মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
তৃতীয় প্রবন্ধ: নবুয়তের দাবিদার কাদিয়ানী কর্তৃক সাহাবায়ে কেরাম ও নবীগণের অবমাননা। [১- এই প্রবন্ধটি ১৩৮৬ হিঃ সনে ‘হাদারাতুল ইসলাম’ ম্যাগাজিনের ৮ম সংখায় প্রকাশিত হয়।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/699/5
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘‘কিয়ামত কায়েম হবে না যে পর্যন্ত না ত্রিশজন দাজ্জাল বের হবে। তারা প্রত্যেকে নিজেকে আল্লাহর রাসূল বলে দাবি করবে’’। আর এক রেওয়ায়েতে আছে, ‘‘আমি শেষ নবী, আমার পরে আর কোন নবী আসবে না’’। [২- আবু-দাউদ, তিরমিযী থেকে বর্ণিত। অধিকাংশ কাদিয়ানী এই হদীসকে অস্বীকার করেছে এই বলে যে, হাদীসে যে ত্রিশ দাজ্জালের কথা বর্ণিত হয়েছে তন্মধ্যে আমাদের গুলাম আহমদ কাদিয়ানী অন্তর্ভুক্ত নয় ত্রিশ দাজ্জালের আগমণ শেষ হয়ে গেছে। এই অস্বীকৃতির কয়েকটি জবাব রয়েছে এখানে সংক্ষিপ্তাকারে দু‘টির উল্লেখ করছি। প্রথমতঃ আলোচ্য ‘‘আমার পরে আর কোন নবী আসবে না’’ বাক্যে অস্বীকৃতির কোন জো নেই। দ্বিতীয়তঃ হাফিজ ইবনে হাজার ফতহুল বারীতে এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন- এই হাদীসের দ্বারা রাসুলুল্লাহর পর নবুওতের দাবীদার মাত্র উদ্দেশ্য নয়। নবুওতের দাবীদার তো অগণিত, এদের অধিকাংশই বিকৃত মস্তিস্ক ও অপ্রকৃতিস্ত। এই হাদীস দ্বারা এমন ভন্ডনবীদের কথা বলা হয়েছে যারা নবুওতের দাবী করবে এবং মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারবে। (ফাতহুল বারী-৬ম খন্ড ৪৫৫পৃষ্ঠা)] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যই বলেছেন। আর, তিনি প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে কোন কথা বলেন না। যা বলেন তা তার প্রতি ওহী বা প্রত্যাদেশের মাধ্যমেই বলেন। এ সকল দাজ্জালের মধ্যে প্রথম শতাব্দীর প্রধান দাজ্জাল ছিল মুসাইলামাতুল কাজ্জাব। আর, চতুর্দশ শতাব্দীর দাজ্জাল হল গোলাম আহমদ কাদিয়ানী। উভয়ই নবী ও রাসূল হওয়ার দাবিতে ঐক্যতা প্রকাশ করে। কিন্তু দ্বিতীয়টি তার ভ্রান্তিতে অধিকতর অগ্রসর হয়ে সকল নবী রাসূলের উপর নিজের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করেছে এবং তাঁদের অবমাননা করে তাঁদের সম্মানের উপর আঘাত হেনেছে। কাউকে গালি দিয়েছে এবং কারো নিন্দা করেছে। অনুরূপ ভাবে সে বেহেস্ত বাসী যুবকদের নেতৃদ্বয় হাসান ও হুসাইনের এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহানুভূতিশীল আত্মীয় স্বজন ও ওজীরদ্বয়ের সম্মানের উপর আক্রমণ করেছে। ইসলামের পতাকাবাহী এবং রাসূলের সুন্নতের প্রচারকারী পবিত্র সাহাবীগণ রা. আ‘ইম্মায়ে মুজতাহিদীন, আউলিয়ায়ে উম্মত ও মনোনীত মনিষীগণকে তারা নির্বোধ আখ্যায়িত করেছে। তা সত্ত্বেও কাদিয়ানীরা নিজেদেরকে মুসলমান মনে করে এবং মুসলমানদের সাথী বলে ধারণা করে। আর, মুসলমানরা যে ধর্ম বিশ্বাস রাখে তারাও সে ধর্মে বিশ্বাস রাখে বলে দাবিকরে। মুসলমানদের মধ্যে এমন কে আছে, যে হযরত আবু বকর ,ওমর, ওসমান ও আলী রা. থেকে কাউকে শ্রেষ্ঠ বলে বিশ্বাস করতে পারে? মুসলমানদের এমন কোন ইমাম আছে যিনি বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহর দরবারে ইমাম হাসান ও হুসাইনের তুলনায় পরবর্তীদের মধ্যে অন্য কেহ অধিক উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন হবে? বিশ্ব মুসলিমের মধ্যে এমন কে আছে, যে, ধারণা করতে পারে যে, এমন কোন ব্যক্তি জন্ম গ্রহণ করেছে যে মানব শ্রেষ্ঠ ও আদম সন্তানের সর্দার হতে অধিক মর্যাদাবান? না, এমন কেহ নেই। সুতরাং কে আছে এমন যে মুসলমান হয়ে এমন উক্তি করতে পারে? আল্লাহর শপথ, যিনি মুহাম্মদকে সৃষ্টি করেছেন এবং সমস্ত সৃষ্টির উপর তাঁকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, আর, তাঁর সাথীদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন, এমন দাবি কেহ করতে পারে না। অতঃপর, মুসলমানদের মধ্যে এমন কে আছে, যে এ কল্পনা করতে পারে যে, মুসলমানদের মধ্যে কোন ব্যক্তি নবী ও রাসূলকে গালি দিতে পারে , তাঁদের নিন্দা করতে পারে? আসুন, এখন আমরা নবুয়তের দাবিদার কাদিয়ানীর আলোচনা করি। সে উম্মতে মুহাম্মদীর ওলীদের উল্লেখ করে বলে, ‘এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতের মধ্যে হাজার হাজার ওলী জন্ম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু, আমার সমান কেহ নেই। (গোলামের ‘‘তাজকেরাতুশ শাহাদাতাইন’’ ২৯ পৃ:) ইমাম হাসান ও হুসাইনের রা. কথা উল্লেখ করে বলে যে, মুসলমানরা আমার উপর এ জন্য রাগান্বিত যে, আমি নিজেকে ইমাম হুসাইনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেই। অথচ, কুরআনে তাঁর নামের উল্লেখ নেই, বরং যায়েদের নাম আছে। হুসাইন যদি শ্রেষ্ঠ হতেন তবে, কুরআনে তাঁর নামের উল্লেখ থাকত। আর, পিতৃত্বের সম্বন্ধ তো আল্লাহর এ বাণী দ্বারা ছিন্ন হয়ে গেছে, ‘‘মুহাম্মদ তোমাদের মধ্য হতে কোন পুরুষের পিতা নহেন, বরং তিনি আল্লাহর একজন রাসূল।’’ (মালফুজাতে আহমদীয়া ১৯১,৯২ পৃষ্ঠা) সে আরো বলে: মুসলমানরা আমার সমালোচনা করে যে, আমি নিজেকে হাসান ও হুসাইনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। উত্তরে আমি বলি যে, হাঁ, আমি নিজেকে তাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করি। অচিরেই আল্লাহ তা‘আলা এ শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে দিবেন। (গোলাম রচিত পুস্তক ‘‘এজাজে আহমদিয়া’’ ৫৮ পৃ:) অধিকন্তু, গোলামের পুত্র ও তার দ্বিতীয় খলীফা কাদিয়ানে যে জুম‘আর খুতবা দিয়েছিল এবং কাদিয়ানী পত্রিকা আল ফজলে ১৯২৬ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়েছিল, উহাতে সে বলেছে: ‘আমার পিতা বলছেন: একশত হুসাইন আমার পকেটে রয়েছে। মানুষ এর অর্থ এই বুঝে যে তিনি একশত হুসাইনের সমান। কিন্তু আমি আরো অধিক বলি যে, দ্বীনের খেদমতের জন্য আমার পিতার এক ঘন্টার কুরবাণী একশত হুসাইনের কুরবাণীর চেয়ে উত্তম। কাদিয়ানী পত্রিকা আল-হিকমে প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘পুরাতন খিলাফত নিয়ে দ্বন্দ্ব পরিহার কর এবং নতুন খেলাফত গ্রহণ কর। তোমাদের মধ্যে জীবিত আলী বিদ্যমান। তাকে ছেড়ে তোমরা মৃত আলীর অনুসন্ধান করছ’। (মালফুজাতে আহমদিয়া ১ম খন্ড ১৩১ পৃ:) এ জঘন্য মিথ্যাবাদী ভন্ডনবী আরো অগ্রসর হয়ে নিজেকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সবচেয়ে প্রিয় পাত্র ও নবীর পরে সর্বোত্তম ব্যক্তির উপর প্রাধান্য দিয়ে বলে যে, আমি ঐ মাহদী, যার সম্পর্কে ইবনে সীরীনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: তিনি কি আবু বকরের সমমর্যাদা সম্পন্ন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন- তার তুলনায় আবু বকরের অবস্থান কোথায়? বরং তিনি তো কোন কোন নবীর চেয়েও উত্তম । (গোলাম কাদিয়ানী রচিত ‘‘মি‘ইয়ারুল আখবার’’ যা তাবলীগে রেসালাতের ৯ম খন্ডের ৩০পৃষ্ঠার অন্তর্ভুক্ত।) গোলামের পুত্র ও তার খলীফা বলেছে: ‘হযরত আবু বকরের মর্যাদা উম্মতে মুহাম্মদীর শত শত লোক অর্জন করেছে’। (মাহমুদ আহমদ রচিত ‘‘হাকীকতে নবুয়্যত’’ ১৫২ পৃ:) জনৈক কাদিয়ানী লিখেছে যে, সে কোন এক কাদিয়ানী ধর্ম প্রচারক (যে আহলে বাইত অর্থাৎ গোলামের পরিবার ভুক্ত) থেকে এই বলতে শুনেছে যে, সে বলছে, গোলাম আহমদের তুলনায় আবু বকর ও ওমরের অবস্থান কোথায়? এরা তো গোলামের জুতা উঠাবার যোগ্যাতা রাখে না। (এ ধরনের জঘন্য অপরাধ ও দুঃসাহসিকতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করছি।) (মুহাম্মদ হুসাইন আল কাদিয়ানী কর্তৃক রচিত ‘‘আল মাহদী’’ ৩০৪ নম্বর ৫৭ পৃষ্ঠা) অতি আশ্চর্যের বিষয় এই যে, গোলাম আহমদের মত একজন ইতর ব্যক্তি ঐ সকল পবিত্র ব্যক্তিবর্গের সাথে প্রতিযোগিতার দাবি করে যাদেরকে আল্লাহপাক এ পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় বেহেস্তের সুসংবাদ দিয়েছেন। এই হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর, রা. যাদের সম্পর্কে মহান রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন ‘‘নবী ও রসুলগণ [১ তিরমিযী, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমদ] ব্যতীত পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের মধ্যে বয়স্ক বেহেস্তবাসীদের সরদার হলেন আবু বকর ও ওমর’’। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন ‘‘ প্রত্যেক নবীরই পৃথিবী বাসীদের মধ্য হতে দ‘জন ওজীর এবং আসমান বাসীদের মধ্য হতে দু‘জন ওজীর থাকেন। পৃথিবী বাসীদের মধ্যে আমার দু‘ওজীর হলেন আবু বকর ও ওমর রা.’’। [২ তিরমিযী] প্রথম ব্যক্তি সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ‘‘তিনি হলেন সর্ব প্রথম ব্যক্তি যাকে বেহেস্তের সকল দরজা থেকে ডাকা হবে’’। [৩ বুখারী]
তিনি আরো বলেছেন ‘‘সাহচর্য ও সম্পদের দিক দিয়ে সকল লোকের মধ্যে আমার প্রতি সবচেয়ে বেশি অনুগ্রহশীল হলেন আবু বকর। যদি আমি কাউকে একক আন্তরিক বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম তবে আবু বকরকেই গ্রহণ করতাম। তবে আমাদের মধ্যে রয়েছে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব। এ মসজিদে আবু বকরের দরজা ছাড়া আর কারো দরজা খোলা থাকবে না ’’ [৪ বুখারী ,মুসলিম, তিরমিজী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে দারমী, মুসনাদে আহমদ।]। দ্বিতীয় ব্যক্তি সম্পর্কে তিনি বলেছেন- ‘‘আমার পর যদি কোন নবী হতেন তা হলে তিনি উমরই হতেন’’ [৫ মুসনাদে আহমদ, তিরমিজী।] ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ওমরের মুখে ও অন্তরে সত্য বিদ্যমান রেখেছেন’’ [৬ আবু-দাউদ, তিরমিজী, ইবনে মাজাহ ও আহমদ।] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: শয়তান তোমাকে কোন পথে চলতে দেখলে সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে যায়’’। [৭ বুখারী, মুসলিম, ও মুসনাদে আহমদ।] নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো উল্লেখ করেছেন যে, ‘‘বেহেস্তে তিনি ওমরের প্রসাদের কাছেই নিজেকে দেখেছেন।’’ [৮ বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী ও মুসনাদে আহমদ।] এ সকল পুণ্যবান লোকদের মোকাবেলায় সে (কাদিয়ানী) গর্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এ ব্যক্তিটিই বা কে? নেশাখোর, মদ্যপায়ী ও প্রতারক এক ব্যক্তি । আমি নিজ থেকে তাকে এ সকল গুণ দ্বারা কখনও অভিযুক্ত করছি না, বরং কাদিয়ানীরা তার এ সব গুণ উল্লেখ করেছে। গোলামের পুত্র তার দ্বিতীয় খলীফা বলেছে: ঔষধের মধ্যে আফিম অধিকাংশ ব্যবহার করা হয়। আমার পিতা বলতেন যে, আফিম হল চিকিৎসা ব্যবস্থার অর্ধেক। কাজেই ঔষধরূপে ইহার ব্যবহার বৈধ এবং তাতে কোন দোষ নেই। আমার পিতা আল্লাহর নির্দেশে ও তত্ত্বাবধানে তিরইয়াকে এলাহী নামক একটি ঔষধ তৈরি করছিলেন, যার বড় অংশ ছিল আফিম। ঐ ঔষধ তিনি তার খলীফা নুরুদ্দীনকে দিতেন। তিনি ও বিভিন্ন রোগের জন্য সময় সময় তা ব্যবহার করতেন’। (মাহমুদ আহমদের ‘‘আল- ফজল’’ পত্রিকায় প্রকাশিত ১৯ জুলাই ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ।) দেখুন, তার স্বীকারোক্তি, প্রতারণা ও ধৃষ্টতা। সে কেমন করে আফিমকে হালাল করতে চায় এবং জন সাধারণকে দিয়ে বলে, সে আল্লাহর নির্দেশে ইহা ব্যবহার করছে। অথচ, মুহাম্মদের রব বলছেন ‘‘হারামের মধ্যে আরোগ্য নেই।’’ আর এটা কীরূপ হারাম? যে হারাম থেকে সাধারণ মানুষও ভয় পায়। এ লোকটি কেমন করে নবুয়তের দাবিকরে এবং ঐসকল লোকদের মোকাবিলায় গর্ব করে যারা এ সকল ঘৃণিত অপবিত্র বস্ত্ত থেকে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র লোক ছিলেন। অপর এক কাদিয়ানী এ ভাবে সাক্ষ্য প্রদান করেছে যে, এ ভন্ডনবী আফিমখোর কি না তা সে জানে না। সে একজন প্রেসের মালিক। সে বলেছে যখন গোলাম প্রথম বারের মত আমার প্রেসে আসল এবং চেয়ারে বসে ঐ পুস্তক সম্পর্কে আলোচনা করতে লাগল যা সে ছাপাতে চায়, তখন তার মোদিত নিদ্রা মগ্ন চক্ষু-দ্বয় দেখে বুঝতে পারলাম যে, সে ভাং অথবা আফিম ব্যবহার করে। যেমন, সে সময়কার বড় লোকেরা ব্যবহার করত। কিন্তু এখন আমি বুঝলাম, যে নেশা তার মধ্যে আমি দেখেছিলাম তা আফিম বা ভাং এর নেশা নহে বরং তা ছিল আল্লাহর মা‘রেফাতের নেশা। (আল-ফজল পত্রিকায় নুর আহমদের বর্ণনা, ২০ আগস্ট ১৯৪৬ খৃ:) আর মদ সম্পর্কে গোলাম আহমদ লাহোরে তার এক মুরিদের কাছে লিখেছিল, বলুমর নামক ব্যক্তির দোকান থেকে ওয়াইন (মদ) কিনে তার কাছে যেন পাঠায়। মুরিদ যখন বলুমরকে জিজ্ঞেস করল ওয়াইন কি? বলুমর উত্তর দিল ইহা এক প্রকার শক্তিশালী নেশাদার মদ যা সীল করা বোতলে ইংলান্ড থেকে আমদানি করা হয়। (কাদিয়ানী ডাক্তার মুহাম্মদ হুসাইনের ‘‘মাকতুবুল ইমাম বিইসমিল গোলাম’’ ৫পৃষ্ঠা এবং ডাক্তার মুহাম্মদ আলী আল-মুসলিমের লিখিত ‘‘জুনুনুল গোলাম’’ ৩৯ পৃষ্ঠা) অপর একজন কাদিয়ানী ডাক্তার বসারত আলী আমাদের কথার সত্যতা স্বীকার করে এবং সাক্ষ্য প্রদান করে বলেছে যে, গোলাম আহমদ মদ পান করত। সে আরো বলেছে যে, অসুস্থ অবস্থায় ‘বরান্ডি’ ও ‘র্যাম্প’ [১ বরান্ডি ও র্যাম মদের দু‘টি প্রকার।] ব্যবহারে কি অসুবিধা থাকতে পারে এবং রোগের কারণে আমার ইমাম যদি তা ব্যবহার করেন বা কাউকে ব্যবহার করার অনুমতি দেন তবে তাতে দোষ কি? আর এটা সকলের জানা কথা যে, তিনি একজন দুর্বল লোক ছিলেন, তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেত। কখনও নাড়ির স্পন্দন লোপ পেয়ে যেত । এ সকল অবস্থায় যদি তিনি মদ্য-পান করেন তবে তা শরীয়ত বিরোধী নহে বরং এটাই শরীয়ত। (কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘পয়গামে সুন্নাহ’’ ১৩মার্চ ১৯৩৫ খৃ:) আল্লাহ পানাহ, আল্লাহ পানাহ! এ সকল ওজর আপত্তি হতে। তবে, কেন স্পষ্ট বলা হচ্ছে না যে, গোলাম আহমদ আমাদেরকে যে শরীয়ত প্রদান করেছে উহাতে মদ্য-পান বৈধ। নবুয়তের চাদর চুরি, এবং হযরত আবু বকর ও ওমরের সম্মান হরণের মত জঘন্য অপরাধের পর মদ্য-পানের স্বীকারোক্তিতে আর কি দোষ আছে? হাঁ ওমর এমন সম্ভ্রান্তশীল মর্যাদাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন যিনি মদ্য-পান নিষিদ্ধ হওয়ার উপর বার বার জোর দিতেন। অবশেষে, মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেন, ‘‘নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা ও লটারির তীর অপবিত্র ও শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো থেকে বিরত থাক, অবশ্যই তোমরা সফলকাম হবে।’’ [২ সুরা মায়েদা- ৯০] এই সে দালাল ও অপমানিত গোলাম যে তার ভক্তদেরকে বাইয়াত কালে এ শর্তারোপ করত তারা যেন কাফের ইংরেজ সরকারের অনুগত ও সেবক হয়। [১ গোলাম কাদিয়ানীর দামীমা পুস্তকের বারিয়াহ অধ্যায়ের ৯ নং পৃষ্ঠা] সে নিজেকে এমন দু‘জন শহীদ ইমামের উপর প্রাধান্য দেয়, যাদের জন্য স্বয়ং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বার থেকে অবতরণ করে তাদেরকে উঠিয়ে নিতেন এবং তাদেরকে সম্মুখে রেখে খুতবা দিতেন। [২ তিরমিজী, নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ ও আবু দাউদ]
আর যাদের সম্পর্কে নবী করীম বলেছেন ‘‘বেহেস্তবাসী যুবকদের সর্দার হলেন হাসান ও হুসাইন।’’ [৩ তিরমিজী, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমদ।] শুধু তা নহে বরং এ জঘন্য মিথ্যাবাদী ভন্ডনবী কোন কোন সাহাবীকে বোকা বলত। সে বলত যে, হযরত আবু-হুরাইরা রা. নির্বোধ ছিলেন, তার সঠিক বোধশক্তি ছিল না। (গোলামের ‘‘এজাজে আহমদী’’ ১৮পৃষ্ঠা) সে আরো বলেছে: কোন কোন সাহাবী ছিলেন নির্বোধ। (‘নছরুল হক’ এর পরিশিষ্ট ১৪০ পৃষ্ঠা) প্রকৃতপক্ষে, সে নিজেই ছিল বোকা ও মূর্খ। সে নিজেই তার সম্পর্কে বলেছে, ‘আমার স্মরণ শক্তি খুবই খারাপ’। যে ব্যক্তি কয়েকবার আমার সাথে সাক্ষাৎ করেছে, তাকেই আমি ভুলে যাই। এ অবস্থা এত দুর পর্যন্ত পৌঁছেছে যা বর্ণনা করা সম্ভব নহে। (মাকতুবাতে আহমদিয়া ৫ম খন্ড ২১পৃষ্ঠা।) কার্যত: তার নির্বোধতা এ পর্যন্ত পৌঁছেছে যে, সে কাপড় উল্টো পরিধান করত। নীচের অংশ উপরে এবং উপরের অংশ নীচে, ডান পায়ের জুতা বাম এবং বাম পায়ের জুতা ডান পায়ে পরত। তার বোকামী এ পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ইস্তেঞ্জার জন্য তার পকেটে রাখা মাটির ঢেলা সে মিষ্টি মনে করে খেয়ে ফেলত। এই তো তাদেরই স্পষ্ট বক্তব্য, তার পুত্র বশীর আহমদ কাদিয়ানী বলে যে, ডাঃ মুহাম্মদ ইসমাইল কাদিয়ানী আমাকে বলেছেন: ‘আমাদের ইমাম এতই সাধাসিধে ছিলেন, কথনও কখনও তিনি পাঁয়তারা পরিধান করতে গিয়ে পাঁয়তারার গোড়ালির দিকটাকে পায়ের উপরের দিকে রেখে দিতেন, বোতামকে সোজা ছিদ্রিতে না লাগিয়ে কখনও নীচের বোতামকে উপরের ছিদ্রিতে এবং উপরের বোতামকে নীচের ছিদ্রিতে লাগাতেন। কখনও তার কোন বন্ধু কোন পরিধান বস্ত্র হাদিয়া স্বরূপ নিয়ে আসলে সে উহার ডান বাম বুঝতে পারত না। এ জন্যই সে এমন জুতা পছন্দ করত যার ডান বামে কোন পার্থক্য নেই। খাওয়ার বেলায় ও তার এ অবস্থা ছিল। সে নিজেই বলত যে ‘আমি কি খাচ্ছি তা আমি অনুভব করি না। তবে কোন কঙ্কর বা শক্ত কিছু দাঁতে ঠেকলে তা অনুভব করা যায়। (বশীর আহমদ কাদিয়ানীর ‘‘সীরাতে মাহদী’’ ২য় খন্ড ৫৮ পৃষ্ঠা) তার জনৈক ভক্ত কাদিয়ানী আলেম লিখেছে যে, গোলাম আহমদ গুড় পছন্দ করত এবং সে বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত ছিল। সে পকেটে মাটির ঢেলা রাখত যেমন করে গুড়ের চাকা সে পকেটে রাখত; কারণ সে উহাকে খুব পছন্দ করত। তাই কোন কোন সময় সে মাটির ঢেলাকে গুড়ের চাকা মনে করে খেয়ে ফেলত। (বারাহীনে আহমদিয়ার পরিশিষ্টে ‘‘আহ-ওয়ালুল গোলাম বিতারতীবে মে‘রাজুদ্দীন’’ ১ম খন্ড ৬৭ পৃষ্ঠা।) এমন বোকা ও নির্বোধ লোক নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাগণকে নির্বোধ বলে! শুধু তাই নহে বরং সে নিজেকে শেখাইন আবু বকর ও ওমর রা. ও সকল সাহাবীর উপর প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করে। এখন আমরা তার কিছু ভ্রমাত্মক বক্তব্যের বর্ণনা দিচ্ছি। সে নবী রাসূলগণের উপরও নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে বাদী করে। সে নিজেকে আদম আলাইহিস সালাম এর উপরও প্রাধান্য দিয়ে বলছে ‘আল্লাহ তা‘য়ালা আদম আলাইহিস সালাম কে সৃষ্টি করে অনুসরণীয় সরদার বানিয়েছেন, আর, তাকে প্রত্যেক প্রাণীর উপর প্রধান ও শাসক নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহর বাণী ‘‘আদমকে তোমরা সেজদা কর’’ দ্বারা তা প্রমাণিত। অতঃপর শয়তান তাকে বিভ্রান্ত করে বেহেস্ত থেকে বের করে ফেলে। তাই, ক্ষমতা শয়তানের কাছে চলে যায়, আর আদম লাঞ্ছিত ও অপদস্ত হয়ে পড়েন..........। তারপর শয়তানকে পরাজিত করার জন্য আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করেছেন। কুরআনে আল্লাহপাক এরই প্রতিশ্রুতি ও দিয়েছেন। (গোলাম রচিত ‘‘মালফরকু ফি আদম ওয়াল মাসীহুল মাওউদ’’।) সে বলে ‘আল্লাহ আমাকে আদম রূপে সৃষ্টি করেছেন। এবং আদমকে যাহা কিছু দিয়েছেন তা আমাকেও দিয়েছেন। কেননা, আদিতে আল্লাহ পাক এমন আদম সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেছেন, যে হবে সর্বশেষ খলীফা। যেমনিভাবে তিনি আদিতে প্রথম খলীফা সৃষ্টি করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন’। (গোলামের খুতবায়ে ইলহামী ১৬৭ পৃষ্ঠা) মাহমুদ আহমদ এ কথাকে আরো স্পষ্ট করে বলেছে- আল্লাহ তা‘য়ালা ফেরেস্তাগণকে আদমের অনুগত সেবক হতে নির্দেশ দিলেন। প্রথমের জন্য যেহেতু এ নির্দেশ দেয়া হয়, তবে প্রতিশ্রুত মাসীহ দ্বিতীয় আদম যিনি মর্যাদার দিক দিয়ে প্রথম আদম থেকেও শ্রেষ্ঠ তার বেলায় কেন বলা যাবে না যে, এ আগুন তোমার দাস বরং তোমার দাসের দাস হোক। (মাহমুদ আহমদের ‘‘মালাইকাতুল্লাহ’’ ৬৫ পৃষ্ঠা।) আর সে নিজেকে আল্লাহর সেই মহান নূহ আলাইহিস সালাম নবীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করে, যিনি স্বীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘ সাড়ে নয়শো বছর অবস্থান করেছেন। তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহবান করতেন, উপদেশ দিতেন এবং সঠিক পথ প্রদর্শন করতেন। (যিনি আল্লাহর পথে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন।) যাকে আল্লাহর পথে অনেক কষ্ট দেয়া হয়েছে এবং কঠিন পরীক্ষা করা হয়েছে। এটা তাঁর ব্যক্তি সার্থে নহে এবং সম্পদ ও সম্মান লাভের উদ্দেশ্যে নহে, বরং আল্লাহর দ্বীনকে সুমহান করার কাজে তাকে সহ্য করতে হয়েছে। তিনি সেই মনীষী ছিলেন যিনি তার সম্প্রদায়কে সম্বোধন করে বলেছিলেন ‘‘.হে আমার কওম, আমি এ কাজের উপর তোমাদের নিকট থেকে কোন সম্পদ চাচ্ছি না , এর বিনিময় একমাত্র আল্লাহই আমাকে দিবেন।’’ [১ সুরা হুদ-২৯] এমন ব্যক্তির উপর ঐ লোক নিজেকে প্রাধান্য দিচ্ছে যে সাম্রাজ্যবাদীদের সেবা করত এবং ইংরেজের দাসত্ব করত, আর, একেবারে স্পষ্ট ও নির্লজ্জ ভাবে তার সাথে নিজ সেবার বিনিময়ের প্রত্যাশী ছিল। তাইতো দেখা যায়, একদা সে তার বিরাট খেদমতের কথা উল্লেখ করার পর বড়লাটের কাছে তোষামোদ স্বরূপ বলে- আঠারোটি বছর অতিবাহিত হল আমি ঐ সব পুস্তক রচনায় রত ছিলাম, যেগুলো মুসলমানদের অন্তরে তোমাদের প্রতি ভালোবাসা, আনুগত্য ও বন্ধুত্ব ভাব সৃষ্টি করবে, অথচ অধিকাংশ আলেম এ সকল কারণেই আমাকে ঘৃণা করছে এবং এ সকল মতামতের উপর ক্রোধের কারণে তাদের অন্তর জ্বলছে।
কিন্তু আমি জানি যে তারা মূর্খ, তারা এ কথা জানে না যে, যারা মানুষের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে জানে না তারা আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ এবং অবদানকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সমতুল্য। এটাই হল আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু বড়ই আক্ষেপ, যে সমস্ত পুস্তক সরকারের প্রতি বিশ্বস্ততা ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ উহার প্রতি আমাদের দয়াল সরকার গুরুত্ব সহকারে দৃষ্টিপাত করেন নি। অথচ আমি অনেকবার তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এখন আমি আপনাদেরকে আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আপনারা যেন আমার এ দরখাস্তে উল্লেখিত পুস্তক সমূহের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন এবং উহার চি হ্নত স্থান ও উল্লেখিত পৃষ্ঠাগুলো বিশেষভাবে পাঠ করেন। ইংরেজ সরকারের গুরুত্ব সহকারে ভাবিয়া দেখা উচিত যে, এ সকল অবিরাম চেষ্টা সাধনা যা দীর্ঘ আঠারো বছর যাবৎ চালিয়ে যাওয়া হয়েছে শুধু ইংরেজ সরকারের আনুগত্যের প্রতি মুসলমানদের মুখ ফিরিয়ে আনা, তাদের অন্তরে এ সরকারের আনুগত্য দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা, এবং বহির্বিশ্বে ইংরেজ সরকারের প্রতি প্রচার চালানোর জন্য। এর কারণ ও লক্ষ কি? আর কি জন্য এ ধরনের পুস্তকাদি প্রচার করা হচ্ছে এবং প্রেরণ করা হচ্ছে ? এবং এর উদ্দেশ্যই বা কি? (ভারতের বড় লাটের প্রতি গোলামের আবেদন পত্র মীর কাসেম আলী রচিত ‘‘তাবলীগে রেসালাত’’ ৭ম খন্ড ১১,১২ও ১৩ পৃষ্ঠার অন্তর্ভুক্ত।) বলুন, যে ব্যক্তি আল্লাহর এবাদতের প্রতি মানুষকে আহবান করার কাজে নিজের জীবনকে ব্যয় করেছেন, আর, যে ব্যক্তি কাফেরদের সেবায় নিজের জীবনকে ব্যয় করে, এত দু ভয়ের মধ্যে কি কোন সামঞ্জস্য আছে? আর, সেই ব্যক্তি এ কাজের জন্য গর্ব করে যে, সে ইংরেজ সরকারের সেবায় তার জীবনকে ব্যয় করেছে এবং ঐ সকল পুস্তকের রচনায় দীর্ঘ উনিশটি বছর অতিবাহিত করেছে যা মানুষকে এ সরকারের সেবা করা অপরিহার্য বলে উদ্বুদ্ধ করে এবং মুসলমানদের মনে এ কথা সুদৃঢ় করে যে তারা অন্যান্য জাতির তুলনায় এ সরকারের প্রতি অধিক বিশ্বস্ত ও নিষ্ঠাবান। আর, এ উদ্দেশ্যেই সে কোন কোন পুস্তক আরবী ভাষায় এবং কোনটি ফার্সী ভাষায় রচনা করে দূর-দেশে প্রচার করে। যাতে, সর্বস্থানের মুসলমানগণ ব্রিটিশ সরকারের একেবারে অনুগত হয়ে যায়; আর এ আনুগত্য যেন তাদের অন্তর ও আত্মা হতে উৎসারিত হয়। (গোলাম আহমদ রচিত ‘‘কাশফুল গাতা’’ ৪০৩ পৃষ্ঠা) অপর এক পুস্তকে সে বলে, ‘আমি যে সব পুস্তক প্রচার করছি, তার সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারে পৌঁছেছে। আর, আমি এগুলো মক্কা, মদিনা, কন্সান্টিনিপল, সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকা, মিসর ও আফগানিস্তান সকল স্থানেই যথা সম্ভব প্রচার করেছি। এ সকল পুস্তকের ফলাফলও প্রকাশ পেয়েছে। লক্ষ লক্ষ মুসলমান যারা জিহাদে (আল্লাহর পথে যুদ্ধ) বিশ্বাস করত, তারা এ অপবিত্র বিশ্বাসকে যা তাদের অন্তরে বদ্ধ মূল ছিল এবং মূর্খ আলেমগণ তাদেরকে এ শিক্ষা দিয়েছিলেন তারা এখন বর্জন করেছে। এটা একটি বিরাট অবদান যা আমার কাছ থেকে প্রকাশিত হয়েছে, এবং এর দ্বারা আমি সমস্ত ভারতীয় মুসলমানদের উপর গর্ব করতে পারি যে, এরূপ অবদানের দৃষ্টান্ত পেশ করতে আর কেহ সক্ষম হবে না। (গোলাম রচিত ‘‘সিতারায়ে কায়সারা’’ ৩ পৃষ্ঠা।)এই সে কাফের সাম্রাজ্যবাদীর সেবার উপর গর্বকারী ব্যক্তি আল্লাহর নবী নূহের (আঃ) উপর নিজেকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বলে যে, আল্লাহ ত‘য়ালা আমার দাবির সত্যতায় এত অধিক নিদর্শনা বলী ও দলীল প্রমাণ নাযেল করেছেন; যদি এগুলো নূহের আঃ. উপর নাযেল করা হত তবে তাঁর কওমের কেহই ডুবে মরত না।’’ কিন্তু এ সকল বিরুদ্ধবাদীদের উদাহরণ হল ঐ অন্ধের ন্যায় যে উজ্জ্বল দিবসকে রাত বলে, দিন নহে। (গোলাম রচিত ‘‘তাতিম্মাতু হাকীকাতুল ওহী’’ ১৩৭ পৃষ্ঠা।)এতদ্ব্যতীত সে ঐ নবীর পেছনেও পড়েছে যার সম্মুখে রাজত্ব পেশ করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। যতক্ষণ না ঐ সকল মহিলারা তার নির্দোষ ও পবিত্রতার জন্য সাক্ষ্য প্রদান করে, যারা নিজ নিজ হাত কেটে ফেলেছিল। তিনি মিসরের শাসকের স্ত্রীর সহিত অবৈধ আচরণের পরিবর্তে কারা বরণ করে নিয়েছিলেন, নবুয়তের দাবিদার মিথ্যুক লোকটি আল্লাহর এ নবীর বিরুদ্ধে লেগেছে, যার পিতাও ছিলেন নবী এবং যার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ‘‘করীম বিন করীম বিন করীম’’ [১ সহীহ বুখারী।] মহান নবীর পুত্র, মহান নবীর পৌত্র আর তারই সম্বন্ধে বিশ্বাস ঘাতকের সন্তান বিশ্বাস ঘাতক বলে যে, ‘সে তার চেয়েও উত্তম ও শ্রেষ্ঠ’। সে এমন ব্যক্তি যে নিজ বংশের এক দরিদ্র মহিলার প্রেমে পড়েছিল এবং তাকে পাওয়ার জন্য তার পিতার দরিদ্রতা ও অভাবের সুযোগ গ্রহণ করেছিল। কখনও তাকে আশা দিত এবং কখনও তাকে ভয় প্রদর্শন করত। পুনরায় তাকে আশা দিত আবার ধমকও দিত। অতঃপর সে তার প্রেম ও ভালোবাসায় পড়ে এতই নিম্ন স্তরে চলে গিয়েছিল যে, তার বৃদ্ধা স্ত্রীকে তালাক দিতেও দ্বিধাবোধ করেনি। কারণ সে তার প্রেমিকাকে শিকার করতে সহায়তা ও মধ্যস্থতা করেনি। এমনি ভাবে, সে তার পুত্রকেও বর্জন করে, যে তাকে তার ইচ্ছা পূরণে সাহায্য করেনি। সে দ্বিতীয় পুত্রকে তার স্ত্রী তালাক দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। কারণ, তার প্রেমিকার সাথে ঐ মহিলার আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে এবং সে তার ঐ সম্পর্ক দ্বারা এই মহিলার মাতা-পিতাকে বাধ্য করেনি। কেননা তার মা হলেন ঐ প্রেমিকার ফুফু। যখন তার ছেলে পিছু হটে যায় এবং ইতস্তত: করে, তখন সে তার প্রতি এই বলে সতর্ক বাণী পাঠায় যে, যদি তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক না দাও, তবে তুমি ও তোমার পূর্ববর্তী ভ্রাতার ন্যায় উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। কার্যত এ নিরীহ মেয়েটিকে বিনা অপরাধে তালাক দেয়া হয়। এখানেই সে ক্ষান্ত হয়নি, বরং নির্দ্বিধায় সে আত্মীয়তার সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতে শুরু করে। এ ব্যাপারে যে কেহ তার বিরোধিতা করে, তাকে সে এই বলে হুমকি দেয় যে, আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দেবেন। কেননা, আকাশের উপরেই প্রেমিকার বিবাহ তার সাথে সম্পন্ন হয়ে গেছে। যদি কেহ এই মহিলাকে বিবাহ করে তবে সে মারা যাবে এবং যে বিবাহ দিয়েছে সেও। এমনি ভাবে সে আরো বলত যে এ মহিলা বিবাহ হয়ে গেলেও বা বিধবা হওয়ার পর হলেও তার কাছে অবশ্যই ফিরে আসবে। কেননা, মহিলার ফিরে আসা এবং আমার সাথে তার বিবাহ আল্লাহর অকাট্য সিদ্ধান্ত। [২ যা বাদ পড়েনা এবং যা সংঘটিত হওয়া অনিবার্য ।] অবশেষে, এ প্রেমিক ভন্ডনবী তার এ অনুতাপ নিয়েই মৃত্যু বরণ করে। অপরদিকে তার প্রেমিকা অন্যত্র বিবাহ বসে ঘর সংসার করে এবং গোলামের অন্তর জ্বালিয়ে ও তাকে বোকা সাজিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বামীর আশ্রয়ে জীবনযাপন করে। এরূপ ব্যক্তি কি নিজেকে ইউসূফ আলাইহিস সালাম এর সাথে তুলনা করতে পারে? শুধু তুলনাই করছে না বরং তার উপর নিজেকে প্রাধান্য দিয়ে বলে, আমি এই উম্মতের ইউসুফ অর্থাৎ আমি অক্ষম ও অধম বনী ইসরাইলের ইউসুফ হতে উত্তম। কারণ, আল্লাহ তা‘য়ালা নিজে এবং অনেক নিদর্শনা বলী দ্বারা আমার পবিত্রতার সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। অথচ ইউসুফ বিন ইয়াকুব বিন ইছহাক বিন ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম নিজের পবিত্রতার জন্য মানুষের সাক্ষীর প্রতি মুখাপেক্ষী হয়েছেন। (গোলামের বারাহীনে আহমদিয়া।)
একজন দরিদ্র মহিলার জন্য ওহে একজন লাঞ্ছিত ব্যক্তি, ইউসুফ বিন ইয়াকুব বিন ইছহাক বিন ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এ সম্মুখে তোর অবস্থান কোথায়? যে ইউসুফ আঃ. আজীজের স্ত্রী এবং শহরের সম্ভ্রান্ত মহিলাদের থেকে নিজেকে ঊর্ধ্বে রেখেছেন। ওহে জালেম ও স্বার্থপর! তুই তোরই বংশের একজন লোক থেকে সুযোগ নিতে উদ্যোগী হয়েছিলে যে তোর কাছে তার কোন ব্যাপারে সাহায্য কামনা করতে এসেছিল এবং তুই তাকে এই ভাষায় উত্তর দিয়েছিলে- ‘শ্রদ্ধেয় ভাই আহমদ বেগ, ‘‘আল্লাহ তাকে নিরাপত্তা দান করুন!’’ আমি এই মাত্র মুরাকাবা শেষ করলাম। অতপর নিদ্রা আমাকে আচ্ছন্ন করে এবং আমি স্বপ্নে দেখি, আল্লাহ আমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন তোমাকে এ কথা অবগত করতে ‘‘তুমি যেন তোমার কুমারী মেয়েকে আমার নিকট বিয়ে দিয়ে দাও।’’ তা হলে তুমি আল্লাহর সমূহ মঙ্গল, বরকত, দান ও সম্মানের অধিকারী হবে এবং তোমার সকল বিপদাপদ দূরীভূত হবে। আর, যদি তোমার মেয়েকে আমার কাছে বিবাহ না দাও, তা হলে তুমি তিরস্কার ও শাস্তির সম্মুখীন হবে। আল্লাহর আদেশ তোমার কাছে পোঁছিয়ে দিলাম, যাতে তুমি তাঁর অনুগ্রহ ও সম্মান লাভ করতে পার এবং তাঁর নেয়ামতের ভান্ডার তোমার উপর খুলে যায়। তুমি জান যে, আমি তোমাকে সম্মান করি এবং তোমার সম্মুখে আদব রক্ষা করে চলি। আর আমি তোমাকে একজন খাঁটি ঈমানদার ধর্মপরায়ণ মনে করি এবং তুমি আমার কাছে অতি সম্মানিত। তোমার আদেশ পালনে আমি গর্ববোধ করি এবং তুমি যে অঙ্গীকার পত্র আমার কাছে নিয়ে আসছিলে উহাতে সাক্ষর করতে আমি প্রস্ত্তত আছি। তদুপরি, আমার সম্পূর্ণ সম্পত্তি তোমার জন্য ও আল্লাহর জন্য। আর তোমার ছেলে আজিজ বেগের জন্য পুলিশ বিভাগে চাকুরি লাভের ব্যাপারে সুপারিশ করতে আমি প্রস্ত্তত আছি। অনুরূপ, কোন এক বিত্তশালীর মেয়ের সহিত তাকে বিবাহ দিতেও তৈরি আছি’। (আহমদ বেগের কাছে গোলামের পত্র ‘‘নবীস্তায়ে গায়েব’’ পুস্তকের ১০০ পৃষ্ঠা থেকে উদ্ধৃত।) আহমদ বেগের কাছে অপর এক পত্রে সে লিখেছে ‘যদি তুমি তোমার মেয়েকে আমার সহিত বিবাহ দাও, তবে আমার বাগান ও স্থাবর সম্পত্তির এক বড় অংশ তোমাকে দেব এবং তোমার মেয়েকে আমার সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ দান করব। আমি সত্যই বলছি। তুমি যা চাইবে তাই দেব। আমার মত আত্মীয়তা রক্ষাকারী আর কোন লোক তুমি পাবে না’ (গোলাম কাদিয়ানীর ‘‘আয়নায়ে কামালাতে ইসলাম’’ ৫৭৩ পৃষ্ঠা)
যখন সে দেখল যে, তার এ সকল উৎসাহ ও আগ্রহ দান বাতাসের সহিত মিশে গেছে তখন সে রাগে জ্বলে উঠে এবং তার ছেলের শ্বশুর আলী শের বেগের কাছে লিখল, যিনি আহমদ বেগের ভগ্নীপতি, সম্মানিত আলী শের বেগ, আমি শুনতে পেলাম যে, আহমদ বেগ তার মেয়েকে আমার নিকট বিবাহ দিতে চায় না, বরং আমি ছাড়া অন্য কারো নিকট বিবাহ দিতে ইচ্ছুক। আমি আশা করি, তোমার আত্মীয়তার সুবাদে তুমি এ ব্যাপারে মধ্যস্থতা করবে। আর তাদেরকে আমার কাছে ঐ মহিলাকে বিবাহ দিতে বাধ্য করবে। আমি কি কোন ঝাড়ুদার বা নীচ বংশের লোক, যে কারণে তারা আমাকে ছেড়ে অন্যের কাছে মেয়েটিকে বিবাহ দেবে? ইতিপূর্বে তোমার স্ত্রীর কাছেও একটা রেজিষ্টারী পত্র লিখেছি, সে যেন তার ভাইকে বাধ্য করে। কিন্তু সে আমার পত্রের উত্তর দেয়নি। বরং আমি শুনেছি যে, সে আমার সম্পর্কে বলে: এ ইতর ব্যক্তি মৃত্যুর নিকটবর্তী হয়েও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গেছে। তার জন্য আমরা কিছুই করতে পারব না। (এ সময় তার বয়স ছিল পঞ্চাশের ঊর্ধ্বে এবং সে বিভিন্ন ব্যাধি যথা হিষ্ট্রিয়া, মস্তিষ্ক বিকৃতি, ডায়বেটিক ও প্যারালাইসেস রোগে আক্রান্ত ছিল।) এখন আমি তোমাদের কাছে স্পষ্টভাবে লিখছি যদি তোমরা আমাকে সাহায্য না কর এবং আহমদ বেগ ঐ মেয়েকে অন্য কারো কাছে বিবাহ দেয়, তবে যে দিন ঐ মেয়ের বিবাহ হবে সে দিনই আমার পুত্র ফজল আহমদের সাথে তোমাদের যে মেয়ের বিবাহ হয়েছে, তার তালাক নামা তোমাদের কাছে পৌঁছে যাবে। (আলী শেরের নিকট লিখিত গোলামের পুত্রের সার সংক্ষেপ, ২মে ১৮৯১ খৃ:।) কার্যত: এ মেয়েটির বিবাহ হওয়ার পরপরই শের আলীর মেয়ের তালাক হয়ে যায়। আর তার দ্বিতীয় পুত্র উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হয়। কেননা এ মহিলার আত্মীয় স্বজনের সাথে তার পিতার সম্পর্ক ছিন্ন হবার পরও সে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। যেমনি ভাবে, গোলাম তার বৃদ্ধা স্ত্রীকে ঐ একই কারণে তালাক দিয়েছিল, যেহেতু সে তার এ কাজে সাহায্য করেনি।(গোলামের পুত্র বশীর আহমদ লিখিত ‘‘সীরাতে মাহদী’’ ১ম খন্ড ২২পৃষ্টা।)
আর আমাদের আলোচ্য এ পাগলটি বিরহ বিচ্ছেদের ময়দানে অস্থির ও হায় হুতাসে পড়ে রইল। ঐ মহিলার স্বামী সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক ছিল, তার মৃত্যুর সম্ভাবনা নিয়ে সে নিজেকে প্রতারিত করতে লাগল। যেমন, সে তার এক পত্রে লিখছে: ‘আমি আল্লাহর নিকট বিনয় ও আহজারীর সহিত প্রার্থনা করি। তখন আমার কাছে ইলহাম (ঐশী বাণী) হল- ‘অচিরেই আমি তাদেরকে আমার নিদর্শন দেখাব, ঐ মেয়েটি বিধবা হয়ে যাবে এবং তার স্বামী ও পিতা তিন বছরের মধ্যে মারা যাবে। আর, ঐ মহিলাটি তোমার কাছে ফিরে আসবে। এটা কেহই বাধা দিয়ে ঠেকাতে পারবে না’’। (ইলহামুল গোলাম ‘‘নবীস্তায়ে গায়েব’’ থেকে উদ্ধৃত।)
আল্লাহর কুদরত যে, তরবারি ও আগুনের ছায়াতলে জীবন যাপনকারী সেই লোকটি মারা যায়নি, যেমনটা ভন্ডনবী আশা করেছিল। বরং এই জ্ঞান-হারা প্রেমিক তার সকল স্বপ্ন ও অমূলক আশা নিয়ে মারা গেল এবং তার সফল প্রতিদ্বন্দ্বী তার মৃত্যুর পর কয়েক দশক পর্যন্ত বেঁচে রইল। এমন এক ব্যক্তি ঐ লোকের সাথে শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা দাবি করছে যার পবিত্রতা সম্পর্কে শহরের মহিলাগণ সাক্ষ্য প্রদান করছিল। তাদের শীর্ষে ছিলেন আজীজের স্ত্রী। তাদের উক্তি ছিল: ‘‘আল্লাহর জন্য সকল পবিত্রতা, আমরা তাঁর সম্পর্কে খারাপ কিছু জানি না ।’’ আজীজের স্ত্রী বললেন, এখন সত্য প্রকাশিত হয়ে গেছে, আমিই তাকে ফুসলিয়েছিলাম, আর তিনি নিশ্চয়ই সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত। [১ সুরা ইউসুফ ৫১] তাঁর সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন: ‘‘তিনি আমার নিষ্ঠাবান বান্দাগণের অন্তর্ভুক্ত।’’ [১ সুরা ইউসুফ ২৪] আর তাকে রাজত্ব ও জ্ঞান [২ সুরা সুরা ইউসুফ ২১ নং আয়াতের দিকে ইংগিত করা হয়েছে।] সহ আল্লাহ তাআলা স্বপ্নের ব্যাখ্যা [৩ সুরা ইউসুফ ২১ নং আয়াতের দিকে ইংগিত করা হয়েছে।] করার যোগ্যতা দান করেছেন এবং বিশ্বস্ত বন্ধু [৪ সুরা ইউসুফের ৪৬ ও ৫৪ নং আয়াতের দিকে ইংগিত করা হয়েছে।] ও আমীন উপাধিতে ভূষিত করেছেন।
এখন আমি আরও উল্লেখ করছি যে, সে নিজেকে এমন মনীষীর উপর প্রাধান্য দিয়েছে, যার সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন- ‘‘মরিয়মের পুত্র ঈসাকে আমি স্পষ্ট প্রমাণাদি দান করেছি এবং রুহুল কুদুস অর্থাৎ জিবরাঈল আলাইহিস সালাম দ্বারা তাকে শক্তিশালী করেছি’’ [৫ সুরা বাকারা ৮৭] ‘‘নিশ্চয়ই, মরিয়াম পুত্র ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর রাসূল ও তাঁর বার্তা যা মরিয়মের নিকট পাঠিয়েছেন এবং তিনি আল্লাহর আদিষ্ট রূহ।’’ [৬ সুরা নিসা ১৭১] ঈসার আলাইহিস সালাম ভাষায় আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন- ‘‘আমি আল্লাহর বান্দা, আল্লাহ আমাকে কিতাব প্রদান করেছেন, এবং আমাকে নবী বানিয়েছেন। আর আমি যেখানেই থাকি আমাকে বরকতময় করেছেন। আমাকে নামাজ ও যাকাতের নির্দেশ দিয়েছেন যে পর্যন্ত আমি জীবিত থাকি এবং আমাকে আমার মাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের আদেশ করেছেন আমাকে অত্যাচারী ও হতভাগা করেন নি। আমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং যেদিন আমি মৃত্যুবরণ করব, আর যেদিন আমাকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে’’। [৭ সুরা মরিয়াম ৩০-৩৩] আর এই ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে এই তুচ্ছ বান্দা [৮ এই গুণ দ‘টি গোরাম তার নিজের জন্য ব্যবহার করেছে। পূর্বে যেরূপ বর্ণিত হয়েছে।] (কাদিয়ানী) বলে: আল্লাহ তাআলা এ উম্মতের মধ্যে এমন একজন মাসীহ পাঠিয়েছেন, যার মর্যাদা প্রথম মাসীহ হতে অনেক উচ্চে। আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, যে যুগে আমি জীবন যাপন করছি, সেই যুগে যদি ঈসা আলাইহিস সালাম বর্তমান থাকতেন; তবে, আমি যা করছি তিনি তা করতে পারতেন না।(‘‘আমি যা করছি’’ এর দ্বারা যদি সাম্রাজ্যবাদীদের এবং কাফেরদের দাসত্ব উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তা হলে ঠিকই আছে।) এবং আমি যে সকল নিদর্শনা বলী ও ঘটনাবলী প্রকাশ করছি, তা প্রকাশ করা তার পক্ষে সম্ভব হত না। ( গোলাম কাদিয়ানীর ‘‘হাকীকতে ওহী’’ ১৪৮ পৃষ্ঠা।) সে আরো বলেছে: ‘‘মরিয়াম পুত্র ঈসা আমা হতে, আর, আমি আল্লাহ হতে। সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে আমাকে চিনতে পেরেছে এবং দুর্ভাগা সেই ব্যক্তি যার চক্ষুর আড়ালে আমি রয়েছি’’। (মাকতুবাতে আহমদিয়া ৩য় খন্ড ১১৮ পৃষ্ঠা।) আর, তার পুত্র বলে যে, ‘‘আমার পিতা বলেছেন- ‘তিনি আদম, নূহ ও ঈসা আলাইহিস সালাম থেকে শ্রেষ্ঠ’। কেননা, শয়তান আদমকে বেহেস্ত থেকে বের করে দিয়েছে, আর তিনি আদম সন্তান কে বেহেস্তে প্রবিষ্ট করবেন। ঈসাকে ইহুদীরা শূলবিদ্ধ করেছে এবং তিনি শূল ভাঙবেন। তিনি নূহ আলাইহিস সালাম হতে ও উত্তম। কেননা, তার বড় ছেলে হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়েছে; কিন্তু তার পুত্র (গোলামের) হেদায়েতে প্রবেশ করেছে। (গোলাম পুত্র মাহমুদ আহমদের বক্তৃতার সার সংক্ষেপ, ‘যা আল ফযল পত্রিকায়’ ১৮ জুলাই ১৯৩১ খৃ: সংকলিত।)
মুহাম্মদ আহসান নামক জনৈক কাদিয়ানী মুবাল্লেগ লিখেছে: পূর্বেকার ‘উলুল আজম’ বা নেতৃস্থানীয় দৃঢ় সংকল্প রাসূলগণের কেহই এমন পর্যায়ের ছিলেন না যিনি আমাদের ইমাম মাসীহে মাওউদের মর্যাদায় পৌঁছতে পারেন। হাদীসে ‘‘আছে যদি ঈসা ও মুসা জীবিত থাকতেন তবে আমার অনুসরণ করা ছাড়া তাদের কোন গত্যন্তর থাকত না।’’ [১ এ হাদীসে ঈসা আঃ কে অতিরিক্ত যোগ করা হয়েছে। অথচ হাদীূসের কোন কিতাবেই এরূপ নেই। কাদিয়ানীরা এ হাদীস দিয়ে ঈসা আঃ এর মৃত্যু প্রমানিত করার জন্য দলীল পেশ করে। আঃ] কিন্তু আমি বলি, যদি মুসা ও ঈসা আমাদের ইমামের যুগে জীবিত থাকতেন, তা হলে তার অনুসরণ ছাড়া তাদের গত্যন্তর থাকত না’। (আল-ফজল, ১৮ই মার্চ ১৯১৬খৃঃ)
এ ঘৃণ্য দুঃসাহসিকতার প্রতি লক্ষ্য করুন। কীভাবে নবী রাসূলগণের (তাদের ও আমাদের রাসূলের উপর হাজার হাজার সালাম) অবমাননা ও হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে? কেমন করে একজন দাজ্জাল ও মিথ্যুক নিজের ও আল্লাহর মনোনীত মহাপুরুষগণের মধ্যে তুলনার দাবিকরে? তার শয়তান তাকে এ কথা বলতেও উদ্যত করেছে যে, অনেক নবী আগমন করেছেন কিন্তু কেহই আল্লাহর মা’ রেফাতে আমার অগ্রগামী হতে পারেন নি। সকল নবীগণকে যা কিছু দেয়া হয়েছে, সম্পুর্নরুপে তা একাই আমাকে দেয়া হয়েছে, । (গোলামের দুরের ছামীন ১৮৭ ও ১৮৮ পৃষ্ঠা।)সে আরো বলে: যে সমস্ত গুণাবলি সকল নবীগণের মধ্যে পাওয়া যেত, রাসুলৃল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মধ্যে সে সব গুণাবলি বরং এরও অধিক বিদ্যমান ছিল। এরপর এ সকল যোগ্যতা আমাকে প্রদান করা হয়। এ কারণেই আমার নামকরণ করা হয়েছে আদম, ইব্রাহীম, মুসা, নূহ, দাউদ, ইউসুফ, সুলাইমান, ইয়াহইয়া ও ঈসা’। (মালফুজাতে আহমদিয়া ৪থ খন্ড ১৪২ পৃ:) এর চেয়ে অধিক জঘন্য ব্যাপার হল, যেহেতু গোলাম আহমদের মধ্যে সকল প্রকার কুকর্ম ও মন্দ স্বভাব বিদ্যমান ছিল, কাজেই, সে নবী রাসূলগণকে এ সকল কুকর্মের দ্বারা কলুষিত করতে উদ্যত হয়। তার অভ্যাস উল্লেখ করা হয়েছে যে, সে মদ্যপায়ী ছিল। এ কারণেই, সে আল্লাহর নবী ঈসা আঃ এর উপর এ অপবাদ আরোপ করে বলেছে, ‘‘আমার অভিমত হল মাসীহও মদ্য-পান হতে পবিত্র ছিলেন না।’’ (রিভিউ ১ম খন্ড ১২৩ পৃ: ১৯০২ খৃ:) ‘মাসীহও নিজেকে সৎ বলতে সক্ষম ছিলেন না। কেননা, লোক তাকে মদ্যপায়ী ও ফিতনা সৃষ্টিকারী বলে জানত। (গোলামের ‘‘সৎ ভাজন’’ হাসিয়া ১৭২ পৃষ্ঠা।) আরবী ভাষায় একটি প্রসিদ্ধ প্রবাদ আছে: ‘‘মানুষ নিজের উপর অন্যকে ক্বিয়াস করে’’ তাই , সে বলেছে: ‘মাসীহ মদ্য-পান করতেন। কোন অসুখের কারণে অথবা তার পুরাতন অভ্যাস অনুযায়ী। (গোলামের ‘‘সাফিনায়ে নূহ’’ ৬৫ পৃষ্ঠা।) তার অভ্যাস ছিল, রাতের অন্ধকারে গায়ের মুহাররম রমণীদের সাথে সে মেলামেশা করত। এ চরিত্রের বৈধতা প্রমাণের জন্য সে আল্লাহর নবী ঈসার আলাইহিস সালাম প্রতি অপবাদ আরোপের আশ্রয় নেয়। কাজেই, সে একান্ত নির্লজ্জভাবে বলেছে: ঈসার আলাইহিস সালাম পরিবার এক অদ্ভুত পরিবার। তার তিন মাতামহী ছিলেন দুশ্চরিত্র ব্যভিচারিণী। এ পবিত্র রক্ত? হতে ঈসার সৃষ্টি। হয়তো এ কারণেই ঈসা ব্যভিচারীদের প্রতি আসক্ত ছিলেন। নচেৎ কোন খোদা ভীরু ব্যক্তি ব্যভিচারিণী যুবতীকে তার মাথা স্পর্শ করতে এবং তার অবৈধ সম্পদ দ্বারা আতর লাগাবার অনুমতি দিতে পারে না। অতএব, মানুষের বুঝা উচিত যে, এ মাসীহের চরিত্র কেমন ছিল। (গোলাম রচিত ‘‘আঞ্জামে আথমের’’ পরিশিষ্ট ৭ পৃষ্ঠা।) জানি না, কোথায় লজ্জা ও কোথায় ভদ্রতার অবশিষ্ট অংশ রয়েছে। এটা কি সম্ভব যে কোন ভদ্র ব্যক্তিকে এরূপ অপবাদ দেয়া যায়? বিশেষ করে, যাকে অপবাদ দেয়া হয়েছে তিনি হলেন আল্লাহর এমন নবী যার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা তার প্রেরিত ফেরেশতার মাধ্যমে পবিত্রতার সাক্ষ্য দিয়েছেন ‘‘আমি তোমার প্রভুর দূত, আমি তোমাকে পবিত্র একটি ছেলে দান করতে এসেছি’’। [১ সুরা মারয়াম ১৯] এই যে বিশ্ববাসীর প্রভু সবচেয়ে সত্যবাদী সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম নিষ্পাপ। অতএব, হে পাপিষ্ঠ! তুই কি করে এ দুঃসাহসিকতা দেখাতে সাহস পেলি যে আল্লাহর কথার বিরোধিতা করছিস। অথচ, তুই তো এমন ব্যক্তি যে পর নারীদের সাথে মেলামেশা করছিস এবং রাতের অন্ধকারে তাদেরকে তোর হাত-পা দাবিয়ে দিতে নির্দেশ দিচ্ছিস।
প্রকাশ থাকে যে, স্বয়ং আল-ফজল পত্রিকা সাক্ষ্য দিচ্ছে এবং স্বীকার করছে ও বলছে- ‘মাসীহে মওউদ গোলাম আহমদ নবী ছিলেন। তাই, নারীদের সাথে তার মেলামেশা, স্পর্শ করা এবং তার হাত পা দাবিয়ে দিতে আদেশ করাতে কোন দোষ নেই। বরং এটা ছওয়াব, রহমত ও বরকতের কারণ’। (কাদিয়ানী পত্রিকা ‘আল ফজল’ ২০ মার্চ ১৯২৮ খৃ:) আর. তুমিই বলেছ যে, ‘বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বড়দের উপর দোষারোপ করা, তাদের সমালোচনা করা এবং তাদের নিন্দা করা জঘন্য ও নিকৃষ্ট কাজ’। (গোলামের বারাহীনে আহমদিয়া ১০২ পৃ:) যে সকল নীতি তুমি নিজেই রচনা করেছ এবং যে সকল আইন তুমিই নির্ধারণ করেছ, এর আলোকে তুমি কি হবে? সুতরাং তোমার ব্যাপারে তুমি যা বলেছ, তাছাড়া আমরা আর কিছু বলতে চাই না। কেননা আমরা গালি গালাজ থেকে পবিত্র। যদিও সে দাজ্জাল হয় এবং নবী রাসূলগণকে গালি দেয়। এখন আমরা তোমার কিতাব থেকে, তোমার ভাষ্য হতে, এবং তোমার নিজ শব্দে তোমার কাছে উপহার পেশ করছি- ‘যে ব্যক্তি পবিত্র ও নেককার লোকজনকে গাল মন্দ করে, সে খবীছ, অভিশপ্ত ও ইতর ব্যতীত আর কিছু নহে। (আল-বালাগুল মুবিন ১৯ পৃ:) এর পর সে আরো বড় অপরাধের দিকে অগ্রসর হয়। আর এ সমস্ত বিরাট অপরাধের চেয়েও জঘন্যতম অপরাধ হল যে, সে এমন ব্যক্তিত্বের উপর আক্রম করেছে, যিনি সমস্ত সৃষ্টির সারাংশ, সকল অস্তিত্বের গৌরব, নবী রাসূলাগণের প্রধান, যার সম্পর্কে সকল রাসূল সুসংবাদ দিয়েছেন। এবং যার জন্য আল্লাহ পাক সকল নবী হতে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ ‘‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিনি আল্লাহর রসুল এবং সর্ব শেষ নবী। (আমার প্রাণ ও আমার মাতা-পিতা তার উপর উপর উৎসর্গ। তার উপর দরুদ ও সালাম) এ দাজ্জাল বলে যে , নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তিন হাজার অলৌকিক ঘটনা রয়েছে; কিন্তু আমার অলৌকিক ঘটনাবলীর সংখ্যা এক মিলিয়নেরও অধিক’। (গোলামের ‘‘তাযকেরাতুশ শাহাদাতাইন ৪১ পৃ:) সে অ রো বলে, আমাকে যা দেয়া হয়েছে তা বিশ্ব জগতের আর কাউকে দেয়া হয়নি। (গোলামের হাকীকাতুল ওহীর পরিশিষ্ট।) এতদ্ব্যতীত তার ছেলে ও দ্বিতীয় খলীফা বলেছে- আমাদের ইমামের পয়গাম্বরী জ্ঞান নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জ্ঞান থেকে বহু ঊর্ধ্বে ছিল। (নাউযু বিল্লাহ) কেননা, সভ্যতার দিক দিয়ে বর্তমান যুগ সে কাল হতে বহু উন্নত। আর, এটা হল বিশেষ ক্ষেত্রের প্রাধান্যতা যা গোলাম আহমদ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর লাভ করে। (কাদিয়ানী রিভিউ, মে ১৯৪৯ ইং।) এ বিষয়ের উপর আমি একটি স্বতন্ত্র প্রবন্ধ লিখব। এখন আমি এ আলোচনাকে তার নিজেরই একটি বক্তব্যের উপর শেষ করছি। যাতে তারই উক্তি তারই বিরুদ্ধে ডিগ্রি প্রদান করে। সে বলেছে: ঐ ব্যক্তি কাফের যে কোন নবীর অবমাননা করে’ এবং ‘যে ব্যক্তি এমন শব্দাবলি ব্যবহার করে যদ্দারা স্পষ্ট বা অস্পষ্ট ভাবে কোন ধর্মীয় নেতার অবমাননা অপরিহার্য হয়ে পড়ে, তাকে আমরা বড় খবীছ ও নিকৃষ্টতম ব্যক্তি বলে বিবেচনা করি’। (কাদিয়ানী নবুয়তের দাবিদার গোলামের ‘‘অইনুল মারেফাত’’ ১৮ পৃ: এবং ‘‘বারাহীনে আহমদীয়া’’ ১০৯ পৃ:।) আল্লাহর কাছে আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদেরকে মুসলমানরুপে জীবিত রাখেন এবং মুসলমানরুপে মৃত্যু দান করেন। আমীন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/699/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।