HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইখলাস

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী

১১
কিছু কাজ লোক দেখানো বা শির্ক বলে মনে হয়, মূলত তা নয়:
১- ভালো কাজে কাউকে প্রশংসা করা। যেমন:

عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ : قِيلَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَرَأَيْتَ الرَّجُلَ يَعْمَلُ الْعَمَلَ مِنَ الْخَيْرِ، وَيَحْمَدُهُ النَّاسُ عَلَيْهِ؟ قَالَ : «تِلْكَ عَاجِلُ بُشْرَى الْمُؤْمِنِ»

আবু যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরয করা হল, সেই ব্যক্তি সম্পর্কে কি অভিমত, যে নেক আমল করে এবং লোকেরা তার প্রশংসা করে? তিনি বললেন, এতো মুমিন ব্যক্তির জন্য তা আগাম সুসংবাদ (এতে কাজটি কবুল হওয়ার লক্ষণ বুঝা যায়)। [মুসলিম, হাদীস নং ২৬৪২।]

২- গুনাহ সম্পর্কে আলোচনা করা, অথচ আল্লাহ গুনাহ প্রকাশ করাকে অপছন্দ করেন এবং গোপন রাখা পছন্দ করেন। হাদীসে এসেছে,

فَمَنْ أَصَابَ مِنْ هَذِهِ الْقَاذُورَاتِ شَيْئًا، فَلْيَسْتَتِرْ بِسِتْرِ اللَّهِ

“যে ব্যক্তি আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হয়েছে সে যেন আল্লাহর গোপনীয়তায় নিজেকে গোপন রাখে”। [মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং ১২। সুনানে সগীর লিলবাইহাকী, হাদীস নং ২৭১৯।]

৩- রিয়া তথা লোকদেখানো ভয়ে ভালো কাজ ছেড়ে দেওয়া। কেননা এটা শয়তানের ষড়যন্ত্র। ইবরাহীম নাখ‘য়ী রহ. বলেছেন, “যখন তুমি সালাতে থাকো তখন শয়তান এসে বলে তুমি তো মানুষকে দেখানোর জন্য সালাত পড়ছ, তখন তুমি সালাত আরো দীর্ঘ করো”।

৪- আবেদ বান্দাহকে দেখে ইবাদতের প্রতি আগ্রহ জন্মানো। ইমাম মাকদিসী রহ. বলেন, “কেউ অধিক ইবাদতকারীর সাথে রাত্রি যাপন করলে তার অল্প ইবাদত করার অভ্যাস থাকলে সে যদি উক্ত ব্যক্তির দ্বারা উৎসাহিত হয়ে বেশি সালাত ও সাওম পালন করে তবে কেউ হয়ত ভাবতে পারে এটা রিয়া তথা লৌকিকতা। আসলে ব্যাপারটা মোটেও এরূপ নয়। বরং এতে ফায়েদা আছে। মূলত সব মু’মিনই আল্লাহর ইবাদত করতে চায়, কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি ও অলসতার কারণে সম্ভব হয়ে উঠে না, তখন অন্যের কারণে সে অলসতা দূর হয়ে যায়”। [মিনহাজুল ক্বাসেদীন, পৃষ্ঠা ২৩৪।]

নিজেকে ইখলাস থেকে নিরাশ মনে করা উচিত নয়, যেমন বলা যে, এটা শক্তিশালী মুখলিস বান্দাই করতে সক্ষম, আমি তাদের তুলনায় কোথায়? এতে ইখলাস অর্জনে সে চেষ্টা ছেড়ে দেয়। অথচ যার মধ্যে ইখলাসের ঘটতি আছে তার ইখলাস সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। [মিনহাজুল ক্বাসেদীন, পৃষ্ঠা ২২৯।]

৫- গুনাহের কথা আলোচনা না করা ও গোপন রাখা:

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : " كُلُّ أُمَّتِي مُعَافًى إِلَّا المُجَاهِرِينَ، وَإِنَّ مِنَ المُجَاهَرَةِ أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلًا، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ سَتَرَهُ اللَّهُ عَلَيْهِ، فَيَقُولَ : يَا فُلاَنُ، عَمِلْتُ البَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ، وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللَّهِ عَنْهُ "

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, “আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয়ই এ বড় ধৃষ্টতা যে, কোনো ব্যক্তি রাতে অপরাধ করলো যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে ভোর হলে বলে বেড়াতে লাগলো, হে অমুক! আমি আজ রাতে এমন এমন কর্ম করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত অতিবাহিত করলো যে, আল্লাহ তার কর্ম গোপন রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর পর্দা খুলে ফেললেন”। [বুখারী, হাদীস নং ৬০৬৯।]

৬- প্রত্যাশা ছাড়াই সুনাম সুখ্যাতি অর্জিত হলে, শির্কের ভয়ে আমল ছেড়ে দেওয়া। ফুদাইল ইবন ‘ইয়াদ রহ. বলেন, “লোক দেখানোর ভয়ে আমল ছেড়ে দেওয়া রিয়া, আর লোক দেখানোর জন্য আমল করা শির্ক, আল্লাহ তোমাকে এ থেকে মুক্ত রাখা হলো ইখলাস”। [কিতাবুল ইখলাস, পৃষ্ঠা ২৫-২৭, সংক্ষেপিত।] ইমাম নাওয়াবী রহ. এ কথার ব্যাখ্যায় বলেন, তার কথার উদ্দেশ্য হলো কেউ কোনো ইবাদত করার ইচ্ছা পোষণ করলে লৌকিকতার ভয়ে তা ছেড়ে দিলে রিয়া হিসেবে গণ্য হবে, কেননা মানুষের কারণে আমল ছেড়ে দিলে নফল আমল হলে হয়ত সে নির্জনে সালাত আদায় করবে, আর তা মুস্তাহাবও বটে, কিন্তু ফরয সালাত হলে অথবা ফরয যাকাত হলে বা উক্ত ব্যক্তি এমন বিজ্ঞ আলেম হলে যাকে মানুষ অনুসরণ করে, এরূপ অবস্থায় প্রকাশ্যে ইবাদত করাই উত্তম। [শরহে আরবা‘উন, পৃষ্ঠা ১১।]

৭- ব্যক্তির ইচ্ছা ছিল ইবাদত গোপনভাবে করা এবং একমাত্র আল্লাহর জন্যই করা, কিন্তু মানুষ যদি জেনে যায় তবে বুঝতে হবে আল্লাহ তা‘আলা তার ইবাদতের সৌন্দর্য মানুষের মাঝে প্রকাশ করেছেন, তখন মানুষের প্রশংসা ও সম্মানের আশা না করে আল্লাহর এ সুন্দর কাজে খুশি হওয়া এবং আল্লাহ তার গুনাহ গোপন করায় আনন্দিত হওয়া প্রয়োজন।

عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ : قِيلَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَرَأَيْتَ الرَّجُلَ يَعْمَلُ الْعَمَلَ مِنَ الْخَيْرِ، وَيَحْمَدُهُ النَّاسُ عَلَيْهِ؟ قَالَ : «تِلْكَ عَاجِلُ بُشْرَى الْمُؤْمِنِ»

আবু যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরয করা হল, সেই ব্যক্তি সম্পর্কে কি অভিমত, যে নেক আমল করে এবং লোকেরা তার প্রশংসা করে? তিনি বললেন, এতো মুমিন ব্যক্তির জন্য তা আগাম সুসংবাদ (এতে কাজটি কবুল হওয়ার লক্ষণ বুঝা যায়)। [মুসলিম, হাদীস নং ২৬৪২।]

ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেন, যে ব্যক্তির নিয়মিত দুহা (চাশত) এর সালাত বা তাহাজ্জুদ বা অন্য সালাতের অভ্যাস আছে সে যেখানেই থাকুক সে সালাত পড়ে নিবে। লোক দেখানো ও ইখলাসের পরিপন্থী না হলে শুধুমাত্র মানুষের মাঝে থাকার তারা তার এ গোপন ইবাদতের কথা জেনে যাবে এ কথা ভেবে উক্ত ইবাদত বাদ দেওয়া উচিত নয়।

তিনি আরো বলেন, কেউ শুধুমাত্র রিয়ার ধারণা করে জায়েয কাজ থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করলে তা নিন্মোক্ত কারণে গ্রহণযোগ্য হবে না:

১- কোনো জায়েয কাজ শুধুমাত্র রিয়ার ভয়ে বাদ দেওয়া যাবে না, বরং তা ইখলাসের সাথে করতে আদেশ দেওয়া হবে।

২- শরি‘আত যা নিষেধ করেছে শুধু তাই নিষেধ করা যাবে।

«إِنِّي لَمْ أُومَرْ أَنْ أَنْقُبَ عَنْ قُلُوبِ النَّاسِ وَلاَ أَشُقَّ بُطُونَهُمْ»

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আমাকে মানুষের দিল ছিদ্র করে, পেট ফেঁড়ে (ঈমানের উপস্থিতি) দেখার জন্য বলা হয় নি”। [বুখারী, হাদীস নং ৪৩৫১, মুসলিম, হাদীস নং ১০৬৪।]

৩- এভাবে করতে অনুমতি দিলে শির্ক ও বাতিলপন্থীরা দীনদার ও সৎ লোকের শরি‘আতসিদ্ধ ভালো কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। যখনই তারা কোনো জায়েয কাজ দেখবে তখন তারা বলে বেড়াবে ‘এটা লোক দেখানোর জন্য করা হচ্ছে’। ফলে হকপন্থীরা জায়েয কাজটি প্রকাশ পেয়ে যাবে এ ভয়ে ছেড়ে দিবে। এভাবে ভালো কাজ বাদ পড়ে যাবে।

৪- তাছাড়া এটা মুনাফিকের চরিত্র। তাদের অভ্যাস হলো, যারা ভালো কাজ প্রকাশ্যভাবে করে তাদেরকে দোষারোপ করা।

﴿ ٱلَّذِينَ يَلۡمِزُونَ ٱلۡمُطَّوِّعِينَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ فِي ٱلصَّدَقَٰتِ وَٱلَّذِينَ لَا يَجِدُونَ إِلَّا جُهۡدَهُمۡ فَيَسۡخَرُونَ مِنۡهُمۡ سَخِرَ ٱللَّهُ مِنۡهُمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ ٧٩ ﴾ [ التوبة : ٧٩ ]

“যারা দোষারোপ করে সদাকার ব্যাপারে মুমিনদের মধ্য থেকে স্বেচ্ছাদানকারীদেরকে এবং তাদেরকে যারা তাদের পরিশ্রম ছাড়া কিছুই পায় না। অতঃপর তারা তাদেরকে নিয়ে উপহাস করে, আল্লাহও তাদেরকে নিয়ে উপহাস করেন এবং তাদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব”। [আত্-তাওবা: ৭৯]

শাইখ ইবন ‘উসাইমীন রহ. বলেন, ইবাদত নষ্টকারী হিসেবে রিয়া দু’প্রকার:

প্রথমত: যেটা মূল ইবাদতের মধ্যে হবে। এ ধরণের হলে তার আমল বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য হবে।

দ্বিতীয়ত: যা কোনো কারণবশত ইবাদতের মধ্যে পাওয়া গেছে। এ ধরণের রিয়া আবার দু’প্রকার:

প্রথম: রিয়াটি দূর করা হবে। এতে কোনো ক্ষতি হবে না।

দ্বিতীয়: রিয়াটি ইবাদতের সঙ্গে থাকবে। রিয়াটি যদি ইবাদতের সঙ্গে যুক্ত থাকে তা আবার দু’প্রকার:

প্রথমটি: যে সব ইবাদতের শেষ অবস্থা শুরু অবস্থার উপর নির্ভরশীল, যেমন সালাত। তাহলে উক্ত ইবাদতটি বাতিল বলে গণ্য হবে।

দ্বিতীয়ত: ইবাদতের শেষ অবস্থা যদি শুরুর উপর নির্ভরশীল না হয়, বরং স্বতন্ত্র, যেমন সাদাকা। এক্ষেত্রে যেটি ইখলাসের সাথে করা হবে তা গ্রহণযোগ্য হবে আর যেটি ইখলাস ছাড়া শির্কের সাথে করা হবে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। [দেখুন, আল কাওলুল মুফিদ ফি কিতাবিত তাওহীদ।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন