মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে মসজিদের ফযিলত, বিধি-বিধান ও আদাব
লেখকঃ ড. সাঈদ বিন আলী বিন ওহাফ আল-কাহতানী
৫
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : মসজিদের গুরুত্ব ও ফযিলত
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/617/5
মসজিদের গুরুত্ব, সম্মান ও ফযিলত বুঝানোর জন্য আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে করীমে আঠারো স্থানে মসজিদের আলোচনা করেন। [দেখুন: মুহাম্মাদ ফুয়াদ আব্দুল বাকী, আল কুরআনের শব্দসমূহের অভিধান, আল মুজামুল মুফাহরাস পৃ: ৩৪৫।] আল্লাহর কাছে মসজিদের মহান মর্যাদা ও সম্মানের কারণে তিনি মসজিদকে নিজের প্রতি সম্পর্কিত করেছেন। আর আল্লাহর দিকে সম্পর্কিত বিষয়গুলো দু’প্রকার :
প্রথম প্রকার: এমন কিছু সিফাত যেগুলো নিজে নিজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কায়েম হতে পারে না। যেমন- ইলম, কুদরত, বক্তব্য, শ্রবণ ও দৃষ্টি। এগুলো হল, গুণ ও বৈশিষ্টকে গুণান্বিত সত্তার সাথে সম্পর্কিত করা। সুতরাং আল্লাহর ইলম, কুদরত, হায়াত, চেহারা, হাত সবই আল্লাহ সিফাত। আল্লাহর কোন মাখলুক এ সব গুণে তার সদৃশ হতে পারে না। এ সব গুণগুলো সাথেই প্রযোজ্য।
দ্বিতীয় প্রকার: এমন কতক বস্তুকে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত করা যেগুলো তার থেকে আলাদা। যেমন- ঘর, উট, বান্দা, রাসূল, রূহ ইত্যাদি। এটি হল, মাখলুকের সম্মন্ধ তার খালেকের দিকে। তবে আল্লাহর সাথে এ ধরনের সম্মন্ধ সংশ্লিষ্ট বিষয়কে এমন বিশেষত্ব ও সম্মানের অধিকারী করে থাকে যা অন্য বস্তুর তুলনায় স্বতন্ত্র ও আলাদা। আল্লাহ তা‘আলা মসজিদসমূহকে তার নিজের দিকে সম্পর্কিত করেছেন যা সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ বলে বিবেচিত। [দেখুন : শারহুল আকীদাহ আত-তহাবিয়াহ পৃ: ৪৪২, শায়খ সালমান, আল-কাওয়াশিফ আল-জালিইয়াহ ‘আন মাআনী আল-ওয়াসিতিইয়াহ পৃ:২৪২.] আল্লাহ বলেন,
“আর নিশ্চয় মসজিদগুলো আল্লাহরই জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না”। [সূরা আল-জ্বিন, আয়াত: ১৮।]
সমগ্র পৃথিবীর প্রতিটি ধুলা-কণার মালিক, খালেক ও নিয়ন্ত্রক আল্লাহ হওয়া সত্ত্বেও, মসজিদের বিশেষ মর্যাদা ও ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কারণ, মসজিদ বেশ কতক ইবাদাত-বন্দেগী ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য নির্মাণ করা হয়। মসজিদ আল্লাহর জন্য; আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য নয়। যেমনি ভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার বান্দাদের যেসব ইবাদাত তার জন্য করার নির্দেশ দিয়েছেন, সে ইবাদাতগুলো আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য করা বৈধ নয়, অনুরূপভাবে মসজিদও আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য বানানো বৈধ নয়। [আল্লামা ড. আব্দুল্লাহ আব্দুর রহমান আল-জুবরীন, মসজিদ বিষয়ক ফুসুল ও মাসায়েল, পৃ: ৫; আল-আসার আত-তারববী, আল্লামা ড. সালেহ বিন গানেম আস-সাদলা, পৃ: ৪; আরও দেখুন, আল-মামনু ওয়াল মাশরু, শায়খ মুহাম্মদ বিন আলী আল-‘আরফায, পৃ: ৬।] এমনই একটি সম্মন্ধ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থাপন করেছেন, যা দ্বারা উদ্দেশ্য হল, আল্লাহর ঘরের সম্মান। যেমন তিনি বলেন,
«وما اجتمع قوم في بيت من بيوت الله يتلون كتاب الله، ويتدارسونه بينهم إلا نزلت عليهم السكينة، وغشيتهم الرحمة وذكرهم الله فيمن عنده »
আল্লাহর ঘরসমূহ হতে কোন ঘরে আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করা ও শিক্ষা করার জন্য যখন কোন সম্প্রদায় একত্র হয়, তাদের উপর শান্তি নাযিল হয়, রহমত তাদের ঢেকে ফেলে এবং আল্লাহ তা‘আলা তার যে সব ফেরেশতা আছে, তাদের নিকট তাদের আলোচনা করেন। [সহীহ মুসলিম, জিকির ও দু’আ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: কুরআন তিলাওয়াতের জন্য একত্র হওয়ার ফযিলত, হাদিস: ২৬৯৯।] মসজিদের ফযিলত ও মর্যাদার আরও প্রমাণ: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা দমন না করতেন, তবে বিধ্বস্ত হয়ে যেত খৃস্টান সন্ন্যাসীদের আশ্রম, গির্জা, ইয়াহু-দীদের উপাসনালয় ও মসজিদসমূহ- যেখানে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করেন। যে তাকে সাহায্য করে। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী”। [সূরা আল-হজ, আয়াত: ৪০।]
আল্লাহর কালিমাকে সমুন্নত রাখার জন্য জিহাদের বিধান রাখা হয়েছে। আর মসজিদসমূহ হল, জমিনে সর্বোত্তম স্থান যেখানে আল্লাহর নামকে সমুন্নত রাখা হয়, তাওহীদের কালিমা উচ্চারণ করা হয় এবং শাহাদাতাইনের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফরয- সালাত তাতে আদায় করা হয়। এ কারণেই মসজিদের সম্মান রক্ষা করা ও মসজিদ অবমাননা কারীদের প্রতিহত করা মুসলিমদের উপর ওয়াজিব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা দমন না করতেন”।
ইমাম ইবনে জারির রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এ আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে উত্তম কথা হল, আল্লাহ তা‘আলা আমাদের জানিয়ে দেন- যদি তিনি মানুষকে মানুষের মাধ্যমে প্রতিহত না করতেন, তাহলে উল্লেখিত স্থানসমূহ ধ্বংস হয়ে যেত। আর আল্লাহ তা‘আলা কতক মানুষ দ্বারা কতককে ধ্বংস করার অপর অর্থ হল, মুসলিমদের মাধ্যমে মুশরিকদের প্রতিহত করা। প্রতিহত করার অপর অর্থ হল, যারা ক্ষমতাশীল তাদের মাধ্যমে তাদের প্রজাদের জুলুম অত্যাচার করা হতে প্রতিহত করা। প্রতিহত করার অপর অর্থ হল, যারা অন্যের হক বা অধিকারকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্য মিথ্যা সাক্ষী দেয়ার অনুমতি দেন, তাদের প্রতিহত করা...। [জামে‘উল বায়ান: ৬৪৭/১৮।]
ইমাম ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহু বলেন, যদি আল্লাহ তা‘আলা এক সম্প্রদায় থেকে অপর সম্প্রদায়ের লোকদের জুলুম-অত্যাচার ও অন্যায়-অনাচারকে প্রতিহত না করতেন, তাহলে জমিন ধ্বংস হয়ে যেত এবং শক্তিশালী লোকেরা দুর্বল লোকদের নিষ্পেষিত করে দিত। [তাফসীরুল কুরআন আল-আজীম পৃ; ৯০১।]
ইমাম বগবী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, যদি আল্লাহ তা‘আলা জিহাদের মাধ্যমে এবং হদ কায়েম করার মাধ্যমে মানুষকে দমিয়ে না রাখতেন, তাহলে প্রতিটি নবীর শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ধ্বংস হয়ে যেত। মুসা আ. এর যুগে গির্জা ধ্বংস করা হত, আর ঈসা আ. এর যুগে খৃষ্টানদের উপাসনালয় এবং মহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মসজিদসমূহ ধ্বংস করা হত। [তাফসীরুল বাগাবী, ২৯০/৩।]
কেউ কেউ বলেন, আল্লাহর তা‘আলার বাণী - يُذۡكَرُ فِيهَا ٱسۡمُ ٱللَّهِ তে হা সর্বনামটি মসজিদসমূহের দিকে ফিরছে। কারণ, সেটিই এখানে সর্বাধিক নিকটে। ইমাম ইবনে জারির রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে উত্তম কথা হল, যে ব্যক্তি এ কথা বলে, এর অর্থ হল, ‘রুহবান বা পাদ্রীদের আশ্রম, খৃষ্টানদের উপাসনালয়, ইয়াহুদীদের গির্জা ও মুসলিমদের সেই মসজিদসমূহ যেখানে অধিকহারে আল্লাহর নাম স্মরণ করা হয়, তা ধ্বংস হয়ে যেত’। [জামেয়ুল বায়ান, পৃ: ৬৫০/১৮। আরও দেখুন: তাফসীরে ইবনে কাসীর, পৃ: ৯০১।]
যে ব্যক্তি মসজিদসমূহের পক্ষে লড়াই করে এবং আল্লাহর দ্বীনকে সহযোগিতা করে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে সাহায্য করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তারা এমন যাদেরকে আমি জমিনে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে; আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই নিয়ন্ত্রণে”। [সূরা আল-হজ, আয়াত: ৪১।]
মসজিদের গুরুত্ব ও ফযিলত অধিক হওয়ার কারণে, মসজিদ নির্মাণে বাধা দেয়াকে দুনিয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও বড় অন্যায় বলে আখ্যায়িত করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর তার চেয়ে অধিক জালেম কে, যে আল্লাহর মসজিদসমূহে তার নাম স্মরণ করা থেকে বাধা প্রদান করে এবং তা বিরান করতে চেষ্টা করে?। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১১৪]
মনে রাখতে হবে, ইসলাম পূর্ব যত দ্বীন বা শরীয়ত দুনিয়াতে এসেছিল, ইসলামের আগমনের পর এগুলো সব রহিত হয়ে গেছে। পূর্ববর্তী লোকদের দ্বীন ও ধর্ম রহিত হওয়াতে তাদের গির্জা, উপসনালয় ও সকল ইবাদাতগৃহ আবাদ করাও বন্ধ করতে হবে। এখন শুধু মাত্র মুসলিমদের মসজিদসমূহই অবশিষ্ট আছে। সুতরাং, এখন শুধু মসজিদ সমূহের মান-মর্যাদা ও সম্মানকে সমুন্নত রাখতে হবে। [দেখুন : মসজিদ বিষয়ক কিতাব ফুসুল ও মাসায়েল, আল্লামা আব্দুল্লাহ আব্দুর রহমান আল-জুবরীন, পৃ: ৬।] আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“সে সব ঘরে, যাকে সমুন্নত করতে এবং যেখানে আল্লাহর নাম যিকর করতে আল্লাহই অনুমতি দিয়েছেন। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩৬।] আল্লাহই সাহায্য কারী”। [তাফসীরে ইবনে কাসীর, পৃ: ১০৯।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/617/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।