মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
চতুর্থ প্রবন্ধ: ‘‘ভন্ডনবী কাদিয়ানী এবং মহান রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর তার ঔদ্ধত্য প্রকাশ’’ [১ ১৩৮৬ হিজরী সনে ‘হাদারাতুল ইসলাম’ পত্রিকার নবম সংখায় এই প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/699/6
এ পৃথিবীতে অনেক দুর্ভাগ্যতা, হীনতা, নবুয়তের চাদরচুরী, নবীগণের অবমাননা, রাসূলগণকে গালমন্দ করা, এবং আল্লাহর শানে মিথ্যা আরোপ করার ক্ষেত্রে নবুয়তের মিথ্যা দাবিদার গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ও তার অনুসারীদের সম পর্যায়ের লোক খুব কমই পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ বলেন- ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে তার চেয়ে বড় জালিম আর কে হতে [২ সুরা আন্আম- ৯৩]পারে’’? গোলাম কাদিয়ানী আল্লাহর উপর মিথ্যা-রোপ করে বলে, সে আল্লাহর নবী ও রসুল। যেমন করে তার পূর্ববর্তী দুই ভ্রাতা মুসায়লামা ও আসওয়াদ আনাসী দাবি করেছিল। তারপর, সে আরো দাবি করেছে যে, সে সকল নবী রাসূলের চেয়েও উত্তম। এ জন্যই তার নাম রাখা হয়েছে আদম, শীষ, নূহ, ইব্রাহীম, ইসহাক, ইসমাইল, ইয়াকুব, ইউসুফ, মুসা, দাউদ ও ঈসা আলাইহিস সালাম। [৩ হাকীকাতুল ওহী এর টিকা, ৭২ পৃষ্ঠা, গোলাম রচিত।]
এর চেয়েও অধিক সে বলে: সমস্ত নবী রাসূলগণকে যা দেওয়া হয়েছে তার সমস্তটাই তাকে দেয়া হয়েছে। [৪ দুরএর ছামীন এর টিকা, পৃষ্ঠা ২৮৭ ও ২৮৮, গোলাম রচিত।] সে এর উপরও সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং তার ইংরেজ প্রভুর ইঙ্গিতে সাইয়্যেদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীনের মর্যাদার উপর আক্রমণ করতে, তার সম্মান ও মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করতে এবং তার উপর নিজকে প্রাধান্য দিতে উদ্যত হয়েছে। তাই, সে বলে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তিন হাজার মু’ জেজা ছিল, কিন্তু আমার মু’ জেজা সমূহ এক মিলিয়নেরও অধিক। (গোলামের ‘‘তুহফায়ে কুলরা’’ ৪০ পৃষ্ঠা, এবং ‘‘তাজকেরাতুশ শাহাদাতাইন’’ ৪১ পৃষ্ঠা।) হায়! যদি বুঝতে পারতাম, তার মু’ জেজা সমূহ দ্বারা তার কি উদ্দেশ্য? তার মু’ জেজা সমূহ দ্বারা যদি এ উদ্দেশ্য হয়ে থাকে যে, সে পুরুষত্ব থেকে বঞ্চিত থাকা সত্ত্বেও তার সন্তানাদি জন্ম গ্রহণ করেছে; তা হলে এটা তার স্ত্রীর মু’ জেজা হরে, তার মু’ জেজা নহে। লক্ষ্য করুন! সে তার উক্ত মু’ জেজার উল্লেখ করে বলেছে: আমার দ্বিতীয় মু’ জেজা হল, বিবাহ সম্পর্কে যখন পবিত্র ওহী অবতীর্ণ হল, তখন আমি হৃৎপিন্ড, মস্তিষ্ক ও শারীরিক দুর্বলতা, বহু মূত্র, মাথাঘোরা ও যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ছিলাম। (আল্লাহ, আল্লাহ! একদিকে মারাত্মক রোগ সমূহের আক্রমণ, অপরদিকে বিবাহের অনুরাগ।) এ সকল মারাত্মক রোগসমূহ নিয়ে যখন আমি বিবাহ করলাম তখন কেহ কেহ আক্ষেপ করলেন। কেননা, আমার অবস্থা পুরুষত্ব না থাকার মতই ছিল এবং আমি মৃত্যুমুখী বৃদ্ধের ন্যায় ছিলাম । এজন্য উস্তাদ মুহাম্মদ হুসাইন বাটালবী আমার কাছে একটি পত্র লিখলেন যে, এ অবস্থায় তোমার বিবাহ করা উচিত ছিল না; যাতে কোন প্রকার বিপদের সম্মুখীন হতে না হয়। কিন্তু এ সকল রোগ ও দুর্বলতা সত্ত্বেও আমি স্বাস্থ্য ফিরে পাই এবং চারটি ছেলে লাভ করি। (গোলামের ‘‘নুযুলুল মাসীহের’’ হাসিয়া, ২০৯ পৃষ্ঠা।) উল্লেখ্য যে, এ বিবাহ গোলামের দ্বিতীয় বিবাহ ছিল। তখন তার বয়স পঞ্চাশের ঊর্ধ্বে এবং তার বর্ণনাকৃত রোগ সমূহতো তার সঙ্গে ছিলই। এর চেয়ে অধিক সুক্ষ কথা হল এই যে, তার এ যুবতী স্ত্রীর গর্ভে দশটি সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে। অথচ তার প্রথম স্ত্রীর গর্ভে দীর্ঘকালে মাত্র দ’টি সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে প্রথম সন্তানের জন্মের সময় তার বয়স মাত্র পনেরো বা ষোলো বৎসর ছিল , যেমন সে নিজেই এর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলে: ‘আল্লাহই জানেন যে সন্তানের জন্য আমার কোন আকাঙ্ক্ষা ছিল না। অথচ যখন আমার বয়স পনেরো বা ষোলো, তখন আমি সন্তান লাভ করি’। (‘‘ইরশাদুল গোলাম’’ যা কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘আল হিকমের’’ অন্তর্ভুক্ত এবং মঞ্জুর কাদিয়ানীর পুস্তক ৩৪৩ পৃষ্ঠা হতে গৃহীত।) সে তার প্রথম খলীফা ও তার সাথী নুরুদ্দীনের কাছে লিখেছে- যখন আমি বিবাহ করি, তখন আমার বিশ্বাস ছিল যে, দীর্ঘ দিন যাবৎ আমার পুরুষত্ব নেই। (তা সত্ত্বেও বিবাহের পরপরই সন্তান জন্ম গ্রহণ করতে থাকে। ‘‘মাকতুবাতে আহমদিয়া’’ ৫ম খন্ড ১৪৫পৃষ্ঠা।)
এটা তার অথবা তার ভক্তগণের কাছে হয়তো মু’ জেজা হতে পারে। কিন্তু আমরা নিষ্ঠাবান মুসলমানগণ একে হাস্যাস্পদ, লাঞ্ছনা ও পরীক্ষা ছাড়া কিছুই মনে করি না। যেমন মহান শেখ মুহাম্মদ হুসাইন বাটালবী গোলামের নিকট প্রেরীত তার পত্রে এর ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ ধরনের মু’ জেজা দ্বারা কি ভন্ডনবী কাদিয়ানী রাসুলে আরাবীর সাথে গর্ব ও অহংকার করতে পারে? যার সম্মানে চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হয়ে গিয়েছিল, পাথর ও বৃক্ষ যাকে সালাম জানিয়েছিল, যার আঙুল সমূহের মধ্য হতে পানি প্রবাহিত হয়েছিল এবং যার বিচ্ছেদে খেজুরের কান্ডটি উষ্ট্রীর ন্যায় স্ব-রবে কেঁদেছিল। হযরত আনাছ বিন মালিক রা. বর্ণনা করেন যে, মক্কা-বাসীরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তাদেরকে একটি মু’ জেজা দেখাবার জন্য আবেদন করল। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে চন্দ্র দু’ভাগে বিভক্ত করে দেখালেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদের রা. বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলেন- আমরা একদা মিনায় ছিলাম, এমন সময় চন্দ্র দু’খন্ডে বিভক্ত হয়ে যায় , এক খন্ড পাহাড়ের এক পার্শ্বে এবং অপর খন্ড পাহাড়ের অপর পার্শ্বে ছিল। অতঃপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে লক্ষ করে বললেন: তোমরা সাক্ষী থাক। [১ বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী এবং আহমদ ও তায়ালীসী তাদের মসনদদ্বয়ে উদ্ধৃত করেছেন, আর শব্দাবলী মুসলিমের।]
হযরত জাবির বিন সামুরা রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন- আমি মক্কার ঐ পাথরটিকে চিনি যে আমাকে নবুয়্যত লাভের পূর্বে সালাম দিত। নিশ্চয়ই আমি এখনও ঐ পাথরটিকে চিনি। [২ মুসলিম মুসনদে আহমদ, তবকাতে ইবনে সা’দ মুসনাদে তায়ালীসী।] অপর বর্ণনায় আছে: ‘‘যখন আমি নবুয়্যত প্রাপ্ত হই।’’ [৩ তিরমিযী।] (একথাটি বর্ণনার সাথে সংযুক্ত রয়েছে) হযরত আলী বিন আবি তালিব রা. বলেন, আমি মক্কায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাথে ছিলাম। এক সময় তার সঙ্গে মক্কার কোন প্রান্তে বের হলাম, তখন কোন পাহাড় বা বৃক্ষ তাঁর সম্মুখীন হলেই বলত, আস্সালামু আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ । [১ মুসনাদে দারামী ও তিরমিযী।] হযরত আনাছ বিন মালিক রা. বলেন- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখলাম, তখন আছরের সময় হয়ে গিয়েছিল; লোক জন ওজুর পানি তালাশ করে পেল না। তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ওজুর পানি আনা হল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে পাত্রে নিজ হাতে রাখলেন এবং লোকজনকে এ পাত্র হতে ওজু করার নির্দেশ দিলেন। আনাছ রা. বলেন, আমি দেখতে পেলাম যে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আঙুল সমূহের নীচ থেকে পানি উৎসারিত হচ্ছে। লোকজন সকলেই ওজু করলেন। আনাছ রা . বলেন, লোকের সংখ্যা প্রায় তিন শত ছিল। [২ ইবনে সা’দ মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে দারমী। তবে শব্দুসলিমের।] আর উষ্ট্রীর ন্যায় খেজুর কান্ডটি যে ক্রন্দন করেছে, সে সম্পর্কে আনাছ বিন মালিক রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর কান্ডে হেলান দিয়ে খুতবা দিতেন, পরে সাহাবীগণ তাঁর জন্য একটি মিম্বার তৈরি করলেন। তিনি এর উপর দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে লাগলেন। তখন খেজুর কান্ডটি উষ্ট্রের ন্যায় কাঁদতে লাগল। রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বার থেকে নেমে এসে তাকে স্পর্শ করলে সে শান্ত হয়। [৩ তিরমিযী] এ হল সত্য ও বিশ্বস্ত নবীর মু’ জেজা সমূহ। এ ছাড়া আরো অনেক মু’ জেজা রয়েছে। এই ভন্ডনবী কাদিয়ানী অন্যত্র নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর নিজেকে অধিক মর্যাদাবান দাবিকরে বলেছে:- ‘‘তাঁর (মুহাম্মদের) জন্য চন্দ্র গ্রহণ হয়েছিল এবং আমার জন্য চন্দ্র ও সূর্য উভয়েরই গ্রহণ হয়। তুমি কি ইহা অস্বীকার কর? অর্থাৎ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য কেবল চন্দ্র গ্রহণ হয়েছিল , সে স্থলে আমার জন্য চন্দ্র ও সূর্য উভয়ের মধ্যে গ্রহণ লেগেছিল। (গোলামের এজাজে আহমদী ৭১ পৃষ্ঠা।) সে আরো অধিক অগ্রসর হয়ে সম্পূর্ণ নির্লজ্জ ও নির্বোধের মত বলে: নিশ্চয়ই ইসলাম প্রথম দিকে নব চন্দ্রের মত ছিল, অর্থাৎ একেবারে ছোট। অতঃপর নির্ধারিত হল যে, এ যুগে উহা পূর্ণ চন্দ্রে রূপান্তরিত হবে। এ দিকেই মহান আল্লাহ ইঙ্গিত করেছেন- ‘‘ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের বদর বা পূর্ণ চন্দ্র দ্বারা সাহায্য করেছেন’’ (খুতবায়ে ইলহামিয়া ১৮৪ পৃষ্ঠা।) এমনিভাবে, আল্লাহর এ শত্রু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করতে চেয়েছে। যার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেন ‘‘আমি আপনার খ্যাতিকে সুউচ্চ করেছি।’’ মহান আল্লাহর এ বাণীকেও সে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে:
(আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করলাম, আর ইসলামকে তোমাদের ধর্ম হিসাবে মনোনীত করলাম) [৪ সুরা মায়েদা, আয়াত ৩।] সে ইহুদীদের ন্যায় কুরআনকে পরিবর্তন করার ইচ্ছা করেছে। যেহেতু সে আল্লাহর বাণীর এমন অর্থ গ্রহণ করেছে যা আল্লাহর উদ্দেশ্য নহে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও এদিকে ইঙ্গিত করেন নি। কোন সাহাবী, ইমাম ও তাফসীরকারের মনে এমন কল্পনাও আসেনি। এমনিভাবে এ ঘৃণ্য ব্যক্তিটি সুদৃঢ় পরিকল্পনার মাধ্যমে ক্রমশ: আউলিয়া, আইম্মা, সাহাবা ও আম্বিয়াদের অবমাননা করার পর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবমাননার দিকে অগ্রসর হয়। তা সত্ত্বেও কাদিয়ানীরা চায় তাদেরকে যেন ইসলাম ধর্ম থেকে বহিষ্কার করা না হয় এবং মুসলমানগণ তাদেরকে যেন ঘৃণ্য ধর্মান্তরিত দল বলে অভিহিত না করেন। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাসূলের উপর নিজেকে প্রাধান্য দেয় (তার দাবির প্রতি লক্ষ্য না করেও) এবং হুজুরের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে, সে কি মুসলমান? অথবা ইসলামের সহিত তার কি কোন সম্পর্ক আছে? অতঃপর যারা এর উপর তার হাতে বাইআত করে এবং তার কথায় বিশ্বাস করে, তারা কি মুসলমান? শুধু তাই নহে, বরং সে নিজে যা বলে ভক্তরা এর চেয়ে অনেক বেশি অত্যুক্তি করে। অপর এক অভিশপ্ত কাদিয়ানী মুবাল্লেগ ও কবি ভন্ডনবীর প্রশংসায় তারই সম্মুখে কতকগুলো কবিতা আবৃত্তি করে বলে: ‘‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যে পুনরায় অবতরণ করেছেন: এমতাবস্থায় যে, তার এবারকার মর্যাদা প্রথম বারের চেয়ে অনেক বড়’’। যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পরিপূর্ণ আকৃতিতে দেখতে চায়, সে যেন কাদিয়ানী গোলাম আহমদকে দেখে নেয়। (কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘বদর’’ হতে উদ্ধৃত, ২৫ অক্টোবর ১৯০২ খৃ:) এ ইতর ব্যক্তিটি লিখেছে যে, গোলাম আহমদ এ কবিতাটি শুনে সন্তুষ্ট হয়েছে। অতএব, আবৃত্তিকারী এবং যার উদ্দেশ্যে আবৃত্তি করা হল, আর যারা উহা স্বীকার করে নিল, তারা কি পর্যায়ের গণ্য হতে পারে? এদের উপর ধ্বংস আসুক! অপর দিকে মহাশক্তি ও মহত্ত্বের অধিকারী আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, যে নবীর সম্মুখে উচ্চস্বরে কথা বলে, তার সকল আমল নষ্ট হয়ে যাবে এবং সকল নেকী ব্যর্থ হবে, অথচ তারা ঈমানদার। আল্লাহ বলেন- হে বিশ্বাসীগণ! নবীর কথার উপর তোমরা পরস্পরের ন্যায় তার সম্মুখে জোরে কথা বলিও না। আশঙ্কা রয়েছে যে , তোমাদের আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তোমরা তা অনুভব করতে পারবে না। [১ সুরা আল-হুজুরাত, ২নং আয়াত] সুতরাং যারা এ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর যিনি সমগ্র মানব জাতির প্রতি সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রূপে প্রেরিত, তার উপর এ দাজ্জাল ও কাজ্জাবকে উচ্চ স্থান দেয়, তাদের পরিণতি কি হবে? এরা মুরতাদ। আর শুধু মুরতাদ হওয়াইতো হত্যাযোগ্য অপরাধ। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি তার ধর্ম পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর’। [২ তিরমিযী] অপর এক হতভাগা কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘আল ফজলে’’ লিখেছে: ‘আমাদের বিশ্বাস যে, গোলাম আহমদের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য আল্লাহ তাআলা এত নিদর্শনা বলী এবং প্রমাণাদি অবতীর্ণ করেছেন যদি তা এক হাজার নবীর মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়, তবে তাদের নবুয়্যত প্রমাণিত হওয়ার জন্য এগুলো যথেষ্ট হবে এবং সকল নবীর মধ্যে যে সমস্ত পবিত্র গুণাবলি ছিল, তার সবটাই গোলাম আহমদের মধ্যে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। (কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘আল ফজর’’ ১৬ অক্টোবর ১৯১৭ খৃ:)
জানি না , কোন কোন গুণাবলি দ্বারা কাফেরদের প্রশংসা ও দাসত্ব করা উদ্দেশ্য হয়, তাহলে কোন নবীর মধ্যেই এ সকল গুণাবলি ছিল না এবং কোন সত্য নবীর জন্য তা উপযোগীও নহে। আর যদি এ সকল গুণাবলি দ্বারা কাপুরুষতা ও কপটতা উদ্দেশ্য হয়, তবে এ সকল দোষ থেকে নবীগণ পবিত্র ছিলেন। কারো কাছে হাত পাতা ও কাকুতি মিনতি করা আল্লাহর রাসূলগণের অভ্যাস ছিল না; বরং তারা ছিলেন সবচেয়ে সাহসী ও সত্যবাদী। অনুরূপভাবে তারা ছিলেন সবচেয়ে বেশি অমুখাপেক্ষী এবং অপরের কাছে কিছু চাওয়া ও কারো সামনে হাত পাতা থেকে অনেক ঊর্ধ্বে। এইতো আল্লাহর রাসূল মক্কার নেতাদের সামনে সুস্পষ্টভাবে এবং তাদেরকে কাফের নামে অভিহিত করে আল্লাহর বাণী ঘোষণা করছেন- ‘‘আপনি বলুন, হে কাফেরগণ! তোমরা যার উপাসনা কর, আমি তার উপাসনা কার না। আর তোমরাও উপাসনা কর না আমি যার উপাসনা করি এবং এবং ভবিষ্যতেও আমি তোমাদের মাবুদগণের উপাসনা করব না । আর, তোমরাও আমার মাবুদের উপাসনা করবে না। তোমাদের প্রতিদান তোমরা পাবে এবং আমার প্রতিদান আমরা পাব।’’ [১ সুরা কাফেরূন।] এ দাজ্জাল ও কাজ্জাবের অবস্থান হল এর সম্পূর্ণ বিপরীত। কেননা, এই কাফের ইংরেজ সরকার সম্পর্কে বলে: আমি এই পরিবারের লোক যার সম্পর্কে ইংরেজ সরকার স্বীকার করে যে, এ পরিবার সরকারের অতি বিশ্বস্ত। প্রশাসকরাও স্বীকৃতি দিয়েছে যে, আমার পিতা ও আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা মনে প্রাণে পূর্ণ বিশ্বস্ততার সাথে সরকারের সেবা করেছে। এ সরকারের তত্ত্বাবধানে আমরা যে সুখ ও শান্তি পাচ্ছি, তজ্জন্য এ দয়াল সরকারের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জন্য আমি কোন ভাষা খোঁজে পাচ্ছি না। এ জন্য আমি আমার পিতা ও আমার ভাই এ সরকারের অবদান ও উপকারসমূহ প্রকাশ করতে ও জনসাধারণকে এ সরকারের আনুগত্যের প্রতি বাধ্য করতে এবং তাদের অন্তরে এটিকে বদ্ধ মূল করতে সর্বদা কঠোর পরিশ্রম করেছি। (তাবলীগে রিসালাত, ৭ম খন্ড, ৮ও ৯ পৃষ্ঠা।) এ সমস্ত গুণাবলিই কি তোমাদের উদ্দেশ্য? নবীগণ শাহাদৎ বরণ করেছেন, অগ্নি দগ্ধ হয়েছেন, নিজ ঘর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন এবং ধন-সম্পদ হতে বঞ্চিত হয়েছেন। তবুও আল্লাহর পথে দাওয়াত ত্যাগ করেন নি এবং আল্লাহর আনুগত্য ছাড়া কারো আনুগত্য গ্রহণ করেন নি। তারা কোন রাজা বাদশাহর দাসত্ব স্বীকার করেন নি এবং কোন স্বৈরাচার ও ফেরাউনের সম্মুখে মাথা নত করেন নি তারা মহান আল্লাহর এই বাণীর উপর অটল ছিলেন ‘‘তুমি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছে, তা প্রকাশ্যে প্রচার কর, এবং মুশরেকদেরকে উপেক্ষা করে চল। [২ সুরা আল-হিযর, ৯৪ আয়াত।]
ভন্ডনবী কাদিয়ানীর মত তারা মানুষের উপর কাফেরদের আনুগত্য ওয়াজিব করেন নি। যদি এই তাদের লক্ষ্য হত, তবে তাদেরকে প্রেরণ করার কি সার্থকতা ছিল?
গোলাম আহমদ অন্যত্র বলে: আমি আমার জীবনের অধিকাংশ সময় ইংরেজ সরকারের সাহায্যে এবং জিহাদের বিরোধিতায় ব্যায় করেছি। আর, মুসলমানগণ এই সরকারের প্রতি অনুগত না হওয়া পর্যন্ত আমার এ চেষ্টা চালিয়ে যাব। (গোলামের ‘‘তিরিয়াকুল কুলুব’’ ১৫ পৃষ্ঠা ।) হ্যাঁ, কার্যত: জেহাদের বিরোধিতায় সে তার জীবন সমাপ্ত করেছে। কেননা, জেহাদের স্বাদ অনুভব করতে পারেনি। তাই তার মত দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ভীরু ব্যক্তি এই বক্তব্যের ঘোষণাকারীর বীরত্বকে উপলব্ধি করতে পারে- ‘‘অত্যাচারী শাসকের সম্মুখে ন্যায়ের কথা বলা অন্যতম শ্রেষ্ঠ জেহাদ’’ [১ তিরমিযী।] যদি সে জানত তবে একথা বলত না ‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কামালাতের তাজাল্লী শেষ প্রান্তে উন্নীত হতে পারে নি, বরং এই তাজাল্লী সমূহ আমার যুগে এবং আমার ব্যক্তিত্বে চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে’’। (খুতবায়ে ইলহামিয়া, ১৭৭ পৃষ্ঠা।) অতএব হে দাজ্জাল! তুই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একজন নগণ্যতম খাদেমদেরও সম পর্যায়ের নহে। অথচ তুই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর নিজের প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করছিস। অতএব, যখন আল্লাহ তাআলা তার হাবীব ও খলীল, আরব ও আজমের সরদার, শেষ নবী ও সাইয়েদুল মুরসালীনের অবমাননা সম্পর্কে তোকে জিজ্ঞাসা করবে তখন তোর অবস্থা কি হবে? হে পাপিষ্ঠ! তুই কেমন করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহিত তোর হীন ব্যক্তিত্বকে তুলনা করছিস? আল্লাহই তাঁকে সমস্ত সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং তাকে ‘‘রাহমাতুললিল আলামীন’’ উপাধিতে ভূষিত করেছেন। তিনি এমন পর্যায়ের দানবীর ও দাতা ছিলেন যে, তার হাতে যা কিছু আসত তা আল্লাহর পথে বিলিয়ে দিতেন এবং রিক্ত হস্তে নিজ গৃহে ফিরতেন। এমতাবস্থায়, যখন উম্মাহাতুল মু’ মেনিন রা. তাকে জিজ্ঞাসা করতেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কেন নিজের জন্য কিছুটা অবশিষ্ট রাখেন নি? উত্তরে হুজুর বলতেন: ‘‘তোমাদের নিকট যা কিছু আছে তা তো নিঃশেষ হয়ে যাবে, আর আল্লাহর নিকট যা কিছু আছে তা স্থায়ী থাকবে’’। [২ সুরা নাহল-৯৬] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মীনি ও মুমেনগণের মা আয়েশা সিদ্দিকা রা. বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তিরোধানের পূর্ব পর্যন্ত তার পরিবারের লোকেরা একাধারে দু’দিন যবের রুটি পেট ভরে খেতে পারেন নি। ছিমাক ইবনে হরব বলেন, আমি নুমান ইবনে বশিরকে রা. বলতে শুনেছি: তোমরা কি যা চাও তা পানাহার করছ না ? অথচ আমি তোমাদের নবীকে দেখেছি, তিনি এই পরিমাণ মামুলি খেজুরও পেতেন না, যাতে তার পেট ভরতে পারে। [৩ সামায়েলে তিরমিযী।] কিন্তু তোমার (কাদিয়ানীর) অবস্থা হল যে, তুমি
মানুষের পকেট কাটছ। ভক্তদের কাছ থেকে জাকাতের নামে দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টনের নামে অবৈধ লুণ্ঠিত সম্পদ এবং ইংরেজদের কাছ থেকে বিশ্বাসঘাতকতা ও এজেন্ট হওয়ার বিনিময়ে প্রাপ্ত পর্যাপ্ত সম্পদ খাচ্ছ। তুমি ভুনা মুরগি, বক ও কবুতর পাখির গোস্ত খাচ্ছ। বিভিন্ন দূর-দেশ থেকে তোমার বিশেষ দস্তরখানার জন্য আমদানীকৃত খাবার কাবাব, কুফতা, বিরিয়ানী, মিষ্টি-দ্রব্য, বিভিন্ন প্রকার পোলাও , ডিম, মাখন ও মাখনদ্বারা প্রস্ত্তত দ্রব্যাদি ও দুধ ইত্যাদি সংগ্রহ করছ। আর, ফলের মধ্যে আঙ্গুর , ডালিম, কমলা, আপেল ইত্যাদি এবং ইংল্যান্ড থেকে আমদানীকৃত কেক যা শুকরের চর্বি দ্বারা প্রস্ত্তত, [৪ এভাবে গুলাম পুত্র বশীর আহমদ বলেছে, আমার পিতা কেক খেতেন যদিও লোক এতে সন্দেহ পোষন করতেন যে এটা শুকরের চর্বি দিয়ে তরৈী অথবা চর্বি দিয়ে পাকানো হয়েছে। কিন্তু গোলামের অভিমত ছিল যে, এই কেক কি দিয়ে পাক করা হয়েছে তা নির্দিষ্টভাবে জানা না গেলে তা খেতে আপত্তি নেই। (বশীর রচিত সীরাতে মাহদী ২য় খন্ড ১৩৫ পৃঃ)] প্রভৃতি সহ আরো অনেক কিছু তুমি খাচ্ছ। [৫ সীরাতে মাহদী ২য় খন্ড ১৩২-১৩৫ পৃষ্ঠা] এগুলো ব্যতীত আরো অনেক শক্তি বর্ধক সামগ্রী যেমন মিশকে আম্বর [১ মাকতুবাতে আহমদীয়া ৫ম খন্ড ২৬ পৃঃ] ও আগর যার ২৫ গ্রাম তখনকার দিনে পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি হত [২ মাকতুবাতে আহমদীয়া ৫ম খন্ড পৃঃ ১২১৩ মাকাতিবুল ইমাম ২য় খন্ড (মাহমুদ হুসাইন কাদিয়ানী)] এবং জাফরান, মারওয়ারীদ, মারজান-ইয়াকুত [] আফিম ও মদ তুমি ব্যবহার করছ। এসব কিছু নবুয়তের নামে এবং নবুয়তের বরকত হিসাবে চালিয়ে যাচ্ছ। অথচ নবুয়তের দাবি করার পূর্বে তোমারই বর্ণনা অনুযায়ী তোমার এ অবস্থা ছিল- ‘আমি একজন দরিদ্র লোক ছিলাম। কেহ আমাকে চিনত না এবং আমার কাছে এমন জীবিকার ব্যবস্থা ছিল না যাদ্দারা আমি আরাম ও স্বচ্ছলতার সহিত জীবন যাপন করতে পারি। আমার পিতা আমার জন্য অতি সামান্য সম্পদ রেখে গিয়েছেন। এরপর আল্লাহ আমার দিকে দুনিয়া ফিরিয়ে দিলেন। তখন আমি যে মাসিক দশ টাকা লাভ করতে পারব তারও আশা করতে পারতাম না। কিন্তু আল্লাহ আমার অবস্থার পরিবর্তন করে দিলেন এবং আমাকে সাহায্য করলেন। এখন আমার নিকট তিন লাখেরও বেশি টাকা আছে। (গোলামের ‘‘হাকীকতে ওহী’’ ২১১ ও ২১২ পৃষ্ঠা) এত অধিক সম্পদ কোত্থেকে আসল? কাদিয়ানী মুফতি সরওর শাহ এর বর্ণনা দিয়ে বলেন যে, এ সম্পদ অজ্ঞাত স্থান হতে আসছে। তিনি আরো বলেন- একজন মুবাল্লেগ আমাকে জানিয়েছেন যে, আমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করার জন্য কাদিয়ানে প্রচুর পরিমাণ টাকা পাঠাতাম। (কাদিয়ান হল নবুয়তের মিথ্যা দাবিদার গোলাম আহমদের জন্ম স্থান।) কিন্তু যখন আমরা কাদিয়ানে গেলাম, তখন দেখতে পেলাম এ বিরাট পরিমাণের টাকা গোলাম আহমদের বেগমদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে তারা খুব আরাম ও স্বচ্ছলতার সাথে জীবন যাপন করছে, বাহিরের জীবনে তারা এর দশ ভাগের একভাগও উপভোগ করার সুযোগ পাননি। অথচ এ টাকাগুলো তাদের জন্য প্রেরিত হত না। অতঃপর মুফতি বলেন- তখন আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতাম এবং তওবা করতাম এই ভয়ে যে আল্লাহ শাস্তি নাযেল করে দিতে পারেন। (কাদিয়ানী মূফতী সরওয়ার শাহ রচিত ‘‘কাশফুল ইখতেলাফ’’ ১৩ পৃষ্ঠা।)
এভাবে এ প্রক্রিয়া ছাড়া অন্যান্য পন্থায় ও এ দরিদ্র ভন্ডনবী বিরাট সম্পদ সঞ্চয় করেছে। ইতিপূর্বে জীবন ধারণের মত সামান্য খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থাও তার কাছে ছিল না। এমন কি, সে শিয়াল কোট শহরে গমন করে মাত্র পনেরো টাকা মাসিক বেতনে একজন নিম্ন মানের কর্মচারীরূপে চাকুরি নিতে বাধ্য হয়। সে মানুষের পায়ের কাছে বসে থাকত। অতএব, তার মত একজন চোর ও অন্যায়ভাবে পরের সম্পদ গ্রাসকারী ব্যক্তি নিজেকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তুলনা করে, যিনি এমন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন যে, মৃত্যুকালে তাঁর বর্মটি এক ইহুদীর কাছে বন্ধক ছিল। আর সে বলে, যে ব্যক্তি আমার এবং মুস্তফার মধ্যে পার্থক্য করে, সে আমাকে চিনে নি ও আমাকে দেখিনি। (গোলামের উক্তি যা কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘আল ফজলের’’ অন্তর্গত, ১৭ই জুন ১৯১৫ খৃ:) সে আরো অগ্রসর হয়ে বলে, আমি মসীহ আমি কালিমুল্লাহ, আমি মুহাম্মদ ও আহমদ, যাকে আল্লাহ মনোনীত করেছেন। (গোলামের দুররে ছামীন।) সে আরো বলে: যে আমার জামাতে প্রবেশ করবে সে যেন ছাইয়েদুল মুরছালীনের সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। (গোলামের খুতবাতুল ইলহামিয়া ১৭১ পৃ:) এরূপ বিশ্বাস ঘাতক মিথ্যাবাদী কি করে এ ধরনের ভ্রান্ত দাবিকরতে পারে যে, ‘‘যে ব্যক্তি তার দলে প্রবেশ করবে সে সাইয়েদুল মুরসালীনের সাহাবাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল’’। অথচ, প্রকৃত পক্ষে এরা তো মুসাইলামাতুল কাজ্জাব ও আসওদ আনাসীর অনুসারীদের সারিতেই প্রবেশ করেছে এবং ঐ মরদুদ শয়তানের অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে, যে তাদেরকে ও তাদের নেতাকে বিপথগামী করেছে। এ মির্জা আরো বলে, ‘‘ সে অবিকল মুস্তফা!’’ অথচ, মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুনিয়াকে এমনি ভাবে ত্যাগ করেছেন যে, তাঁর বর্মটি জনৈক ইহুদীর কাছে বন্ধক ছিল এবং তাঁর সহধর্মীনিগণ পানি ও খেজুরের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করতেন। যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইচ্ছা করতেন, তবে তাঁর খাদেমগণ স্বর্ণ রৌপ্য দ্বারা তাঁর ঘর পরিপূর্ণ করে দিতে পারতেন। আমাদের এ কাদিয়ানীর মত ঐাকাত ও সাদা-কাতের নামে নহে, বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য । আর এ মহান রাসূলের খলীফা মারা গেলে তাকে পুরাতন কাপড়ে দাফন করা হয়। হাঁ, ইনি হলেন তাঁর প্রথম খলীফা আবু বকর সিদ্দিক রা.। তাঁর দ্বিতীয় খলীফা যিনি কায়সার ও কিসরার রাজত্বের মালিক হওয়া সত্ত্বেও পরিধানের জন্য ছেঁড়া কাপড় ব্যতীত কিছুই পান নি। একদা যখন তিনি নিখুঁত দু’টি চাদর পরিধান করেছিলেন, তখন তাঁর একজন প্রজা দাঁড়িয়ে বলল: আপনি এটা কোত্থেকে পেলেন? উত্তরে তিনি বললেন: ‘একটি আমার এবং অপরটি আমার ছেলে আমাকে দান করেছে’। তাদের অবস্থা এ মিথ্যুকের মত ছিল না। যে পুস্তক মুদ্রণের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে। অতঃপর সে পুস্তক না ছাপিয়ে টাকা পয়সাগুলো তার নিজ লোকদের মধ্যে ব্যয় করে ফেলে আর, যখন তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয় তখন সে বলে এ সম্পদ আল্লাহ আমাকে দান করেছেন। কাউকে আমি একটি পয়সা ফেরত দেব না এবং এ ব্যাপারে কাউকে উত্তরও দেব না। যে ব্যক্তি আমার কাছে হিসাব চায় তার জন্য উচিত সে যেন এরপর আমাকে আর কিছুই না দেয়। (কাদিয়ানী পত্রিকা আল হিকম ২১শে মার্চ ১৯০৫ খৃ:) এতো গেল তার অবস্থা। আর, এর পরও তার খলীফাগণ এমন বিরাট সুউচ্চ অট্রালিকায় বসবাস করছে, যার কল্পনা এর পূর্বে তারা করতে পারেনি। এমনকি স্বপ্নেও না । এ সকল সুবৃহৎ ও বিরাট প্রসাদ পাহারা দেওয়ার জন্য কুকুর নিয়োজিত করা হয়। (আল ফজল ১২ই অক্টোবর, ১৯২৪ খৃ:) তার খলীফা যখন ইংল্যান্ডে ভ্রমণে যায়, তার পিতার ঐ সকল অনুগ্রহকারীদের সাক্ষাতে ধন্য হওয়ার জন্য, যারা তার পিতার মাথায় নবুয়তের মুকুট পরিয়েছিল তখন কেবল মাত্র এ ভ্রমণে ব্যয় করার জন্য চল্লিশ হাজার টাকা সাথে নেয়। (পয়গামে সুলেহ ২৩শে জুলাই, ১৯২৪ খৃ:) এখান থেকে সে প্যারিসে ভ্রমণ করে এবং তথায় আন্তর্জাতিক নৃত্যের আসরে যোগদান করে। আন্তর্জাতিক নৃত্যে নর্তকীরা স্বভাবত: উলঙ্গ কিংবা অর্ধোলঙ্গ থাকে। এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে, যেহেতু আমার দৃষ্টি শক্তি দুর্বল এবং মঞ্চ আমার থেকে দুরে ছিল, তাই আমি নর্তকীদের উলঙ্গপনা দেখিনি। এ ধরনের সহচরদেরকে নিয়ে নবুয়তের মিথ্যা দাবিদার কাদিয়ানী কি গর্ব করে ? এ ব্যক্তি তো শুধু তার সহচরই নহে, বরং সে তার ছেলে এবং দ্বিতীয় খলীফা। এ বিষবৃক্ষ ও তার ফল হতে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করছি। আবারও আল্লাহর আশ্রয় কামনা করছি। এ সত্ত্বেও বলা হয়, গোলামের আধ্যাত্মিক শক্তি রাসূলুল্লাহ আধ্যাত্মিক শক্তি হতে অধিক পরিপূর্ণ ও অধিক শক্তিশালী। (গোলাম পুত্র বশীর আহমদের কালিমাতুল ফাছল যা রিভিউ অব রিলিজিওনের অন্তর্ভুক্ত, ১৪৭ পৃ:) সুতরাং এ হল তার আধ্যাত্মিকতা যে , সে আফিম ভক্ষণ করে , মদ্য-পান করে, [১ ইতিপূর্বে তার মদ্যপান, আফিম ভক্ষণ ও নারীপ্রেম সম্পর্কে তৃতীয় প্রবন্ধে ‘ভন্ডনবী কাদিয়ানী কতৃক নবূগণের অবমাননা’ উৎস ও উদ্ধৃতিসহ উল্লেখ করেছি।] নারীদের প্রতি আশক্ত হয়, ইংরেজের দাসত্ব করে এবং আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়। তার ছেলে নৃত্যের আসরে উপস্থিত হয় এবং বড় বড় অট্টালিকায় বসবাস করে , যে গুলোকে কুকুর পাহারা দেয় । সে এবং তার ভক্তরা কুরআনকে পরিবর্তন করে এবং যে সকল আয়াত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে অবতীর্ণ হয়েছে, উহাকে সে নিজের সহিত সম্পৃক্ত করে । আর, যিনি সমস্ত মানব জাতির উত্তম, তার চেয়েও এ ভন্ডের মর্যাদাকে তারা উচ্চ বলে গণ্য করে।
অপর এক কাদিয়ানীর বৃত্তান্ত শুনুন ! যার মধ্যে সকল প্রকার কুকর্ম ও বদ খাছলত একত্র রয়েছে। প্রথমত: সে কুরআন মজীদ তাহরীফ (বিকৃত) করে এবং আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে। দ্বিতীয়ত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবমাননা করে। তৃতীয়ত: এ মিথ্যাবাদী দাজ্জালকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ও সকল নবীর ঊর্ধ্বে স্থান দেয়। সে বলে, আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীতে যে অঙ্গিকারের কথা রয়েছে- ‘‘আর যখন আল্লাহ তায়ালা নবীগণ থেকে অঙ্গীকার নিলেন যে, আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও হিকমত দিয়েছি, তারপর যদি তোমাদের কাছে কোন রাসূল আসেন যিনি তোমাদের কিতাবের সত্যতা প্রমাণ করেন, তখন অবশ্যই তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে। আল্লাহ বললেন, ‘তোমরা কি ইহা স্বীকার করলে এবং এ কথার উপর আমার অঙ্গীকার গ্রহণ করলে? তাঁরা উত্তর দিল, আমরা স্বীকার করলাম’। তখন আল্লাহ বললেন: ‘‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। এরপর যারা এ অঙ্গীকার থেকে বিমুখ হবে তারাই হল অবাধ্য ফাসেক’’। [২ সুরা আল-ইমরান-৮১ও ৮২] সেই অঙ্গীকার গোলাম আহমদের জন্য, মুহাম্মদের জন্য নহে। আর, যাদের নিকট থেকে এ অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়েছে, তারা হলেন নূহ, ইব্রাহীম, মুসা ও ঈসা আঃ। এমনি ভাবে, এ অঙ্গীকার মুহাম্মদ সা: হতেও গ্রহণ করা হয়েছে। অতএব, ধন্যবাদ। কারণ অঙ্গীকারের লক্ষ্য ব্যক্তি এসে গেছেন। সুতরাং মুসলমানগণ দ্রুত এ প্রতিশ্রুতি পালন করে যেন আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হয়ে যায়। (কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘আল-ফজল’’ ২৬শে ফেব্র: ১৯২৪ খৃ:) এ বক্তব্যটি কুরআন পরিবর্তন করা, মুসলমানগণকে কুরআনের অর্থ অনুধাবন ও মুহাম্মদে আরাবী থেকে দুরে সরিয়ে রাখার কাদিয়ানী পরিকল্পনার একটা চিত্র প্রদান করে। যে পরিকল্পনাটি তারা কাফের সাম্রাজ্যবাদীদের ইঙ্গিতে গ্রহণ করেছিল যারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যক্তিত্ব ও কুরআনের জীবনী শক্তি সম্পর্কে ভীত সন্ত্রস্ত। এ কারণেই গোলাম আহমদের নবুয়্যত প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদাকে খাট করা এবং মুসলমানদের অন্তর থেকে তাঁর মহববত ও ভালোবাসাকে ছিনিয়ে নেওয়া এবং কুরআনের অর্থ ও মর্ম বিকৃত করা । যদিও এর মূল শব্দকে বিকৃত করা সম্ভব নহে। তাই, গোলাম আহমদই প্রথম ব্যক্তি যে ইসলামের নামে কুরআন পরিবর্তন করার ভিত্তি স্থাপন করে। তারপর, তার ভক্ত ও অনুসারীগণ অত্যন্ত ঘৃণিত পন্থায় ও নির্লজ্জ ভাবে কুরআন পরিবর্তনের কাজে তার অনুসরণ করে চলে। এখানে আমরা তার পক্ষ থেকে কুরআনে কারীমের পরিবর্তন ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবমাননার কথা এক সঙ্গে উল্লেখ করছি। সে বলে: আল্লাহর বাণী ‘‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল, আর তাঁর সাথীরা কাফেরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর এবং তারা পরস্পর অতি দয়ালু।’’ [১ সুরা আল-ফাতহ-২৭] এর দ্বারা আমিই উদ্দেশ্য। কেননা , আল্লাহ তাআলা এ ওহীতে আমার নাম রেখেছেন মুহাম্মদ ও রাসূল। এভাবে অপর কয়েক স্থানে আল্লাহ আমাকে এ নামে উল্লেখ করেছেন’। (গোলামের উক্তি যা কাসেম কাদিয়ানীর ‘‘তাবলীগে রেসালাতের’’ অন্তর্ভুক্ত, ১০ম খন্ড ১৪পৃষ্ঠা।) সে বলে, আমাকে অবগত করা হয়েছে যে, কুরআন ও হাদীসে আমার সম্পর্কে খবরাখবর বিদ্যমান আছে। আমাকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে আল্লাহর এ বাণীতে ‘‘আল্লাহ তাআলাই হেদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারে স্বীয় রাসূলকে প্রেরণ করেছেন যাতে এ দ্বীনকে সমুদয় দ্বীনের উপর প্রাধান্য দান করেন। [২ সুরা তাওবা- ৩৩, সুরা আল ফাতহ-২৮ সুরা আল সাফ-৭] (এজাজে আহমদী গোলাম কাদিয়ানীর নুযুলুল মাসীহের পরিশিষ্ট, ৭ পৃ:।) আল্লাহ তাআলার এ বাণীতেও আমাকেই লক্ষ্য করা হয়েছে ‘‘আমি আপনাকে সমস্ত বিশ্ব জগতের রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’’ [৩ সুরা আল-আম্বিয়া-১০৭] (গোলামের ‘আরবাঈন’ ৩ নম্বর ২৫ পৃষ্ঠা।) আমি আল্লাহর ঐ বাণীরও লক্ষ্য বস্ত্ত- ‘‘তোমাকে মাকামে মাহমুদে অধিষ্ঠিত করবেন’’। (গোলামের ‘আরবাঈন’ ১০২ পৃষ্ঠা।)
এর পর তারই পুত্র বশীর আহমদ একই পন্থায় অগ্রসর হয়ে বলে ‘‘রাসূলগণ যার সুসংবাদ দিয়েছেন, তিনি হলেন গোলাম আহমদ, আল্লাহর নবী মুহাম্মদ নহেন। আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীতে তিনিই উদ্দেশ্য ‘(ঈসা) সুসংবাদ দিচ্ছেন যে, আমার পরে যে রাসূল আসবেন তার নাম আহমদ’। [৪ সুরা আছ ছাফ-৬] কেননা, আল্লাহর আয়াতের উদ্দেশ্য হল মুহাম্মদ ব্যতীত অন্য ব্যক্তি। অতএব, বুঝা গেল যে, এ বাণীর উদ্দেশ্য গোলাম আহমদ, মুহাম্মদ নহেন। (বশীর আহমদের প্রবন্ধের সারাংশ, যা রিভিউ অব রিলিজিওনের অন্তর্ভুক্ত ১৩৯- ১৪১ পৃ: আল-ফজল পত্রিকায় প্রচারিত, ১৯শে আগস্ট ১৯১৬খৃঃ) এর উপরই ভিত্তি করে কাদিয়ানীরা বলে, তাদের কালেমায়ে শাহাদাত অবিকল মুসলমানদের কালিমায়ে শাহাদাত। কেননা, তাদের উদ্দেশ্য হল গোলাম আহমদের রেসালাতের স্বীকৃতি। আর এ উদ্দেশ্য মুসলমানদের কালিমা দ্বারাই সাধিত হয়। কালেমাটি হল এই ‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। এ কালেমাতে গোলামের নামকরণ করা হয়েছে ‘মুহাম্মদ’ যেমন আল্লাহর এ বাণীতেও নামকরণ করা হয়েছে: ‘‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল, আর যারা তাঁর সাথী------------’’। অতঃপর বলে: ‘‘গোলাম আহমদের নবুয়তের শাহাদাতের জন্য আমরা আমাদের ধর্মে কোন নতুন কালেমার প্রয়োজন বোধ করি না।’’ কেননা, নবী এবং গোলাম আহমদের মধ্যে কোন তফাত নেই। যেমন, গোলাম আহমদ নিজেই বলেছে- ‘আমার অস্তিত্ব তাঁরই অস্তিত্ব এবং যে ব্যক্তি আমার ও মুস্তফার মধ্যে পার্থক্য করে সে আমাকে চিনতে পারে নি’ । সে আরো বলে, আল্লাহ তাআলা পুনরায় ‘খাতামুন নাবীয়্যীন’ কে প্রেরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর উপর ভিত্তি করে বলা যায়, মসীহে মাওউদ (গোলাম) স্বয়ং সে-ই মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ, যাকে ইসলাম প্রচারের জন্য দ্বিতীয় বারের মত প্রেরণ করা হয়েছে। এ জন্যই আমরা অপর কোন কালেমায়ে শাহাদাতের প্রয়োজন বোধ করি না। অবশ্য যদি প্রেরক ব্যক্তি মুহাম্মদ ব্যতীত অন্য কেহ হত, তাহলে আমাদের নূতন কালেমার প্রয়োজন হত। (কালিমাতুল ফছল’ রিভিউ অব রিলিজিওন্স হতে উদ্ধৃত, ১৫৮ পৃ:, ৪নম্বর ১৪ খৃ:।) কাদিয়ানীরা তাদের বিভ্রান্তিকরও অমূলক কথা বার্তায় আরো অগ্রসর হয়ে কাদিয়ানী পত্রিকা ‘‘আল ফজলে’’ প্রচার করেছে যে, যে স্থানে গোলাম আহমদ সমাধিস্থ হয়েছে, সেই স্থান ও উহার আশে পাশের স্থানসমূহ বেহেস্তের একটি টুকরা বিশেষ এবং গোলাম আহমদের কবর (নাউজুবিল্লাহ) রাসূলুল্লাহর কবরের মতই। এ পর্যন্তই তারা ক্ষান্ত হয়নি বরং তারা বলে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই গোলাম আহমদের কবরে সালাম দেন। এ কথা তারা স্পষ্টভাবে বলছে। কাদিয়ানে জনৈক দীক্ষা গ্রহণকারী ব্যক্তি ঘোষণা করে, যে ব্যক্তি দারুল আমান কাদিয়ানে আসে (এ কাদিয়ানকে তারা দারুল আমান নামে আখ্যায়িত করত, উহা হিন্দুদের দখলে চলে গেলে কাদিয়ানীরা সেখানে বেহেস্তের টুকরা ও তাদের রাসূলের কবর ছেড়ে পলায়ন করে। সে স্থান সম্পর্কে বলছে) এবং নূরে ভরপুর মাজারে উপস্থিত হয় না, তার অবস্থা কেমন হবে? তারা কি জানে না যে এ পবিত্র রওজাতে? ঐ মহান ব্যক্তির শবদেহ সমাধিস্থ আছে, যার প্রতি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম প্রেরণ করেন। অতএব, তোমরা এ বরকতময় কবরে উপস্থিত হয়ে ঐ সকল বরকত লাভ করতে সক্ষম হবে যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজায় নির্ধারিত রয়েছে। সুতরাং, কতই না দুর্ভাগা ঐ ব্যক্তি যে কাদিয়ানে এসে হজ্জে আকবর দ্বারা উপকৃত হয় না। (আল ফজল পত্রিকা যা ১৮ ডিসেম্বর ১৯২২ খৃ: প্রকাশিত।) নিশ্চয়ই হে দুর্ভাগা সম-প্রদায়! তোমরা সবাই দুর্ভাগ্যে সমান। কারণ, যে ব্যক্তি খতমে নবুয়্যতকে অস্বীকার করে এবং খাতামুন নাবীয়্যীনকে অবিশ্বাস করে , আর গোলাম আহমদের মত একটা দাজ্জালকে নবী বলে বিশ্বাস করে, শুধু নবীই নহে বরং সে মুহাম্মদে আরাবীর সমতুল্য এবং তার চেয়েও অধিক মর্যাদাবান মনে করে, সে যদি এ দুর্ভাগা না হয়, তবে আর কে হবে? ঐ আল্লাহর শপথ! যিনি সত্য দ্বীন সহ স্বীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করেছেন এবং তাঁরই দ্বারা নবুয়্যতকে সমাপ্ত করেছেন। তাঁকে আদম সন্তানের সরদার বানিয়েছেন এবং সমগ্র মানব জাতির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। তাঁর আনুগত্যকে আল্লাহর আনুগত্য, তাঁর অবাধ্যতাকে আল্লাহর অবাধ্যতা [১ বুখারী কতৃক বর্ণিত হাদীছের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ বলেনঃ ‘যে আমার আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করল, আর যে আমার অবাধ্য হল সে আল্লাহর অবাধ্য হল’।] এবং তাঁর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করাকে আল্লাহর কাছে বাইয়াত গ্রহণ রূপে ঘোষণা করা হয়েছে, [২ আল্লাহপাক বলেনঃ ‘‘নিশ্চয়ই যারা তোমার বাইয়াত করেছে তারা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর বাইয়াত করেছে’’ সুরা আল-ফাতহ-১১।] সেই আল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক অভিশপ্ত আর কেহ নহে, যে আল্লাহর রাসূলের অবমাননা করে এবং তাঁর উপর নিজের প্রাধান্য দাবিকরে। এখানে আমি স্বয়ং গোলাম আহমদের একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিচ্ছি। সে বলে- যে ব্যক্তি কোন নবীকে তুচ্ছ মনে করে সে কাফের। (গোলামের আইনুল মা’ রেফাত’’ ১৮পৃঃ) এ বক্তব্যের আলোকে গোলাম ও তার জামাত যারা কাদিয়ানী নামে পরিচিত কি হবে? তার ছেলে ও খলীফা মাহমুদ আহমদের কি হবে? যে এমন ঘৃণ্য কথা বলে, ‘প্রত্যেকের জন্য এটা সম্ভব যে, সে যে মর্যাদায় উন্নতি লাভ করতে বা পৌঁছতে চায়, তা সে পেতে পারে। এমন কি যদি সে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা ও সম্মান থেকে অগ্রগামী হতে চায়, তাতেও সে সফলকাম হতে পারে। (কাদিয়ানী খলীফা মাহমুদ আহমদের ‘‘ইওমিয়াত’’ যা আল ফজল পত্রিকায় প্রচারিত ১৭ই জুলাই ১৯২২ সনে প্রকাশিত।) এই হল দ্বিতীয় অভিশপ্ত ব্যক্তির বক্তব্য, যে এমন ব্যক্তি সম্বন্ধে মন্তব্য করেছে, যাকে রাত্রিকালে মসজিদে আকসার ভ্রমণ করান হয় আসমানের দিকে মে’ রাজের মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে এবং যার পেছনে সকল নবী নামাজ আদায় করেন। [৩ যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর ফেরেস্তাগণ নবীর উপর দরুদ প্রেরণ’’ সুরা আহযাব।] যার প্রতি আল্লাহ ও ফেরেস্তা এবং মুমিনগণ দরুদ ও সালাম প্রেরণ করেন। [৪ তিরমিজী ও আহহমদ ।] যিনি কেয়ামতের দিন হামদের পতাকাবাহী হবেন [৫ মসনদে আহমদ] এবং সকল নবীর পক্ষ হতে বক্তব্য রাখবেন। যার সম্পর্কে বরকতময় মহান প্রভু বলেছেন: ‘‘যাতে আল্লাহ তাআলা আপনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেন’’ [৬ সুরা আল ফাতহ- ২] আরো এরশাদ হচ্ছে- ‘‘তিনি হেদায়েত ও সত্য ধর্ম দিয়ে তার রাসূলকে পাঠিয়েছেন, যাতে তিনি এ ধর্মকে অন্য সকল ধর্মের উপর বিজয়ী করেন’’। [৭ সুরা আল ফাতহ- ২৮৮ সুরা আহযাব-৪৫] আরো বলেন- ‘‘হে নবী আমি তোমাকে সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী এবং আল্লাহর নির্দেশে তার প্রতি আহবানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপ রূপে পাঠিয়েছি’’। [] কিন্তু কাদিয়ানী খলীফা বলে: কেহ যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা ও সম্মান হতে অগ্রসর হতে চায়, তবে সে অগ্রগামী হতে পারবে। ‘‘আল্লাহ পানাহ! আল্লাহ পানাহ! এ কুকুর হতে বড় কুকুর আর কে হতে পারে? এ ঘৃণ্য কাজ হতে বড় ঘৃণ্য কাজ আর কি হতে পারে? এবং এ নির্লজ্জতা হতে বড় নির্লজ্জতা আর কি হতে পারে? কেমন করে এ সকল পাপিষ্ঠ বদমাইশরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার দুঃসাহস করে ? যদি সমস্ত সৃষ্টিকে পাল্লার একদিকে রাখা হয় এবং তাঁকে অপর দিকে রাখা হয়, তবে , নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহর দিকটাই ভারী হবে। এতদ সত্ত্বেও তারা দাবিকরে যে , মুসলমানগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে যেরূপ বিশ্বাস রাখে, তারাও অনুরূপ বিশ্বাস পোষণ করে । তবে কোন মুসলমান কি এরূপ কথা বলতে পারে? যা স্মরণ হওয়া মাত্রই অন্তর কেঁপে ওঠে। মহান আল্লাহ তাআলা সত্যই বলেছেন ‘‘তারা আল্লাহ ও ঈমানদার গণের সাথে প্রতারণা করে, অথচ তারা নিজেদের ছাড়া আর কাউকে প্রতারণা করছে না । তবে তারা এর খবরও রাখে না তাদের অন্তরের মধ্যে রোগ রয়েছে, আল্লাহ সে রোগকে আরো বাড়িয়ে দিলেন। আর, তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি তাদের মিথ্যা উক্তির জন্য।’’ [১ সুরা বাকারা ৯ও ১০] তারা কি মনে করে যে , রাসূলুল্লাহ সা: এর মর্যাদাকে এভাবে ক্ষুণ্ণ করতে পারবে যেভাবে তাদের ঘৃণ্য পূর্ব-পুরুষগণ এ ধারণা ও চেষ্টা করে আসছে? তাদের পূর্ব-পুরুষদের প্রতিবাদে মহান আল্লাহ যা বলেছেন- আমি তাদেরকে তাই বলব: আল্লাহ বলেন ‘‘তারা চায় আল্লাহর নূরকে ফুৎকারে নিভিয়ে দেবে পক্ষান্তরে আল্লাহ স্বীয় নূরকে পরিপূর্ণ না করে ছাড়বেন না ; যদিও কাফেরগণ তা অপছন্দ করে। তিনিই আল্লাহ যিনি স্বীয় রাসূলকে হেদায়েত ও সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাকে একে সমূদয় ধর্মের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরেকগণ তা অপছন্দ করে।’’ [২ সুরা তাওবা- ৩২-৩৩] কাফের ও মুরতাদগণ ! তোমরা ঘৃণা করতে থাক এবং তোমাদের সকল শক্তি দিয়ে আল্লাহর নূরকে ফুৎকার দিয়ে নির্বাপিত করার জন্য চেষ্টা চালাও । তোমাদের সঙ্গী-সাথী সাহায্যকারী ইংরেজ প্রভু ও অন্যান্যদেরকে এ কাজে আহবান কর। অতঃপর সমবেত চেষ্টা সাধনা চালিয়ে যাও। তবুও তোমরা কিছুই করতে পারবে না । কেননা, আল্লাহ তাআলা স্বীয় নূরকে পরিপূর্ণ করতে চান, যদিও তোমরা তা অপছন্দ কর। তোমরা ও তোমাদের প্রভুদের ভাগ্যে লাঞ্ছনাই লাঞ্ছনা। তোমরা উপনিবেশবাদী কাফের- গণকে ভারত উপমহাদেশে টিকিয়ে রাখতে পারনি। তারা প্রাচ্য অঞ্চল হতে বের হয়ে যাওয়াতে হতাশ হয়ে পড়েছ। তোমরা মুসলমানদের অন্তর হতে জেহাদের শিকড়কে উপড়ে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছ। তোমরা মুসলমানদের ঘাড়ে ইংরেজদের আনুগত্যের শিকল পরাতে বিফল হয়েছ। এমনি ভাবে তোমরা খাতামুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীনের উপর মিথ্যাবাদী দাজ্জাল গোলাম আহমদের প্রাধান্য প্রমাণ করতে পরনি এবং কখনও পারবে না। যখন তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর দ্বীনের নামে কাদিয়ানী মতবাদের দাওয়াত প্রচারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছ, তখন তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মহান ব্যক্তিত্বকে খাট করার ব্যাপারে তোমাদের অক্ষমতা স্বীকার করে নিয়েছ। অতএব রাসূলুল্লাহ সম্পর্কে তোমাদের অন্তরে যে হিংসা ও বিদ্বেষ লুক্কায়িত রয়েছে, তা তোমরা বাহ্যিক ভাবে মুখে উচ্চারণ কর না এবং তোমাদের আসল বিশ্বাস ও প্রকৃত উদ্দেশ্যকে তোমরা প্রকাশ কর না; যাতে তোমাদের আসলরূপ প্রকাশিত না হয় এবং তোমরা সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত না হও। কিন্তু আমরা তোমাদের মুখের ও মূল লক্ষের পর্দা সরিয়ে দেব। এতে এখন পর্যন্ত যারা সতর্ক হয়নি তারা সতর্ক হয়ে যাবে। আমরা তোমাদেরকে তোমাদের পরিণাম সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করতে আহবান জানাচ্ছি। উপনিবেশবাদীদের সেবা করার জন্য তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছিল, অথচ উপনিবেশবাদীরা এ উপমহাদেশ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে এবং তারা এশিয়া ও আফ্রিকায় আবার ফিরে আসা থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। মুসলমানদের জিহাদের বিশ্বাসকে বিকৃত করার জন্য তোমাদের ও তোমাদের নবীকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ মুসলমানরা জিহাদ করে যাচ্ছে। অতএব, এখন তোমাদের উচিত, তোমরা তোমাদের কার্যকলাপের উপর লজ্জিত হওয়া এবং ইসলাম ও দ্বীনে মুহাম্মদী এবং শরীয়তে মুহাম্মদীর দিকে তোমাদের ফিরে আসা। তা হলে আশা করা যায় যে পূর্ববর্তী কাজের উপর তোমাদের লজ্জিত হওয়ার কারণে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের জন্য সুপারিশ করবেন এবং তার শানে তোমাদের অবমাননা করার অপরাধও ক্ষমা করে দেবেন। কেননা, তাকে জগৎ বাসীর জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করা হয়েছে।সুতরাং ক্ষমা ও মার্জনা করা তার সুমহান অভ্যাস। তাই, তোমরা তার পথে ফিরে আস। আল্লাহর শপথ! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত দানশীল ও দয়াবান। আশা করা যায় , তিনি তোমাদের ক্ষমা করবেন। আর তিনিই হলেন সেই ব্যক্তি যিনি মক্কা বিজয়ের দিন ঐ সকল লোকদেরকে সম্বোধন করে বলেছিলেন, যারা তাঁকে কষ্ট দিয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল এবং তাকে তার নিজ আবাস ভূমি ও তার পূর্ব পুরুষ গণের আবাস ভূমি মক্কা মুকাররমা থেকে বহিষ্কৃত করেছিল এবং তার ও তার সাথীদের সংঙ্গে লড়াই করেছিল, সে দিন তিনি বিজয়ী ও ক্ষমতার একমাত্র অধিকারী ছিলেন: আজ তোমাদের উপর কোন অভিযোগ করা হবে না, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন; তিনি পরম করুণাময়।’’ অতএব, হে অপরাধীগণ, সে দিন আসার আগেই ‘যে দিন কোন বেচা-কেনা ও সুপারিশ চলবে না, কাফেরগণই হল অন্যায়কারী।’ এবং তোমাদেরকে ঐ কথা বলার পূর্বেই ‘হে পা পিষ্ট গণ আজ তোমরা পৃথক হয়ে যাও’’ তোমরা দ্রুত তওবা কর এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনিই হলেন ঐ মহান রাসূল যিনি বলেছেন: ‘‘ইসলাম তার পুববর্তী সকল অপরাধকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় এবং হিজরত তার পূর্ববর্তী সকল অপরাধকে মুছে ফেলে’’। [১ বুখারী ও মুসলিম।] তিনি আরো বলেছেন: ‘‘আল্লাহ তার বান্দার তওবাতে ঐ ব্যক্তির চেয়েও অধিক খুশি হন যে বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে তার উট হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ার পর সে তার উট ফিরে পেল’’। [২ বুখারী।] তিনি সেই ব্যক্তি যিনি তার চাচার হত্যাকারীকে যখন সে ইসলাম গ্রহণ ও তওবা করে এসেছিল, ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং যে মহিলা তার চাচার কলিজাকে চিবিয়েছিল, সে লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে আসলে তাকে তিনি মাফ করে দেন। তোমাদের উপর শাস্তি পতিত হওয়ার আগে তোমরা তাড়াতাড়ি তওবা কর। আল্লাহর কসম! যিনি বিশবজগৎ ও উহার অন্তর্ভুক্ত সকল বস্ত্তকে সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা তওবা করার পূর্বে মারা যাও, তবে তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল খুবই খারাপ হবে। আল্লাহ তোমাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করুন এবং তোমাদের জন্য ইসলামের পথ উজ্জ্বল করুন। তোমাদেরকে নবুয়তের দাবিদার এ মিথ্যাবাদী থেকে দূরে রাখুন, যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবমাননাকারী, নবুয়তের চাদর চোর, কাফেরদের সেবক। কেবল মাত্র আল্লাহর তওফীক ও ক্ষমতা ব্যতীত গুনাহ থেকে বাঁচার এবং এবাদত করার কোন শক্তি কারো নেই। তিনি উত্তম অভিভাবক ও কার্য সমাধা কারী। দরুদ ও সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর, যিনি সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত এবং তার পরিবার বর্গ, সাহাবায়ে কেরাম ও বন্ধু বান্ধবের উপর।
আমীন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/699/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।