HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে নারী বনাম ইয়াহূদী-খৃষ্টান ধর্মে নারী

লেখকঃ ড. শরীফ আব্দুল আযীম

ভূমিকা
পাঁচ বছর ধরে আমি ‘টরেন্টো স্টার’ পত্রিকা পড়ছি। ১৯৯০ সালের ৩ জুলাই গুইন ডায়েরের লেখা একটা প্রবন্ধ পেলাম। শিরোনাম ‘শুধু ইসলামই ঐশ্বরিক মতবাদ নয়’। বিশিষ্ট মিশরীয় নারীবাদী গবেষক ড. নাওয়াল আস-সা‘দায়ীর মন্তব্যের বিপক্ষে মন্ট্রিয়ালে অনুষ্ঠিত “নারী ও ক্ষমতা’ শীর্ষক কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারীদের কার্যক্রমের জবাবে এটা লেখা হয়েছে। তার কমেন্ট ছিল রাজনৈতিকভাবে ভুল। ‘নারী সংক্রান্ত সকল শিক্ষা ইয়াহূদী ধর্মে পাওয়া যেত তারপর তা খৃষ্টান ধর্ম এবং পরবর্তীতে আল-কুরআনে পাওয়া যায়” এবং “সকল ঐশ্বরিক ধর্ম ঐশ্বরিক সমাজে উদ্ভাবিত হয়েছে।’ হিজাবের বিধান শুধুমাত্র ইসলামেই আসে নি” বরং তা পুরাতন যুগের ধর্মগুলোতেও পাওয়া যেত। অংশগ্রহণকারীরা ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের সাথে একই কাতারে মেনে নিতে চায় নি। এজন্যই ড. নাওয়াল সা‘দায়ী তাদের প্রচণ্ড সমালোচনার শিকার হন। বিশ্ব মাতৃদের আন্দোলনের প্রিন্স দুবো বললেন: সা‘দায়ীর মতামত অগ্রহণযোগ্য। তিনি অন্যান্য ধর্মকে সঠিকভাবে বুঝতে পারেন নি। ইসরাঈলের নারীবাদী সংগঠনের ‘আলেস শ্যালভী’ বলেন, “আমাদের অবশ্য কর্তব্য তার কথার বিরোধিতা করা। কারণ, ইয়াহূদী ধর্মে কোনো হিজাব নেই।” এ প্রবন্ধে বলা হয় পশ্চিমাদের ইসলামের উওপর অপবাদ আরোপই পশ্চিমা সভ্যতার বিভিন্ন কার্যক্রমের স্রষ্টা।

গুইন ডায়ের আরও বলেন, “ইয়াহূদী ও খৃষ্টান নারী অধিকার আন্দোলনকারীরা মুসলিমদেরকে কখনো তাদের সমান মেনে নেবে না।”

কনফারেন্সে উপস্থিত সদস্যদের অবস্থান; বিশেষ করে নারী সংক্রান্ত অবস্থান আমার কাছে আশ্চর্যের বিষয় বলে মনে হয় নি। কারণ, পশ্চিমাদের কাছে ইসলাম ‘নারীর ওপর যুলুমকারী ধর্ম’ বলেই বিবেচিত হয়। এর সবচেয়ে বড় দলীল হচ্ছে ভোল্টায়ারের দেশ ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী ফ্রান্সের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে হিজাব পরিহিতা নারীদেরকে বিতাড়িত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন! [The globe and mail, oct. 4, 1994]

এছাড়া যখন কোনো খৃষ্টান ছাত্র ক্রুশ ঝুলিয়ে এবং কোনো ইয়াহূদী ছাত্র তাদের নিজস্ব টুপি পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসার সুযোগ পেয়েছিল তখন মুসলিম নারীরা তাদের হিজাব ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ফ্রান্সের পুলিশ কর্তৃক হিজাব পরিহিতা নারীদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে বাধা প্রদানের দৃশ্য ভুলে যাওয়ার মতো নয়। এটা ‘আলাবামা’ প্রদেশের শাসক জর্জ ওয়ালাসের অপমানকর ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। ১৯৬২ সালে তিনি একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে কৃষ্ণাঙ্গদেরকে সেখানে প্রবেশে বাধা দিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তবে দুই ঘটনার মাঝে কিছুটা পার্থক্য আছে। কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্ররা আমেরিকানসহ সারা বিশ্বের সহানুভূতি অর্জন করার ফলে ‘প্রেসিডেণ্ট কেনেডী’ তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করাতে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল। আর মুসলিম নারীরা কারও কাছ থেকে কোনো ধরণের সহযোগিতা পায় নি। ফ্রান্সের ভিতর বা বাইরে থেকেও তারা কোনো সহানুভূতি পায় নি। এটার কারণ হলো, ইসলাম সম্বন্ধে তাদের মধ্যকার ভূল বুঝাবুঝি ও ইসলাম সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ের প্রতি ভীতি, তবে আমার সব মনযোগ কেড়ে নিয়েছে “ড. সা‘দায়ীর বক্তব্য ও অন্যদের সমালোচনা।” অন্য কথায়, নারীদের এ বিধান কি ইয়াহূদী, খৃষ্টান ও ইসলাম সব ধর্মে একই রকম? নাকি তাদের মাঝে কোনো পার্থক্য আছে? ইয়াহূদী ও খৃষ্টান ধর্ম কি ইসলামের চেয়ে নারীদেরকে বেশি মর্যাদা দিয়েছে? আসল ঘটনাটা কী?

নিশ্চয় এ প্রশ্নগুলোর জবাব সহজ ব্যাপার নয়। প্রথমত: কঠিন ব্যাপার যে, আমাকে নিরপেক্ষ ও নির্দিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে; অন্ততঃপক্ষে সাধ্যমত তার জন্য চেষ্টা করতে হবে। এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন মুসলিমদেরকে নির্দেশ দিয়েছে সত্য কথা বলার জন্য যদিও তা তাদের নিকটস্থ লোকদেরকে নাখোশ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِذَا قُلۡتُمۡ فَٱعۡدِلُواْ وَلَوۡ كَانَ ذَا قُرۡبَىٰۖ وَبِعَهۡدِ ٱللَّهِ أَوۡفُواْۚ ذَٰلِكُمۡ وَصَّىٰكُم بِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُونَ ١٥٢﴾ [ الانعام : ١٥٢ ]

‘‘যখন তোমরা কথা বলবে তখন ন্যায়সংগত কথা বলবে যদিও তা তোমাদের নিকটাত্মীয় স্বজনের বিপক্ষে যায়। তোমরা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করে নাও। তিনি তোমাদেরকে এরই নির্দেশ দিয়েছেন;যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৫২]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُونُواْ قَوَّٰمِينَ بِٱلۡقِسۡطِ شُهَدَآءَ لِلَّهِ وَلَوۡ عَلَىٰٓ أَنفُسِكُمۡ أَوِ ٱلۡوَٰلِدَيۡنِ وَٱلۡأَقۡرَبِينَۚ إِن يَكُنۡ غَنِيًّا أَوۡ فَقِيرٗا فَٱللَّهُ أَوۡلَىٰ بِهِمَاۖ فَلَا تَتَّبِعُواْ ٱلۡهَوَىٰٓ أَن تَعۡدِلُواْۚ ﴾ [ النساء : ١٣٥ ]

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাক। আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায় সংগত সাক্ষ্যদান কর, যদিও তা তোমাদের নিজেদের, পিতামাতা বা নিকটাত্মীয় স্বজনদের বিপক্ষেও চলে যায়। যদি সে ধনী বা গরীব হয়, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের চেয়েও তাদের অনেক বেশি শুভাকাংখী। অতএব, তোমরা ন্যায় বিচার করতে গিয়ে নিজেদের নাফসের কামনা বাসনার অনুসরণ করো না।” [সুরা আন-নিসা, আয়াত: ১৩৫]

আরেকটি কষ্টকর কাজ হলো এ বিষয়টা অনেক প্রশস্ত এবং এর শাখা প্রশাখা ব্যাপকবিস্তৃত। এ জন্য গত কয়েক বছর যাবত আমি বাইবেলসহ বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বকোষ ও ইয়াহূদী বিশ্বকোষ পড়াশুনা করেছি এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিতদের ও সমালোচকদের লেখা পুস্তকাদি ব্যাপকভাবে পড়াশুনা করেছি। সামনের অধ্যায়গুলোতে আমি আমার গবেষণার সার সংক্ষেপ তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ।

আমি সম্পূর্ণভাবে উক্ত বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারি নি এবং হওয়ার দাবিও করি না; বরং গবেষণার সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কুরআনের নির্দেশ অনুসারে আমি এ বিষয়ে ন্যায়সংগত ও নিরপেক্ষ থাকতে চেষ্টা করেছি। এমন কোনো মুসলিম এ ধরায় পাওয়া যাবে না যে, মূসা ও ঈসা আলাইহিমাস সালামকে আল্লাহর প্রেরিত রাসুল বলে বিশ্বাস করে না। আমার উদ্দেশ্য ছিল আমি ইসলামকে সর্বপ্রকার অপবাদ থেকে মুক্ত করব এবং আল্লাহ তা‘আলা যেন আমার দ্বারা সর্বশেষ জীবনবিধান ইসলামের খেদমত করান। তাই তিনটি ধর্মে নারীদের মর্যাদা নিয়ে আমি মূল ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে রেফারেন্স নিয়ে এসেছি, অনেকের মতো অন্যের অনুসরণ করে পক্ষপাতমূলকভাবে নয়। এ জন্যই অধিকাংশ সুত্র এসেছে কুরআন, হাদীস, বাইবেল, তালমুদ এবং খৃষ্টান ধর্মের এমন কিছু পাদ্রীর বক্তব্য থেকে, যাদের বক্তব্য খৃষ্টান ধর্মে অনেক বড় স্থান দখল করে আছে। এ ধর্মসমুহের অনেকেরই স্বভাব হচ্ছে, তারা তাদের ধর্মগ্রন্থের সঠিক শিক্ষা উপস্থাপন করতে চান না। অনেক মানুষ সভ্যতা ও ধর্মকে একাকার করে দেন। অনেকে আবার আসমানী কিতাবের কথা বুঝে উঠতে পারেন না। আর কিছু লোক আসমানী কিতাবের নির্দেশের দিকে একেবারেই ভ্রুক্ষেপ করে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন