hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হিল্লা বিয়ে

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

হিল্লা হারাম সম্পর্কে সাহাবাদের ঐক্যমত :
ইব্‌ন তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ ( إقامة الدليل على إبطال التحليل ) গ্রন্থে এ বিষয়ে সাহাবাদের ঐক্যমত উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন : কুবাইসা ইব্‌ন জাবের ওমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন :

والله لا أوتى بمحلٍّ ومحلَّل له إلا رجمتهما .

“হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয়, তাদেরকে আমার সামনে পেশ করা হলে আমি উভয়কে প্রস্তরাঘাত করব”। তার এ বাণী বর্ণনা করেছেন আবু বকর ইব্‌ন আবি শায়বাহ, আবু ইসহাক জাওজাজানি, হারবুল কারমানি ও আবু বকর আল-আসরম প্রমুখগণ। তার এ বাণী প্রসিদ্ধ ও বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত। ‘জায়েদ’ ইব্‌ন আয়াদ ইব্‌ন জাদ থেকে বর্ণিত, তিনি নাফে রহ.-কে বলতে শোনেছেন, এক ব্যক্তি ইব্‌ন ওমরকে হিল্লাকারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তাকে ইব্‌ন ওমর বলেন :

عرفت ابن الخطاب رضي الله عنه لو رأى شيئا من ذلك لرجم فيه .

“আমি জানি যে, এ ধরনের কোন ঘটনা ইব্‌ন খাত্তাব দেখলে তিনি তাতে প্রস্তরাঘাত করতেন”। ইব্‌ন ওহাব জায়েদ সূত্রে এ বাণী বর্ণনা করেন, জায়েদকে অনেকে দুর্বল বলেছেন, তাই এ সনদটি দুর্বল। তবে সে ছাড়াও বিভিন্ন সূত্রে এ বাণী বর্ণিত হয়েছে। সুলাইমান ইব্‌ন ইয়াসার থেকে বর্ণিত,

رفع إلى عثمان رضي الله عنه رجل تزوج امرأة ليحلها لزوجها ففرق بينهما وقال لا ترجع إليه إلا بنكاح رغبة غير دلسة .

“এক ব্যক্তিকে উসমান রাদিআল্লাহু আনহুর দরবারে পেশ করা হয়, যে এক নারীকে বিয়ে করেছিল, তার পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল করার জন্য, তিনি তাদের মাঝে পৃথক করে দেন এবং বলেন, লুকাচুরি ও প্রতারণাহীন আগ্রহের বিয়ে ব্যতীত সে তার পূর্বের স্বামীর কাছে ফিরে যেতে পারবে না”। এ হাদিসটি বর্ণনা করেন জাওজাজানি। আবু মারজুক আত-তাজিবি থেকে বর্ণিত,

أن رجلا أتى عثمان فقال إن جاري طلق امرأته في غضبه ولقي شدة فأردت أن أحتسب نفسي ومالي فأتزوجها ثم أبني بها ثم أطلقها فترجع إلى زوجها الأول فقال له عثمان لا تنكحها إلا نكاح رغبة .

“এক ব্যক্তি উসমানের নিকট এসে বলে, আমার প্রতিবেশী তার স্ত্রীকে গোস্বায় তালাক দিয়েছে, এখন সে খুব বিপদের সম্মুখীন, আমার ইচ্ছা আমার জান ও সম্পদ দ্বারা আমি তাকে উপকার করি, আমি নারীকে বিয়ে করি অতঃপর সহবাসে মিলিত হই অতঃপর তাকে তালাক দেই, যেন সে তার প্রথম স্বামীর নিকট ফিরে যেতে পারে, উসমান তাকে বললেন, আগ্রহ বত্যীত তুমি তাকে বিয়ে করবে না”। এ হাদিস বর্ণনা করেছেন আবু ইসহাক সিরাজি তার মুহাজ্জাব গ্রন্থে। ইব্‌ন ওহাব আব্দুর রহমান মুরাদি থেকে বর্ণনা করেন, তিনি আবু মারওয়ান তাজিবিকে বলতে শোনেছেন :

إن رجلا طلق امرأته ثلاثا ندما وكان له جار فأراد أن يحلل بينهما بغير علمهما فسأل عن ذلك عثمان فقال له عثمان إلا نكاح رغبة غير مدالسة .

“এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে লজ্জিত হয়, তার এক প্রতিবেশী ছিল, যে তাদের অজান্তে উভয়ের মাঝে হিল্লা করার ইচ্ছা করে, এ সম্পর্কে তিনি উসমানকে জিজ্ঞাসা করেন, উসমান তাকে বলেন, প্রতারণাহীন আগ্রহের বিয়ে ব্যতীত হালাল হবে না”। আলি থেকে বর্ণিত :

لعن الله المحلل والمحلل له .

“হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কে আল্লাহ তাআলা লানত করেছেন”। ইব্‌ন আব্বাস থেকে বর্ণিত :

لعن الله المحلل والمحلل له .

“হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কে আল্লাহ লানত করেছেন”। ইব্‌ন ওমর থেকে বর্ণিত :

لعن الله المحلل والمحلل له والمحللة .

“হিল্লাকারী পুরুষ, হালালকৃত নারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় সকলের উপর আল্লাহ লানত করেছেন”। আব্দুল মালিক ইব্‌ন মুগিরা ইব্‌ন নাওফেল থেকে বর্ণিত,

أن ابن عمر سئل عن تحليل المرأة لزوجها قال : ذلك السفاح لو أدرككم عمر لنكلكم .

“ইব্‌ন ওমরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, স্ত্রীকে তার স্বামীর জন্য হালাল করার বিধান কি, তিনি বলেন : এটা যেনা, যদি ওমর তোমাদের দেখত, তাহলে অবশ্যই তিনি তোমাদের শাস্তি দিতেন”। এ বাণী বর্ণনা করেন আবু ইব্‌ন আবি শায়বাহ। জুহরি আব্দুল্লাহ ইব্‌ন শারিক থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন আমি ইব্‌ন ওমরকে শোনেছি, তাকে হিল্লাকারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি বলেন :

لا يزالان زانيين وإن مكثا عشرين سنة إذا علم الله سبحانه أنهما أراد أن يحلها له .

“তারা উভয়ে যেনা অবস্থায় থাকবে, যদিও এভাবে তারা বিশ বছর পার করে, যদি আল্লাহ জানেন যে, এদের উভয়ের নিয়ত হচ্ছে স্ত্রীকে প্রথম স্বামীর জন্য হালাল করা”। ইমরান ইব্‌ন হারেস সুলামি থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি ইব্‌ন আব্বাসের নিকট এসে বলে, তার চাচা নিজ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অনুতপ্ত, তিনি বলেন :

عمك عصى الله فأندمه وأطاع الشيطان فلم يجعل له مخرجا قال : أرأيت إن أنا تزوجت من غير علم منه أترجع إليه؟ قال : من يخادع الله يخدعه الله .

“তোমার চাচা আল্লাহর নাফরমানি করেছে, তাই আল্লাহ তাকে লজ্জিত করেছেন, সে শয়তানের আনুগত্য করেছে, তার জন্য আল্লাহ কোন পথ রাখেননি, সে বলল : আমি যদি তার অজান্তে তাকে বিয়ে করি, সে কি তার নিকট ফিরে যেতে পারবে ? তিনি বললেন : আল্লাহকে যে ধোঁকা দেয় আল্লাহ তাকে ধোঁকা দেবেন”। এসব হাদিস ও বাণী সাহাবাদের থেকে প্রসিদ্ধ। হিল্লার যে ইচ্ছা করে সেই হিল্লাকারী, তার এ ইচ্ছা প্রকাশ করুক বা গোপন রাখুক। ওমর রাদিআল্লাহু এসব ক্ষেত্রে শাস্তি প্রদান করতেন। হিল্লাকারী ও তার স্ত্রীর মাঝে পৃথক করে দেয়া হবে, যদিও বিয়ের পর সর্বদার জন্য ঘর-সংসার করার আগ্রহ সৃষ্টি হয়, যদি শুরুতে হিল্লার ইচ্ছা থাকে। আর তিন তালাক দাতা ব্যক্তি যদিও কষ্ট পায়, লজ্জিত হয় এবং তালাকের কারণে বড় মুসিবতের সম্মুখীন হয়, তার জন্য হিল্লা করা বৈধ নয়, যদিও সে তালাকের পরিণতি সম্পর্কে না জানে। এসব বর্ণনায় হিল্লার প্রতি যে কঠোরতা ও নিষেধাজ্ঞা প্রকাশ পায়, তার থেকেই প্রমাণ হয় যে হিল্লা হারাম, হিল্লাকারী ব্যক্তি ওমর রা. ও তার পরবর্তী খলিফাদের জমানায় শাস্তি ভোগ করত। ইব্‌ন তাইমিয়া রহ. বলেন : আমরা কিতাবের শুরুতে হাসান বসরি থেকে বর্ণনা করেছি,

أنه قال له رجل إن رجلا من قومي طلق امرأته ثلاثا فندم وندمت فأردت أن أنطلق فأتزوجها وأصدقها صداقا ثم أدخل بها كما يدخل الرجل بامرأته ثم أطلقها فقال له الحسن إتق الله يا فتى ولا تكون مسمار نار لحدود الله .

“এক ব্যক্তি তাকে বলে, আমার বংশের এক লোক তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে, এখন সে ও তার স্ত্রী লজ্জিত, আমি ইচ্ছা করছি আমি তাকে বিয়ে করি, মোহর প্রদান করি অতঃপর তার সাথে মিলিত হই, যেরূপ স্বামী তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়, অতঃপর আমি তাকে তালাক দেই। হাসান তাকে বলেন : হে যুবক আল্লাহকে ভয় কর, তুমি আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করে জাহান্নামের পেরেকে পরিণত হয়ো না। হাসান থেকে আরো বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন : মুসলমানগণ হিল্লাকারীকে ভাড়া করা পাঠা বলতেন। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে, হিল্লার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সাহাবাদের যুগে মুসলমানদের নিকট প্রসিদ্ধ ছিল। দেখুন : ইব্‌ন তাইমিয়াহ রা. রচিত, “ইকামাতুত দালিল আলা ইবতালিত তাহলিল” গ্রন্থ।

ওমর রাদিআল্লাহু আনহুর বাণী ইব্নুল মুনজির নিম্নের শব্দে বর্ণনা করেন :

عن عمر بن الخطاب أنه قال : لا أوتى بمحلل ولا محللة إلا رجمتهما

“আমার নিকট হিল্লাকারী পুরুষ অথবা নারী পেশ করা হলে, আমি তাদেরকে প্রস্তরাঘাত করব”। ইগাসাতুল লাহফান লি ইব্নুল কাইয়্যূম : (১/৪১১), তিনি বিশুদ্ধ সনদে তার এ বাণী বর্ণনা করেন।

وعن ابن عمر أن رجلا سأله فقال ما تقول في امرأة تزوجتها أحلها لزوجها لم يأمرني ولم يعلم فقال له ابن عمر لا إلا نكاح رغبة إن أعجبتك أمسكتها وإن كرهتها فارقتها وإنا كنا نعد هذا سفاحا على عهد رسول الله .

ইব্‌ন ওমর রাদিআল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞাসা করে, এমন নারী সম্পর্কে আপনি কি বলেন, যাকে আমি বিয়ে করেছি তার প্রথম স্বামীর জন্য হালাল করার নিয়তে, সে আমাকে নির্দেশ দেয়নি এবং আমার নিয়ত সম্পর্কে সে জানেও না। ইব্‌ন ওমর রা. বলেন, “আগ্রহ ব্যতীত কোন বিয়ে নেই, তোমার ভাল লাগলে তুমি রেখে দিবে, আর অপছন্দ হলে তাকে ত্যাগ করবে, আমরা এটাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে ব্যাভিচারই গণ্য করতাম”। ইমাম আবু ইসহাক তাগলাবি ও ইমাম আবু মুহাম্মদ মাকদিসি এ বাণী উল্লেখ করেছেন। দেখুন : ইব্‌ন তাইমিয়াহ রা. রচিত, “ইকামাতুত দালিল আলা ইবতালিত তাহলিল” গ্রন্থ।

وقال إبراهيم النخعي إذا كان نية أحد الثلاثة الزوج الأول أو الزوج الآخر أو المرأة التحليل فنكاح الآخر باطل ولا تحل للأول .

ইবরাহিম নখয়ি রহ. বলেন, যদি তিনজনের কারো হালাল করার ইচ্ছা থাকে, প্রথম স্বামী, দ্বিতীয় স্বামী অথবা স্ত্রীর, তাহলে দ্বিতীয় স্বামীর বিয়ে বাতিল, প্রথম স্বামীর জন্য সে হালাল হবে না। দেখুন : ইব্‌ন তাইমিয়াহ রা. রচিত, “ইকামাতুত দালিল আলা ইবতালিত তাহলিল” গ্রন্থ।

وقال الحسن البصري إذا هم أحد الثلاثة بالتحليل فقد أفسد .

হাসান বসরী রহ. বলেন : তিন জনের কারো যদি হালাল করার ইচ্ছা থাকে তাহলে বিয়ে বাতিল। দেখুন : ইব্‌ন তাইমিয়াহ রা. রচিত, “ইকামাতুত দালিল আলা ইবতালিত তাহলিল” গ্রন্থ।

وقال سعيد بن المسيب إمام التابعين في رجل تزوج امرأة ليحلها لزوجها الأول فقال لا تحل وممن قال بذلك مالك بن أنس والليث بن سعد وسفيان الثوري والإمام أحمد وقال إسماعيل بن سعيد سألت الإمام أحمد عن الرجل يتزوج المرأة وفي نفسه أن يحللها لزوجها الأول ولم تعلم المرأة بذلك فقال هو محلل وإذا أراد بذلك الإحلال فهو ملعون .

তাবেয়িদের ইমাম সায়িদ ইব্‌ন মুসাইয়্যেব রহ. জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, যে প্রথম স্বামীর জন্য স্ত্রীকে হালাল করার নিয়তে বিয়ে করেছিল, তিনি বলেন সে হালাল হবে না। অনুরূপ মন্তব্য পেশ করেছেন মালেক ইব্‌ন আনাস রহ., লাইস ইব্‌ন সা’দ, সুফিয়ান ইব্‌ন সাওরি রহ. ও ইমাম আহমদ। ইসমাঈল ইব্‌ন সায়ীদ বলেন : আমি ইমাম আহমদকে জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি, যে প্রথম স্বামীর জন্য হালাল করার নিয়তে বিয়ে করে, কিন্তু নারী এ নিয়ত সম্পর্কে জানে না, তিনি বলেন এ ব্যক্তি হিল্লাকারী, যদি সে এ বিয়ের মাধ্যমে হালাল করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে অভিশপ্ত। দেখুন : ইব্‌ন তাইমিয়াহ রা. রচিত, “ইকামাতুত দালিল আলা ইবতালিত তাহলিল” গ্রন্থ।

উপরের আলোচনা থেকে আমাদের নিকট স্পষ্ট হল যে, হিল্লা বিয়ে ইসলামের বৈধ কোন পন্থা বা স্বীকৃত উপায় নয়, বরং তা ইসলামে নিষিদ্ধ, নিন্দিত, অভিশপ্ত ও কবিরা গুনা। নিচে আমরা হিল্লার ব্যাপারে বিশিষ্ট মুফতি, মুসলিম স্কলার ও মহান মনীষীদের ছয়টি ফতোয়া উল্লেখ করছি :

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন