hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মসজিদে গমন শিষ্টাচার ও প্রভাব

লেখকঃ সালেহ ইবন হামেদ আর-রিফা‘ঈ

২. শান্তিপূর্ণ ও ধীরস্থিরভাবে মসজিদে গমন
মুসলিমের উচিৎ হলো, শান্তি ও ধীরস্থিরভাবে সালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করা। সে মধ্যম পন্থায় হাঁটবে, দৃষ্টি অবনত রাখবে, হারাম থেকে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সংরক্ষণ করবে এবং আঙ্গুলগুলো একটার ভিতরে অপরটি না ঢুকিয়ে চলবে। সে পথ চলতে চলতে মনে করবে যে সে সালাতের মধ্যে আছে। আর নিশ্চয় তার পদাঙ্কের হিসাব তার নেকের পাল্লায় তার জন্য সংরক্ষিত থাকবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إذا ثُوِّبَ للصلاةِ فلا تأتوها وأنتم تَسْعَوْنَ وائتوها وعليكم السَّكِينَةُ فما أدركتم فصلوا وما فاتكم فأتمُّوا فإن أحدَكم إذا كان يَعْمِدُ إلى الصلاةِ فهو فى صلاةٍ»

“যখন কেউ সালাতের জন্য ডাকা হয় [আত তাসওয়ীব অর্থ: সালাতের ইক্বামত হওয়া।], অর্থাৎ ইক্বামত হয়ে যায়, তখন তোমরা তাতে দৌড়ে এসো না, বরং তোমরা এমনভাবে আস যে তোমাদের ওপর বজায় থাকে প্রশান্তি- ধীরস্থিরতা।‌ অতঃপর তোমাদের কেউ যতটুকু সালাত ইমামের সাথে পাবে ততটুকু পড়বে, আর যা ছুটে যাবে তা পূর্ণ করবে। কেননা তোমাদের কেউ যখন সালাতের উদ্দেশ্যে বের হয় তখন সে সালাতের মধ্যেই থাকে”। ইমাম মুসলিম এটি বর্ণনা করেছেন। [সহীহ মুসিলম (১/৪২১), হাদীস নং ৬০২।]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,

«أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الْخَطَايَا، وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ؟» قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ : «إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ، وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ، وَانْتِظَارُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الصَّلَاةِ، فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ»

“আমি কি তোমাদের জানিয়ে দিব না, কোন জিনিস দ্বারা আল্লাহ গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন এবং মর্যাদা বাড়িয়ে দেন? তখন সাহাবীগণ বললেন: নিশ্চয়! হে আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন, কষ্টের সময়েও পূর্ণরূপে অযু করা এবং মসজিদে বেশি বেশি গমন করা। আর এক সালাতের পর পুনরায় অপর সালাতের জন্য অপেক্ষা করা। আর এটাই হলো রিবাত্ব বা সীমান্ত প্রহরা দেওয়া”। ইমাম মুসলিম এটা বর্ণনা করেন। [ইমাম মুসলিম (১/২১৯), হাদীস নং ২৫১।]

ইমাম মুসলিম আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে আরো বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:

بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَمِعَ جَلَبَةً، فَقَالَ : «مَا شَأْنُكُمْ؟» قَالُوا : اسْتَعْجَلْنَا إِلَى الصَّلَاةِ، قَالَ : «فَلَا تَفْعَلُوا، إِذَا أَتَيْتُمُ الصَّلَاةَ فَعَلَيْكُمُ السَّكِينَةُ، فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا، وَمَا سَبَقَكُمْ فَأَتِمُّوا»



“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করতে যাচ্ছিলাম তখন তিনি শোরগোল শুনতে পেলেন। তিনি বললেন: তোমাদের কী হয়েছে? তারা বলল: আমরা তাড়াতাড়ি সালাতের দিকে ধাবিত হচ্ছি । তিনি বলেন: তোমরা এমনটি করবে না, যখন সালাত আদায় করতে আসবে তখন তোমাদের ওপর কর্তব্য হলো প্রশান্তি ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা। অতঃপর তোমরা যা পাবে তা পড়বে এবং যা অতিবাহিত হয়ে গেছে সেটা পূর্ণ করবে।” [সহীহ মুসলিম (১/৪২২), হাদীস নং ৬০৩।]

অনুরূপভাবে ইবন খুযাইমা ও হাকেম রহ. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

" إِذَا تَوَضَّأَ أَحَدُكُمْ فِي بَيْتِهِ، ثُمَّ أَتَى الْمَسْجِدَ كَانَ فِي صَلَاةٍ حَتَّى يَرْجِعَ، فَلَا يَقُلْ هَكَذَا -وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ -"

‘‘যখন তোমাদের কেউ তার গৃহে অযু করে, অতঃপর মসজিদে আসে সে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত সালাতের মধ্যেই থাকে, সুতরাং তুমি এরূপ করবে না। আর তিনি তার আঙ্গুলসমূহ জড়ালেন”।

ইমাম হাকেম বলেন: শাইখাইনের শর্তানুযায়ী হাদীসটি সহীহ। আর তারা তা তাখরীজ করেন নি। ইমাম যাহাবী ও নাসিরুদ্দীন আলবানী একই মত পোষণ করেছেন। [সহীহ ইবনু খুযাইমা (১/২২৯), হাদীস নং ৪৪৭’ মুসতাদরাকে হাকেম (১/২০৬); এরাউল গালীল (২/১০১)।]

৩. সালাতে শান্তির সাথে গমন করাকে যা সাহায্য করে তার মধ্যে অন্যতম হলো অগ্রে সেদিকে গমন করা। কেননা মানুষ যখন অগ্রে গমন করে তখন তার অন্তর প্রশান্ত থাকে, অবস্থা স্থির থাকে। আবেগবর্জিত থাকে যা অস্থিরতা থেকে দুরে রাখে।

পক্ষান্তরে যখন সে বিলম্বে বের হয় তখন সে তার কাজে তাড়াহুড়া করে। অস্থিরমতি থাক, অপ্রশান্ত আত্মা, দ্রুত ক্রোধান্বিত হওয়ার অবস্থায় থাকে, তার চলাফরায় ভারসাম্যহীনতায় ভুগতে থাকে, তারপরও তার সালাতের অনেক অংশ ছুটে যায়। আর যা পায় তাতেও সে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাসগ্রহণকারী অবস্থায় থাকে, তাতে না থেকে বিনয়, না থাকে প্রশান্তি।

অগ্রে সালাতের জন্য বের হওয়ার মধ্যে রয়েছে অন্যান্য বড় উপকারিতা: যেমন,

ক. প্রথম কাতারে সালাতে শামিল হতে সক্ষম হওয়া।

খ. মসজিদে বসে থাকাকালীন অবস্থায় ফিরিশতাগণের দো‘আ দ্বারা লাভবান হওয়া। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«الملائكة تصلي على أحدكم ما دام في مصلاه الذي صلى فيه ما لم يحدث : اللهم اغفر له، اللهم ارحمه»

“ফিরিশতাগণ মুসল্লীদের জন্য দো‘আ করতে থাকেন যতক্ষণ তারা সালাতের স্থানে থাকে পবিত্র অবস্থায়। বলতে থাকে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ তার প্রতি রহম কর।” ইমাম বুখারী রহ. ও মুসলিম রহ. হাদীসখানা বর্ণনা করেছেন। [সহীহ বুখারী (২/১৪২), হাদীস নং ৬৫৯; সহীহ মুসলিম (১/৪৫৯), হাদীস নং ২৪৯।]

গ. সর্বাগ্রে সালাতে গমন করার কারণে মহান প্রতিদান অর্জিত হওয়া। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لاسْتَبَقُوا إِلَيْهِ»

‘‘যদি তারা জানতো যে অগ্রে গমনের সাওয়াব কী? তবে অবশ্যই তারা তাতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতো”।”‘‘ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন। [সহীহ মুসলিম (১/৩২৫), হাদীস নং ৪৩৭।]

হাদীসে বর্ণিত, تهجير শব্দের শাব্দিক অর্থ: প্রত্যেক বিষয়ে অগ্রে গমন করা এবং দ্রুত সেদিকে ধাবিত হওয়া। আর এখানে উদ্দেশ্য হলো সালাতের দিকে দ্রুত বের হওয়া। [দেখুন: আন-নিহায়াহ, ইবনুল আছীর (৫/২৪৬)।]

আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিনে অগ্রে সালাতে উপস্থিত হওয়ার প্রতিদানের বিভিন্নতা নিরূপন করে বলেন:

«من اغتسل يوم الجمعة غسل الجنابة، ثم راح فكأنما قرب بدنة، ومن راح في الساعة الثانية فكأنما قرب بقرة، ومن راح في الساعة الثالثة، فكأنما قرب كبشاً أقرن، ومن راح في الساعة الرابعة، فكأنما قرب دجاجة، ومن راح في الساعة الخامسة، فكأنما قرب بيضة فإذا خرج الإمام حضرت الملائكة يسمعون الذكر»

“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন অপবিত্রতার গোসল করে জুম‘আর সালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করে সে একটি উট কোরবানীর সাওয়াব পাবে। আর যে তারপর যাবে সে একটি গরু কোরবানীর সওয়াব পাবে। তারপর যে তারপর আসবে সে একটি ভেড়া কোরবানীর সওয়াব পাবে। তারপর চতুর্থ বারে যে আসবে সে মুরগী কোরবানীর সওয়াব পাবে। আর যে পঞ্চমবার আসবে সে ডিম কোরবনীর সওয়াব পাবে। অতঃপর ইমাম যখন (খুতবা দিতে দাঁড়ায়) দাঁড়ায় তখন ফিরিশতারা উপস্থিত হয় এবং তারা যিকির শুনতে থাকে”। [সহীহ বুখারী (২/৩৬৬), হাদীস নং ৮৮১; সহীহ মুসলিম (২/৫৮২), হাদীস নং ৮৫০।]

এভাবে মহান আল্লাহ তাঁর নৈকট্য লাভের পথকে সুগম করেছেন এবং এ কারণে মহা প্রতিদান দিয়েছেন। সুতরাং তার জন্য সকল প্রশংসা ও গুণগান। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা এ ধরনের সওয়াব অর্জনের মহা সুযোগ হারিয়ে ফেলে। ফলে তারা ইকামাত শোনা ব্যতিত সালাতের উদ্দেশ্যে বের হয় না। আর কেউ কেউ খুব অগ্রে বের হয়। কিন্তু তারা মসজিদে প্রবেশ করে না; রবং মসজিদের বাহিরে অবস্থান করে পারস্পরিক কথা-বার্তা চালিয়ে যেতে থাকে সালাত কায়েম হওয়া পর্যন্ত। ফলে তারা নিজেদেরকে বিরাট প্রতিদান থেকে বঞ্চিত করে। অতএব, আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইখতিয়ার ও শক্তি নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন