HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে নারী বনাম ইয়াহূদী-খৃষ্টান ধর্মে নারী

লেখকঃ ড. শরীফ আব্দুল আযীম

১৯
শেষ কথা
অমুসলিমদের মধ্যকার যারা এ গবেষণার পুর্বেকার সংস্করণ পড়েছেন তাদের পক্ষ থেকে একটা প্রশ্ন করা হয়। সেটা হলো, ইসলামী সমাজে মুসলিম নারীদের সাথে কি এখন এ রকম ব্যবহার করা হয়? উত্তরটা খুবই দুঃখজনক ‘না’। এ প্রশ্নের উত্তরে আমি কিছুটা আলোকপাত করব যাতে ইসলামে নারীদের অধিকারটা পূর্ণাংগভাবে পাঠকের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়।

মুসলিম বিশ্বে মহিলাদের সাথে কৃত ব্যবহারের পন্থায় একটা সমাজ থেকে অন্য সমাজ এবং এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মাঝে পার্থক্য থাকে। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিধান সকল সমাজই পালন করে থাকে। অধিকাংশ মুসলিম সমাজই মহিলাদের সাথে ব্যবহারের বিষয়ে ইসলামের শিক্ষা থেকে দূরে সরে গেছে। ফলে, দুটি দলের আবির্ভাব ঘটেছে।

এক. কট্টরপন্থি ও অন্ধ অনুকরণকারী।

দুই. স্বাধীন ও পশ্চিমাদের অনুকরণকারী।

প্রথম শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত লোকেরা পুর্বকালের প্রাপ্ত রীতিনীতির ওপর ভিত্তি করে কাজ করে থাকে। এ ধরণের রীতিনীতির কারণে নারীরা ইসলাম স্বীকৃত অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে কোনো বিষয়ে পুরুষের থেকে মহিলাদের ওপর ভিন্ন ভিন্ন আইন কানুন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অনেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক রীতিনীতি চালু হয়ে গেছে। যেমন, পুত্র সন্তান জন্মের মত কন্যা সন্তান জন্মের সময় তাকে স্বাদরে গ্রহণ করা হয় না। কখনও কখনও তাদেরকে শিক্ষা-দীক্ষা বা উত্তরাধীকার সম্পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়। পুত্র সন্তান থেকে যে সমস্ত অযাচিত কাজকে মেনে নেওয়া হয় কন্যা সন্তান থেকে তা মেনে নেওয়া হয় না, তাদেরকে কড়া নজরদারীতে রাখা হয়। কখনও বা এ সমস্ত কাজকর্মের কারণে তাদেরকে হত্যা করা হয়। পক্ষান্তরে, একই কাজ করে পুত্র সন্তানেরা গর্ব করে থাকে। পরিবার বা সমাজের কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার মতামত গ্রহণ করা হয় না। হয়তবা অনেক ক্ষেত্রে তার নিজস্ব মালিকানাধীন সম্পদে বা বিবাহের উপহার ব্যবহারে তাকে স্বাধীনতা দেওয়া হয় না।

স্ত্রীরা পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়াকে প্রাধান্য দেয় যাতে সমাজে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

অপরদিকে কিছু মুসলিম সমাজ বা গোত্রে পশ্চিমা স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। এ সমাজগুলো সব কাজে পশ্চিমাদের রীতিনীতি ও কৃষ্টি কালচারগুলোর অন্ধ অনুকরণ করছে। এমনকি তাদের অসভ্য কালচারকেও বাদ দিচ্ছে না। এ সমস্ত মডার্ণ সমাজের বিশেষ করে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো তার সৌন্দর্যকে প্রকাশ করা। সর্বদা তারা ব্যস্ত থাকে এবং গুরুত্ব দেয় তাদের নিজেদের সৌন্দর্য বর্ধন ও প্রদর্শনের কাজে। বিবেক-বুদ্ধির দিকে তাদের খেয়াল নেই। সমাজের জন্য কাজকর্ম বা কাজে শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে অপরকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতাকেই বেশি বড় করে দেখা হয়। তার ব্যাগে আর-কুরআন পাওয়া না গেলেও সর্বদা তাতে মেকআপ বা প্রসাধন সামগ্রী শোভা পায়। সে তার রূহানী সৌন্দর্যকে গোপন করে এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তার জীবন কেটে যায় নিজের নারীত্বের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে মনুষত্বের দিকে নয়।

