মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে মসজিদের ফযিলত, বিধি-বিধান ও আদাব
লেখকঃ ড. সাঈদ বিন আলী বিন ওহাফ আল-কাহতানী
১৪
দশম পরিচ্ছেদ: মসজিদের মধ্যে ইলমের মজলিশ আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/617/14
«من نَفَّسَ عن مؤمن كربة من كرب الدنيا نَفَّسَ الله عنه كربة من كرب يوم القيامة، ومن يسَّر على معسر يسَّر الله عليه في الدنيا والآخرة، ومن ستر مسلماً ستره الله في الدنيا والآخرة، والله في عون العبد ما كان العبد في عون أخيه، ومن سلك طريقاً يلتمس فيه علماً سهَّل الله له به طريقاً إلى الجنة، وما اجتمع قوم في بيت من بيوت الله يتلون كتاب الله ويتدارسونه بينهم، إلا نزلت عليهم السكينة، وغشيتهم الرحمة، وحفتهم الملائكة، وذكرهم الله فيمن عنده، ومن بطَّأ به عمله لم يسرع به نسبه»
“যে ব্যক্তি কোন মুমিন থেকে দুনিয়াবি একটি বিপদ দূর করে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত দিবসের বিপদসমূহ হতে একটি বিপদ দূর করবে। আর যে ব্যক্তি কোন অভাবীকে সচ্ছল করে দেয়, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া আখিরাতে তাকে সচ্ছলতা দান করবে। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ভাইয়ে দোষ-ত্রুটি গোপন করে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে। আল্লাহ তা‘আলা বান্দার সহযোগিতা করে যখন সে তার অপর ভাইয়ে সহযোগিতা করে। যে ব্যক্তি ইলম হাসিল করার জন্য কোন পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি রাস্তা সহজ করে দেবেন। কোন সম্প্রদায়ের লোকেরা যখন আল্লাহর ঘরসমূহ হতে কোন ঘরে একত্র হয়, যাতে তারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে বা পরস্পর আলোচনা করে তাদের উপর সাকিনা নাযিল হতে থাকে, তাদেরকে রহমত ঢেকে রাখে এবং ফেরেশতারা তাদের বেষ্টন করে রাখে। আর আল্লাহ তা‘আলা তাদের নিকট যারা আছে, তাদের কাছে তাদের আলোচনা করেন। আর যার আমল তাকে পিছিয়ে দেয়, তার বংশ তাকে এগিয়ে নেয় না”। [মুসলিম, যিকির ও দু’আ অধ্যায়। পরিচ্ছেদ: তিলাওয়াতে কুরআন ও যিকিরের জন্য একত্র হওয়ার ফযিলত বিষয়ে আলোচনা হাদিস নং ২৬৯৯।] আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু ও আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« لا يقعد قوم يذكرون الله تعالى إلا حفتهم الملائكة، وغشيتهم الرحمة، ونزلت عليهم السكينة، وذكرهم الله فيمن عنده »
“যখন কোন সম্প্রদায়ের লোকেরা আল্লাহর যিকর করার জন্য কোন মজলিসে একত্র হয়, তখন ফেরেশতারা তাদের বেষ্টন করে রাখবে এবং রহমত তাদের ঢেকে ফেলবে, আর তাদের উপর সাকিনা নাযিল হতে থাকবে। আর আল্লাহ তা‘আলা তার দরবারের ফেরেশতাদের নিকট তাদের আলোচনা করবে”। [মুসলিম, যিকির ও দু’আ অধ্যায়। পরিচ্ছেদ: তিলাওয়াতে কুরআন ও যিকিরের জন্য একত্র হওয়ার ফযিলত বিষয়ে আলোচনা হাদিস নং ২৭০০।] এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস যাতে বিভিন্ন ধরনের ইলম, মূলনীতি ও ইসলামী শিষ্টাচারের আলোচনা করা হয়েছে। মুসলিমদের প্রয়োজনসমূহ পূরণ করা ও তাদের বিভিন্ন উপকার যেমন, শিক্ষা দেয়া, অর্থের যোগান দেয়া, কোন ভালো কাজের প্রতি পথ দেখানো বা উপদেশ দেয়ার বিভিন্ন ফযিলত এখানে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়াও মুসলিমদের