মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অষ্টাদশ পাঠঃ মৃত্যু ব্যক্তিকে প্রস্তুত করা তার উপর সলাত ও তাকে সমাহিত করা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/597/21
নিন্মে এ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হল:
প্রথমতঃ মৃত্যু শয্যায় শায়ীত ব্যক্তিকে لاَ إِلَهَ إِلَّا اللهُ 'লাইলাহা ইল্লাল্লাহ' এর তালকীন দেয়া সম্মত। কারণ এ ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস রয়েছে। তিনি বলেছেন, "তোমরা তোমাদের মধ্যে মৃত্যুর নিদর্শন প্রকাশ পেয়েছে এমন ব্যক্তিকে لاَ إِلَهَ إِلَّا اللهُ এর তালক্বীন দাও।" হাদীছটি মুসলিম তার সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।
এ হাদীছে বর্ণিত মাওতা দ্বারা উদ্দেশ্য হল আল ঐ সকল শয্যাশায়ী ব্যক্তিগণ যাদের মৃত্যু নিদর্শন প্রকাশ পেয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ যখন কোন ব্যক্তির মৃত্যু নিশ্চিত হবে তখন তার চোখ বন্ধ করে দিতে হবে এবং তার দাঁড়ি বেঁধে দিতে হবে। কারণ এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত বর্ণিত হয়েছে।
তৃতীয়তঃ মুসলিম মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়া আবশ্যক। তবে শহীদ ব্যক্তি যে জিহাদ করতে করতে মৃত্যু বরণ করেছে তাকে গোসল দিতে হবে না এবং তার জানাযার সলাত পড়তে হবে না বরং তাকে তার পরিহিত কাপড়েই দাফন করতে হবে। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহুদের শহীদদের গোসল দেন নাই এবং তাদের উপর জানাযার সলাত আদায় করেন নাই।
চতুর্থতঃ মৃত ব্যক্তির গোসলের বিবরণ: মৃত ব্যক্তির লজ্জাস্থান (কাপড় দিয়ে) ঢেকে দিতে হবে। পরে (কাপড়) একটু উঁচু করবে এবং তার পেট নরম ভাবে চাপ দিবে। তারপর মৃত ব্যক্তিকে গোসল দানকারী তার নিজ হাতে নেকড়া বা অনুরূপ কিছু পেঁচাবে। অতপর তাকে এর দ্বারা পরিস্কার করবে। তারপর সলাতের অযুর ন্যায় অযু করাবে। তারপর মৃত ব্যক্তির মাথা ও দাঁড়ি পানি ও বরই পাতা বা অনুরূপ কিছু দিয়ে ধৌত করবে। তারপর তার ডান পার্শ্ব ধৌত করবে। তারপর তার বাম পার্শ্ব ধৌত করবে। তারপর তাকে এ ভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার গোসল দিবে। (গোসলদাতা) প্রত্যেক বারই তার হাত তার পেটের উপর দিয়ে ফেরাবে। পেছনের রাস্তা দিয়ে যদি কোন কিছু বের হয় তবে তা ধ্যেত করে নিবে এবং বের হওয়ার স্থানটি তুলা বা অনুরুপ কিছু দিয়ে বন্ধ করে দিবে। আর যদি বন্ধ না হয় তবে পোড়ামাটি বা আধুনিক ডাক্তারি উপকরণের মাধ্যমে বন্ধ করতে হবে। যেমন প্লাস্টার/ প্রলেপ বা অনরূপ কিছু এবং পুনরায় অযু করাবে। আর যদি তিনবার ধৌত করার মাধ্যমে পরিস্কার না হয়, তবে পাঁচ বা সাতবার পর্যন্ত ধৌত করবে। তারপর কাপড় দ্বারা মুছে দিবে। অপ্রকাশ্য স্থানসমূহ ও সিজদার স্থান সমূহে সুগন্ধি লাগাবে। আর যদি সারা শরীরে সুগন্ধি লাগায় তবে তা আরো উত্তম হবে। আর ধূপ দ্বারা তার কাফন গুলো সুগন্ধি করে দিবে। আর যদি তার মোচ বা নখ লম্বা থাকে তবে তা কেটে দিবে। আর তা ছেড়ে দিলে বা না কাটলেও কোন অসুবিধা নাই। আর তার চুল আঁচড়াবে না। তার নাভীর নিচের চুল মুণ্ডাবে না এবং খাৎনা করাবে না। কারণ এর উপর কোন দলীল নাই। মহিলা তার চুলকে তিনগুচ্ছ করা হবে এবং তা তার পিছনের দিকে ছেড়ে দেয়া হবে।
পঞ্চতমঃ মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেয়াঃ পুরুষকে তিন সাদা কাপড়ে কাফন দেয়া উত্তম, যাতে জামা ও পাগড়ী থাকবে না। যেমন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাফন দেয়া হয়েছিল। মৃত ব্যক্তিকে এর ভিতর পর্যায়ক্রমে রাখতে হবে। আর যদি মৃত ব্যক্তিকে জামা, লুঙ্গি ও লিফাফাতে কাফন দেয়া হয়, তবে তা কোন অসুবিধা নাই।
আর মহিলাকে পাঁচ কাপড়ে কাফন দেয়া হবে। যথা: চাদর, উড়না, লুঙ্গি ও দুটি লিফাফা।
আর কাফন দেয়া হবে একটি, দুটি বা তিন কাপড়ে। আর এক জামা ও দুই লিফাফাতে বালিকাকে কাফন দেয়া হবে।
মৃত ব্যক্তির সম্পূর্ণ শরীর আবৃত করে এমন কাপড় সকলের ক্ষেত্রে অত্যাবশ্যক। তবে যদি মৃত ব্যক্তি মুহরিম হয় তাহলে তাকে পানি ও ররই পাতা দিয়ে গোসল করাতে হবে এবং তার চাদর ও লুঙ্গিতে বা এ ছাড়া অন্য কাপড়ে কাফন দেয়া হবে এবং তার মাথা ও মুখ ঢাকা যাবে না এবং সুগন্ধিও লাগাবে না। কারণ তাকে কিয়ামতের দিন 'লাব্বাইক...' বলা অবস্থায় উঠানো হবে। যেমন, এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
আর মুহরিম যদি মহিলা হয় তবে তাকে অন্যান্য মহিলার ন্যায় কাফন দেয়া হবে। তবে তাকে সুগন্ধি লাগানো যাবে না এবং নিকাব দ্বারা তার মুখ ঢাকা যাবে না এবং মোজা দ্বারা তার হস্তদ্বয় ঢাকা যাবে না। তবে পূর্বে বর্ণিত মহিলার কাফনের বিবরণ অনুপাতে তার হস্তদ্বয় ও মুখ মণ্ডল ঢেকে দিতে হবে।
ষষ্ঠতমঃ মৃত ব্যক্তিকে গোসল, তার জানাযার সলাত ও দাফন করার সে বেশী উপযুক্ত যাকে মৃত ব্যক্তি এ ব্যাপারে অসিয়ত করে গেছে। তারপর তার বাপ। তারপর তার দাদা। তারপর পুরুষদের ব্যাপারে’ আসাবাদের তথা নিজ বংশের মধ্যে সব চেয়ে বেশী নিকটবর্তী তারপর যে বেশী নিকটবর্তী সে। আর মহিলাকে গোসল দেয়ার সে সব চেয়ে অধিক উপযুক্ত যাকে সে অসিয়ত করে গেছে। তারপর তার মা। তারপর তার দাদী। তারপর সে মহিলার মহিলাদের যে বেশী নিকটবর্তী তারপর যে বেশী নিকটবর্তী সে।
আর স্বামী-স্ত্রী একজন অপরজনকে গোসল করাবে। কারণ আবু বকর রাযিআল্লাহু আনহুকে তাঁর স্ত্রী গোসল করিয়েছিলেন। আর আলী রাযিআল্লাহু তাঁর স্ত্রী ফাতিমা রাযিআল্লাহু আনহাকে গোসল করিয়ে ছিলেন।
সপ্তমতঃ মৃত ব্যক্তির জানাযার সলাতের বিবরণঃ
জানাযার সলাতে চার তাকবীর দিবে।
প্রথম তাকবীরের পর সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। আর যদি এর সাথে ছোট একটি সূরা বা এক বা দু আয়াত পাঠ করে তবে তা ভাল হবে। কারণ, এ ব্যাপারে ইবনু আব্বাস (রাজিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে ছহীহ হাদীস বর্ণিত আছে।
এরপর দ্বিতীয় তাকবীর দিবে এবং নাবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর তাশাহুদে যে সলাত (দরূদ) পাঠ করা হয় সে সলাত পাঠ করবে।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিতও অনুপস্থিত, ছোট ও বড়, নর ও নারীদিগকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ! আমাদের মাঝে যাদের তুমি জীবিত রেখেছো তাদেরকে ইসলামের উপর জীবিত রাখো, আর যাদেরকে মৃত্যু দান করো তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান কর। হে আল্লাহ! তুমি এই মৃত্যু ব্যক্তিকে ক্ষমা কর তার উপর রহম কর তাকে পূর্ণ নিরাপত্তায় রাখো, তাকে মার্জনা কর, মর্যাদার সাথে তার আতিথেয়তা করো। তার বাসস্থানটি প্রশস্থ করে দাও,তুমি তাকে ধৌত করে দাও, পানি, বরফ ও শিশির দিয়ে।
তুমি তাকে গুনাহ হতে এমনভাবে পরিস্কার করো যেমন সাদা কাপড় ধৌত করে ময়লা বিমুক্ত করা হয়। তার এই (দুনিয়ার) বাসস্থানের বদলে উত্তম বাসস্থান প্রদান কর, তার এই পরিবার হতে উত্তম পরিবার দান করো, তার এই স্ত্রী হতে উত্তম স্ত্রী দান কর, তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও, আর তাকে কবরের আযাব এবং জাহান্নামের আযাব হতে বাঁচাও। তার কবর প্রশস্ত করে দাও এবং জাহান্নামের আযাব হতে বাঁচাও। তার কবর প্রশস্ত করে দাও এবং তার জন্য ইহা আলোকময় করে দাও। হে আল্লাহ! আমাদেরকে তার সওয়াব হতে বঞ্চিত করোনা এবং তার মৃত্যূর পর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করো না।
অতঃপর চতুর্থ তাকবীর দিয়ে ডান দিকে এক সালামের মাধ্যমে সলাত শেষ করবে। জানাযার সলাতে প্রত্যেক তাকবীরের সাথে হাত উঠানো মুস্তাহাব। যদি মৃত ব্যক্তি মহিলা হয় তাহলে... اَللهُمَّ اغْفِرْلَهُ এর পরিবর্তে اَللهُمَّ اغْفِرْلَهَا অর্থাৎ আরবী স্ত্রীলিঙ্গের সর্বনাম যোগ করে পড়তে হয়। আর যদি মৃত্যের সংখ্যা দুই হয় তাহলে اَللهُمَّ اغْفِرْلَهُمَا .. الخ এবং এর বেশী হলে اَللهُمَّ اغْفِرْلَهُمْ .. إلخ অর্থাৎ সংখ্যা হিসেবে সর্বনাম ব্যবহার করবে। মৃত যদি শিশু হয় তাহলে উপরোক্ত মাগফিরাতের দু’আর পরিবর্তে নিম্নের দু’আ পাঠ করবে।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি এই শিশুকে তার পিতা-মাতার জন্যে অগ্রীম দূত ও সংরক্ষিত প্রতিদান বানাও এবং তাকে এমন সুপারিশকারী বানাও যার শুপারিশ কবুল করা হবে। হে আল্লাহ! তুমি এই শিশুর দ্বারা তার পিতা-মাতার সওয়াবের ওজন আরো ভারী কর এবং এর দ্বারা তাদের প্রতিদানকে আরো বড় কর। তাকে নেককার মু’মিনদের অন্তর্ভূক্ত কর এবং ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের দায়িত্বে রেখে দাও। একে তোমার রহমতের দ্বারা জাহান্নামের আযাব হতে রক্ষা কর।
জানাযার ক্ষেত্রে সুন্নাত হল, ইমাম মৃত পুরুষের মাথা বরাবর দাঁড়াবে এবং স্ত্রীলোক হলে তার দেহের মধ্যস্থলে দাঁড়াবে। মৃতের সংখ্যা একাধিক হলে পুরুষের মৃতদেহ ইমামের নিকটবর্তী থাকবে এবং মহিলাদের মৃতদেহ কিবলার নিকটবর্তী থাকবে। তাদের সাথে শিশু থাকলে পুরুষের পরে এবং মহিলার আগে পুরুষ শিশু স্থান পাবে, তারপর মহিলাগণ এবং সর্বশেষে নারী শিশু স্থান হবে। বালকের মাথা পুরুষের মাথা বরাবর এবং স্ত্রীলোকের মধ্যাংশ পুরুষের মাথা বরাবর রাখা হবে। এইভাবে বালিকার মাথা স্ত্রীলোকের মাথা বরাবর এবং বালিকার মধ্যাংশ পুরুষের মাথা বরাবর রাখা হবে। সব মুছাল্লীগণ ইমামের পিছনে দাঁড়াবে। তবে যদি কোন লোক ইমামের পিছনে দাঁড়াবার স্থান না পায় তাহলে সে ইমামের ডান পার্শ্বে দাঁড়াবে।
অষ্টমতঃ মৃত ব্যক্তির দাফনের বিবরণঃ কবরকে একজন পুরুষের কোমর পরিমাণ গভীর করা এবং তাতে কেবলার দিক থেকে লাহাদ (বগলী কবর) থাকা শরীয়ত সম্মত। মৃতকে তার ডান পার্শ্বের উপর কাত করে লাহাদে রাখা এবং কাফনের গিঁঠ বা বন্ধন খুলে দেয়া। তবে দেহ থেকে কাপড় খুলে নেয়া যাবে না।
মৃত ব্যক্তির মুখ খোলা যাবে না। সে পুরুষ হোক অথবা নারী হোক। এরপর এর উপর ইট খাড়া করে রেখে তা কাদা মাটি দিয়ে লেপে দেয়া, যাতে ইটগুলো স্থির থাকে এবং মৃত ব্যক্তিকে মাটি থেকে রক্ষা করে। আর যদি ইট সংগ্রহ করা সহজ না হয়, তাহলে অন্য কিছু যেমন, তক্তা, পাথর অথবা কাঠ খাড়া করে রাখা যাতে মাটি থেকে তাকে রক্ষা করতে পারে। তারপর এর উপর মাটি দেয়া হবে এবং মাটি দেয়ার সময় নিম্নের দু’আটি বলা মুস্তাহাব বা সুন্নাত।
بِسْمِ اللهِ وَعَلَى مِلَّةِ رَسُوْلِ اللهِ
উচ্চারণঃ (বিস্মিল্লাহি ওয়া ’আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ) (আল্লাহর নামে এবং রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র মিল্লাতের (দীনের) উপর রাখলাম) এবং কবর এক বিঘত পরিমাণ উঁচু করা হবে এবং এর উপর সহজ হলে কঙ্কর রাখবে ও পানি ছিটিয়ে দিবে। মৃতের দাফনকারীদের জন্যে কবরের পার্শ্বে দাঁড়ানো ও তার জন্যে দু’আ করা বৈধ। কারণ নাবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন দাফন কাজ শেষ করতেন তখন তিনি কবরের পার্শ্বে দাঁড়াতেন এবং বলতেনঃ "তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং ঈমানের উপর অবিচল থাকার জন্যে দু’আ কর কারণ এখনই তাকে প্রশ্ন করা হবে।
নবমমতঃ দাফনের পূর্বে যে ব্যক্তির জানাযা পড়ে নাই সে দাফনের পরও তার কবলে গিয়ে জানাযা পড়তে পারে। কারণ নাবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা করেছেন। তবে এই নামায একমাস সময়ের মধ্যে হতে হবে, এর বেশী হলে কবরের কাছে গিয়ে জানাযার নামায পড়া বৈধ হবে না। কারণ দাফনের একমাস পর নাবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন জানাযা পড়েছেন এমন কোন হাদীস পাওয়া যায় নাই।
দশমঃ মৃত্যের পরিবারের জন্যে তার বাড়িতে উপস্থিত মানুষের জন্যে খাদ্য প্রস্তুত করা জায়েয নয়। কারণ, সম্মানিত সাহাবী জারীর বিন আব্দুল্লাহ আল-বাজালী (রাযিআল্লাহু আনহুর) বলেন, আমরা মৃত্যের পরিবারের কাছে লোকজনের একত্রিত হওয়া ও এবং দাফনের পর তাদের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করাকে নিয়াহার (বিলাপের) অন্তর্ভূক্ত করতাম। (এই হাদীসটি ইমাম আহমদ হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন)। তবে মৃতের পরিবারের জন্যে বা তাদের মেহমানদের জন্যে খাদ্য প্রস্তুত করাতে কোন অসুবিধা নেই
মৃত্যের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের জন্যে মৃত্যের পরিবারের জন্যে খাদ্য প্রস্তুত করা শরীয়ত সম্মত। কারণ রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে যখন জাফর বিন আবূ তালিব (রাযিআল্লাহু আনহু) এর শামে মৃত্যু হয়েছে এ সংবাদ পৌঁছে তখন তিনি স্বীয় পরিবারবর্গকে বললেন: "জাফর পরিবারের জন্য খাদ্য প্রস্তুত কর। আরও বললেন যে, তাদের উপর এমন বিপদ নেমে এসেছে যা তাদেরকে খাদ্য প্রস্তুত করা থেকে ব্যস্ত করে রেখেছে।"
মৃতের পরিবারের জন্যে যে খাদ্য পাঠানো হয়েছে তা খাওয়ার জন্য নিজেদের প্রতিবেশী বা অন্যদের আহবান করাতে কোন অসুবিধা নেই। এর জন্য কোন নির্দিষ্ট সময়-সীমা আছে বলে আমাদের জানা নেই।
একাদশঃ কোন মহিলার জন্যে স্বামী ব্যতীত অপর কোন মৃতের উপর তিন দিনের বেশী শোক প্রকাশ করা জায়েয নয়। স্ত্রীর জন্য তার স্বামীর মৃত্যুওতে চার মাস দশ দিন শোক প্রকাশ ওয়াজিব। তবে গর্ভবর্তী মহিলার সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত শোক পালন করতে হবে। কারণ এ ব্যাপারে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সহীহ হাদীস প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু পুরুষের জন্যে আত্মীয়-স্বজন বা অন্য কারোর মুত্যুতে শোক পালন করা জায়েয নয়।
দ্বাদশঃ (দিন ও তারিখ নির্ধারণ না করে) যে কোন সময় মৃত ব্যক্তিদের জন্যে সাধারণভাবে দু’আ করা, তাদের জন্য আল্লাহর রহমতের জন্য দুয়া করা, মৃত্যু ও তার পরের অবস্থার কথা স্মরণের উদ্দেশ্যে পুরুষদের জন্যে কবর জিয়ারত করা শরীয়ত সম্মত। কারণ (এ ব্যাপারে) নাবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীস রয়েছে। আবূ হুরাইরা রাযিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
زُورُوا الْقُبُورَ فَإِنَّهَا تُذَكِّرُكُمْ الْآخِرَةَ ( خرَّجه الإمام مسلم في صحيحه )
"তোমরা কবর জিয়ারত কর, কারণ এটি তোমাদেরকে আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।" (হাদীসটি ইমাম মুসলিম তাঁর সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন) রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সাহাবীগণ যখন কবর যিয়ারত করতেন তখন তাঁদেরকে তিনি নিম্নের দু’আ বলতে শিক্ষা দিতেন।
অর্থঃ তোমাদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক হে কবরবাসী মু’মিন ও মুসলিমগণ। ইনশা আল্লাহ আমরাও অবশ্যই তোমাদের সাথে মিলিত হবো। আমরা আমাদের এবং তোমাদের জন্যে আল্লাহর নিকট শান্তি ও নিরাপত্তা কামনা করতেছি। আল্লাহ অগ্রগামী ও পশ্চাতগামীদের প্রতি দয়া করুন।
মহিলাদের জন্যে কবর জিয়ারত করা বৈধ নয়। কারণ রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবর জিয়ারত কারীনী নারীদের অভিশাপ করেছেন। তাছাড়া মেয়েদের কবর জিয়ারতে ফেতনা ও অধৈর্য্য সৃষ্টির ভয় রয়েছে। এ ভাবে মেয়েদের পক্ষে কবর পর্যন্ত জানাযার অনুগমন করা বৈধ নহে। কেননা, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে এ থেকে নিষেধ করেছেন। তবে মসজিদে বা অন্য কোন স্থানে মৃতের উপর জানাযার নামায পড়া নারী পুরুষ সকলের জন্যে বৈধ।
(এ বইয়ে) যা একত্রিত করা সহজ হয়েছে এটি তার সর্বশেষ পাঠ।
আল্লাহ আমাদের নাবী মোহাম্মদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও তাঁর সাহাবীগণের উপর সলাত ও সালাম বর্ষণ করুন।
সমাপ্ত
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/597/21
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।