ, জুমআর দিন গোসল করা ও পবিত্রতা অর্জন কার মোস্তাহাব।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/353/22
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।