মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
নূহ আলাইহিস সালাম-এর দা‘ওয়াতের কার্যক্রম ও পদ্ধতিতে আজকের যুগের দা‘ঈদের জন্য অসংখ্য উপদেশাবলী ও শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে,যা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে ইসলামী দা‘ওয়াহকে ফলপ্রসু করা সম্ভব। যেমন:
নম্র ও উত্তম ব্যবহার: ইসলামী দা‘ওয়াহর ক্ষেত্রে নম্র ও উত্তম ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। নম্রতা দা’ঈকে মাদ‘উদের নিকটতম করে দেয় এবং তদেরকে দ্বীন গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন এ গুণের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। পবিত্র কুরআনে এসেছে:
‘‘আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয়ের হয়েছেন। যদি আপনি রূঢ় ও কঠিন হৃদয় হতেন,তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেত। সুতরাং আপনি তাদের ক্ষমা করে দেন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন, পরামর্শ করে কাজ করুন, আর যখন সিদ্বান্ত নিবেন তখন আল্লাহর ভরসা করুন, নিশ্চয় আল্লাহ ভরসাকারীকে ভালোবাসেন।’’ [আল কুরআন, সূরা আলে ইমরান : ১৫৯।]
সুস্পষ্টভাবে দা‘ওয়াত পেশ: দা’ঈকে সুস্পষ্টভাবে দা‘ওয়াত দিতে হবে,কোন অস্পষ্টতার ছাপ থাকবে না। নবী-রাসূলগণ স্বজাতির নিকট এভাবে দা‘ওয়াত দিতেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
‘‘আমি প্রত্যেক জাতির নিকট তাদের ভাষা সহকারে রাসূল পাঠিয়েছি, যাতে করে তিনি সুস্পষ্টভাবে তাদের মাঝে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।’’ [আল কুরআন, সূরা ইব্রাহিম: ৪।] তাই নূহ আলাইহিস সালাম বলেছিলেন: নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সুস্পষ্ট ভয় প্রদর্শনকারী। [আল কুরআন, সূরা নূহ: ২।] তাছাড়া প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও সুস্পষ্ট ভাষায় কথা বলতেন,যাতে করে মাদ‘উগণ বুঝতে ও অনুধাবন করতে সক্ষম হন। [আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবন ঈসা, সুনানে তিরমিযি, শামায়েলে তিরমিযি, মাকতাবাতে রশীদীয়া, দিল্লী, পৃ. ১৪।]
নি:স্বার্থ ও একনিষ্ঠভাবে দা‘ওয়াত দান: দা‘ঈকে নি:স্বার্থ ও একনিষ্ঠভাবে দা‘ওয়াত পেশ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন প্রকারের পার্থিব প্রতিদানের আশা করা যাবে না। একমাত্র আল্লাহর প্রতিদানের প্রত্যাশী হয়েই যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ দা‘ওয়াতের মহান কাজ আঞ্জাম দিয়েছেন। এ মর্মে নূহ আলাইহিস সালাম-এর বক্তব্য পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে:
﴿ وَيَٰقَوۡمِ لَآ أَسَۡٔلُكُمۡ عَلَيۡهِ مَالًاۖ إِنۡ أَجۡرِيَ إِلَّا عَلَى ٱللَّهِۚ ﴾ [ هود : ٢٩ ] ‘‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি দা‘ওয়াহর বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোন সম্পদের প্রত্যাশী নই। আমি একমাত্র আল্লাহর প্রতিদানের প্রতীক্ষায় আছি।’’ [আল কুরআন, সূরা হুদ : ২৯।]
সৎকর্ম মুক্তির একমাত্র উপায়: প্রত্যেককে নিজ নিজ কৃতকর্ম ও কার্যকলাপের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহী করতে হবে, এক্ষেত্রে পিতার বুযর্গী ও উচ্চ মর্যাদা দ্বারা পুত্রের প্রতিকার হবে না এবং পুত্রের নেক আমল দ্বারা পিতাও উপকৃত হবে না। এ বিষয়ে নূহ ও ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সুতরাং সৎকর্মই একমাত্র মুক্তির গ্যারান্টি।
মু’মিনের সংস্পর্শ লাভ: কোন কাফির যদি মু’মিনের সংস্পর্শে থাকে,তাহলে তাতে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব। যতক্ষণ না সে ব্যক্তি নিজে মু’মিন হবে; ফলে নবীর স্ত্রী ও পুত্র হয়েও জাহান্নামের শাস্তির উপযোগী হতে পারে। সৎ সংসর্গ মানুষকে পাপাচার থেকে দূরে রাখে এবং অসৎ সঙ্গ মন্দকাজে নিয়োজিত করে। অতএব, দা’ঈদের উচিত সর্বদা সৎ লোকের সংস্রবে থাকা। হাদীসে এসেছে: ‘‘প্রতিটি লোক তার সাথেই থাকবে, যাকে সে ভালবাসে।’’ [মুসলিম ইবন হাজ্জাজ, সহীহ মুসলিম, প্রাগুক্ত, বাবুল বির, ২য় খন্ড, পৃ. ৩৩১।]
আল্লাহর সাহায্যের প্রত্যাশী হওয়া: দা’ঈদেরকে সর্বদা আল্লাহর সাহায্যের প্রত্যাশী হতে হবে। কেননা আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত এ কাজে সফলতা আসা অসম্ভব। ফলে অনুকুল প্রতিকুল সর্বাবস্থায় তাঁর সাহায্য কামনা করবে। নূহ আলাইহিস সালাম সর্বদা আল্লাহর সাহায্যের প্রতিক্ষায় থাকতেন। জাতির লোকদের অবাধ্যতার অবসানে তিনি প্রার্থনার ছলে বলেন: ﴿ قَالَ رَبِّ ٱنصُرۡنِي بِمَا كَذَّبُونِ ٢٦ ﴾ [ المؤمنون : ٢٦ ] ‘‘হে আমার রব! আমাকে সাহায্য করুন। তারা আমার উপর মিথ্যারোপ করছে।’’ [আল কুরআন, সূরা আল মু’মিনুন : ২৬।]
জোর জবরদস্তির আশ্রয় না নেয়া: মাদ‘উদের দ্বীনের পথে জোর জবরদস্তি করে দা‘ওয়াত গ্রহণে বাধ্য করা যাবে না। কেননা,জোর করে কারো হৃদয়কে বিজয় ও সন্তুষ্ট করা যায় না। অতএব দা‘ওয়াহকে হিকমতপূর্ণ ও সঠিকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে মাদ‘উদেরকে আকৃষ্ট করবে। এটি নূহ আলাইহিস সালাম-এর দা‘ওয়াহর অন্যতম একটা পদ্ধতি। তাই পবিত্র কুরআনে এসেছে:
‘‘তিনি (নূহ আ.) বললেন, হে আমার কাওম! একটু ভেবে দেখ, যদি আমি আমার রবের পক্ষ থেকে একটা স্পষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তাঁর বিশেষ রহমত প্রাপ্ত হই। অথচ তা তোমাদের নজরে পড়েনি,তাহলে আমি কি জবরদস্তি করে তোমাদের ঘাঁড়ে তা চাপিয়ে দিতে পারি?’’ [আল কুরআন, সূরা হুদ: ২৮।] তাছাড়া মাহান আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন :
﴿ لَآ إِكۡرَاهَ فِي ٱلدِّينِۖ ﴾ [ البقرة : ٢٥٦ ]
‘‘অর্থাৎ দ্বীনের মধ্যে কোন জবরদস্তি নেই।’’ [আল কুরআন, সূরা আল বাকারা: ২৫৬।]
দা‘ওয়াতের পাশাপাশি সমসাময়িক উপকরণ ব্যবহার : দা‘ঈ আল্লাহর উপর পূর্ণ নির্ভর ও ভরসা রেখে সমসাময়িক যুগশ্রেষ্ঠ বাহ্যিক উপকরণাদি ব্যবহার করতে পারবে। এটি তাওয়াক্কুল-এর পরিপন্থী নয়। বরং আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুলের জন্য সঠিক কর্মপন্থা। এজন্যেই নূহ আলাইহিস সালাম প্লাবন হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য নৌকা তৈরীর আদিষ্ট হয়ে তা তৈরী করেন। [আল কুরআন, সূরা হুদ : ৩৭।]
হিকমত অবলম্বন: হিকমত বা প্রজ্ঞার গুরুত্ব দা‘ওয়াহর ক্ষেত্রে অপরিসীম। দা‘ওয়াতের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ,সময়,স্থান কাল, পাত্র ভেদে দিন-রাত সর্বাবস্থায় দা‘ওয়াতের কাজ আনজাম দিবে। পাশাপাশি হিকমতপূর্ণ ও উত্তমভাবে মাদ‘উদের প্রশ্ন ও সন্দেহের অসারতা প্রমাণ করে যুগের শ্রেষ্ঠ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দা‘ওয়াহকে তুলে ধরবে। মহান আল্লাহ বলেন:
‘‘হে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপন পালনকর্তার পথে হিকমত, উত্তম উপদেশ ও পছন্দযুক্ত পন্থায় তর্কের মাধ্যমে আহবান করুন।’’ [আল কুরআন, সূরা আন নাহল: ১২৫।]
জুলুমের পরিণাম ধ্বংস : কোন জাতির ধ্বংসের অন্যতম কারণ জুলূম বা অত্যাচার। আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করা মস্তবড় জুলূম। যার পরিণতি হল ধ্বংস। মূলত: কুফর ও শির্ক নিয়ে বাড়াবাড়ির কারণে আল্লাহ তা‘আলা নূহের সম্প্রদায়কে মহাপ্লাবনের মাধ্যমে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ﴿ فَأَخَذَهُمُ ٱلطُّوفَانُ وَهُمۡ ظَٰلِمُونَ ١٤ ﴾ [ العنكبوت : ١٤ ] ‘‘ অত:পর তুফান বা মহাপ্লাবন (আমার আযাব) তাদেরকে পাকড়াও করেছে। আর এমতাবস্থায় যে,তারা ছিল জালেম।’’ [আল কুরআন, সূরা আল ‘আনকাবুত : ১৪; সূরা হুদ: ৪৪।] অতএব,দা’ঈদের সর্বপ্রকার জুলুম থেকে বিরত থেকে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েমের মাধ্যমে সুশীল সমাজ গড়তে হবে।
পরিশেষে বলা যায় যে, নূহ আলাইহিস সালাম একজন বড় মাপের মুজাহিদ ও দা‘ঈ ছিলেন। একজন দা‘ঈ ইলাল্লাহ হিসেবে অসংখ্য গুণের আঁধার ছিলেন তিনি। তাঁকে শায়খুল আম্বিয়া বলা হয়। তিনিই প্রথম রাসূল যিনি মানুষদেরকে এক আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহবান জানিয়েছেন এবং যাবতীয় শিরক ও মূর্তিপূজা থেকে বিরত থারার জন্য স্বজাতিকে সতর্ক করেছিলেন। ইসলামী দা‘ওয়াহকে মানুষের মাঝে স্পষ্ট ও কাঙ্ক্ষিত উপায়ে তুলে ধরার জন্য তিনি স্থান,কাল,পাত্র ভেদে বিভিন্ন হেকমতপূর্ণ কৌশল অবলম্বন করেন। এমনকি, দা‘ওয়াহকে ফলপ্রসূ করার নিমিত্তে আল্লাহর সাহায্য ও তাঁর প্রতি পূর্ণ নির্ভর হওয়ার পাশাপাশি সমসাময়িক যুগশ্রেষ্ঠ উপকরণ ব্যবহার করতে দ্বিধা করেননি। তাই বর্তমান যুগে যারা দা’ঈ ইলাল্লাহ হিসেবে কাজ করছেন,তারা যদি দা‘ওয়াহর ক্ষেত্রে নূহ আলাইহিস সালাম-এর আদর্শ ও পন্থা বেছে নেন,তবে দা‘ওয়াহর ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব সাধন সম্ভব বলে আমার বিশ্বাস।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/465/18
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।