HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইখলাস

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী

সালাফে সালেহীন ও তাদের ইখলাস:
ইউসুফ আলাইহিস সালামের ঘটনা: কুরআনে এসেছে,

﴿ وَلَقَدۡ هَمَّتۡ بِهِۦۖ وَهَمَّ بِهَا لَوۡلَآ أَن رَّءَا بُرۡهَٰنَ رَبِّهِۦۚ كَذَٰلِكَ لِنَصۡرِفَ عَنۡهُ ٱلسُّوٓءَ وَٱلۡفَحۡشَآءَۚ إِنَّهُۥ مِنۡ عِبَادِنَا ٱلۡمُخۡلَصِينَ ٢٤ ﴾ [ يوسف : ٢٤ ]

“আর সে মহিলা তার প্রতি আসক্ত হল, আর সেও তার প্রতি আসক্ত হত, যদি না তার রবের স্পষ্ট প্রমাণ প্রত্যক্ষ করত। এভাবেই, যাতে আমি তার থেকে অনিষ্ট ও অশ্লীলতা দূর করে দেই। নিশ্চয় সে আমার খালেস বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত”। [সূরা: ইউসুফ: ২৪]

মূসা আলাইহিস সালামের ঘটনা:

﴿ وَٱذۡكُرۡ فِي ٱلۡكِتَٰبِ مُوسَىٰٓۚ إِنَّهُۥ كَانَ مُخۡلَصٗا وَكَانَ رَسُولٗا نَّبِيّٗا ٥١ ﴾ [ مريم : ٥١ ]

“আর স্মরণ কর এই কিতাবে মূসাকে। অবশ্যই সে ছিল মনোনীত এবং সে ছিল রাসূল, নবী”। [সূরা মারইয়াম: ৫১]

আবূ সুলাইমান আদদারানী রহ. বলেন, “যার একটিমাত্র কদম (আমল) সহীহ হয়েছে এবং তা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করেছে তার জন্য সুসংবাদ”।

একজন সৎপূর্বসূরী বলেছেন, “যার জীবনে একটিমাত্র মুহূর্ত (আমল) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কেটেছে সে ব্যক্তি নাজাত পাবে”।

আলী ইবন হাসান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন মারা গেলেন তখন মদীনার শতশত ঘরের লোকজন তার জন্য কেঁদেছেন।

হামদুল ইবন আহমদ রহ. কে বলা হলো সালাফদের কথা আমাদের কথার চেয়ে কল্যাণকর ছিল কেন? তিনি বলেন, “তারা ইসলামের মর্যাদা বৃদ্ধি, নিজের নাজাত লাভ ও রহমানের সন্তুষ্টি লাভের জন্য কথা বলতেন, আর আমরা নিজের মর্যাদা বৃদ্ধি, দুনিয়া লাভ ও সৃষ্ট মানুষের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কথা বলি”।

এক ব্যক্তি তামীম আদ-দারী রহ. কে তার রাতের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি অত্যন্ত রাগান্বিত হলেন। তিনি বললেন, “গভীর রাতে গোপনে এক রাক‘আত সালাত আদায় করা সারারাত সালাতের চেয়েও আমার কাছে উত্তম। অতঃপর তিনি একথা মানুষকে বলতেন”।

আইয়ূব আস-সাখতিয়ানী রহ. বলেন, “যে ব্যক্তি নিজে বিখ্যাত হতে চায় সে কখনও প্রকৃত বান্দাহ হতে পারবে না”।

কোনো এক সালাফ বলেন, “আমি সব কাজে নিয়্যাত করতে পছন্দ করি। এমনকি আমার খাওয়া দাওয়া, পান করা, ঘুমানো ও বাথরুমে যাওয়া ইত্যাদি কাজে”।

হাসান রহ. বলেন, “লোকদের কাছে মেহমান থাকত, সে ব্যক্তি রাতে সালাত আদায় করলে তার মেহমান তা জানত না। তারা বেশি বেশি দু‘আ করতেন কিন্তু তাদের আওয়াজ কেউ শুনতনা। এক ব্যক্তি একই বিছানায় তার স্ত্রীর সাথে রাতে ঘুমাতো, সারারাত সে আল্লাহর কাছে কাঁদত কিন্তু তার স্ত্রী তা বুঝতে পারত না”।

ফুদাইল ইবন ‘ইয়াদ রহ. বলেন, “মানুষের কারণে আমল বাদ দেওয়া রিয়া (লৌকিকতা), আর মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে আমল করা শির্ক, এ দুটি থেকে আল্লাহ মুক্ত করলে তা হলো ইখলাস”।

ইমাম শাফে‘য়ী রহ. বলেন, “আমার আশা যে, লোকেরা আমার কিতাবসমূহ পড়ে ইলম অর্জন করুন তবে তা আমার দিকে নিসবত না করুক”।

সুফইয়ান রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে মারিয়া রবি‘ ইবন খুসাইম বলেছেন, “রবি‘ এর সব আমল গোপনীয় ছিল। কুরআন তিলাওয়াতের সময় কেউ আসলে তিনি কাপড় দিয়ে তা ঢেকে রাখতেন”।

জুবাইর ইবন নুফাইর রহ. বলেন, “আমি আবূ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে তার শেষ সালাত আদায়ের সময় শুনেছি যে, তিনি তাশাহহুদ শেষে নিফাক থেকে আল্লাহর কাছে বারবার পানাহ চাচ্ছেন। আমি বললাম হে আবূ দারদা আপনি ও নিফাক থেকে পানাহ চাচ্ছেন? তিনি বললেন, তোমার কথা বাদ দাও। আল্লাহর কসম মানুষ শেষ মুহুর্তেও দীন থেকে ঘুরে যেতে পারে ফলে সে দীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে”।

বিশর আল-হাফী রহ. বলেন, “দীনের বিনিময়ে দুনিয়ার কিছু চাওয়ার চেয়ে বাঁশি বাজিয়ে দুনিয়ার কিছু চাওয়া আমার কাছে উত্তম”।

ইয়াহইয়া ইবন আবু কাসীর রহ. বলেন, “তোমরা নিয়্যাত শিক্ষা কর। কেননা তা আমলের চেয়েও অধিক জরুরী”।

ইবন কাইয়্যেম রহ. বলেছেন, সৎকাজে ধৈর্য ধারণ তিন ধরণের:

১- সৎকাজের পূর্বে ধৈর্য ধারণ।

২- সৎকাজে ধৈর্য ধারণ।

৩- সৎকাজের পরে ধৈর্য ধারণ। অর্থাৎ আল্লাহর অনুগ্রহ চাওয়া, অহমিকা ত্যাগ করা ও লৌকিকতা ছেড়ে দেওয়া।

ইবন ‘আকীল রহ. বলেন, “আবূ ইসহাক ফাইরুযবাদী গরিবকে কিছু দান করার আগে নিয়্যাত করতেন। কোন মাসয়ালা সম্পর্কে কিছু বলার আগে আল্লাহর সাহায্য চাইতেন ও মানুষের কাছে সাজিয়ে ও রঙ্গিয়ে কিছু বলা ছাড়াই সঠিক রায়ের জন্য ইখলাস কামনা করতেন। দু’রাক‘আত সালাত আদায় করা ব্যতীত তিনি কোন মাসয়ালা লেখেন নি। ফলে তার ইখলাসের বদৌলতে সারা দুনিয়ায় তার গ্রন্থাদি প্রসিদ্ধ লাভ করেছে”। [বাদায়ে‘উল ফাওয়ায়েদ ৩/১৪৯।]

আল্লামা মুহাম্মদ আমীন আশ-শানকীতি রহ. এর নিয়্যাতের বিশুদ্ধতার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। তিনি অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। আরবদের বংশতালিকা তন্মধ্যে অন্যতম। এ বইটি তিনি অপ্রাপ্ত বয়সে লিখেছিলেন। বইয়ের শুরুতে তিনি লিখেছেন: বনী ‘আদনানের বংশ, একে আমি “খালিসুজ জুমান” নামকরণ করেছি। কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তিনি এ কবিতাকে মাটিতে পুঁতে ফেলেন। কারণ তিনি এটিকে আত্মীয়দের উপরে মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশের জন্য রচনা করেছিলেন। তার কতিপয় উস্তাদ তাঁকে এ কাজের জন্য ভৎর্সনা করেন, তারা বলেছিলেন, তোমার নিয়্যাত পরিবর্তন ও বিশুদ্ধ করলেই হত”।

আবূ বকর যায়েদ তার (মুহাম্মদ আমীন আশ-শানকীতি রহ.) সম্পর্কে বলেছিলেন, “এ যুগে যদি কাউকে শাইখ বলা হয় তবে তিনিই হবেন তা”।

নিয়্যাতের বিশুদ্ধতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আইয়ুব আসসাখতিয়ানী রহ. বলেছেন, “সব কাজের মধ্যে নিয়্যাতের বিশুদ্ধতা সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার”।

‘উমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি আবূ মূসা আশ‘য়ারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে লিখেছেন, “যে ব্যক্তি নিয়্যাতকে বিশুদ্ধ করবে তার ও মানুষের মাঝে আল্লাহই যথেষ্ট হবেন”।

কবির ভাষায়:

“যে মু’মিনের প্রকাশ্য ও গোপনীয় উভয়টাই সমান হবে, সে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানেই সফলকাম হবে, আর তখন তার প্রশংসা করা হবে। আর যার প্রকাশ্য কর্মকাণ্ড গোপনীয়তার বিপরীত হবে, সে সৌভাগ্যবান হবে না; যদিও সে কঠোর পরিশ্রম করে”।

ইমাম শাফে‘য়ী রহ. বলেছেন, “আমার ইচ্ছা হয় যে, মানুষ আমার লিখিত কিতাবসমূহ পড়ে ইলম অর্জন করুক তবে তারা যেন এগুলো আমার দিকে নিসতব না করে অর্থাৎ আমার নাম উল্লেখ না করে”।

তিনি আরো বলেন, “আমি কখনও কারো উপর জয়লাভ করতে বিতর্ক করিনি, একমাত্র সত্যকে প্রকাশ করার জন্যই তর্ক বিতর্ক করেছি”।

তিনি আরো বলেন, “আমি যখন কারো সাথে কথা বলেছি তখন তাকে সংশোধন ও সত্যের ব্যাপারে সাহায্য করতে চেয়েছি, আর আশা করেছি যে, তার উপর আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণ ও হেফাযত থাকুক”।

ইমাম শাফে‘য়ী রহ. এর এসব কথা মুখলিসীনদের ইখলাসের কথাই প্রমাণ করে। আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাহদের আলামত হলো তারা নিজেদের জন্য কোনো আমল করতেন না, বরং তাদের একমাত্র লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছিল মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। আর তারা সর্বদা সত্য শিক্ষা দেওয়া ও প্রকাশ করতে ব্রত ছিলেন। কারো সাথে সংলাপ করলে তাতে বিজয়ের মানসিকতা ছিল না, বরং সত্য প্রকাশই ছিল তাদের লক্ষ্য। তারা সর্বদা আশা করতেন যে, আল্লাহ যেন আলোচনার মাধ্যমে হককে প্রকাশ করে দেন।

আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক স্থাপন করতে মানুষের অন্তর থেকে সব সম্মান ও মর্যাদাও যদি শেষ হয়ে যায় তাতে মুখলিস ব্যক্তি কোনো পরোয়া করেন না। আর তারা তাদের সামান্য আমলও মানুষের কাছে প্রকাশ করতে পছন্দ করেন না। [মাকাসিদুল মুকাল্লিফীন, আশকার, পৃষ্ঠা ৪৭৩-৪৭৪।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন