HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে নারী বনাম ইয়াহূদী-খৃষ্টান ধর্মে নারী

লেখকঃ ড. শরীফ আব্দুল আযীম

১৬
বিধবার সমস্যা সংকুল জীবন
বাইবেলের পুরাতন নিয়ম (Old Testament) অনুযায়ী মহিলাকে উত্তরাধিকারী সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার কারণে ইয়াহূদী সমাজে বিধবারা থাকে অত্যন্ত দরিদ্র ও অসহায়। স্বামীর আত্মীয় স্বজন তার খরচাদির ব্যবস্থা করলেও তার নিজের হাতে কোনো শক্তি নেই তাদেরকে খরচে বাধ্য করার, বরং তাদের অনুগ্রহের দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া তার আর কিছুই করার নেই। এজন্য ইসরাইলে বিধবাগণ সমাজে সবচেয়ে নিম্ন শ্রেণির হয়ে থাকে। (ইশইয়া: ৫৪/৪)

কিন্তু বিধবাদের সমস্যার এখানেই শেষ নয়; বরং বাইবেলে (জেনেসিস: ৩৮) এসেছে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী সন্তানহীনা হলে স্বামীর ভাইয়ের সাথে বিবাহ বসবে যদিও সে বিবাহিত হয়। উদ্দেশ্য হলো তার ভাইয়ের যেন সন্তান হয় এবং তার নাম মরার পরেও সমাজে বেচে থাকে।

ইয়াহুযা আওনানকে বললেন: ‘তোমার ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে যাও, তাকে বিবাহ কর এবং তোমার ভাইয়ের বংশকে রক্ষা কর’। (জেনেসিস: ৩৮/৮)

বিধবা নারীকে এ বিবাহে দ্বিমত করার কোনো অধিকার দেওয়া হয় নি। তাকে শুধুমাত্র মৃত স্বামীর উত্তরাধিকারী সম্পদের অন্তর্ভুক্ত মনে করা হয়। তার দায়িত্ব শুধু তার মৃত স্বামীর বংশ রক্ষা করা। আজও ইসরাইলে এ প্রথাই চালু রয়েছে।

বিধবা মহিলা তার স্বামীর ভাইয়ের অংশের উত্তরাধিকারী সম্পদ হিসেবে গণ্য হয়। স্বামীর ভাই যদি ছোট হয় তাহলে তার বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী অপেক্ষা করবে। ভাই যদি তাকে প্রত্যাখ্যান করে শুধু তখনই সে স্বাধীন বলে গণ্য হবে এবং যাকে খুশি বিবাহ করতে পারবে। এ জন্যই স্বামীর ভাই কর্তৃক বিধবার স্বাধীনতা খর্ব করার রীতি ব্যাপকতা লাভ করেছে।

ইসলাম পুর্ব যুগে প্রায় এ ধরণেরই প্রথা চালু ছিল। তখন বিধবারা স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হত এবং তার পুরুষ আত্মীয় স্বজন তাতে অংশীদার হত। তখন আরো একটি প্রচলন ছিল, মৃত ব্যক্তির জেষ্ঠপুত্র তার সৎ মাকে বিবাহ করত। আর-কুরআনে এ সকল প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَنكِحُواْ مَا نَكَحَ ءَابَآؤُكُم مِّنَ ٱلنِّسَآءِ إِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَۚ إِنَّهُۥ كَانَ فَٰحِشَةٗ وَمَقۡتٗا وَسَآءَ سَبِيلًا٢٢﴾ [ النساء : ٢٢ ] “তোমাদের পিতাগণ যে মহিলাদেরকে বিবাহ করেছেন, তোমরা তাদেরকে বিবাহ করো না। তবে যা বিগত হয়ে গেছে তা আলাদা। নিশ্চয় এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২২]

বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা মহিলাগণ ইয়াহূদী ধর্মে ঘৃণার পাত্র। গীর্জার ধর্মীয় পন্ডিতের জন্য বৈধ নয় কোনো বিধবা,তালাক প্রাপ্তা বা ব্যভিচারী নারীকে বিবাহ করা। ‘ধর্মীয় পণ্ডিত কুমারী নারীকে বিবাহ করবে। বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা বা ব্যভিচারী নারীকে বিবাহ করবে না; বরং নিজের জাতির কুমারীকে বিবাহ করবে। তার বংশকে কালিমালিপ্ত করবে না কেননা আমি পালনকর্তা পবিত্রকারী। (লেভিটিকাস: ২১/১৩-১৫)

বর্তমানে ইসরাঈলে পৌত্তলিক আমলের বড় বড় যাদুকরদের বংশ বর্তমান রয়েছে। তাদেরও অনুমতি নেই কোনো বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা বা ব্যভিচারী নারীকে বিবাহ করার। [Hazleton, op. cit., pp. 45-46.]

ইয়াহূদী ধর্মে কোনো মহিলা তিনবার বিবাহ করার পর আবার বিধবা হলে (তিনজন স্বামীই যদি মারা যায়) তাকে “হত্যাকারীনী” হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়। তাকে আবার পুনরায় বিবাহ করার অধিকার দেওয়া হয় না। [Ibid., p. 47.]

কিন্তু আর-কুরআনে এগুলোর কিছুই নেই। বরং মুসলিম বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা নারী যাকে খুশি তাকেই বিবাহ করতে পারে। বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তাকে কোরআনের কোথাও ঘৃণার চোখে দেখা হয় নি।

মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে এসেছে:

﴿وَإِذَا طَلَّقۡتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَبَلَغۡنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمۡسِكُوهُنَّ بِمَعۡرُوفٍ أَوۡ سَرِّحُوهُنَّ بِمَعۡرُوفٖۚ وَلَا تُمۡسِكُوهُنَّ ضِرَارٗا لِّتَعۡتَدُواْۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهُۥۚ وَلَا تَتَّخِذُوٓاْ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ هُزُوٗاۚ وَٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ وَمَآ أَنزَلَ عَلَيۡكُم مِّنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَٱلۡحِكۡمَةِ يَعِظُكُم بِهِۦۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٞ ٢٣١﴾ [ البقرة : ٢٣١ ]

“আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও (এক বা দুই তালাক), অতঃপর তারা নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্ত করে নেয়,তখন তোমরা নিয়মানুযায়ী তাদেরকে রেখে দাও অথবা সহানুভুতির সাথে মুক্ত করে দাও। তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্যে আটকে রেখো না। যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদেরই ক্ষতি করবে। আর আল্লাহর নির্দেশকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করো না। আল্লাহর সে অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর,যা তোমাদের ওপর রয়েছে এবং তাও স্মরণ কর,যে কিতাব ও জ্ঞানের কথা তোমাদের ওপর নাযিল করা হয়েছে; যার দ্বারা তোমাদেরকে উপদেশ দান করা হয়। আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে,আল্লাহ তা‘আলা সর্ব বিষয়েই জ্ঞানময়।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৩১]

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱلَّذِينَ يُتَوَفَّوۡنَ مِنكُمۡ وَيَذَرُونَ أَزۡوَٰجٗا يَتَرَبَّصۡنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرۡبَعَةَ أَشۡهُرٖ وَعَشۡرٗاۖ فَإِذَا بَلَغۡنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ فِيمَا فَعَلۡنَ فِيٓ أَنفُسِهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِيرٞ ٢٣٤﴾ [ البقرة : ٢٣٤ ]

“আর তোমাদের মধ্যে যারা মারা যাবে এবং তাদের নিজেদের স্ত্রীদেরকে রেখে যাবে, সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেরা চারমাস দশদিন পর্যন্ত অপেক্ষা (ঈদ্দত পালন) করবে। তারপর যখন ইদ্দত পুর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতিসংগত ব্যবস্থা নিলে কোনো পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৩৪]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿وَٱلَّذِينَ يُتَوَفَّوۡنَ مِنكُمۡ وَيَذَرُونَ أَزۡوَٰجٗا وَصِيَّةٗ لِّأَزۡوَٰجِهِم مَّتَٰعًا إِلَى ٱلۡحَوۡلِ غَيۡرَ إِخۡرَاجٖۚ فَإِنۡ خَرَجۡنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ فِي مَا فَعَلۡنَ فِيٓ أَنفُسِهِنَّ مِن مَّعۡرُوفٖۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٢٤٠﴾ [ البقرة : ٢٤٠ ]

“আর যখন তোমাদের মধ্যে কেউ মারা যাবে, তখন তাদের স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে এক বছর পর্যন্ত তাদের খরচের ব্যাপারে ওসিয়ত করে যাবে। অতঃপর,যদি স্ত্রীরা নিজে থেকেই বের হয়ে যায়, তাহলে সে যদি নিজের ব্যাপারে কোনো উত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তবে তাতে তোমাদের কোনো পাপ নেই। আর আল্লাহ তা‘আলা হচ্ছেন পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৪০]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন