HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে নারী বনাম ইয়াহূদী-খৃষ্টান ধর্মে নারী

লেখকঃ ড. শরীফ আব্দুল আযীম

হাওয়া আলাইহাস সালামের অপরাধের উত্তরাধিকার
বাইবেলে বর্ণিত ‘হাওয়া আলাইহাস সালাম আদম আলাইহিস সালামকে পথভ্রষ্ট করেছিলেন’ বাক্যটি ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্মবিশ্বাসে নারী জাতিকে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করেছে। ধারণা করা হয় যে, নারী জাতি উত্তরাধিকার সূত্রে তাদের আদি রমাতা হাওয়া-এর অপরাধের প্রায়শ্চিত্য ভোগ করে থাকে। অতএব, নারীদের ওপর নির্ভর করা যাবে না এবং তারা সচ্চরিত্রবান নয়। এছাড়াও বিশ্বাস করা হয় যে, নারী জাতির অপবিত্র হওয়া, গর্ভধারণ করা ও সন্তান প্রসব করা এগুলো হাওয়া আলাইহাস সালামের অপরাধের প্রায়শ্চিত্য হিসেবে স্থায়ী শাস্তি। নারীদের প্রতি নেতিবাচক আচরণ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে আমাদেরকে ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের দিকে মনোনিবেশ করা আবশ্যক।

তাহলে প্রথমে বাইবেলের ‘পুরাতন নিয়ম’ (old testament) এর কথায় আসা যাক। আমরা এর কারণ খুজতে গিয়ে দেখতে পাই যে, “মহিলারা মৃত্যুর চেয়েও বেশি তিক্ত। সে হচ্ছে ফাদের মতো, তার অন্তর ফিতার মতো এবং হাতগুলো বন্ধন। নেককার ব্যক্তি তাদের থেকে মুক্ত থাকবে। পক্ষান্তরে বদকারদেরকে এদের কারণে পাকড়াও করা হবে।”

দেখুন! আমি এটাই পেয়েছি।

“এক এক করে আমার মনের প্রশ্নের সমাধান খুজে দেখেছি। কিন্তু আমি তার জবাব খুজে পাইন নি। হাজার পুরুষের মধ্যে একজনকে এ রকম পেয়েছি। কিন্তু, হাজারে একজন মহিলাকেও এ রকম পাই নি”।

ক্যাথলিক বাইবেলে আছে ‘এমন কোনো পাপ নেই যাকে নারীর পাপের সাথে তুলনা করা যায়। প্রত্যেক পাপের পিছনে আছে কোনো না কোনো মহিলা আর মহিলাদের কারণেই আমরা সবাই মরে যাব।’ (এক্সিলেসিয়াস্টিকাস: ২৫/১৯,২৪)

এক ইয়াহূদী আলিম প্রচার করেছন, জান্নাত থেকে বের হওয়ার কারণে মহিলাদেরকে ৯ টি অভিশাপ দেওয়া হয়েছে।

মহিলাদের ওপর মৃত্যুর আগে ৯টি অভিশাপ রয়েছে। সেগুলো হলো:

অপবিত্র হওয়া

কুমারিত্বের রক্ত

গর্ভধারণের কষ্ট

সন্তান প্রতিপালন ও সন্তান প্রসবের কষ্ট

মাথা ঢেকে রাখার বিধান, যেন সে শোক পালন করছে

তাদের কান ছিদ্র করতে হয়

তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়

এগুলোর পরে রয়েছে মৃত্যু। [Leonard j.swidlar, women in Judaism: the status of women in formative Judaism (Metuchen, N.J: Scarecrow press, 1976) p.115]

এখনও আর্থজেক্স ইয়াহূদী পুরুষগণ তাদের প্রার্থনায় বলে থাকে- আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করি এ জন্য যে, আল্লাহ আমাদেরকে নারী করে দুনিয়ায় পাঠান নি। আর নারীরা বলে: আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করি এ জন্যে যে, তিনি যেমন খুশি তেমনি করে আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। [Thena kendath, "memories of an orthodox youth" in Susannah heschel, ed. On being a jewish feminist (New york: schocken books, 1983), pp.96-97]

ইয়াহূদীদের গ্রন্থে আরেকটি প্রার্থনার উল্লেখ পাওয়া যায় তা হলো: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাকে মুর্তিপুজারী করে সৃষ্টি করেন নি। প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদেরকে নারী হিসেবে সৃষ্টি করেন নি, আর প্রশংসা সে আল্লাহর যিনি আমাদেরকে মূর্খ করে সৃষ্টি করেন নি। [Swidler, op. cit., pp. 80-81.]

নারীদের প্রতি এ নেতিবাচক ধারণার কুপ্রভাব ইয়াহূদী ধর্মের চেয়ে খৃষ্টান ধর্মে বেশি প্রকট আকার ধারণ করেছে। হাওয়া আলাইহাস সালামের অপরাধের ব্যাপারটা খৃষ্টান ধর্ম বিশ্বাসে বড় ধরণের প্রভাব ফেলছে। ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর বিধানের সাথে হাওয়া আলাইহিস সালামের নাফরমানীর ফলাফল। তিনি প্রথম নাফরমানী করেছেন এবং আদম আলাইহিস সালামকে ও তা করার প্ররোচনা দিয়েছেন। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় নামিয়ে দিয়েছেন এবং সে অভিশপ্ত হয়েছে। আল্লাহ তাদের এ অপরাধ ক্ষমা করেন নি; বরং তা সমস্ত মানুষের কাছে স্থানান্তরিত হয় প্রত্যেকেই এ গুনাহের বোঝা নিয়ে দুনিয়ায় আসে। এ সমস্ত মানুষের উক্ত অপরাধের প্রায়শ্চিত্য হিসেবে ঈসা আলাইহিস সালামকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। (খৃষ্টানদের ধারণা অনুযায়ী ঈসা আলাইহিস সালাম মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু ঈসা আলাইহিস সালামকে জীবিত উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। -অনুবাদক) তাকে স্রষ্টার পুত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। তাকে ক্রুশবিদ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত কারণে হাওয়া আলাইহাস সালাম তার নিজের, স্বামীর ও সমস্ত মানুষের প্রথম পাপের জন্য দায়ী এমনকি ঈসা আলাইহিস সালামের ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করার জন্যেও দায়ী। অন্য কথায় বলতে গেলে সমস্ত মানুষের জান্নাত থেকে দুনিয়ায় নেমে আসার কারণ হচ্ছে শুধুমাত্র একজন নারী। [Rosemary R. Ruether, "Christianity", in Arvind Sharma, ed. Women in World Religions (Albany: State University of New York Press, 1987) p. 209.]

এটা গেল প্রথম মানবী হাওয়া আলাইহাস সালামের কথা। কিন্তু তার কন্যাগণের অবস্থা কী? তারাও তার সমান অপরাধী। তাদের সাথে অপরাধীদের সাথে যেমন আচরণ করতে হয় তেমনি আচরণ করতে হবে।

নতুন নিয়মে (new testament) পল বলেছেন: “মহিলারা চুপিসারে ও নতশীরে শিক্ষা গ্রহণ করবে। আমি কোনো মহিলাকে অনুমতি দেব না কোনো পুরুষকে শিক্ষাদানের বা পুরুষের ওপর কর্তৃত্ব করার, বরং তারা চুপ করে থাকবে (বিনা প্রশ্নে সবকিছু মেনে নেবে)। কারণ, আদম প্রথমে সৃষ্টি হয়েছেন তারপর হাওয়া। আদম নিজে পথভ্রষ্ট হন নি, বরং হাওয়া তাকে পথভ্রষ্ঠ করে দিয়ে বাড়াবাড়ি করেছেন”। (১ তিমুথি: ২/১১-১৪)

খৃষ্টান আলিম তারতোলিয়ান উক্ত পোপের চেয়ে আরও বেশি কঠোর ছিলেন। তিনি তার খৃষ্টান মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলতেন: “তোমরা কি জান যে, তোমরা সবাই একেকজন হাওয়া? তোমাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলা যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা আজও বিদ্যমান আছে। পাপ কাজগুলোও আজ বিদ্যমান। তোমরা হচ্ছ ঐ সমস্ত দরজা যা দ্বারা শয়তান প্রবেশ করে। নিষিদ্ধ গাছের পাপাচারের জন্য তোমরাই দায়ী। তোমরাই সর্ব প্রথম পাপ কাজ করেছিলে। যে আদমকে শয়তান পথভ্রষ্ট করতে পারে নি, তাকে তোমরাই পথভ্রষ্ট করেছ। তোমরা আল্লাহ তা‘আলার সাথে মানুষের সম্পর্ককে গুড়িয়ে দিয়েছ। আর তোমাদেরই পাপের কারণেই ইশ্বরের পূত্র ঈসা (খৃষ্টানদের মতে) শুলে বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন।”

আরেক খৃষ্টান পণ্ডিত আগাস্টাইন ছিলেন তার পুর্বসুরীদের মতোই। তিনি তার বন্ধুকে লিখেছিলেন যে, স্ত্রী আর মায়েদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তারা উভয় অবস্থায়ই হাওয়া এর অনুরুপ যিনি আদমকে পথভ্রষ্ঠ করেছিলেন। সুতরাং আমাদের সকলের উচিৎ তাদের থেকে সতর্ক থাকা। আমাদের বুঝে আসে না নারীদেরকে কেন যে সৃষ্টি করা হয়েছে? সন্তান জন্মদান ছাড়া তাদের দ্বারা আর কোনো ফায়দা হয় না।

তার কয়েকশতক পর পণ্ডিত টমাস আকবীনাস বিশ্বাস করত যে, মহিলাদের দিয়ে কোনো লাভ হয় না। তার বক্তব্য হচ্ছে: নারীরা কোনো উপকারে আসে না। পক্ষান্তরে পুরুষেরা নেককার হয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং তাদের পুত্র সন্তানগণও নেককার হয়; কিন্তু নারীরা জন্মলগ্ন থেকে তাদের পুর্বেকার নারী হাওয়া এর অপরাধের কারণে কলঙ্ক নিয়ে দুনিয়ায় আসে।

সর্বশেষে প্রখ্যাত খৃষ্টান পণ্ডিত মার্টিন লুথার তিনিও সন্তান জন্ম দান ছাড়া নারীদের দিয়ে আর কোনো উপকার হয় বলে মনে করেন না। তিনি বলেন, যখন তারা ক্লান্ত হয়ে যায় বা মারা যায়, সেটা কোনো ব্যাপারই নয়। সন্তান জন্মের পর তারা তাদেরকে আদর যত্ন করবে এটাই তাদের দায়িত্ব। [For all the sayings of the prominent Saints, see Karen Armstrong, The Gospel According to Woman (London: Elm Tree Books, 1986) pp. 52-62. See also Nancy van Vuuren, The Subversion of Women as Practiced by Churches, Witch-Hunters, and Other Sexists (Philadelphia: Westminister Press) pp. 28-30.]

হাওয়া আদম আলাইহিস সালামকে পথভ্রষ্ঠ করেছেন এ বিশ্বাসের কারণে নারীরা খৃষ্টান ধর্মে তিরস্কারের পাত্রে পরিণত হয়েছে। যেমনটি সাফারুত তাকবীনে বর্ণিত হয়েছে।

সংক্ষেপে বলা যায়, ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্মবিশ্বাসে হাওয়া আলাইহিস সালাম ও তার কন্যা সন্তানগণকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হয়।

এবার আসি আল-কুরআন মাজীদে নারীদের সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে তা জেনে নিই। অচিরেই আমরা দেখতে পাব যে, আল-কুরআন ও ইয়াহূদী বা খৃষ্টান ধর্মে বর্ণিত নারীদের চিত্রের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান।

কুরআন নিজেই বলছে:

﴿إِنَّ ٱلۡمُسۡلِمِينَ وَٱلۡمُسۡلِمَٰتِ وَٱلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِ وَٱلۡقَٰنِتِينَ وَٱلۡقَٰنِتَٰتِ وَٱلصَّٰدِقِينَ وَٱلصَّٰدِقَٰتِ وَٱلصَّٰبِرِينَ وَٱلصَّٰبِرَٰتِ وَٱلۡخَٰشِعِينَ وَٱلۡخَٰشِعَٰتِ وَٱلۡمُتَصَدِّقِينَ وَٱلۡمُتَصَدِّقَٰتِ وَٱلصَّٰٓئِمِينَ وَٱلصَّٰٓئِمَٰتِ وَٱلۡحَٰفِظِينَ فُرُوجَهُمۡ وَٱلۡحَٰفِظَٰتِ وَٱلذَّٰكِرِينَ ٱللَّهَ كَثِيرٗا وَٱلذَّٰكِرَٰتِ أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُم مَّغۡفِرَةٗ وَأَجۡرًا عَظِيمٗا ٣٥﴾ [ الاحزاب : ٣٥ ]

“নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, সাওম পালনকারী পুরুষ ও সাওম পালনকারী নারী, লজ্জাস্থান হিফাযতকারী পুরুষ ও লজ্জাস্থান হিফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকিরকারী পুরুষ ও আল্লাহর অধিক যিকিরকারী নারীদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা প্রস্তুত করে রেখেছেন ক্ষমা ও মহা পুরস্কার”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩৫]

আল-কুরআনের বাণী:

﴿وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتُ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ يَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَيُطِيعُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓۚ أُوْلَٰٓئِكَ سَيَرۡحَمُهُمُ ٱللَّهُۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٧١﴾ [ التوبة : ٧١ ]

“আর ঈমানদার নারী ও ঈমানদার পুরুষ একে অপরের সহায়ক ও বন্ধু। তারা সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা দেয়। নামাজ প্রতিষ্ঠা করে,যাকাত আদায় করে আর আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে। অচিরেই আল্লাহ তা‘আলা এদের ওপর দয়া পরবশ হবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাআ‘লা পরাক্রমশালী, সুকৌশলী।” [সূরা আত-তওবাহ, আয়াত: ৭১]

আল-কুরআনের বাণী:

﴿فَٱسۡتَجَابَ لَهُمۡ رَبُّهُمۡ أَنِّي لَآ أُضِيعُ عَمَلَ عَٰمِلٖ مِّنكُم مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰۖ بَعۡضُكُم مِّنۢ بَعۡضٖۖ فَٱلَّذِينَ هَاجَرُواْ وَأُخۡرِجُواْ مِن دِيَٰرِهِمۡ وَأُوذُواْ فِي سَبِيلِي وَقَٰتَلُواْ وَقُتِلُواْ لَأُكَفِّرَنَّ عَنۡهُمۡ سَيِّ‍َٔاتِهِمۡ وَلَأُدۡخِلَنَّهُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ ثَوَابٗا مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥ حُسۡنُ ٱلثَّوَابِ ١٩٥﴾ [ ال عمران : ١٩٥ ]

“অতঃপর তাদের পালনকর্তা তাদের দো‘আ এই বলে কবুল করে নিলেন যে, আমি তোমাদের কোনো আমলকারীর আমল নষ্ট করি না। চাই সে পুরুষ বা নারী, যেই হোক না কেন। তোমরা পরস্পর এক। অতঃপর যারা হিজরত করেছে তাদেরকে নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রতি উৎপীড়ন করা হয়েছে আমার পথে এবং যারা লড়াই করেছে ও মৃত্যু বরণ করেছে, অবশ্যই আমি তাদের ওপর থেকে অকল্যাণকে অপসারণ করব আর তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে যার নিচ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহমান। এই হলো আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে বিনিময়। আর আল্লাহ তা‘আলার নিকট রয়েছে উত্তম বিনিময়। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯৫]

﴿مَنۡ عَمِلَ سَيِّئَةٗ فَلَا يُجۡزَىٰٓ إِلَّا مِثۡلَهَاۖ وَمَنۡ عَمِلَ صَٰلِحٗا مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَأُوْلَٰٓئِكَ يَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ يُرۡزَقُونَ فِيهَا بِغَيۡرِ حِسَابٖ ٤٠﴾ [ غافر : ٤٠ ]

“যে মন্দ কাজ করে সে কেবল তার অনুরুপ প্রতিফল পাবে, আর যে পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সেখানে তাদেরকে বেহিসাব রিযিক দেওয়া হবে”। [সূরা গাফির, আয়াত: ৪০]

﴿مَنۡ عَمِلَ صَٰلِحٗا مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَلَنُحۡيِيَنَّهُۥ حَيَوٰةٗ طَيِّبَةٗۖ وَلَنَجۡزِيَنَّهُمۡ أَجۡرَهُم بِأَحۡسَنِ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٩٧﴾ [ النحل : ٩٧ ]

“যে সৎকর্ম করে এবং সে ঈমানদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী, আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের কাজের বিনিময়ে উত্তম পুরস্কারে ভূষিত করব। [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৯৭]

আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, কুরআনে পুরুষ ও নারীর মাঝে কোনো বৈষম্য রাখা হয় নি। আল্লাহ তাদের উভয়কে সৃষ্টি করেছেন যেন তারা তার ইবাদত করে, সৎ কাজ করে এবং খারাপ থেকে দূরে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের উভয়ের কাজের জন্য হিসাব নেবেন। আল-কুরআনে কোথাও বলা হয় নি যে,নারীরা শয়তানের প্রবেশদ্বার বা তারা জন্ম নিয়েছে প্রতারণার জন্য। এমনও বলা হয় নি যে, পুরুষেরা স্রষ্টার প্রতিকৃতি বরং পুরুষ নারী উভয়ই আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি। আল-কুরআনের আয়াতসমূহ পরিস্কার করে বলেছে যে, নারীদের দায়িত্ব শুধুমাত্র সন্তান জন্মদান নয় বরং পুরুষের মতোই সমানে সমান তারও দায়িত্ব রয়েছে নেক আমল করার। আল-কুরআন বলে নি যে, নেককারিনী নারী পাওয়া দুষ্কর, বরং তার বিপরীতে নারী ও পুরুষদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেককারিনী নারী মারইয়াম আলাইহাস সালাম ও ফিরআউনের স্ত্রী প্রমুখদের অনুসরণ করতে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱمۡرَأَتَ فِرۡعَوۡنَ إِذۡ قَالَتۡ رَبِّ ٱبۡنِ لِي عِندَكَ بَيۡتٗا فِي ٱلۡجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِن فِرۡعَوۡنَ وَعَمَلِهِۦ وَنَجِّنِي مِنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّٰلِمِينَ ١١ وَمَرۡيَمَ ٱبۡنَتَ عِمۡرَٰنَ ٱلَّتِيٓ أَحۡصَنَتۡ فَرۡجَهَا فَنَفَخۡنَا فِيهِ مِن رُّوحِنَا وَصَدَّقَتۡ بِكَلِمَٰتِ رَبِّهَا وَكُتُبِهِۦ وَكَانَتۡ مِنَ ٱلۡقَٰنِتِينَ ١٢﴾ [ التحريم : ١١، ١٢ ]

“আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের জন্য ফিরআউনের স্ত্রীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বলল: হে আমার রব! আপনার নিকট জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে ফিরআউন ও তার দুষ্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে যালিম সম্প্রদায় থেকে রক্ষা করুন। আর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন ইমরানের কন্যা মারইয়াম আলাইহিস সালামের। যিনি তার সতীত্ব বজায় রেখেছিলেন। অতঃপর আমি তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং তিনি তার রবের বাণী ও কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিনয় প্রকাশকারীনীদের একজন’। [সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ১১-১২]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন