মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. এক হাদিসে কুদসীতে এরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, তিনি যাবতীয় ভালো ও গর্হিত কাজ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। অত:পর তিনি তা বিশদভাবে বর্ণনা করে বলেন—যে ব্যক্তি মনে মনে একটি ভালো কাজের ইচ্ছা পোষণ করল, কিন্তু তা কর্মে পরিণত করল না, আল্লাহ তার নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করে দেন। আর যদি সে ইচ্ছা পোষণ করার সাথে তা কর্মেও পরিণত করে, তবে তিনি তার নামে দশ হতে সাত শত গুণ অবধি—কিংবা তারও বেশি—সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করে দেন। আর যে ব্যক্তি অসৎ-কর্মের ইচ্ছা মনে মনে পোষণ করার পরও তা কর্মে পরিণত না করে, আল্লাহ তার জন্য একটি সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করে দেন। আর যদি ইচ্ছা করার সাথে সাথে তা কর্মে পরিণত করে, তবে তার নামে কেবল একটি মন্দ-কর্ম লিপিবদ্ধ করেন।
শব্দ প্রসঙ্গে আলোচনা :
- فِيْمَا يَرْوِيْ عَنْ رَّبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ : (যা তিনি বর্ণনা করেন নিজ প্রতিপালকের পক্ষ হতে) হাদিসে কুদসি বর্ণনার একটি পদ্ধতি।
إنَّ اللهَ كَتَبَ الَحسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ : হতে পারে এটি আল্লাহর কালামেরই একটি অংশ। তখন ‘আল্লাহ তাআলা বলেছেন’—বাক্যাংশটিকে বাক্যের অনুক্ত অংশ ধরা হবে। কিংবা হতে পারে এটি রাসূল সা.-এর কথন, যাতে তিনি আল্লাহ তাআলার একটি কর্মের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।
كَتَبَ : আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাগণকে লিপিবদ্ধ করণে নির্দেশ প্রদান করলেন। কেউ কেউ বলেন, এখানে একটি অনুল্লেখ্য ঊহ্য অংশ রয়েছে—‘ফেরেশতাদের মধ্য হতে লিপিকারদের সে ব্যাপারে জ্ঞাত করালেন’—সেই ঊহ্য অংশ।
ثُمَّ بَيْنَ ذَلِكَ : অর্থাৎ আল্লাহ তা স্পষ্ট করে বর্ণনা করলেন। এবং পরবর্তী বক্তব্যের মাধ্যমে তা বিশদ করে দিয়েছেন।
فَمَنْ هَمَّ : الهم অর্থ ইচ্ছাকে কর্মে রূপদানের কামনা ত্বরান্বিত করা। هممت بكذا অর্থাৎ ইচ্ছার মাধ্যমে কাজটি করার দৃঢ় অবস্থানে উন্নীত হয়েছি। অস্থায়ী ও খুবই সাময়িক ইচ্ছার তুলনায় এটি কিছুটা দৃঢ় ও কর্মে পরিণত করার সংকল্পে অনড়। কেউ কেউ বলেন, বাক্যাংশটির স্বাভাবিক অর্থই গৃহীত হবে ; অর্থ : إذا أراد (যখন সে ইচ্ছা করল)।
فَلَمْ يَعْمَلْهَا : অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা অন্তরের মাধ্যমে সে তাকে কর্মে পরিণতি দান করেনি।
আহকাম ও ফায়দা :
হাদিসের মূল আলোচ্য বিষয় আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব, ফজিলত ও মহানুভবতা। তিনি বান্দাকে এই সম্মানে ভূষিত করেছেন যে, কেবল কর্মের ইচ্ছার কারণেই তিনি বান্দার নামে সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করে দিচ্ছেন। আর যখন তা কর্মে পরিণত হয়,—হোক তা আত্মিক বা শারীরিক কর্ম—তখন তিনি তা বৃদ্ধি করে দেন দশ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত। কিংবা অবস্থার তারতম্যে আরো বেশি বাড়িয়ে দেন।
তাত্ত্বিকদের মত এই যে, সাত শত গুণ কিংবা তারও বেশিতে সৎকর্ম রূপান্তরিত হওয়ার কারণ হল, সৎকর্ম সম্পাদনকালীন বান্দার এখলাস ও আন্তরিকতা কখনো কখনো স্বাভাবিকতার তুলনায় বৃদ্ধি পায়, জন্ম নেয় তার মাঝে অটল দৃঢ়তা, অন্তরের যাবতীয় সজাগ অনুভূতিগুলো কেন্দ্রীভূত হয় সেই উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে—কিংবা সে যে সৎকর্ম সম্পাদন করে, তার কল্যাণ ও উপকারিতা অব্যাহত থাকে দীর্ঘ দিন, ছড়িয়ে পড়ে দিগ্বিদিক—যেমন সদকায়ে জারিয়া, জ্ঞানের উৎসারণ, সুন্নতে হাসানা—ইত্যাদি। এর ফলে আল্লাহ তাআলা তার সৎকর্মের সংখ্যা বৃদ্ধি করেন।
হাদিসটি প্রমাণ করে, মোমিনদের অন্তরে পাপের যে চিন্তা হঠাৎ উপস্থিত হয়ে তৎক্ষণাৎ দূরীভূত হয়, তা কর্মে পরিণত করার ইচ্ছা পোষণ করে না দৃঢ়ভাবে, কিংবা চিন্তাটি তার মাঝে স্থায়িত্ব লাভ করে না,—এর ব্যাপারে আল্লাহ তাদের পাকড়াও করবেন না। অন্তরে ইচ্ছার উদয়ের পরও যদি তারা তা হতে বিরত থাকে, তবে তাদের নামে একটি সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করা হবে। আর যদি কর্মে পরিণত করে, তবে তাদের নামে একটি অপকর্মই কেবল লিপিবদ্ধ করা হবে। সৎকর্মের অনুরূপ একে বৃদ্ধি করা হবে না। বিষয়টিকে জোড়াল করে আবু হুরাইরা রা. বর্ণিত একটি হাদিস, যাতে রাসূল সা. এরশাদ করেছেন—
إن الله تجاوز لأمتي ما حدثت به أنفسها مالم يتكلموا أو يعملوا به .
আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের অন্তরে যে পাপের চিন্তার উদয় হয়, তা ক্ষমা করে দেন—যতক্ষণ না তারা সে বিষয়ে আলোচনা করে, কিংবা কর্মে পরিণত করে। [মুসলিম : ১৮১]
বান্দা এ পার্থিব জগতে যে কর্মেই অংশ নেয়—ছোট হোক কিংবা বড়, সূক্ষ্ম হোক কিংবা স্থূল,—আল্লাহ তা লিপিবদ্ধ করে রাখেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে—
وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآَثَارَهُمْ
অর্থাৎ, আমি তাদের কর্ম ও কীর্তিসমূহ লিপিবদ্ধ করে রাখি। [সূরা ইয়াছিন ১২]
আর আমলনামা সামনে রাখা হবে, তাতে যা আছে তার কারণে আপনি অপরাধীদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন। তারা বলবে : হায় আফসোস ! এ কেমন আমলনামা ! এ যে ছোট বড় কোন কিছুই বাদ দেয়নি—সবই এতে রয়েছে ! তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। আপনার পালনকর্তা কারো প্রতি জুলুম করবেন না। [কাহাফ : ৪৯]
যে ব্যক্তি অংশ নিবে অনু পরিমাণ সৎকর্মে, সে তা দেখতে পাবে। আর যে অংশ নিবে অনু পরিমাণ অসৎকর্মে, সেও তা দেখতে পাবে। [সূরা যিলযাল : ৭-৮]
মুসলমানের কর্তব্য এই যে, সে সদা সতর্ক থাকবে যেন সৎকর্ম ব্যতীত তার লিপিকায় অন্য কিছুই স্থান না পায়। যখন তার অন্তর সৎকর্মচ্যুত হবে, কিংবা উদ্রেক হবে পাপ-চিন্তার, তৎক্ষণাৎ সে তওবা, ইস্তেগফার ও অনুশোচনার মাধ্যমে নিজেকে শুধরে নিবে।
মানুষ কখনো কখনো ভাবে যে, তার প্রবৃত্তি ও মনোবাসনার আস্বাদগুলো নিহিত আছে আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ পাপকর্মে। যখন বান্দা তার প্রভুর কারণে, তার প্রতিদান প্রাপ্তির আশায়, শাস্তির ভয়ে তা ত্যাগ করবে—নিশ্চয় এর ফলে সে পুরস্কার প্রাপ্ত হবে, তাকে দান করা হবে অশেষ সওয়াব।
হাদিসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, বৈধ কাজের কারণে মানুষের জন্য কোন সওয়াব বা শাস্তির বিধান দেওয়া হয় না, যতক্ষণ না এর পিছনে কাজ করে শুদ্ধ বা অশুদ্ধ নিয়ত। বৈধ কাজগুলো শুদ্ধ বা অশুদ্ধ নিয়তের ফলে সৎ বা অসৎকর্মে পরিণত হয়।
বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার অশেষ মহানুভবতা এই যে, মানুষের সৎকর্মের ইচ্ছাগুলোকে তিনি পরিপূর্ণ সৎকর্মের স্থান দান করেছেন—যদিও সে তা কর্মে পরিণত না করে। এমনিভাবে মানুষ যখন সৎকর্ম আরম্ভ করার পর কোন প্রকার বাধা-প্রাপ্তির ফলে তা বন্ধ হয়ে যায়—সে ক্ষেত্রেও একই হুকুম। উদাহরণত: কেউ রাত জেগে এবাদতের ইচ্ছা করল, অত:পর নিদ্রাকাতর হয়ে পড়ল কিংবা আক্রান্ত হল অসুস্থতায়—এ সকল অবস্থায় কর্মটি সমাপ্ত না হলেও তার নামে সৎকর্মটি লিপিবদ্ধ করা হবে।
আল্লাহ তাআলার এ মহান মহানুভবতার—সৎকর্ম সাত শত গুণ বা তারও বেশি বৃদ্ধি, পাপের ইচ্ছা উদয় হওয়ার পরও তা লিপিবদ্ধ না করা,—আরেকটি দিক এই যে, তিনি সৎকর্মের মাধ্যমে অসৎকর্মগুলো মুছে দেন। পবিত্র কোরআনে তিনি এরশাদ করেন—
দিনের দুই প্রান্তেই সালাত কায়েম করবে এবং রাতের প্রান্ত-ভাগে। পুণ্য কর্ম অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়। [হুদ : ১১৪]
আবু যরকে সম্বোধন করে রাসূল সা. এরশাদ করেছেন—
اتق الله حيثما كنت، وأتبع السيئة الحسنة تمحها، وخالق الناس بخلق حسن .
যেখানেই অবস্থান করো, আল্লাহকে ভয় কর। পাপের পর সৎকর্ম করো, যা তাকে মুছে দেবে। মানুষের সাথে উত্তম আচরণ করো। [তিরমিজী ১৯১০]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/353/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।