hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

গুরুত্বপূর্ণ বিশটি হাদিসের ভাষ্য

লেখকঃ গবেষণা পরিষদ: আল-মুনতাদা আল-ইসলামী

২০
দুনিয়া-আখেরাত—উভয় জগতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ
عَنْ أبِيْ بَكْرَةَ-َ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ- قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ- صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : مَامِنْ ذَنْبٍ أجْدَرُ أن يُّعَجِّلَ اللهُ لِصَاحِبِهِ الْعُقُوْبَةَ فِي الدُّنْيَا مَعَ مَا يَدَّخِرُهُ لَهُ فِي الآخِرَةِ مِنَ الْبَغْيِ وَقَطِيْعَةِ الرِّحْمِ . رواه الترمذي وقال : حسن صحيح .

‘সাহাবি আবু বাকরাহ রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সা. বলেছেন, জুলুম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকরণ ছাড়া এমন কোনো গুনাহ নেই যার শাস্তি আল্লাহ তাআলা আখেরাতে জমা করে রাখার সাথে সাথে দুনিয়াতেও নগদ প্রদান করেন।’ (ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন হাদিসটি হাসান, সহিহ।) [হাদিসটি তিরমিজি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন ‘হাসান ও সহিহ’]

হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি : বিশিষ্ট সাহাবি আবু বাকরাহ নুফাই ইবনে আল হারেস, রাসূল সা.-এর মুক্ত গোলাম। অষ্টম হিজরিতে হুনাইনের যুদ্ধ সংগঠিত হয়। আবু বাকরাহসহ হাওয়াযেন ও সাক্বীফের কয়েক জন যুদ্ধাপরাধী যুদ্ধের ময়দান হতে পলায়ন করে তায়েফের দুর্গে আশ্রয় নেয়। রাসূল সা. তাদের পিছু নেন, তায়েফের দুর্গ ঘেরাও করেন। বিভিন্ন মতানুসারে চলিশ দিন, বিশ দিনের কিছু বেশি, তবে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী দশ দিনের কিছু বেশি সময় ঘেরাও করে রাখেন। উভয় পক্ষে তুমুল লড়াই চলে। অত:পর রাসূল সা. ঘোষণা দেন, যে দুর্গ হতে বের হয়ে আমাদের কাছে চলে আসবে—সে মুক্ত। এ ঘোষণা শুনে বেশ কয়েকজন লোক পালিয়ে চলে আসে। যাদের সংখ্যা দশের বেশি ছিল। আবু বাকরাহ পানি উত্তোলনকারী গোলাকার চরকি দ্বারা দেয়ালে চড়েন—যার আরবি নাম বাকরাহ—দেয়াল টপকে রাসূল সা.-এর কাছে চলে আসেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। সেখান থেকে রাসূল সা. তার নামকরণ করেন ‘আবু বাকরাহ’। তিনি রাসূল সা.-কে বলেন ‘আমি গোলাম’। রাসূল সা. তাকে মুক্ত করে দেন। তিনি অনেক হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি ছিলেন ফিক্বাহবিদ অন্যতম একজন সাহাবি। মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ানের খেলাফত-যুগে বসরাতে ইন্তেকাল করেন। হাসান বলেন, ইমরান বিন হুসাইন ও আবু বাকরাহ হতে উত্তম কোন সাহাবি বসরাতে বসতি স্থাপন করেননি।

প্রয়োজনীয় শব্দের অর্থ :—

صلة الرحم : অর্থাৎ, আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখা। অর্থাৎ নিকট আত্মীয়, যেমন—চাচা, মামা, এবং তাদের সন্তানাদির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, যোগাযোগ রক্ষা করা, সালাম আদান প্রদান করা।

قطيعة الرحم : আত্মীয়তার সম্পর্ক ছেদ করা। অর্থাৎ তাদের সাথে সম্পর্ক না রাখা। যোগাযোগ বা যাওয়া আসা না করা। সালাম আদান-প্রদান না করা।

হাদিসের তাৎপর্য ও শিক্ষা :

১.জুলুম বা অত্যাচারের বাস্তবরূপ ঘোর অন্ধকার। অত্যাচারী ব্যক্তি দুনিয়াতে নগদ শাস্তির উপযুক্ত। অনেকাংশে মৃত্যুর পূর্বে সে এর ভুক্তভোগী হয়ে যায়। কোরআনের অনেক আয়াত, রাসূল সা.-এর বহু হাদিসে জুলুম-অত্যাচারের ব্যাপারে কঠোর বার্তা এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন :—

مَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ حَمِيمٍ وَلَا شَفِيعٍ يُطَاعُ . ﴿الغافر / المؤمن : ১৮﴾

‘জালিমদের কোন বন্ধু নেই এবং সুপারিশকারীও নেই।’ [আল-গাফের : ১৮]

অন্যত্র বলেন :—

وَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ غَافِلًا عَمَّا يَعْمَلُ الظَّالِمُونَ . ﴿إبراهيم : ৪২﴾

‘জালেমরা যা করে, সে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলাকে কখনো বে-খবর মনে করো না।’ [ইবরাহিম : ৪২]

অন্যত্র বলেন :—

وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلًا . ﴿الفرقان : ২৭﴾

‘জালেম সে দিন আপন হস্ত-দ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস ! আমি যদি রাসূল-এর সাথে একই পথ অবলম্বন করতাম।’ [আল-ফোরকান : ২৭]

আবু মূসা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন—

إن الله ليملي للظالم . فإذا أخذه لم يفلت . رواه البخاري ومسلم .

‘আল্লাহ তাআলা জালিমদের অবকাশ দেন ; কিন্তু যখন পাকড়াও করেন, তখন আর রেহাই দেন না। অত:পর রাসূল সা. আল কোরআনের নিম্ন আয়াতটি পাঠ করেন—

وَكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ شَدِيدٌ . ﴿هود : ১০২﴾

‘আর তোমার পরওয়ারদেগার যখন কোন পাপপূর্ণ জনপদকে পাকড়াও করেন, তখন এমনিভাবেই ধরে থাকেন, নিশ্চয় তার পাকড়াও খুবই মারাত্মক, বড়ই কঠোর।’ [হুদ : ১০২]

২. জুলুমের অনেক প্রকার রয়েছে

ক. সবচে’ বড় জুলুম—আল্লাহ তাআলার সাথে শরিক করা। আল্লাহ তাআলার ভাষায় লোকমানের উপদেশ :—

يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ . ﴿لقمان : ১৩﴾

‘হে বৎস ! আল্লাহ তাআলার সাথে শরিক করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার সাথে শরিক করা মহা অন্যায়।’ [লোকমান : ১৩]

খ. পরিবার ও সন্তানদের প্রকৃত ইসলামি শিক্ষা না দেয়া জুলুম।

গ. সাধারণ মানুষের উপর জুলুম করা। যেমন—অত্যাচার করা, তাদের অধিকার নষ্ট করা, তাদের ইজ্জত-সম্মানে আঘাত করা।

ঘ. জনকল্যাণ মূলক কাজে অবহেলা করা জুলুম। যেমন—শর্তানুসারে কাজের চাহিদা পুরণ না করা ; অথবা জনকল্যাণমূলক কাজ বিলম্ব করা।

ঙ. কর্মচারী ও মজুরদের উপর জুলুম করা। তাদের প্রাপ্য কম দেয়া। অথবা তাদের সাধ্যের উপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়া।

৩. আল্লাহ তাআলার দ্বীনে জরায়ু তথা রক্তের সম্পর্কের অনেক গুরুত্ব রয়েছে, যা বজায় রাখা ওয়াজিব, ছিন্ন করা হারাম। যার প্রমাণ রাসূল সা. এর হাদিস—

إن الله خلق الخلق , حتى إذا فرغ قامت الرحم فقالت : هذا مقام العائذ بك من القطيعة، قال : نعم، أما ترضين أن أصل من وصلك، وأقطع من قطعك، قالت : بلى، قال : فذلك لك . رواه مسلم (৪৬৩৪)

‘আল্লাহ তাআলা সমস্ত সৃষ্টিকে সৃষ্টি করেছেন। যখন শেষ পর্যায়ে পোঁছেন, জরায়ুর সম্পর্ক তখন উঠে দাঁড়াল, এবং বলল : এ জায়গা তোমার নিকট সম্পর্ক ছেদন হতে পানাহ চাওয়ার। আল্লাহ তাআলা বলেন, হ্যাঁ। তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নয় যে তোমাকে রক্ষা করবে আমি তাকে রক্ষা করব, যে তোমাকে ছিন্ন করবে আমি তাকে ছিন্ন করব ? সে বলল, অবশ্যই। আল্লাহ তাআলা বলেন, এটাই তোমাকে প্রদান করা হল। অতঃপর রাসূল সা. বলেন তোমরা প্রমাণ চাইলে নিম্নোক্ত আয়াতটি তেলাওয়াত কর :—

فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ . أُولَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ . ﴿محمد : ২২-২৩﴾

‘ক্ষমতা লাভ করলে সম্ভবত: তোমরা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। এদের প্রতি আল্লাহ তাআলা অভিসম্পাত করেন। অতঃপর তাদের বোধির ও দৃষ্টি শক্তিহীন করেন।’ [মোহাম্মদ : ২২-২৩]

৪. জরায়ুর সম্পর্ক বা রক্তের বন্ধন অক্ষত রাখার কিছু উপায় :

তাদের সাথে সাক্ষাৎ করা, খোঁজ খবর নেয়া, নিকট আত্মীয়দের উপর আস্থা রাখা, নরম ভাষায় সম্বোধন করা। তদ্রুপ উপযুক্ত উপহার সামগ্রী পেশ করা, ভাল কিছু অর্জিত হলে অভিবাদন জানানো, গরিব-ঋণগ্রস্তকে ঋণ আদায়ে সাহায্য করা, দান-সদকা করা, প্রয়োজন পুর্ণ করা, সব সময় কল্যাণ ও সফলতার জন্য দোয়া করা—ইত্যাদির মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্ক অবিচ্ছিন্ন থাকে।

৫. জরায়ুর সম্পর্ক অটুট রাখলে বয়স বাড়ে, বরকতময় হয়। সম্পদ বর্ধিত হয় এবং তার শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। অধিকন্তু আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের ভিতর গুনাহ মোচন হতে থাকে এবং নেকি বাড়তে থাকে। আনাস রা. হতে ইমাম বোখারি রহ. বর্ণনা করেন, রাসূল সা. বলেছেন—

من أحب أن يبسط له في رزقه، وينسأ له في أثره فليصل رحمه . رواه البخاري ( ৫৫২৭)

‘যে ব্যক্তি রিজিক প্রশস্ত ও হায়াত বাড়াতে চায়, সে যেন আত্মীয়তার (জরায়ুর) সম্পর্ক রক্ষা করে।’ [বোখারি : ৫৫২৭]

৬. প্রকৃত মুসলমান নিজের জন্য যা পছন্দ করে অপরের জন্যও তা পছন্দ করে। তাদের অধিকার আদায় করে। তাদের উপর জুলুম করে না, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে বা ইশারা ইঙ্গিতের মাধ্যমে তাদের সাথে অহমিকা প্রদর্শন করে না, ধৃষ্টতা দেখায় না।

৭. আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য অপরাধের বিপরীতে যে শাস্তি নির্ধারণ করেছেন, তা কখনো কখনো দুনিয়াতে নগদ প্রদান করেন। আবার কখনো পরকালের জন্য জমা রাখেন। সুতরাং প্রতিটি মুসলমানের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। গোনাহের শাস্তি দুনিয়াতে না দেখে, আল্লাহ তাআলার নাফরমানি ও অবাধ্যতার সামান্যতম জিনিসকেও গৌণ মনে করবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন