HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সঠিক আকীদা-বিশ্বাস ও যা এর পরিপন্থী

লেখকঃ শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায

১৩
সঠিক ধর্ম বিশ্বাসের পরিপন্থী কতিপয় মতবাদ
বিশুদ্ধ আকীদার পরিপন্থী ও আল্লাহর রাসূলগণ (তাদের ওপর দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক) কর্তৃক প্রচারিত ধর্ম বিশ্বাসের বিরোধী একটি মতবাদ হলো,

বর্তমান কালে নাস্তিকতা ও কুফুরীর ধ্বজ্জাবাহী মার্কস-লেলিন প্রমুখ পন্থীদের ভ্রান্ত মতবাদ। তারা একে সমাজতন্ত্র, কমিউনিজম বা অন্য যে, নাস্তিকদের মূলমন্ত্র হলো, ‘মা‘বুদ বা উপাস্য বলতে কেউ নেই এবং এই পার্থিব জীবন এবটি বস্তুগত ব্যাপার মাত্র’। পরকাল, জান্নাত-জাহান্নাম এবং সমস্ত ধর্মের প্রতি অস্বীকৃতি তাদের মৌলিক নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত। তাদের বই-পুস্তক পর্যালোচনা করলে একথা নিশ্চিতভাবে উপলব্ধি করা যায়। নিঃসন্দেহে এটা সমস্ত ঐশী ধর্মের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এক মতবাদ, যা দুনিয়া ও আখেরাতে এর অনুসারীদের এক চরম অশুভ পরিণতির দিকে পরিচালিত করছে।

সত্যের পরিপন্থী আরেকটি মতবাদ হলো:

কোনো কোনো বাতেনী ও সূফী সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে, তথাকথিত ওলীগণ এ সৃষ্টি জগতের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় আল্লাহর সাথে শরীক থাকে। তারা তাদেরকে কুতুব (পীর-দরবেশ), আওতাদ (নির্ভরযোগ্য খুঁটিস্বরূপ), গাওস (ফরিয়াদ শ্রবণকারী) ইত্যাদি নামে অভিহিত করে। তারাই স্বীয় মা‘বুদদের জন্যে এসব নাম উদ্ভাবন করেছে। আল্লাহর প্রভূত্বে এটি একটি জঘণ্যতম শির্ক। এটি ইসলাম পূর্ব জাহেলি যুগের শির্ক থেকেও জঘণ্য। কেননা আরবের কাফিরগণ আল্লাহর প্রভূত্বে শির্ক করে নি, তাদের শির্ক ছিল ইবাদতে এবং তাও ছিল সুখ-স্বাচ্ছন্দের অবস্থায়। দুর্যোগ অবস্থায় তারা ইবাদত আল্লাহর জন্যেই খালেস করে নিত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَإِذَا رَكِبُواْ فِي ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّىٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ﴾ [ العنكبوت :65]

“যখন তারা জলযানে আরোহণ করে তখন বিশুদ্ধচিত্তে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ কে ডাকে। তারপর যখন আল্লাহ তাদেরকে স্থলে ভিড়ায়ে উদ্ধার করেন, তখন তারা শির্কে লিপ্ত হয়ে যায়”। [সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত: ৬৫]

প্রভূত্বের প্রশ্নে তারা স্বীকার করতো যে, তা একমাত্র আল্লাহরই অধিকার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَئِن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَهُمۡ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ﴾ [ الزخرف :87]

“আর যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছে? উত্তরে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ”। [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৮৭]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿قُلۡ مَن يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِ أَمَّن يَمۡلِكُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَٰرَ وَمَن يُخۡرِجُ ٱلۡحَيَّ مِنَ ٱلۡمَيِّتِ وَيُخۡرِجُ ٱلۡمَيِّتَ مِنَ ٱلۡحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَۚ فَسَيَقُولُونَ ٱللَّهُۚ فَقُلۡ أَفَلَا تَتَّقُونَ﴾ [ يونس :31]

“বল, আকাশ ও পৃথিবী থেকে কে তোমাদের রিযিক সরবরাহ করে অথবা শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তি কার কর্তৃত্বাধীন এবং কে জীবিতকে মৃত থেকে নির্গত করে এবং কে মৃতকে জীবিত থেকে নির্গত করে? আর কে যাবতীয় বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে? তখন তারা বলবে, ‘আল্লাহ’। বল, তবুও কি তোমরা সাবধান হবে না”? [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৩১]

পরবতীকালের মুশরিকরা পূর্ববর্তীকালের মুশরিকদের চেয়ে আরো দু’টি বিষয়ে অগ্রগামী রয়েছে:

[এক] তাদের কেউ কেউ আল্লাহর প্রভূত্বেও শির্ক করে।

[দুই] সুদিন দুর্দিন উভয় অবস্থাতেই তারা শির্ক করে। একথা কেবল ঐসব লোকেরাই ভালো করে জানতে পারবে যারা তাদের সাথে মিশে স্বচক্ষে তাদের প্রকৃত অবস্থা পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ লাভ করবে এবং প্রত্যক্ষভাবে ঐসব ক্রিয়াকলাপ অবলোকন করবে যা মিশরস্থ হুসাইন, বাদাভী গংদের কবরে, ইডেনস্থ ‘আইদারূসের কবরে, ইয়েমেনে আল-হাদীর কবরে, সিরিয়ায় ইবন আরাবীর কবরে, ইরাকে শাইখ আব্দুল কাদের জীলানীর কবরসহ বিভিন্ন প্রসিদ্ধ সমাধি ক্ষেত্রের আশেপাশে দৈনন্দিন ঘটে চলছে।

সাধারণ লোকেরা মৃতের প্রতি সীমাতিরিক্ত ভক্তি প্রদর্শন করছে এবং সেখানে আল্লাহ তা‘আলার বহু অধিকার খর্ব করছে। কিন্তু অতি অল্প লোকই তাদের এসব অপকীর্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রকৃত তাওহীদের বাণী তাদের কাছে উপস্থাপিত করার সাহস করছে। অথচ এই তাওহীদের বাণী প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্যেই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পূর্ববর্তী রাসূলগণকে (তাদের প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক) প্রেরণ করেছেন। আর আমাদেরকে সর্বদা স্মরণ রাখতে হবে যে,

﴿إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّآ إِلَيۡهِ رَٰجِعُونَ﴾ [ البقرة :156]

“আমরা আল্লাহরই জন্য এবং নিশ্চিতভাবে তাঁরই পানে আমরা প্রত্যাবর্তনকারী”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৫৬]

আল্লাহ তা‘আলার দরবারে প্রার্থনা করি, তিনি যেন ঐসব লোককে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনেন এবং তাদের মধ্যে সৎপথে আহ্বানকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করেন। আর মুসলিম শাসকবৃন্দ ও উলাময়ে কিরামকে শির্কের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং এর যাবতীয় উপকরণ নির্মুল সাধনের তাওফীক দান করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, অতি সন্নিকটে।

আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে সঠিক ধর্মবিশ্বাসের পরিপন্থী আরও কয়েকটি আকীদা হলো জাহ্‌মিয়্যাহ, মু‘তাযিলা ও তাদের অনুসারী বিদ‘আতপন্থীদের মতবাদসমূহ। এরা মহামহীম আল্লাহ তা‘আলার প্রকৃত গুণাবলী অস্বীকার করে এবং তাঁকে সম্পূর্ণ ও নিখুত গুণাবলী থেকে বিমুক্ত বলে বিশ্বাস করে। পক্ষান্তরে তারা আল্লাহকে অস্তিত্বহীনতা, জড়তা ও অসম্ভাব্য গুণে বিশেষিত করার প্রয়াস পায়। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা‘আলা তাদের এসব অপবাদ থেকে বহু উর্ধ্বে।

এতদ্ব্যতীত, যারা আল্লাহ তা‘আলার কোনো কোনো গুণ প্রতিষ্ঠিত করে এবং অপর কোনো কোনো গুণ অস্বীকার করে তারাও উপরোক্ত ভ্রান্ত মতবাদিদের অন্তর্ভুক্ত। উদাহরণস্বরূপ আশ‘আরী পন্থীদের নাম উল্লেখ করা যায়। কেননা কিছু সংখ্যক গুণের স্বীকৃতির মধ্যেই তাদের পক্ষে ঐসব গুণাবলীর অনুরূপ অর্থ গ্রহণ করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে, যেগুলো তারা সরাসরি উপেক্ষা করতঃ তারা প্রমাণাদির অপব্যাখ্যা প্রদানের প্রচেষ্টা চালায়। এভাবে তারা শ্রুত ও প্রমাণ্য উভয় প্রকার দলীলগুলোর বিরোধিতা এবং পরস্পর বিরোধী বিশ্বাসের ঘুর্ণিপাকে নিপতিত হয়ে পড়ে।

পক্ষান্তরে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত আল্লাহর ঐসব পবিত্র নাম ও নিখুঁত গুণাবলী প্রতিষ্ঠিত করে যেগুলো নিজের জন্য তিনি স্বয়ং বা তাঁর রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তারা আল্লাহ তা‘আলাকে তাঁর সৃষ্টির সাদৃশ্য থেকে এমনভাবে পাক-পবিত্র রাখেন যাতে তা‘তীল বা গুণ বিমুক্তির কোনো লেশ থাকে না। এভাবে তারা এ সম্পর্কে সমুদয় প্রমাণাদির ওপর আমল করতে সক্ষম হয় এবং কোনোরূপ বিকৃতি বা তা‘লীল না করে পরস্পর বিরোধী বিশ্বাস থেকে নিরাপদ থাকে। এই বিশ্বাসই দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তি ও সৌভাগ্য লাভের একমাত্র উপায়। আর এটিই হলো সে ‘সিরাতে মুস্তাকীম’ যার পথিক ছিলেন পূর্ববর্তী মুসলিম উম্মত ও তাদের ইমামবর্গ।

একথা অতীব সত্য যে, পরবর্তী লোকগণ কেবল সে পথেই পরিশুদ্ধ হতে পারে, যে পথে তাদের পূর্ববর্তীরা পরিশুদ্ধ হয়ে গেছেন। আর সে পথটি হলো: ‘কুরআন ও সুন্নাতের সঠিক অনুসরণ এবং এতদুভয়ের পরিপন্থী বিষয়সমূহ বর্জন করে চলা।’

আল্লাহই আমাদের তাওফীকদাতা, তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং পরমোত্তম প্রভূ। তিনি ব্যতীত কারো কোনো শক্তি সামর্থ্য নেই।

আল্লাহ তাঁর বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সাহাবীগণের ওপর সালাত ও সালাম প্রেরণ করুন। আমীন।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন