মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
খাদ্য ও পণ্য-দ্রব্যে ভেজাল ইসলামের দৃষ্টিতে এর প্রতিকার
লেখকঃ ড. মো: আবদুল কাদের
১৯
৮. দ্রব্যমূল্য নিয়ে কোনরূপ ষড়যন্ত্র ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/205/19
ইসলাম পণ্য দ্রব্যকে তার যথাযথ মালিকের নিকট সোপর্দ করতে বদ্ধ পরিকর। সেক্ষেত্রে যাতে কোন প্রকার সুযোগ সন্ধানী ও শোষণের অবকাশ না থাকে সেদিকেও দৃষ্টি রেখেছে ইসলাম। কারণ, যদি এমনটি হয়, তাহলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া এগুলো প্রতারণারও অন্তর্ভুক্ত। তাইতো ইসলাম প্রতারণার মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধির যাবতীয় পদ্ধতিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। পদ্ধতিগুলো নিম্নরূপ:
ক) মজুদদারি
ইসলামের পরিভাষায় মজুদদারিকে احتكار ‘ইহতিকার’ বলা হয়। ইমাম ইবন তাইমিয়া রাহেমাহুল্লাহ মজুদদার ( محتكر ) এর সংজ্ঞায় বলেন:
المحتكر هو الذي يعمد إلى شراء ما يحتاج إليه الناس من الطعام فيحبسه عنهم ويريد إغلاءه عليهم وهو ظالم للخلق المشترين .
“মজুদদার সে ব্যক্তি যে মানুষের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সংগ্রহ করে তার মূল্য বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আটক করে রাখে এবং সে এ কাজে ক্রেতাদের প্রতি জুলুম করে”। [৪৪. ইমাম আহমাদ ইবন্ আব্দুল হালীম ইবন্ তাইমিয়া, মাজমু‘উল ফাতাওয়া, (মদীনা: বাদশাহ্ ফাহাদ্ কুরআন প্রিণ্টিং কম্পেক্স, ১৪১৬ হি. - ১৯৯৫ খ্রী.) খ. ২৮ পৃ. ৭৫।]
ইসলামের দৃষ্টিতে মজুদদারি জঘন্য অপরাধ। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
من احتكر طعاما أربعين ليلة فقد برئ من الله تعالى وبرئ الله تعالى منه .
“যে ব্যক্তি চল্লিশ রাত পর্যন্ত খাদ্যদ্রব্য মজুদ করবে, তার সাথে আল্লাহর কোন সম্পর্ক থাকবে না।” [৪৫. ইমাম আহমাদ, মুসনাদ আহমাদ, খ.২ পৃ.৩৩। শু‘আইব আল-আরনা‘ঊত বলেন: হাদীসটির সনদ দূর্বল।]
মজুদদারের ঘৃণ্য মানসিকতা স্পষ্ট করে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
بئس العبد المحتكر إذا رخص الله الأسعار حزن و إذا غلى فرح
“নিকৃষ্ট মানুষ হল মজুদদার। মূল্য হ্রাসের সংবাদ পেলে তার খারাপ লাগে, আর মূল্য চড়া হলে আনন্দিত হয়।” [৪৬. ইমাম বাইহাকী, শু‘আবুল ঈমান, সম্পাদনা: মুহাম্মাদ সা‘য়ীদ যাগলুল, (বৈরুত: দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, প্রথম সংস্করণ, ১৪১০ হি.), খ. ৭ পৃ. ৫২৫, হাদীস নং - ১১২১৫।] অন্য হাদিসে এসেছে: المحتكر ملعون والجالب مرزوق অর্থাৎ, “আমদানি-কারক রিযিকগ্রাপ্ত হয়, আর মজুদদার হয় অভিশপ্ত।” [৪৭. ইমাম আব্দুর রায্যাক আস্-সান‘আনী, মুসান্নাফ আব্দুর রায্যাক, সম্পাদনা: হাবীবুর রহমান আল-আ‘যামী, (বৈরূত: আল-মাক্তাবুল ইসলামী, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০৩ হি.), খ. ৮ পৃ. ২০৪।]
খ. তালাক্কী
গ্রাম গঞ্জ হতে কৃষকরা সামগ্রী নিয়ে শহরের বাজারে প্রবেশ করার পূর্বেই তাদের থেকে পাইকারিভাবে সব সামগ্রী খরিদ করে নেয়াকে ‘তালাক্কী’ বলা হয়। গ্রামের কৃষকরা এতে প্রতারিত হতে পারে এবং যথাযথ মূল্য হতে বঞ্চিত হয়। তাই বাজার প্রতিযোগিতা ব্যবস্থা ব্যাহত যেন না হয় এবং ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছায় বাজার দাম যেন নিয়ন্ত্রিত না হয়, সে লক্ষ্যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তালাক্কী কে নিষেধ করেছেন।” [৪৮. মানছুর বিন ইউনুছ আল-বাঙ্গতী, কাশফুল কিনা ‘আন মাতনিল ইকনা’ (বৈরুত: দারুল ফিকর, ১৪০২ হি.), খ. ৩, পৃ. ১৮৭।]
গ. দালালি বা নাজাশ
প্রকৃত ক্রেতাকে ধোঁকায় ফেলে অধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে নকল ক্রেতা সেজে পণ্যের উচ্চ মূল্য হাঁকানোকে নাজাশ বা দালালি বলে। [৪৯. দালালি এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Brokery, brokerage এবং আরবীতে একে عمو لة - سمسرة – السمسار বলে আখ্যায়িত করা হয়। দ্রঃ ড. মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, তিন ভাষার পকেট অভিধান, (ঢাকা: রিয়াদ প্রকাশনা, ২০০১) পৃ. ১৯৩। কোন ব্যক্তি স্বীয় আচরণ ও কারসাজির মাধ্যমে পণ্য দ্রব্য বিক্রয়ে যদি কোন মধ্যস্থতা করে, যার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ঘটে, তখন তাকে দালালি বলে।] এটি এক ধরনের প্রতারণা।
এর মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়। তাই ইসলাম এটাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আল্লামা তকী ওসমানী এর সংজ্ঞায় বলেন:
هو أن يزيد الرجل في ثمن السلعة لا لرغبة في شوائها، بل ليخدع غيره ليزيد ويشتريها .
“কোন ব্যক্তি ক্রয়ের উদ্দেশ্যে নয়, বরং অপরকে প্রতারিত করার জন্য এবং অধিক মূল্যে ক্রয়ে প্ররোচিত করা নিমিত্তে গ্রাহক সেজে দ্রব্যের চড়া মূল্য দেয়ার প্রস্তাব করাকে নাজাশ্ বলে। ” [৫০. আল্লামা মোহাম্মদ তকী ওছমানী, তাকমালাতু ফতহিল মুলহিম, (করাচি: দারুল উলূম, ১৯৯২), খ. ১, পৃ. ৩৩০।]
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন এবং এটিকে প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর বলেছেন। তার ভাষ্য হলো:
“দালাল ব্যক্তি সুদখোর, বিশ্বাসঘাতক।” [৫২. প্রাগুক্ত, হাদীস নং-২০৩৪।] অপর এক হাদিসে এসেছে:
عن أبي هريرة ط أن رسول الله صلى الله عليه وسلم نهى أن يستام الرجل على سوم أخيه .
“হযরত আবু হুরাইরা (রা) বলেন: মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন ব্যক্তি তার ভাই দর করার সময় দর করতে নিষেধ করেছেন।” [৫৩. ইমাম মুসলিম, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১৫১৫।]
বিক্রেতা ও ভোক্তাদের মাঝে দালাল বা Middle man এর অনুপ্রবেশের কারণে দ্রব্যের দাম কিছুটা বেড়ে যায়। এ কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাকে নিষেধ করেছেন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
من دخل في شيء من أسعار المسلمين ليغليه عليهم فان حقا على الله تبارك وتعالى ان يقعده بعظم من النار يوم القيامة .
“কোন ব্যক্তি মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ ঘটালে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা আগুনের হাড়ের উপর তাকে বসিয়ে শাস্তি দিবেন।” [৫৪. ইমাম আহমাদ, মুসনাদ আহমাদ, খ.৫ পৃ. ২৭।]
ঙ. নকল পণ্য ও ভাল পণ্যের মিশ্রণ
অধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে পণ্য-দ্রব্যকে নকল অবস্থায় বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপন করা। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত:
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم مر على صبرة من طعام فأدخل يده فيها فنالت أصابعه بللا فقال يا صاحب الطعام ! ما هذا ؟ قال أصابته السماء يا رسول الله ! قال أفلا جعلته فوق الطعام حتى يراه الناس ؟ ثم قال من غش فليس منا .
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা একটি খাদ্য স্তূপের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি স্তূপটির মধ্যে তাঁর হাত ঢুকিয়ে দিলেন। তাতে তাঁর হাত ভিজে গেল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিক্রেতাকে বললেন: এটা কি হচ্ছে? সে বলল: এগুলোকে বৃষ্টিতে পেয়েছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি কেন ভেজা অংশকে বাহিরে রাখছ না, যাতে লোকেরা তা দেখতে পারে। জেনে রাখ- যারা প্রতারণা করে, তারা আমাদের (মুসলিম মিল্লাতের) অন্তর্ভুক্ত নয়।” [৫৫. ইমাম তিরমিযী, জামে‘ আত-তিরমিযী, হাদীস নং-১৩১৫।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/205/19
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।