কেন মুসলিম সমাজ ইসলামের শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন। বিশেষ করে নারীদের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের ব্যাপারে কুরআনের শিক্ষা থেকে যুগ-যুগান্তরে মুসলিমদের দূরে থাকার ব্যাখ্যা দিতে গেলে আরেকটি গবেষণার প্রয়োজন হবে। মুসলিমদের যার ওপর থাকার দরকার তার ওপর মুসলিমরা নেই এটা একটা প্রচন্ড সমস্যা। এ সমস্যা একদিনে আসেনি বরং তা যুগ পরম্পরায় দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুসলিম বিশ্বে এ সর্বনাশী সমস্যার কুপ্রভাব জীবনের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আইনের ক্ষেত্রে বৈষম্য, অনৈক্য, অর্থনৈতিক ধ্বস, সামাজিক যুলুম, জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পশ্চাদপসরতা ও চিন্তাভাবনার মন মানসিকতা না থাকা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ সমস্ত সমস্যার কারণে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ইসলামের সাথে নারীদের যেন কোনোই সম্পৃক্ততা নেই। আগেকার নারীরা যেমন, ছিলেন বর্তমান যুগের নারীদেরকেও সেই স্থানে পৌছে দেওয়া এবং সমাজ সংস্কার করা অত্যন্ত আবশ্যক। আর এই সংস্কারের জন্যেও ইসলামের শিক্ষা মেনে চলা জরুরি।

সংক্ষেপে বলতে গেলে, আজ মুসলিম বিশ্বে নারীদের এ লাজুক অবস্থানে থাকার কারণ হলো ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা ও ভূল বুঝাবুঝি। মুসলিমরা সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে ইসলামের সঠিক শিক্ষা থেকে দূরে থাকার কারণে।

আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এই গবেষণামুলক লেখাটির উদ্দেশ্য কিন্তু ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের আকীদা-বিশ্বাসকে খাট করার জন্যে নয়। ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের আকীদা-বিশ্বাস অনুযায়ী নারীদেরকে যে পজিশনে রাখা হয়েছে তা যুগের বিবর্তনে নিছক সামাজিকতা ও ইয়াহূদী-খৃষ্টান পুরোহিতদের নিজস্ব মতামত প্রতিষ্ঠার কারণে। এরা সমাজে নারীদের ন্যায্য অধিকার গুলোকে পরিবর্তন করে দিয়েছে।

বাইবেল যুগের আবর্তনে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন লোক দ্বারা লিখিত হয়েছে। তাদের পারিপার্শিক অবস্থার ভিন্নতা ও মানুষের জীবনযাপন পদ্ধতির ভিন্নতার কারণে তাদের মতামত বিভিন্ন রকম হয়ে তাদের হাতে বাইবেল পরিবর্তিত হয়েছে। উদাহরণস্বরুপ, পুরাতন নিয়মে বর্ণিত ব্যভিচারের শাস্তি নিয়ে মহিলাদের ওপর নির্ধারিত শাস্তি এমনভাবে চিত্রিত হয়েছে যে, তা সুস্থ বিবেক মেনে নিতে পারে না। তবে প্রাচীন ইয়াহূদী সমাজের লোকেরা নিজেদের বংশ দ্বারা গৌরব করত। এ জন্য তাদের চিন্তা ছিল কোনো নারী যেন অন্য কোনো শক্তিশালী গোত্রের লোকদের সাথে কোনো ধরণের সম্পর্ক রাখতে না পারে। এ সমস্ত বিধানের সামনে আমরা সহানুভুতি দেখাতে পারি না। বরং আমাদের কাছে মনে হয় যে,এটা নারীদের বিরুদ্ধে পুরুষদের একগেয়েমী ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়াও এটা ছিল নারীদের বিরুদ্ধে পুরোহিতদের নগ্ন হামলা । নারীদের প্রতি গ্রীক ও রোমান সভ্যতার বিতৃষ্ণ মনোভাবকে উল্লেখ করা ব্যতিত বিষয়টিকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। সুতরাং ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা ছাড়া আমরা ইয়াহূদী খৃষ্টান ধর্মের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে পারি না।

ইতিহাস ও মানুষের সভ্যতার ওপর ইসলামের অবদান বুঝতে হলে আমাদেরকে ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্মের ইতিহাস জানা থাকা প্রয়োজন। বিভিন্ন সভ্যতা ও সমাজ ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্ম-বিশ্বাসের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এটা হিজরতের পূর্বে সপ্তম শতাব্দীতে তাদেরকে আল্লাহর নবীমুসা ও ঈসা আলাইহিস সালাম এর ওপর আল্লাহ কর্তৃক নাযিলকৃত বিধান পরিবর্তন করার পর্যায়ে পৌছে দিয়েছে। ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্মে নারীদের ন্যায্য অধিকারের মধ্যে একগেয়েমি করার এ বিধান সপ্তম শতাব্দীর সে পরিবর্তনেরই উদাহরণ। তখনই মানুষকে অসৎ পথ থেকে সৎপথে ফিরিয়ে আনার খোদায়ী বার্তা প্রেরণ করা জরুরী হয়ে পড়ে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে তাদের ওপর আগত দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করার জন্য রাসুল পাঠানো হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلرَّسُولَ ٱلنَّبِيَّ ٱلۡأُمِّيَّ ٱلَّذِي يَجِدُونَهُۥ مَكۡتُوبًا عِندَهُمۡ فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِيلِ يَأۡمُرُهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَىٰهُمۡ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ وَيَضَعُ عَنۡهُمۡ إِصۡرَهُمۡ وَٱلۡأَغۡلَٰلَ ٱلَّتِي كَانَتۡ عَلَيۡهِمۡۚ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِهِۦ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَٱتَّبَعُواْ ٱلنُّورَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ مَعَهُۥٓ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٥٧﴾ [ الاعراف : ١٥٧ ]

“আর যারা অশিক্ষিত এই রাসুলকে অনুসরণ করেছে যাকে তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাত ও ইঞ্জীলে লিখিত পেয়েছে। তিনি তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন,তাদের জন্য উত্তম জিনিসকে বৈধ ও অপবিত্র জিনিসকে হারাম করেন,তাদের ওপর থেকে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্ধিত্ব অপসারণ করেন, যা তাদের ওপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যারা তার ওপর ঈমান এনেছে, তার সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাকে সাহায্য করেছে এবং তার সাথে নাযিলকৃত নূরের অনুসরণ করেছে, শুধুমাত্র তারাই সফলকাম।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৭]

অতএব, ইসলাম ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্মের প্রতিদ্বন্দী হয়ে আসে নি, বরং আল্লাহ তাআলার পুর্ববর্তী বিধানসমূহকে পরিপূর্ণ করার জন্যেই এসেছে।

এ গবেষণার শেষভাগে আমি মুসলিম সমাজকে আবেদন করতে চাই যে, ইসলাম নারীদেরকে যে সমস্ত অধিকার দিয়েছে তার অনেকাংশ থেকেই তারা আজ বঞ্চিত। যা পুরাতন হয়ে গেছে তার সংস্কার করা জরুরী। এটা প্রত্যেক মুসলমানেরই দায়িত্ব। মুসলিম বিশ্বের এটাও একটা দায়িত্ব যে, তারা কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে নারীদের জন্য ঐক্যবদ্ধ একটা বিধান প্রণয়ন করবে। তাতে নারীদের ইসলামসম্মত যাবতীয় অধিকার নিশ্চিত করে যে কোনো মুল্যে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার বটে। তবে কোনো কিছু না করার চেয়ে দেরীতে হলেও কিছু করাই উত্তম। মুসলিমরা তাদের মা, বোন, কন্যা ও স্ত্রীদেরকে যদি তাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান না করে তাহলে, তাদেরকে সে অধিকার এনে দেবে কে? এছাড়াও আমাদের জন্য অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে যে সমস্ত রীতিনীতি ও ভূল প্রচলন আমাদের মাঝে প্রচলিদ রয়েছে এবং কুরআন ও সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক তাকে বর্জন করা। কুরআন কি আরবের কাফিরদেরকে তাদের পুর্বপুরুষদের কৃষ্টি-কালচারের অন্ধ অনুকরণ করার কারণে তিরস্কার করে নি? পশ্চিমা বা অন্য কোনো সভ্যতা থেকে আগত কোনো অশ্লীল প্রথা আমাদের মাঝে আসলে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করব। তবে তাদের থেকে যেগুলো ভালো সেগুলো গ্রহণ করতে দোষ নেই। তাদের সাথে সম্পর্ক রাখায় অসুবিধা নেই। এটাই মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের শিক্ষা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقۡنَٰكُم مِّن ذَكَرٖ وَأُنثَىٰ وَجَعَلۡنَٰكُمۡ شُعُوبٗا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓاْۚ إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٞ ١٣﴾ [ الحجرات : ١٣ ]

“হে মানব সকল! নিশ্চয় আমরা তোমাদেরকে একটি মাত্র পুরুষ ও নারী থেকে সৃষ্টি করেছি; আর তোমাদেরকে বিভিন্ন শ্রেণি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যকার সর্বাধিক মুত্তাকী লোকই আল্লাহ তা‘আলার নিকট বেশি সম্মানিত। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা সর্বজ্ঞ ও সবকিছুর খবর রাখেন।” [সূরা আল হুজুরাত, আয়াত: ১৩]

আমাদের কর্তব্য হবে আমরা অন্য কোনো জাতি বা গোষ্ঠির অন্ধ অনুসরণ করব না। কেননা এটা নিজেদের সম্মান ও মর্যাদার পরিপন্থী কাজ।

আর ইয়াহূদী-খৃষ্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ভাইদের কাছে আমার কয়েকটি কথা রয়েছে। সেগুলো হলো: যে ধর্ম নারীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করছে এবং তাদেরকে সম্মানের আসনে আসীন করছে, তাকে আজ নারীর ওপর যুলুমকারী বলে সাব্যস্ত করা হচ্ছে এটা আসলেই ক্ষুদ্ধ করার মতো কথা, যে বিশ্বাস আজ সারা বিশ্বে সম্প্রসারিত হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে অনেক প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও গ্রন্থ রচিত হয়েছে এবং মিডিয়া ও হলিউড সিনেমায় যা নিয়ে রীতিমত হৈ চৈ করা হয়। ইসলাম নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি ও কোনো কিছুর সাথে ইসলামের সম্পৃক্ততা নিয়ে ভীতিই এ ভুল বিশ্বাস স্থাপিত হবার অন্যতম কারণ। মিডিয়া ইসলামকে বিকৃতি করা থেকে ক্ষান্ত হলে আমরা শান্তিপুর্ণ সমাজ গঠন করতে পারব যেখানে থাকবে না কোনো ভুল বুঝাবুঝি, পক্ষপাতদৃষ্টতা ও সাম্প্রদায়িকতা। অমুসলিমদের জানা দরকার যে, ইসলাম স্বীকৃত বিষয় ও বর্তমান মুসলিমদের কাজকর্মের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। এগুলো ইসলাম বলে স্বীকৃত হতে পারে না। সুতরাং আজকের মুসলিম সমাজে নারীদের মর্যাদা ও ইসলামে নারীদের মর্যাদার ভিতরে আকাশ পাতাল তফাত আছে ঠিক তেমনি, যেমন, তফাত আছে ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্মে নারীদের মর্যাদা ও পশ্চিমা সমাজ কর্তৃক প্রদত্ত নারীদের মর্যাদার ভিতরে। তাই মুসলিম অমুসলমান নির্বিশেষে সকলের উচিৎ বিষয়গুলোকে পর্যালোচনা করে ভবিষ্যত শান্তির লক্ষ্যে ভুল বুঝাবুঝি, ভীতি ও সন্দেহ ইত্যাদি দূর করার চেষ্টা করা।

আর এটা স্পষ্ট করা দরকার যে, ইসলাম নারীদেরকে সম্মান দিয়েছে এবং তাকে এমন সব অধিকার দিয়েছে, যা দেড় হাজার বছর পরে এখন সবেমাত্র বিশ্ব বুঝতে পেরেছে। ইসলাম নারীকে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সম্মান-মর্যাদা ও সর্বপ্রকার বিপদ থেকে বেচে থাকার গ্যারান্টি দেয়। ইসলাম তাকে আত্মিক, বাহ্যিক, চিন্তা ও ইচ্ছাসহ সমস্ত প্রয়োজনকে মিটিয়ে দেয়। আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই যে, বর্তমানে বৃটেনে যারা ইসলাম গ্রহণ করছে, তাদের অধিকাংশই মহিলা। অপরদিকে আমেরিকায় ইসলাম গ্রহণকারী মহিলার সংখ্যা পুরুষের চেয়ে চারগুন বেশি। [Khalil Gibran, Thoughts and Meditations (New York: Bantam Books, 1960) p. 28.]

তাই বর্তমান বিশ্ব সঠিক পথের দিশা পেতে ইসলামের অত্যন্ত মুখাপেক্ষী। ১৯৮৫ সালের ২৪ শে জুন আমেরিকান কংগ্রেসের বৈদেশিক বিভাগের এক বৈঠকে “রাষ্ট্রদুত হিরমান এইলটস” বলেছিলেন: বর্তমান বিশ্বে মুসলিমের সংখ্যা ১০০ কোটিরও বেশি এটা অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয়। কিন্তু আমি আশ্চর্য হই যে, ইসলাম একত্ববাদে বিশ্বাসী অত্যন্ত দ্রুত বর্ধমান একটি ধর্ম; এটা যদি কোনো কিছুর দিকে ইঙ্গিত দেয় তাহলে তা হবে -ইসলাম হলো সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ধর্ম। এটা প্রচুর সংখ্যক নেককার লোকদেরকে তার দিকে আকৃষ্ট করছে।”

হ্যাঁ, ইসলাম সত্যের ওপরই প্রতিষ্ঠিত এবং তা প্রমাণিত হওয়ার সময়ও এখনই। আশা করি আমার এই গবেষণা এ পথে একধাপ এগিয়ে দেবে ইনশাল্লাহ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন