hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

গুরুত্বপূর্ণ বিশটি হাদিসের ভাষ্য

লেখকঃ গবেষণা পরিষদ: আল-মুনতাদা আল-ইসলামী

২১
নিজের জন্য সদকা কর
عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ- رَضِيَ اللهُ عَنْهُ- قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : كُلُّ سُلامى مِنَ النَّاسِ عَلَيْهِ صَدَقَةٌ، كُلُّ يَوْمٍ تَطْلُعُ فِيْهِ الشَّمْسُ تَعْدِلُ بَيْنَ الْاِثْنَيْنِ صَدَقَةٌ، وَتُعِيْنُ الرَّجُلَ فِيْ دَابَّتِهِ فَتَحْمِلُهُ عَلَيْهَا أوْ تَرْفَعُ لَهُ عَلَيْهِا مَتَاعَهُ صَدَقَةٌ، وَالْكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ، وَكُلُّ خُطْوَةٍ تَمْشِيْهَا إلَى الصَّلَاةِ صَدَقَةٌ، وَتُمِيْطُ الْأذى عَنِ الطَّرِيْقِ صَدَقَةٌ . رواه البخاري (২৫০৮) ومسلم (১৬৭৭)

‘আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন—মানব জাতির প্রতিটি হাড়ের মোকাবেলায় সদকা ধার্য করা আছে। প্রতিদিন, যাতে সূর্য উদিত হয়, দুজনের মাঝে সুষ্ঠু মীমাংসা করা সদকা। যানবাহনে আরোহণকালীন কাউকে সাহায্য করা সদকা—যেমন কাউকে যানবাহনে উঠিয়ে দেয়া বা কোন জিনিস যানবাহনে উঠাতে সাহায্য করা। কল্যাণ মূলক কথা বলা সদকা। নামাজে আসতে প্রতিটি কদমে কদমে সদকা। রাস্তা হতে কষ্টদায়ক কোনো জিনিস হটানো সদকা।’ [বোখারি : ২৫০৮, মুসলিম : ১৬৭৭]

হাদিসের তাৎপর্য ও শিক্ষা

১. আমাদের উপর রয়েছে আল্লাহ তাআলার অসংখ্য ও বে-হিসাব নেয়ামত। আল্লাহ তাআলা আমাদের অস্তিত্ব দান করেছেন। সুচারুরূপে সুবিন্যস্ত করেছেন আমাদের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। সৃষ্টি করেছেন আমাদের সুন্দরতম আকৃতিতে—এগুলো সন্দেহ নেই, এক বড় নেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বলেন :—

وَمَا بِكُمْ مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنَ اللَّهِ . ﴿النحل : ৫৩﴾

‘যে সমস্ত নেয়ামত তোমাদের নিকট আছে সব আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে।’ [নাহল : ৫৩]

অন্যত্র বলেন—

يَا أَيُّهَا الْإِنْسَانُ مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ الْكَرِيمِ . الَّذِي خَلَقَكَ فَسَوَّاكَ فَعَدَلَكَ . فِي أَيِّ صُورَةٍ مَا شَاءَ رَكَّبَكَ . ﴿الإنفطار : ৬-৮﴾

‘হে মানব ! কীসে তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল ? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুবিন্যস্ত করেছেন এবং সুষম করেছেন, এবং তিনিই তোমাকে তার ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন’। [আল-ইনফেতার : ৫-৮]

২. রাসূল সা. আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন—অস্থিসমূহের সুবিন্যস্ততা এবং ত্রুটি মুক্ত হওয়া আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নেয়ামত। তাই প্রতি হাড়ের জন্য আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া স্বরূপ মানুষের সদকা করা জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন—

قُلْ هُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ . ﴿الملك : ২৩﴾

‘বলুন, তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং দিয়েছেন কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’ [আল-মুলক : ২৩]

আরো বলেন—

وَاللَّهُ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ لَا تَعْلَمُونَ شَيْئًا وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ . ﴿النحل : ৭৮﴾

‘আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ হতে ভূমিষ্ঠ করেছেন। তোমরা কিছুই অবগত ছিলে না। তিনি তোমাদেরকে কর্ণ, চক্ষু অন্তর প্রদান করেছেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’ [আন-নাহাল : ৭৮]

৩. অত্র হাদিসে রাসূল সা. বর্ণনা করেছেন—বনী আদমের কর্তব্য সদকার মাধ্যমে স্বীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিনিময়ে প্রত্যহ আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করা। হাদিসে বর্ণিত উদাহরণসমূহের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের পদ্ধতিও বাতলে দিয়েছেন।

৪. ওলামায়ে কেরাম বলেছেন—আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের দুটি স্তর রয়েছে।

ক. ওয়াজিব তথা অবশ্য কর্তব্য শুকরিয়া। অর্থাৎ ওয়াজিব আমলগুলো পালন করা, হারাম হতে বিরত থাকা।

খ. মোস্তাহাব তথা ঐচ্ছিক শুকরিয়া। অর্থাৎ ফরজ আদায় করে, হারাম হতে বিরত থাকার পর নফল এবাদত করা।

৫. মানুষের মাঝে মীমাংসা করা, ভালোবাসা, মহববত ও সুসম্পর্ক স্থাপন করা, পরস্পর বিরোধিতা, হিংসা-বিদ্বেষ দূর করা—এর দ্বারা আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় ও অধিক ছাওয়াব অর্জিত হয়।

৬. মানুষের সেবা করা এবং তাদের প্রয়োজন পুর্ণ করা, তাদের অধিকার আদায়ের জন্য চেষ্টা করা, ঋণগ্রস্ত অভাবী ব্যক্তিদের সুযোগ দেয়া। এ ধরনের আরো খেদমত আঞ্জাম দেয়া যার দ্বারা অপর ব্যক্তি উপকৃত হয়—অধিক সওয়াবের এবং উত্তম আমল। আল্লাহ তাআলা বলেন—

لَا خَيْرَ فِي كَثِيرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوفٍ أَوْ إِصْلَاحٍ بَيْنَ النَّاسِ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ مَرْضَاةِ اللَّهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا . ﴿النساء : ১১৪﴾

‘তাদের অধিকাংশ সলা-পরামর্শ ভাল নয়। কিন্তু যে সলা-পরামর্শ দান খয়রাত করতে কিংবা সৎকাজ করতে, কিংবা দুজনের মাঝে সন্ধি-স্থাপন কল্পে করা হয়, তা স্বতন্ত্র। যে এ কাজ করে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্যে, আমি তাকে বিরাট সওয়াব দান করব।’ [আন নিসা : ১১৪।]

আল্লাহ তাআলা অনেক অনেক নেয়ামত আমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তার মাঝে আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অন্যতম ; যার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন জৈবিক চাহিদা পূরণ করি। তবে এর ভিতর একমাত্র জিহবা কথা বলতে সক্ষম, আমরা যদি একে আল্লাহ তাআলার নির্দেশ অনুযায়ী পরিচালনা করি—সন্দেহ নেই বিপুল সওয়াব পাব। রাসূল সা. হাদিসে বলেছেন, الكلمة الطيبة صدقة . ‘ভাল কথা সদকা।’ যেমন—ইলমে দ্বীন শিক্ষা দেয়া, কোরআন পড়ানো, আল্লাহ তাআলার দিকে আহবান করা, সৎকাজের আদেশ প্রদান, অসৎ কাজ হতে বাধা প্রদান, হারানো ব্যক্তিকে পথ দেখানো, সালাম দেয়া এবং সালামের উত্তর দেয়া, হাঁচি দাতার الحمد لله -এর উত্তরে يرحمك الله বলা—ইত্যাদি।

৮. নামাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ, মর্যাদাশীল ও শরিয়তের ভিতর উঁচুমানের একটি এবাদত—বিধায় নামাজি ব্যক্তি নামাজের জন্যে যে পথে চলে তার প্রতিটি কদমে কদমে সওয়াব দেয়া হয়। অর্থাৎ প্রতি কদমে সে সদকার সওয়াব লাভ করে।

৯. মুসলমান নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার ভাইয়ের জন্যও তা পছন্দ করে। সে তার ভাইকে খুশি করতে চেষ্টা করে, তার অবর্তমানে শারীরিক বা মানসিক পীড়াদায়ক জিনিস প্রতিহত করে। যেমন—তার রাস্তা হতে পাথর, কাচ, ময়লা, পেরেক ও কলার ছিলকা জাতীয় কষ্টদায়ক জিনিস দূর করে। তদুপরি আল্লাহ তাআলার রাসূল সা. এ কাজকে ঈমানের শাখার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি বলেন—

الإيمان بضع وسبعون شعبة، أعلاها قول لاإله إلا الله، وأدناها إماطة الأذى عن الطريق . رواه مسلم ( ৫১)

‘ঈমানের সত্তুরের উপরে শাখা রয়েছে, সর্বোত্তম শাখা হল لاإله إلا الله -এর বাণী। সর্ব নিম্ন শাখা হল إماطة الأذى عن الطريق -অর্থাৎ রাস্তা হতে কষ্টদায়ক বস্ত্ত হটানো।’

১০. অত্র হাদিসে বর্ণিত প্রতিটি আমলকে খুব গুরুত্ব দেয়া, আল্লাহ তাআলার শুকরিয়ার জন্য এ গুলোকে সম্পাদন করা—বলা বাহুল্য, একান্ত জরুরি। এ হাদিসের অন্য বর্ণনায় আরো কিছু নেক আমলের কথা উলেখ রয়েছে। যেমন— ذكر الله আল্লাহর জিকির। الحمد لله আল-হামদুলিল্লাহ। سبحان الله সুবহানাল্লাহ। لا إله إلا الله লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু। الله أكبر আল্লাহু আকবার—ইত্যাদি তাসবীহ পাঠ করা। সৎকাজের আদেশ ও অসৎ-কাজের নিষেধ করা ; অভাবী দুঃখ-ভারাক্রান্তদের সাহায্য করা ; দুর্বলদের উৎসাহ প্রদান ও সহযোগিতা করা ; অন্ধদের রাস্তা দেখানো—ইত্যাদি।

১১. সহি মুসলিম এর বর্ণনায় অত্র হাদিসের শেষে আছে—

عن أبي ذر- رَضِيَ اللهُ عَنْهُ - : ويجزي من ذلك كله ركعتان يركعهما من الضحى . رواه مسلم (১১৮১)

‘সাহাবি আবু যর রা. বলেন. প্রথম প্রহরের দুই রাকাত নামাজ সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শুকরিয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।’ [মুসলিম : ১১৮১।]

এ হাদিস সাধারণভাবে সব নামাজ এবং বিশেষ করে প্রথম প্রহরের নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব প্রমাণ করে। ওলামায়ে কেরাম বলেছেন দুই রাকাত নামাজ সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শুকরিয়ার জন্য যথেষ্ট হবে, কারণ নামাজের ভিতর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহ তাআলার এবাদত ও তার আনুগত্যে ব্যবহার হয়। সুতরাং দুই রাকাত নামাজ প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিনিময়ে সদকার জন্য যথেষ্ট হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন