মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহর ওপর ঈমানের প্রথম কথা হলো, এ ঈমান রাখতে হবে যে, তিনিই ইবাদত পাওয়ার একমাত্র যোগ্য, সত্যিকার মা‘বুদ, অন্য কেউ নয়। কেননা একমাত্র তিনিই বান্দাহদের স্রষ্টা, তাদের প্রতি অনুগ্রহকারী এবং তাদের জীবিকার ব্যবস্থাপক। তিনি তাদের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত এবং তিনি তাঁর অনুগত বান্দাকে প্রতিফলদানে ও অবাধ্যজনকে শাস্তি প্রদানে সম্পূর্ণ সক্ষম। আর এ ইবাদতের জন্যেই আল্লাহ তা‘আলা জিন্ন ও ইন্সানকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের প্রতি তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন, আল্লাহ বলেন,
“আমি জিন্ন ও ইনসানকে কেবল আমারই ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের নিকট কোনো রিযিক চাই না, এটাও চাই না যে, তারা আমাকে খাওয়াবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ নিজেইতো রিযিকদাতা, মহান শক্তিধর ও প্রবল পরাক্রান্ত”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬-৫৭)
“হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত কর যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তী সকলকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার। তিনিই সেই সত্তা যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে বিছানাস্বরূপ, আকাশকে ছাদস্বরূপ তৈরি করেছেন এবং আকাশ হতে বৃষ্টিধারা বর্ষণ করে এর সাহায্যে নানা প্রকার ফল-শষ্য উৎপাদন করে তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থা করেছেন। অতএব, তোমরা এসব কথা জেনেশুনে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করাবে না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত : ২১-২২]
এ সত্যকে স্পষ্ট করে তুলে ধরার জন্য এবং এর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে এর পরিপন্থী বিষয় থেকে সতর্ক করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আল্লাহ যুগে যুগে বহু নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন ও কিতাবসমূহ নাযিল করেছেন।
“প্রত্যেক জাতির প্রতি আমরা রাসূল পাঠিয়েছি এই আদেশ সহকারে যে, তোমরা একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত কর এবং তাগুত (শয়তানী শক্তি) এর ইবাদত থেকে দূরে থাক”। [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৩৬]
“আর আপনার পূর্বে যখনই আমরা কোনো রাসূল পাঠিয়েছি তখনই তাকে তো এটাই ওহী করেছি যে, নিশ্চয় আমি (আল্লাহ) ব্যতীত কোনো সত্যিকারের মা‘বুদ নেই, সুতরাং তোমরা কেবল আমারই ইবাদত কর।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৫]
“এটি এমন এক কিতাব যার আয়াতসমূহ এক প্রজ্ঞাময় সর্বজ্ঞ সত্ত্বার নিকট থেকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত এবং সবিস্তারে বিবৃত রয়েছে, যেন তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না কর। অনন্তর, আমি তাঁরই পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি একজন ভয় প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদদাতা”। [সূরা হূদ, আয়াত: ১-২]
উল্লিখিত ইবাদতের প্রকৃত অর্থ হলো: যাবতীয় ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই নিবেদিত করা। প্রার্থনা, ভয়, আশা, সালাত, সাওম, যবেহ, মান্নত ইত্যাদি সর্বপ্রকার ইবাদত তাঁরই প্রতি পূর্ণ ভালোবাসা রেখে শ্রদ্ধাপূর্ণ ভয় ও পূর্ণ বশ্যতাসহ সম্পাদন করা। কুরআনে কারীমের অধিকাংশ আয়াত এই মহান মৌলিক নীতি সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছে। আল্লাহ বলেন,
“অতএব, তোমরা আল্লাহকেই ডাক, নিজেদের দীনকে কেবল তাঁরই জন্যে খালেসভাবে নির্দিষ্ট করে, কাফিরদের কাছে তা যতই দুঃসহ হোক না কেন”। [সূরা আল-গাফির, আয়াত: ১৪]
মু‘আয রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, ‘বান্দার ওপর আল্লাহর অধিকার হলো তারা যেন কেবল তাঁরই ইবাদত করে এবং এতে অন্য কাউকে তাঁর সাথে অংশীদার না করে’।
আল্লাহর ওপর ঈমানের আরেকটি দিক হলো-ঐ সমস্ত বিষয়ের ওপর ঈমান রাখা, যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাগণের ওপর ওয়াজিব ও ফরয করেছেন। সেগুলো হচ্ছে, ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ: (১) এ সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো হক্ব মা‘বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, (২) সালাত প্রতিষ্ঠা করা, (৩) যাকাত দেওয়া, (৪) রমযানের সাওম পালন, (৫) বায়তুল্লাহ শরীফে পৌঁছার সামর্থ্য থাকলে হজ পালন করা ইত্যাদিসহ অন্যান্য ফরযগুলো, যা নিয়ে পবিত্র শরী‘আতের আগমন ঘটেছে।
উপরোক্ত স্তম্ভ বা রুকনগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান করুন হলো এই সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো সত্য মা‘বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। এটিই হলো কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’-এর প্রকৃত মর্মার্থ। কেননা এর যথার্থ অর্থ হলো-আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো সত্যিকার মা‘বুদ নেই। সুতরাং তাঁকে ব্যতীত যা কিছুর ইবাদত করা হয়, সে মানব সন্তান হোক আর ফিরিশতা, জিন্ন বা অন্য যাই হোক সবই বাতিল। সত্যিকার মা‘বুদ হলেন কেবল সেই মহান আল্লাহ তা‘আলাই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তা এই জন্যে যে, আল্লাহই প্রকৃত সত্য এবং তাঁকে বাদ দিয়ে ওরা যাদের আহ্বান (ইবাদত) করছে তা নিঃসন্দেহে বাতিল”। [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৬২]
ইতোপূর্বে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ এই যথার্থ মৌলিক বিষয়ের উদ্দেশ্যেই জিন্ন ও ইন্সান সৃষ্টি করেছেন এবং তাদেরকে তা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং হে পাঠক, বিষয়টি ভালো করে ভেবে দেখুন এবং এ সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করুন। আপনার কাছে নিশ্চয় স্পষ্ট হয়ে উঠবে, অধিকাংশ মুসলিম উক্ত গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক নীতি সম্পর্কে বিরাট অজ্ঞতার মধ্যে নিপতিত রয়েছে। ফলে তারা আল্লাহর সাথে অন্যেরও ইবাদত করছে এবং তাঁর প্রাপ্য ও খালেস অধিকার অন্যের জন্যে নিবেদিত করে চলেছে।
এটাও আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমানের অন্তর্ভুক্ত যে, তিনিই সকল সৃ্ষ্টির সৃষ্টিকর্তা, তাদের যাবতীয় বিষয়ের ব্যবস্থাপক এবং আল্লাহ যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে স্বীয় জ্ঞান ও কুদরতের দ্বারা তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি দুনিয়া-আখেরাতের মালিক ও সমগ্র জগৎবাসীর প্রতিপালক। তিনিই আপন বান্দাহগণের যাবতীয় সংশোধন, তাদের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মঙ্গল ও কল্যাণের প্রতি আহ্বান জানানোর উদ্দেশ্যে রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। এ সব যাবতীয় বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার কোনো শরীক নেই। আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয় তোমাদের রব হলেন আল্লাহ, যিনি আকাশমণ্ডলী ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি ‘আরশের উপর উঠলেন। তিনিই দিনকে রাত দিয়ে ঢেকে দেন, তাদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্ররাজি, যা তাঁরই হুকুমের অনুগত, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখো, সৃষ্টি আর হুকুম প্রদানের মালিক তিনিই। চির মঙ্গলময় মহান আল্লাহ তিনিই সৃষ্টিকুলের রব”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫৪]
আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমানের আরেকটি দিক হলো, কুরআনে কারীমে উদ্ধৃত এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত আল্লাহর সর্ব সুন্দর নামসমূহ ও তাঁর সর্বোন্নত গুণরাজির ওপর কোনো প্রকার বিকৃতি, অস্বীকৃতি, ধরণ নির্ধারণ, গঠন বা সাদৃশ্য আরোপ না করে ঈমান আনয়ন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোনো সাদৃশ্য স্থির করো না, নিঃসন্দেহে আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না”। [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৭৪]
এ হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ ও তাদের নিষ্ঠাবান অনুসারী আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আকীদা বা বিশ্বাস। ইমাম আবুল হাসান আল-আশ‘আরী রহ. তার ‘আল-মাকালাত আন আসহাবিল হাদীস ওয়া আহলিস-সুন্নাহ’ গ্রন্থে এই আকীদার কথাই উদ্ধৃত করেছেন। এভাবে ইলম ও ঈমানের বিজ্ঞজনেরাও বর্ণনা করে গেছেন।
* ইমাম আওযা‘য়ী রহ. বলেন, ইমাম যুহরী ও মাকহুলকে আল্লাহর গুণরাজি সম্পর্কিত আয়াতগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, এগুলো যেভাবে এসেছে ঠিক সেভাবেই মেনে নাও।
* ওয়ালীদ ইবন মুসলিম রহ. বলেন ইমাম মালেক, আওযায়ী, লাইস ইবন সা‘দ ও সুফইয়ান সাওরীকে আল্লাহর গুণরাজি সম্বন্ধে বর্ণিত হাদীসসমূহ জিজ্ঞাসা করা হলে তারা সকলেই উত্তরে বলেন, ‘কোনোরূপ ধরণ নির্ধারণ ব্যতীতই এগুলো যেভাবে এসেছে ঠিক সেভাবে মেনে নাও’।
* ইমাম আওযা‘য়ী বলেন, বহুল সংখ্যায় তাবেঈগণের জীবদ্দশায় আমরা বলাবলি করতাম যে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ‘আরশের উপর রয়েছেন এবং হাদীস শরীফে বর্ণিত তাঁর সব গুণাবলীর ওপর আমরা ঈমান আনয়ন করি।
* ইমাম মালেকের উস্তাদ রাবী‘আহ ইবন আবু আব্দুর রহমান রহ.-কে (আল্লাহ তাঁরই ‘আরশের উপর উঠা) সম্পর্কে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় তখন তিনি বলেন, আল্লাহ তাঁর ‘আরশের উপর উঠা অজানা ব্যাপার নয়, তবে এর বাস্তব ধরণ আমাদের বিবেকগ্রাহ্য নয়। আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে রিসালাত, রাসূলের দায়িত্ব হলো স্পষ্টভাবে এর ঘোষণা করা আর আমাদের কর্তব্য হলো এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
* ইমাম মালেক রহ.-কে ‘ইস্তিওয়া’ বা আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক ‘আরশের উপর উঠা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বলেন, উপরে উঠা আমাদের জ্ঞাত আছে, তবে এর বাস্তব ধরন অজ্ঞাত, এর ওপর ঈমান আনয়ন করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য এবং এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা বিদ‘আত।’ তারপর তিনি প্রশ্নকর্তাকে বললেন, আমার তো মনে হচ্ছে তুমি খারাপ লোক ছাড়া আর কিছু নও, তারপর তাকে তার মজলিস থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং বের করে দেওয়া হয়।
* উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে ঐ একই অর্থে হাদীস বর্ণিত আছে।
* আর ইমাম আবূ আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রারহ. বলেন, “আমরা আমাদের মহান রব সম্পর্কে জানি যে, তিনি সকল আসমানের ওপর ‘আরশের ওপর রয়েছেন তাঁর সৃষ্টিকুল থেকে আলাদা হয়ে।”
উপরোক্ত বিষয়ে ইমামগণের অনেক বক্তব্য রয়েছে। এ সংক্ষিপ্ত পরিসরে এর বিস্তারিত উল্লেখ সম্ভব নয়। কারো এর অধিক জানার আগ্রহ হলে আহলে সুন্নাতের আলেমগণ কর্তৃক উক্ত বিষয়ের উপর রচিত বিভিন্ন গ্রন্থাবলী পর্যালোচনা করে দেখতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করছি।
১) আবদুল্লাহ ইবন ইমাম আহমাদ রচিত কিতাবুস সুন্নাহ।
২) প্রখ্যাত ইমাম মুহাম্মাদ ইবন খুযাইমা কর্তৃক রচিত কিতাবুত তাওহীদ।
৫) শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ কর্তৃক প্রদত্ত জবাব, যা তিনি হামাবাসীদের জন্য দিয়েছিলেন। বস্তুত এ শেষোক্ত জবাবটি অতি উপকারী এক মহৎ জবাবনামা। এতে শাইখুল ইসলাম অতি চমৎকারভাবে আহলে সুন্নাতের আকীদাসমূহ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন এবং তাদের বহুবিধ উক্তিসহ শরী‘আত ও বুদ্ধিভিত্তিক প্রমাণসমূহ উদ্ধৃত করেছেন, যা আহলে সুন্নাতের বক্তব্যের বিশুদ্ধতা ও তাদের বিপক্ষীয় বক্তব্যের অসারতা সঠিকভাবে প্রমাণ করে।
৬) অনুরূপভাবে শাইখুল ইসলামের আরেকটি গ্রন্থ, যা ‘রিসালায়ে তাদমুরিয়া’ নামে পরিচিত; সেটাতেও তিনি উক্ত বিষয়টি সবিস্তারে আলোচনা করেন। কুরআন-সুন্নাহ ও বিবেকগ্রাহ্য বিভিন্ন দলীল দিয়ে আহলে সুন্নাতের আকীদা স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন এবং এমনভাবে বিরুদ্ধবাদীদের প্রত্যুত্তর প্রদান করেছেন যে, সত্যান্বেষী ও সরল-সাধু যে কোনো জ্ঞানভাজন ব্যক্তি একটু চিন্তা করলেই তাঁর কাছে সত্য উদ্ভাসিত ও বাতিল বিলুপ্ত হতে দেরী হবে না।
আর যে কেউ আল্লাহ তা‘আলার পবিত্র নামসমূহ ও গুণরাজি সংক্রান্ত বিশ্বাসে আহলে সুন্নাতের বিরোধিতা করবে, সে যা সাব্যস্ত করবে বা নিষেধ করবে তাতে নিশ্চিতভাবে কুরআন-সুন্নাহ ও বিবেকগ্রাহ্য দলীলের বিরোধিতা করার সাথে সাথে পরস্পর বিরোধী বিশ্বাসে নিপতিত হবে।
* আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ‘ত আল্লাহ তা‘আলার জন্যে ঐসব গুণাবলী সাদৃশ্যহীনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন, যা তিনি স্বীয় কুরআনে কারীমে অথবা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সহীহ হাদীসসমূহে আল্লাহর জন্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তারা আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টির সদৃশ হওয়া থেকে এমনভাবে পবিত্র রাখেন যার মধ্যে তা‘ত্বীল বা গুণমুক্ত করার কোনো লেশ থাকে না। ফলে তারা পরস্পর বিরোধী অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে আল্লাহর গুণাবলীর ওপর ঈমান আনয়ন করে থাকেন।
বস্তুত আল্লাহ তা‘আলার চিরন্তন নীতিই হলো, যে কোনো মানুষ রাসূলগণের মাধ্যমে প্রেরিত সত্যকে আঁকড়ে তাঁর সমুদয় সামর্থ্য সে পথে ব্যয় করে এবং নিষ্ঠার সাথে এর অন্বেষায় থাকে, তাকে আল্লাহ তা‘আলা সত্যের পথে চলার তাওফীক দান করেন এবং তার বক্তব্যকে বিজয়ী করে দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর যখনই তারা তোমার সম্মুখে কোনো নতুন উদাহরণ পেশ করেছে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা এর হক্ব জবাব তোমাকে জানিয়ে দিয়েছি এবং অতি উত্তমভাবে মূল কথা ব্যক্ত করে দিয়েছি”। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৩৩]
হাফেয ইবন কাসীর রহ. তার বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
“বস্তুত তোমাদের প্রভু সেই আল্লাহ যিনি আকাশমণ্ডলী ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫৪] এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে অতি সুন্দর কথা বলেছেন যা অত্যন্ত উপকারী বিধায় এখানে প্রণিধানযোগ্য মনে করছি। তিনি বলেন, এ প্র্রসঙ্গে লোকদের বক্তব্য অনেক, এর বিস্তারিত বর্ণনার স্থান এখানে নয়। আমরা এ ব্যাপারে ঐ পথই গ্রহণ করবো, যে পথে চলেছেন পূর্বেকার সুযোগ্য মনীষী ইমাম মালেক, আওযা‘য়ী, সাওরী, লাইস ইবন সা‘দ, শাফে‘ঈ, আহমদ ইবন রাহওয়িয়াহসহ তৎকালীন ও পরবর্তী মুসলিমদের ইমামগণ। আর তা হলো, আল্লাহর গুণাবলীর বর্ণনা যেভাবে আমাদের কাছে পৌঁছেছে ঠিক সেভাবেই তা মেনে নেওয়া, এর কোনো ধরণ, সাদৃশ্য বা গুণ বিমুক্তি নির্ণয় ব্যতিরেকেই। সাদৃশ্যপন্থিদের মস্তিষ্কে প্রথম লগ্নেই আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে যে কল্পনার উদয় ঘটে তা আল্লাহ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিদূরিত। কেননা কোনো ব্যাপারেই কোনো সৃষ্টি আল্লাহর সদৃশ হতে পারে না। তাঁর সমতুল্য কোনো বস্তু নেই। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি তদ্রূপই, যেরূপ শ্রদ্ধেয় ইমামগণ বলে গেছেন। তাদের মধ্যে ইমাম বুখারীর উস্তাদ নু‘আইম ইবন হাম্মাদ আল খুযা‘য়ী অন্যতম। তিনি বলেছেন: যে লোক আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টির সাথে কোনো ব্যাপারে সদৃশ মনে করে সে কাফির এবং যে আল্লাহর সে সব গুণরাজি অস্বীকার করে যা দ্বারা তিনি নিজেকে বিশেষিত করেছেন, সেও কাফির। কেননা আল্লাহকে স্বয়ং তিনি বা তাঁর রাসূল যেসব গুণরাজির দ্বারা বিশেষিত করেছেন, সৃষ্টির সাথে সেগুলোর কোনো সাদৃশ্য নেই।
সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার জন্যে আল-কুরআনের স্পষ্ট আয়াত ও সহীহ হাদীসসমূহে বর্ণিত গুণরাজি এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করে যা আল্লাহর মহত্বের সাথে মানানসই হয় এবং তাঁকে যাবতীয় অপূর্ণতা, খুঁত বা ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পাক-পবিত্র রাখে, সে ব্যক্তিই হিদায়াতের পথ সঠিকভাবে অনুসরণ করে চলে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/60/4
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।