hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআনের আলোকে নূহ আলাইহিস সালামের দা‘ওয়াহ কার্যক্রম

লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের

দুই: ব্যক্তিত্ব :
নূহ আলাইহিস সালাম ছিলেন নানা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অসংখ্য গুণে গুণান্বিত আল্লাহ তা‘আলার একজন বিশিষ্ট নবী ও রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন :

﴿ ۞إِنَّ ٱللَّهَ ٱصۡطَفَىٰٓ ءَادَمَ وَنُوحٗا وَءَالَ إِبۡرَٰهِيمَ وَءَالَ عِمۡرَٰنَ عَلَى ٱلۡعَٰلَمِينَ ٣٣ ذُرِّيَّةَۢ بَعۡضُهَا مِنۢ بَعۡضٖۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ٣٤ ﴾ [ ال عمران : ٣٣، ٣٤ ]

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম, নূহ, ইব্রাহিম ও ইমরানের বংশকে দুনিয়ায় মনোনীত করেছেন। তাঁরা পরস্পর একই বংশের।’’ [আল কুরআন, সূরা আলে ইমরান: ৩৩-৩৪।] তিনি একজন উচ্চ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন রাসূল তথা أولو العزم এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন,যাদের নিকট হতে আল্লাহ বিশেষ প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেছেন। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছে:

﴿ وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِنَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ مِيثَٰقَهُمۡ وَمِنكَ وَمِن نُّوحٖ وَإِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۖ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّيثَٰقًا غَلِيظٗا ٧ ﴾ [ الاحزاب : ٧ ]

‘‘স্মরণ কর সে সময়ের কথা! যখন, আমি নবীগণের মধ্য হতে আপনার কাছ থেকে এবং নূহ, ইব্রাহীম, মূসা ও মরিয়ম তনয় ঈসার কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিলাম।’’ [আল কুরআন, সূরা আল আহযাব: ৭।] আর এটা ছিল নবুওয়ত ও রেসালাত বিষয়ক দায়িত্বসমূহ পালন এবং পরস্পর সত্যতা প্রকাশ ও সাহায্য সহযোগিতা প্রদান সম্পর্কিত। [মুফতী মুহাম্মদ শফী, তাফসীরে মা’আরেফূল কুরআন, অনুবাদ মাও: মহিউদ্দীন খান, খাদেমুল হারামাইন বাদশাহ ফাহাদ, কুরআন মুদ্রণ প্রকল্প, তা.বি. পৃ. ১০৭২।] কুরআনুল কারীমে সম্মান ও মর্যাদা সহকারে তাঁর নাম ২৮ টি সূরার ৪৩ টি আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে। [মুহাম্মদ ফুয়াদ আবদুল বাকী, আল মু‘জামু আল মুফাহরাস লি আলফায আল কুরআনিল কারীম, দারুল হাদীস, মিশর-১৯৮৭, পৃ. ৭২২-৭২৩।]

এমনকি,‘‘নূহ’’ নামে একটি সূরাও নাযিল করা হয়েছে। তিনি আলাইহিস সালাম আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাঁর প্রশংসায় আল্লাহ বলেন,

﴿ إِنَّهُۥ كَانَ عَبۡدٗا شَكُورٗا ٣ ﴾ [ الاسراء : ٣ ]

‘‘নিশ্চয় তিনি কৃতজ্ঞ ও অনুগত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।’’ [আল কুরআন, সূরা আল ইসরা: ৩।] খানা-পিনা, পোষাক-পরিচ্ছেদসহ সার্বিক বিষয়ে তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করতেন। [জুমআ’ আলী আল খাওলী, তারিখুদ্ -দা‘ওয়াহ, দারুত্ ত্বাবআ’ আল মুহাম্মদীয়া, আযহার, ১ম সংস্করণ-১৯৮৪, ১ম খন্ড, পৃ. ৮৯।] আদম আলাইহিস সালাম-এর পরে ইনি প্রথম নবী, যাকে প্রথম রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে। সহীহ মুসলিম শরীফের শাফা‘আত অধ্যায়ে একটি দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত আছে,

يا نوح أنت أول الرسل إلى الأرض» «

‘‘হে নূহ! তোমাকে যমীনের উপর সর্বপ্রথম রাসূলের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।’’ [মুসলিম ইবন্ হাজ্জাজ,সহীহ মুসলিম, শরহে মুসলিম, নববী, আল মাতবা’ আল মিছরীয়াহ, দিল্লী, তা.বি, ১ম সংস্করণ-১৯২৯ খৃ. বাবু শাফায়াত, ৩য় খন্ড, পৃ. ৬৭।] তিনি সর্বপ্রথম যাবতীয় হুকুম আহ্কাম ও বিধি-বিধানের প্রবর্তক ছিলেন। ফলে, পরবর্তীতে যাবতীয় বিধি-বিধান তাঁর পথ ধরেই প্রণীত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন :

﴿۞شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحٗا وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ وَمَا وَصَّيۡنَا بِهِۦٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنۡ أَقِيمُواْ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواْ فِيهِۚ ﴾ [ الشورى : ١٣ ]

‘তিনি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নির্ধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, আর যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি, আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহিম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না।’’ [আল কুরআন, সূরা আশ শুরা: ১৩।] প্রখ্যাত মুফাসসির ও ঐতিহাসিকগণ তাঁকে দ্বিতীয় আদম বলে অভিহিত করেছেন। কেননা, নূহ আলাইহিস সালাম-এর সময়কার মহাপ্লাবনে সারা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কেবলমাত্র নূহের কতক সংখ্যক ঈমানদার সঙ্গী বেঁচে ছিল। পরবর্তীতে মানব জাতি তাঁর বংশ পরস্পরায় পরিণত হয়। [জুম‘আ আলী আল খাওলী, তারিখুদ দা‘ওয়াহ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৯১-৯২।] সে দিকে ইঙ্গিত করে মহান আল্লাহ বলেন, ﴿ وَجَعَلۡنَا ذُرِّيَّتَهُۥ هُمُ ٱلۡبَاقِينَ ٧٧ ﴾ [ الصافات : ٧٧ ] ‘‘তাঁর (নূহ) বংশধরদেরকেই আমি অবশিষ্ট রেখেছিলাম।’’ [আল কুরআন, সূরা আস্ সাফ্‌ফাত: ৭৭।] অতএব,আজকের দিনে সকল বনী আদম নূহ আলাইহিস সালাম-এর তিন পুত্র তথা সাম, হাম ও ইয়াফাস-এর দিকেই সম্বন্ধযুক্ত হবে। [ইবন কাছীর, তাফসীর আল কুরআন আল আযীম, প্রাগুক্ত, ৪র্থ খন্ড, পৃ. ২০।] সুতরাং ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম-সহ পরবর্তী নবী-রাসূলগণ তাঁরই বংশধর। মহান আল্লাহ বলেন :

﴿وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا نُوحٗا وَإِبۡرَٰهِيمَ وَجَعَلۡنَا فِي ذُرِّيَّتِهِمَا ٱلنُّبُوَّةَ وَٱلۡكِتَٰبَۖ فَمِنۡهُم مُّهۡتَدٖۖ وَكَثِيرٞ مِّنۡهُمۡ فَٰسِقُونَ ٢٦ ﴾ [ الحديد : ٢٦ ]

‘‘আমি নূহ ও ইবরাহীমকে রাসূলরূপে প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের বংশধরের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব অব্যাহত রেখেছি। অত:পর তাদের কতক সৎপথ প্রাপ্ত হয়েছে এবং অধিকাংশই হয়েছে পাপাচারী।’’ [আল কুরআন, সূরা আল হাদীদ: ২৬।]

উপরোক্ত আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, নবুয়তের ধারাটির সূচনা হয়েছিল আদম আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে, আর তা নূহ আলাইহিস সালাম-এর বংশধরদের মধ্যেই পরবর্তীতে সীমাবদ্ধ ছিল।

তাঁর নবুওয়তপ্রাপ্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। ইবন কাছীরের মতে, পঞ্চাশ বছর বয়সে তিনি নবুওয়ত প্রাপ্ত হন। কারো কারো মতে, তিন’শ পঞ্চাশ বছর বয়সে নবুওয়ত পেয়েছিলেন। [ইবন কাছীর, কাছাছুল আম্বিয়া, মাকতাবাতুর রিসালাহ, আম্মান, তা.বি. পৃ. ৪৯।] তবে অধিকাংশ মুফাস্সিরিনের মতে, চল্লিশ বছরে তিনি নবুওয়ত লাভ করেন। [আল মাওয়ারদী, তাফসীর আল মাওয়ারদী, দারুল কুতুব আল ইলমিয়াহ, বৈরুত, লেবানন, তা.বি. ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ. ৯৮।] বিশুদ্ধ মতে নূহ আলাইহিস সালাম চল্লিশ বছর বয়সে নবুওয়ত প্রাপ্ত হন। [মুফতী মুহাম্মদ শফী, তাফসীরে মা’আরেফূল কুরআন, প্রাগুক্ত, পৃ. ১০৭২।] তিনি নবীগণের মধ্যে সবচেয়ে বেশী হায়াত পেয়েছিলেন। কুরআনের বর্ণনানুযায়ী তিনি নয়শত পঞ্চাশ বছর জীবিত ছিলেন। ফলে তাঁকে شيخ المرسلين ও বলা হয়। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন :

﴿ وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوۡمِهِۦ فَلَبِثَ فِيهِمۡ أَلۡفَ سَنَةٍ إِلَّا خَمۡسِينَ عَامٗا فَأَخَذَهُمُ ٱلطُّوفَانُ وَهُمۡ ظَٰلِمُونَ ١٤ ﴾ [ العنكبوت : ١٤ ]

‘‘আমি নূহ আলাইহিস সালাম কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম একহাজার বছর অবস্থান করেছেন।’’ [আল কুরআন, সূরা আল আনকাবুত: ১৪।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন