মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
জাবের রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যে কোন কাজ করার পূর্বে ইসতেখারার নির্দেশ দিতেন। তাই ইসতেখারার দোয়া এরূপ গুরুত্ব দিয়ে মুখস্থ করাতেন যেরূপ গুরুত্ব দিয়ে মুখস্থ করাতেন কোরআনের সূরা।
ইসতেখারার নিয়ম এই যে, প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে উলেখিত দোয়া পাঠ করবে—যার অর্থ: হে আল্লাহ ! আমি আপনার ইলমের মাধ্যমে আপনার নিকট কল্যাণ কামনা করছি। আপনার কুদরতের মাধ্যমে আপনার নিকট শক্তি কামনা করছি। এবং আপনার মহা অনুগ্রহ কামনা করছি। কেননা আপনি শক্তিধর, আমি শক্তিহীন, আপনি জ্ঞানবান, আমি জ্ঞানহীন। এবং আপনি অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞানী। হে আল্লাহ ! এই কাজটি (এখানে উদ্দিষ্ট কাজ বা বিষয়টি উলেখ করবে) আপনার জ্ঞান মোতাবেক যদি আমার দ্বীন, আমার জীবিকা এবং আমার পরিণতির ক্ষেত্রে অথবা ইহলোক ও পরলোকে কল্যাণকর হয়, তবে তাতে আমাকে সামর্থ্য দিন। পক্ষান্তরে এই কাজটি আপনার জ্ঞান মোতাবেক যদি আমার দ্বীন, জীবিকা, ও পরিণতির দিক দিয়ে অথবা ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিকর হয়, তবে আপনি তা আমার থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন এবং আমাকেও তা থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন এবং কল্যাণ যেখানেই থাকুক, আমার জন্য তা নির্ধারিত করে দিন। অত:পর তাতেই আমাকে পরিতুষ্ট রাখুন। (অত:পর সে তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে।) [বোখারি]
আভিধানিক ব্যাখ্যা
خير থ الْاِسْتِخَارَةَ বা خيرة দ্বারা অর্থ আল্লাহ থেকে কল্যাণ চেয়ে নেওয়া। উদ্দেশ্য হল অপরিহার্য দুই বস্ত্ত ভালটি কামনা করা।
فِي الْأُمُوْرِ كُلِّهَا প্রতিটি কাজে ইসতেখারা করা। كل শব্দটা ব্যাপক অর্থবোধক। তবে এখানে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার হয়নি। কেননা, ফরজ, ওয়াজিব কাজ করার জন্য আর হারাম, মাকরূহ কাজ না করার জন্য ইসতেখারা হয় না। সুতরাং, ইসতেখারা শুধু মুবাহ বা জায়েজ কাজ করা না করা আর মোস্তাহাব বা উত্তম—দ্বি-অবকাশমুখী কাজের মাঝে কোনটি করবে তা নির্ণয়ের জন্য হয়ে থাকে।
كَالسُّوْرَةِ مِنَ الْقُرْآنِ ইসতেখারার দোয়া শিক্ষাকে কোরআন শিক্ষার সাথে তুলনা করার কারণ হল কোরআন যেমন সর্বপ্রকার নামাজে প্রয়োজন তেমনিভাবে সর্বপ্রকার কাজে ইসতেখারাও প্রয়োজন। কোন কোন আলেম বলেছেন, এখানে শাব্দিক উদাহরণ উদ্দেশ্য ; অর্থাৎ কোরআন মজিদের প্রতিটি হরফ মুখস্থ করা ও গুরুত্ব সহকারে তা সংরক্ষণের ব্যাপারে যেমন গুরুত্ব দিতেন তেমনিই গুরুত্ব দিতেন ইসতেখারার দোয়া মুখস্থ ও সংরক্ষণের ব্যাপারে।
إِذَا هَمَّ অর্থাৎ যখন কোন কাজের ইচ্ছা করে। কমপক্ষে দুই রাকাত নামাজ পড়বে। যদি কেউ ইচ্ছা করে তবে বেশিও পড়তে পারবে। তবে প্রতি দুই রাকাত এক সালামে হতে হবে। দুই এর অধিক রাকাত এক সালামে এই ক্ষেত্রে শুদ্ধ হবে না।
أسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ আপনার সর্বময় জ্ঞানের আলোকে যা কল্যাণকর আমি তা চাচ্ছি, যেহেতু আপনিই ভাল-মন্দ সব জানেন।
وَ أسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ আপনার নিকট সে কাজ করার সক্ষমতা প্রার্থনা করছি।
وَ أسْألُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ এ বাক্য দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, কোন কাজে সফল হওয়া আল্লাহ তাআলার অনুকম্পা ও অনুগ্রহ ব্যতীত সম্ভব নয়।
أوْ قَالَ : فِيْ عَاجِلِ أمْرِيْ وَ آجِلِه হাদিস বর্ণনাকারী এখানে সন্দেহ পোষণ করছেন, যে রাসূল সা. اللّهُمَّ إنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أنَّ هذَا الْأمْرَ خَيْرٌ لِّيْ এবং وَ إنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أنَّ هذَا الْأمْرَ شَرٌّ لِّيْ এর পরে হয়তো فِيْ دِيْنِيْ وَ مَعَاشِيْ وَ عَاقِبَةِ أمْرِيْ - বলেছেন কিংবা فِيْ عَاجِلِ أمْرِيْ وَآجِلِه - বলেছেন।
فَاقْدُرْهُ لِيْ : الدال বর্ণে পেশ ও জবর উভয় হতে পারে। অর্থাৎ কাঙ্ক্ষিত কাজ বিষয় আমার সাধ্য দিন ও সহজ করে দিন।
وَ اصْرِفْنِيْ عَنْهُ যে কাজ আমার জন্য অমঙ্গলজনক আমাকে সে কাজ হতে বিরত রাখার সাথে সাথে অন্তরকেও সে কাজের আগ্রহ থেকে ফিরিয়ে রাখুন।
ইসতেখারার হাদিস থেকে শিক্ষণীয় বিষয়সমূহ
উম্মতের প্রতি রাসূলের অগাধ ভালোবাসা ও দয়ার জ্বলন্ত প্রমাণ এই যে, তিনি উম্মতকে শিক্ষা দিলেন প্রত্যেক কাজের ভাল-মন্দ আল্লাহ তাআলা থেকে চেয়ে নাও এবং সম্পর্ক আল্লাহর সাথে রাখ।
ইসতেখারার দোয়া এ শিক্ষা দেয় যে, কোন মানুষ তার ব্যক্তিগত যোগ্যতায় তথা নির্ভুল পদক্ষেপ, সুউচ্চ জ্ঞান বৃদ্ধি, অর্থ সম্পদ, বংশ-মর্যাদা ও আধিপত্যের দ্বারা মন্দ কাজ থেকে বেঁচে গেলে ভাল-কাজ করার ক্ষমতা রাখে না। বরং মহান আল্লাহ যাকে চান সেই শুধু ভাল কাজ করতে পারে ও মন্দ কাজ থেকে বাঁচতে পারে। এ জন্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, لا حول و لا قوة إلا بالله বেহেশতের গুপ্ত ধনসমূহের একটি ধন।
ইসতেখারা সর্ব কাজের সফলতার সর্বোত্তম উপায়। কেননা, এতে নম্রতা ও বিনয়ের সাথে মহান আল্লাহর অফুরন্ত নেয়ামতের আকাঙ্ক্ষা ও অভাবনীয় শাস্তি থেকে মুক্তির প্রার্থনা জানানো হয়। যেহেতু তিনিই সর্ব কাজের অধিকারী, তাই তিনিই জানেন, প্রতিটি কাজের পরিণাম ফল কী হবে। তাই মানুষ ইসতেখারার মাধ্যমে তারই শরণাপন্ন হয়, যাতে সফলতার দিক নির্দেশনা পায়। মহান আল্লাহ বলেছেন ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক, কাকুতি-মিনতি করে ও সংগোপনে। [সূরা আরাফ : ৫৫]
ইসতেখারা নামাজ ও দোয়ার সমন্বয়। সৌভাগ্যবান সে যে ইসতেখারা করে আর হতভাগা সে যে ইসতেখারা করে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :—
من سعادة ابن آدم استخارته الله، من سعادة ابن آدم رضاه بما قضاه الله، و من شقوة ابن آدم تركه استخارته الله، و من شقوة ابن آدم سخطه بما قضى الله عز و جل .
আদম সন্তানের সৌভাগ্যের বিষয়সমূহ থেকে একটি হল ইসতেখারা করা ও আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা। আর মানুষের দুর্ভাগ্য হল ইসতেখারা না করা ও আল্লাহর ফয়সালার উপর অসন্তুষ্ট থাকা। [আহমদ : ১৩৬৭]
এ হাদিস প্রমাণ করে যে, ইসতেখারা শরিয়ত স্বীকৃত একটি এবাদত। এ আমল সে করবে যে শরিয়ত অনুমোদিত কোন মুবাহ বা হালাল কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করে।—অথবা যে দ্বি-অবকাশমুখী মোস্তাহাবের উত্তমটি নির্ণয়ের ইচ্ছা করে। কেননা দ্বি-অবকাশমুখী মোস্তাহাব এবং ওয়াজিব কাজ আদায়ে হারাম ও মাকরূহ কাজ পরিহারে ইসতেখারা হয় না। হ্যা যদি কোন মাকরূহ পরিহার করাতে অপূরণীয় ক্ষতির আশঙ্কা থাকে তাহলে সে মাকরূহ ছাড়া না ছাড়ার ব্যাপারে ইসতেখারা হতে পারে। যে সব কাজে ইসতেখারা হয় তন্মধ্যে—যেমন সফর, চাকুরি, বিয়ে ঘর বা দোকান ভাড়া ইত্যাদি।
ইসতেখারার নামাজ কমপক্ষে দুই রাকাত এবং তা নফল। হ্যাঁ, যদি তাহিয়্যাতুল মসজিদের সাথে সাথে (যা মসজিদের প্রবেশের পর পর পড়া হয়) ইসতেখারার নিয়ত করলে এক সাথে উভয়টা আদায় হয়ে যাবে।
হাদিসের বাহ্যিক দৃষ্টিতে বোঝা যাচ্ছে যে ইসতেখারার দোয়া নামাজের পরে হবে। কিন্তু কিছু সংখ্যক ওলামা বলেছেন নামাজের মধ্যেও হতে পারে। যেমন সেজদারত অবস্থায় ও শেষ বৈঠকে তাশাহুদ ও দরুদ শরীফের পর। হাদিসের বর্ণনায় বুঝা যাচ্ছে যে আগে নামাজ অত:পর দোয়া। তার কারণ, ইসতেখারা করার অর্থই হল ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের কল্যাণ চেয়ে নেওয়া। আর আল্লাহর রহমতের দরজা খোলার জন্য নামাজতুল্য কোন এবাদত নেই। কেননা নামাজই একমাত্র এবাদত যাতে অনেক এবাদতের সমষ্টি রয়েছে। আল্লাহর প্রশংসা তার বড়ত্ব ও মহত্ত্ব ও সর্ব শ্রেণির লোকের সর্বাবস্থায় মুখাপেক্ষীর উজ্জ্বল প্রমাণ।
যে ব্যক্তি ইসতেখারা করবে সে অবশ্যই দোয়ার মাঝে তার প্রত্যাশিত বিষয় উলেখ করবে।
বিজ্ঞ আলেমগণ বলেছেন, ইসতেখারা করার পর তার মন যে দিকে ধাবিত হবে সে দিকেই যাবে। আর যদি কোন দিকে ধাবিত না হয় তা হলে যতক্ষণ পর্যন্ত কোন দিক নির্দেশনা না পাবে, বা কোন দিকে মন ধাবিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ইসতেখারা করতে থাকবে।
এ হাদিসে আল্লাহর দুটি সিফাত বা গুণ প্রমাণিত হল। এক : এলেম বা জ্ঞানের সিফাত। দুই : কুদরত বা ক্ষমতার সিফাত। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর নাম বা গুণের উসিলায় দোয়া করা শরিয়ত স্বীকৃত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/353/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।