দোষ-ত্রুটি গোপন করা, অভাবীদের সুযোগ দেয়া, ইলমে দ্বীন শিক্ষা করার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার ফযিলত এ হাদিসে আলোচনা করা হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শরীয়তের জ্ঞান লাভ করা জরুরি। হাদিসে মসজিদের কুরআন শিক্ষা করার উদ্দেশ্যে একত্র হওয়ার ফযিলত আলোচনা করা হয়েছে। অনুরূপভাবে যদি কুরআন শেখার উদ্দেশ্যে কোন মাদ্রাসায় বা ঘরে একত্র হয়, তাহলেও এ ফযিলত লাভ করা যাবে। দ্বিতীয় হাদিসটি এ কথার প্রমাণ। কারণ, তাতে কোন স্থানের কথা উল্লেখ করা হয়নি বরং ব্যাপক রাখা হয়েছে। আর প্রথম হাদিসে খাস করাটা আকস্মিক। হাদিসে এ কথাটি স্পষ্ট করা হয়, যার আমল দুর্বল সে কখনো যারা আমলে সবল, তাদের মানে পৌঁছতে পারবে না। তাদের উচিত তার যেন তাদের বাপ-দাদার বংশ মর্যাদার উপর ভরসা না করে [দেখুন: সহীহ মুসলিমের উপর ইমাম নববীর ব্যাখ্যা। ২৪/১৭।]। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
خرج معاوية رضى الله عنه على حلقة في المسجد فقال : ما أجلسكم؟ قالوا : جلسنا نذكر الله، قال : آلله ما أجلسكم إلا ذاك؟ قالوا : والله ما أجلسنا إلا ذاك، قال : أما إني لم أسْتَحْلِفْكُم تُهمةً لكم، وما كان أحد بمنزلتي من رسول الله صلى الله عليه و سلم أقل عنه حديثاً مني، وإن رسول الله صلى الله عليه و سلم خرج على حلقةٍ من أصحابه فقال : «ما أجلسكم؟» قالوا : جلسنا نذكر الله ونحمده على ما هدانا للإسلام ومنَّ به علينا، قال : «آلله ما أجلسكم إلا ذاك ؟» قالوا : والله ما أجلسنا إلا ذاك، قال :. « أما إني لم أستحلفكم تهمة لكم ولكنه أتاني جبريل فأخبرني أن الله تعالى يباهي بكم الملائكة »
অর্থ, মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু মসজিদে একটি হালাকাতে উপস্থিত হয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, তোমাদের এখানে কে বসিয়েছে, তারা বলল, আমরা আল্লাহর জিকির করার জন্য বসছি। তারপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! তোমরা শুধু এ জন্যই বসছ? তারা বলল, আল্লাহর কসম আমরা শুধু এ জন্যই বসছি। তিনি বললেন, আমি তোমাদের নিকট কসম তোমাদেরকে অবিশ্বাস করি বলে চাইনি। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদিস বর্ণনাকারী আমার থেকে এত কম আর কেউ নাই। একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথীদের একটি হালকায় বের হয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, তোমাদের কোন জিনিস এখানে বসিয়েছে? উত্তরে তারা বলল, আমরা এখানে বসছি, আল্লাহর জিকির করার জন্য এবং আল্লাহ আমাদের ইসলামের প্রতি পথ দেখানো ও আমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করছে তার উপর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! তোমরা শুধু এ জন্যই এখানে বসছ? তারা বলল, আল্লাহর কসম আমরা শুধু এ জন্যই এখানে বসছি। তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে অবিশ্বাস করি বলে তোমাদের নিকট কসম চাইনি। তবে আমার নিকট জিবরীল আ. এসেছিলেন। তিনি আমাকে সংবাদ দেন যে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের মধ্যে গর্ব করেন। [মুসলিম, যিকির ও দু’আ অধ্যায়। পরিচ্ছেদ: তিলাওয়াতে কুরআন ও যিকিরের জন্য একত্র হওয়ার ফযিলত বিষয়ে আলোচনা হাদিস নং ২৭০১।] আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إن لله ملائكة يطوفون في الطرق يلتمسون أهل الذكر، فإذا وجدوا قوماً يذكرون الله تنادوا : هلمّوا إلى حاجتكم، قال : فيحفونهم بأجنحتهم إلى السماء الدنيا، قال : فيسألهم ربهم تعالى وهو أعلم بهم، ما يقول عبادي؟ قال : تقول : يسبحونك، ويكبرونك، ويحمدونك، ويمجدونك، قال : فيقول : هل رأوني؟ قال فيقولون : لا، والله ما رأوك، قال : فيقول : كيف لو رأوني؟ قال : يقولون : لو رأوك كانوا أشدّ لك عبادة، وأشد لك تمجيداً، وأكثر لك تسبيحاً، قال : يقول : فما يسألوني؟ قال : يسألونك الجنة، قال : يقول : وهل رأوها؟ قال : يقولون : لا، والله يا رب ما رأوها، قال : فيقول : فكيف لو أنهم رأوها؟ قال : يقولون : لو أنهم رأوها كانوا أشد عليها حرصاً وأشد لها طلباً، وأعظم فيها رغبة، قال : فممَ يتعوذون؟ قال : يقولون : من النار، قال : يقول : وهل رأوها؟ قال يقولون : لا، والله يا رب ما رأوها، قال : يقول : فكيف لو رأوها؟ قال : يقولون : لو رأوها كانوا أشدّ منها فراراً، وأشد لها مخافة، قال : فيقول : فأشهدكم أني قد غفرت لهم، قال : يقول ملك من الملائكة : فيهم فلان ليس منهم إنما جاء لحاجة، قال : هم الجلساء لا يشقى بهم جليسهم ))( [বুখারি ও মুসলিম : বুখারি, দু’আ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: আল্লাহর যিকিরের ফযিলত, হাদীস ৬৪০৮; মুসলিম, যিকির ও দু’আ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: যিকিরের মজলিসের ফযিলত। হাদিস নং ২৬৮৯।]). وفي لفظ مسلم : (( إن لله تبارك وتعالى ملائكة سيارة فُضُلاً ( [সাইয়ারাহ অর্থ যারা জমিনে ঘুরতে থাকে। আর এখানে (( فضلاً )) অর্থ, অতিরিক্ত ফেরেশতা যারা শুধু ঘুরে তাদের কোন কাজ নাই। তাদের কাজ হল, যিকিরের হালকাসমূহ খোঁজা। সহীহ মুসলিমের উপর ইমাম নববীর ব্যাখ্যা ১৮/১৭।]) يبتغون مجالس الذكر، فإذا وجدوا مجلساً فيه ذكر قعدوا معهم، وحفَّ بعضهم بعضاً بأجنحتهم حتى يملؤوا ما بينهم وبين السماء الدنيا، فإذا تفرَّقوا عرجوا وصعدوا إلى السماء، قال : فيسألهم الله تعالى وهو أعلم بهم، من أين جئتم؟ فيقولون : جئنا من عند عبادٍ لك في الأرض : يسبحونك، ويكبرونك، ويهللونك، ويحمدونك، ويسألونك ... » الحديث . وفيه : « قد غفرت لهم، وأعطيتهم ما سألوا، وأجرتهم مما استجاروا، قال : يقولون : رب فيهم فلان عبدٌ خطّاء إنما مرّ فجلس معهم، قال : فيقول : وله غفرت، هم القوم لا يشقى بهم جليسُهم »
অর্থ, আল্লাহর কিছু ফেরেশতা আছে, তারা যমিনে ঘুরে ঘুরে যিকিরকারীদের অনুসন্ধান করেন। যখন তারা কোন সম্প্রদায়কে দেখতে পায় তারা আল্লাহর যিকর করছে। তখন তারা তাদের নিজেদের ডেকে বলে, আস, তোমরা তোমাদের যা দরকার তা পেয়েছ। তখন তারা তাদের ডানা দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত বেষ্টনী দেয়। তখন আল্লাহ তাদের জিজ্ঞাসা করে যদিও তিনি তাদের বিষয়ে সর্বজ্ঞ। আমার বান্দারা কি বলে? তারা উত্তর দেয়, তারা আপনার তাসবীহ বর্ণনা করে, আপনার বড়ত্ব বর্ণনা করে, আপনার মর্যাদা বর্ণনা এবং আপনার প্রশংসা করে। তিনি বলেন, তখন আল্লাহ বলবে, তারা কি আমাকে দেখেছে? তারা বলল, না আল্লাহর কসম, তারা তোমাকে দেখেনি। তিনি বলেন, তখন আল্লাহ বলবে, তারা যদি আমাকে দেখত, তাহলে কি অবস্থা হত? সে বলল, তারা বলল, যদি তোমাকে দেখত, তাহলে তারা তোমার ইবাদাত আরও বেশি করত, তোমার বড়ত্ব আরও বেশি আলোচনা করত এবং তোমার তাসবীহ আরও বেশি আলোচনা করত। তিনি বললেন, আল্লাহ বলবে, তারা আমার নিকট কি চায়? তারা আপনার নিকট জান্নাত চায়, তারা কি জান্নাত দেখছে? তারা বলবে না আল্লাহর কসম হে প্রভু! তারা জান্নাত দেখেনি। তখন আল্লাহ বলে, যদি তারা জান্নাত দেখত, তাহলে তারা কি করত? তিনি বলেন, তারা বলবে, যদি তারা দেখত, তাহলে তারা অধিক লালায়িত হত এবং আরও কঠিন ভাবে তালাশ করত এবং আরও বেশি আগ্রহ করত। তিনি বলল, তারপর তারা কীসের থেকে আশ্রয় চায়? তিনি বললেন, তারা জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চায়। তিনি বলেন, তারপর আল্লাহ তাদের জিজ্ঞাসা করবেন, তারা কি জাহান্নাম দেখছে? তারা কি জাহান্নাম দেখেছে? তিনি বলেন, তারা বলবে, না আল্লাহর কসম তারা জাহান্নাম দেখেনি। যদি দেখত তাহলে কি করত? তিনি বললেন, যদি তারা দেখত, তাহলে তারা আরও বেশি পলায়ন করত এবং আরও বেশি ভয় করত। তিনি বললেন, তখন আল্লাহ বলবে, আমি তোমাদেরকে সাক্ষী বানাচ্ছি, আমি তাদের ক্ষমা করে দিলাম। বললেন, একজন ফেরেশতা বলবে, তাদের একলোক আছে, সে তাদের থেকে নয়। সে তার ব্যক্তিগত কাজে আসছে। আল্লাহ বলবেন, তারা এমন এক সম্প্রদায় তাদের সাথে যারা বসে তারাও বঞ্চিত হয় না। মুসলিম শরীফের শব্দ নিম্নরূপ: আল্লাহ তা‘আলার জন্য রয়েছে, চলমান অতিরিক্ত কতক ফেরেশতা তারা যিকিরের মজলিসসমূহ অনুসন্ধান করতে থাকে। যখন তারা কোন মজলিস পায় যেখানে যিকর হয়, তারা তাদের সাথে বসে পড়ে। তারা পরস্পর পরস্পরকে তাদের ডানা দ্বারা এমনভাবে বেষ্টন করে, যাতে তাদের মাঝে ও দুনিয়ার আকাশের মাঝে আর কোন ফাকা না থাকে। যখন যিকরের মজলিস শেষ হয়ে যায়, তারা উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং আকাশে আরোহণ করে। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের জিজ্ঞাসা করে, তিনি তাদের সম্পর্কে সর্বজ্ঞ। তোমরা কোথায় থেকে আসছ? তারা বলবে, আমরা যমিনে তোমার কতক বান্দার নিকট থেকে আসছি, যারা তোমার তাসবীহ পাঠ করে, তোমার বড়ত্ব বর্ণনা করে, তোমার তাহলীল পাঠ করে, তোমার প্রশংসা করে এবং তোমার নিকট চায়। হাদিসে আরও বলা হয়, আমি তাদের ক্ষমা করে দিলাম, তারা যা আমার কাছে চাইল, আমি তাই দিলাম, আমি তাদের মুক্তি দিলাম যা হতে তারা মুক্তি চায়। তিনি বলেন, তারা বলল, হে আমার রব! তাদের মধ্যে অমুক একজন বান্দা আছে সে পথ ভোলা, পথ দিয়ে যাচ্ছিল তাদের সাথে বসে পড়ছে। বলল, আল্লাহ বলবে, আমি তাকেও ক্ষমা করে দিলাম। তারা এমন সম্প্রদায় তাদের সাথে যে বসে সেও নৈরাশ হয় না। [মুসলিম, হাদিস নং ২৬৮৯। দেখুন হাফেয ইবনে হাজরের ফতহুল বারী, ২০৯/১১।]
আমি শাইখ আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, এটি একটি মহা ফযিলত। আল্লাহ তা‘আলার নিকট আমার কামনা তিনি যেন কবুল করেন। আর ইলমের মজলিস অধিক গুরুত্বপূর্ণ তাসবীহর মজলিস থেকে। [সহীহ বুখারি, ৬৪০৮ নং হাদিসের ব্যখ্যায় আমি তাকে বলতে শুনেছি।] আবু ওয়াকেদ আল-লাইসী থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
بينما هو جالس في المسجد والناس معه، فأقبل ثلاثة نفر، فأقبل اثنان إلى رسول الله صلى الله عليه و سلم وذهب واحد، قال : فوقفا على رسول الله صلى الله عليه و سلم، فأما أحدهما فرأى فُرْجة في الحلقة فجلس فيها، وأما الآخر فجلس خلفهم، وأما الثالث فأدبر ذاهباً، فلما فرغ رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : « ألا أخبركم عن النفر الثلاثة : أما أحدهم فآوى إلى الله فآواه الله، وأما الآخر فاستحيا فاستحيا الله منه، وأما الآخر فأعرض فأعرض الله عنه »
“একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে বসা ছিল, আর লোকেরা তার সাথে আছে। তখন মসজিদে তিনজন লোকের আগমন ঘটল। তাদের দুইজন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে আসল আর একজন চলে গেল। তিনি বলেন, তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অবস্থান করল। তাদের একজন মজলিসে একটু ফাঁকা দেখল এবং সেখানে তারা বসে পড়ল। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি তাদের পিছনে বসে পড়ল। আর তৃতীয় ব্যক্তি সে চলে গেল। যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবসর হলেন, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের লোক তিনটি সম্পর্কে জানিয়ে দেব? তাদের একজন আল্লাহর দিকে জায়গা করে নিলো, আল্লাহ তাকে আশ্রয় দিল। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি সে লজ্জা করল আল্লাহ তাকে লজ্জার বিনিময় দিল। আর তৃতীয় ব্যক্তি সে ফিরে গেল, আল্লাহ তা‘আলাও তার থেকে ফিরে গেল”। [বুখারি, সালাত অধ্যায় পরিচ্ছেদ: হালকা করা ও মসজিদে বসার বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৪৭৪। কিতাবুল ইলম, পরিচ্ছেদ: যে ব্যক্তি মজলিসের শেষ প্রান্তে গিয়ে বসে এবং যে ব্যক্তি মজলিশের মধ্যে ফাকা দেখে সেখানে বসে পড়ে সে বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৬৬।] এ হাদিসটির মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। অপরাধীদের অপরাধ ও তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া অপরাধ থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে বৈধ। এটিকে গীবত বলা যাবে না। এখানে ইলম ও যিকরের হালকাসমূহে বসা এবং আলেম ও যিকরকারীদের সাথে মসজিদে বসার ফযিলত প্রমাণিত। আর এখানে লজ্জাকারীর প্রশংসা করা হয়েছে [দেখুন: হাফেজ ইবনে হাজরের ফতহুল বারী: ১৫৭।]। আর মজলিস যেখানে শেষ হয় সেখানে বসার বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। আমি ইমাম আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, এতে প্রমাণিত হয়, একজন আলেমের জন্য মসজিদে একাধিক হালাকা থাকা জরুরি; যাতে মানুষ তার থেকে উপকার লাভ করে। এখানে আরও প্রমাণিত হয়, একজন তালেব এলেমের জন্য মজলিসের মধ্যে ফাঁকা থাকলে তাতে বসা ও প্রবেশ করা বৈধ।
উত্তম হল, হালাকার মধ্যে ঢুকে পড়া এবং তাদের সাথে মিশে যাওয়া [সহীহ বুখারি ৬৬ নং হাদিসের ব্যখ্যায় আমি তাকে বলতে শুনেছি।]। আমি তাকে আরও বলতে শুনেছি তিনি বলেন, ইলমী হালাকা সমূহের প্রতি উৎসাহ দেয়া হয়েছে এবং মুহাদ্দেসের কাছে থাকার প্রতি উৎসাহ দেয়া হয়েছে। আর যে ব্যক্তি ওয়াজের মজলিশ থেকে বের হয়ে যায়, সে ফিরিয়ে যাওয়া লোকদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। [সহীহ বুখারি ৪৭৪ নং হাদিসের ব্যখ্যায় আমি তাকে বলতে শুনেছি।] উকবা বিন আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
خرج رسول الله صلى الله عليه و سلم، ونحن في الصّفّة ( [সুফ্ফা বলা একটি ঘর যা মসজিদে চিল। তাতে গরীব সাহাবীরা অবস্থান করত। আল্লামা কুরতবী রাহিমাহুল্লাহু এর আল-মুফহিম সহীহ মুসলিমের তালখীসের মুশকিলাত বিষয়ে।]) فقال : «أيكم يحب أن يغدو ( [দেখুন: আল্লামা কুরতবী রাহিমাহুল্লাহু এর আল-মুফহিম সহীহ মুসলিমের তালখীসের মুশকিলাত বিষয়ে।]) كل يوم إلى بُطْحَانَ أو العقيق ( [বুতহান ও আকিক দুটি উপত্যাকা। উভয় উপাত্যাকা ও মদীনার মাঝে প্রায় তিন মাইলের সমপরিমাণ দূরত্ব। সহীহ মুসলিমের উপর ইমাম নববীর ব্যাখ্যা ৩৩৭/৬।]) فيأتي منه بناقتين كَوْمَاويْنِ ( [শব্দটি كوماء শব্দের তাছনীয়া বা দ্বি-বচন, উষ্টী যা বড় চোট বিশিষ্ট উট। দেখুন: আল্লামা কুরতবী রাহিমাহুল্লাহু এর আল-মুফহিম সহীহ মুসলিমের তালখীসের মুশকিলাত বিষয়ে। এবং সহীহ মুসলিমের উপর ইমাম নববীর ব্যাখ্যা।]) في غير إثمٍ ولا قطع رحمٍ؟» فقلنا : يا رسول الله نحب ذلك، قال : « أفلا يغدو أحدُكُم إلى المسجد فيعلَمُ أو يقرأُ آيتين من كتاب الله تعالى، خير له من ناقتينِ، وثلاثٌ خيرٌ له من ثلاثٍ، وأربعٌ خيرٌ له من أربعٍ، ومن أعدادهن من الإبل »
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হল, আর আমরা ছুফফাতে। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কে আছে যে পছন্দ করে, প্রতিদিন সকাল বেলা বুতহান অথবা আকীক বাজারে গিয়ে সেখান থেকে দুটি মোটা তাজা উট কোন প্রকার অন্যায় ও আত্মীয়তা ছিন্ন করা ছাড়া নিয়ে আসতে? আমরা বললাম হে আল্লাহর আমরা একে পছন্দ করি। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কেন সকাল বেলা মসজিদে যাওনা এবং আল্লাহর কিতাব হতে দুটি আয়াত তিলাওয়াত করবে অথবা শিখবে। তা তোমাদের জন্য দুটি উট হতে উত্তম। আর তিনটি আয়াত তিনটি উট হতে উত্তম। আর চারটি চারটি হতে উত্তম। এবং তাদের সংখ্যা পরিমাণ উট হতে। [মুসলিম, কিতাব সালাতুল মুসাফিরিন। পরিচ্ছেদ: কুরআন পড়া ও শেখার ফযিলত। হাদিস নং ৮০৩।] ইমাম কুরতবী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, হাদিসের উদ্দেশ্য হল, কুরআন শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উৎসাহ দেয়া। আর তাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে এমন বস্তু দ্বারা যা তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ। কারণ, তারা হল উটের অধিবাসী। অন্যথায় কুরআনের সামান্য একটু অংশ শিক্ষা করা বা শিক্ষা দেয়ার সাওয়াব দুনিয়া ও দুনিয়াতে যা কিছু আছে তা হতে উত্তম [আল্লামা কুরতবী রাহিমাহুল্লাহু এর আল-মুফহিম ৪২৯/২ সহীহ মুসলিমের তালখীসের মুশকিলাত বিষয়ে।]। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «ولقاب قوس أحدكم أو موضع قدمٍ خير من الدنيا وما فيها» “তোমাদের কারো তীরের গোলাকারটি অথবা তোমাদের পা রাখার জায়গাটি দুনিয়া ও দুনিয়াতে যা কিছু আছে তা হতে উত্তম”। [বুখারি ও মুসলিম : বুখারি, কিতাবুর রিকাক, পরিচ্ছেদ: জান্নাত ও জাহান্নাম বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৬৫৬৮। মুসলিম কিতাবুল ইমারাহ, আল্লাহর রাস্তায় সকাল-সন্ধা যাপন করার ফযিলত। হাদিস নং ১৮৮০।]
وصلى الله وسلم، وبارك على نبينا محمد، وعلى آله، وأصحابه، ومن تبعهم بإحسان إلى يوم الدين .
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/617/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।