hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কতিপয় দীনী বিষয় যা একজন মুসলিমের জানা প্রয়োজন

লেখকঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইবন আব্দুল আযীয আল-মাদানী

১৪
কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে এমন মতবাদ যা কোনো ব্যাপারে যে কোনো ধর্মের পক্ষপাতিত্ব না করে না, তথা যে কোনো ধর্মের নিয়ন্ত্রণ কিংবা অনুশাসন না মানার প্রতি আহ্বান করে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের ধ্বজাধারীরা কিন্তু উক্ত অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী নয়। কারণ, তাদের অনেকেই নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে যে কোনো ধর্মের কিছু না কিছু অনুশাসন মেনে চলে। তাই তাদের অনেককেই কখনো কখনো সালাত, সাওম, হজ, যাকাত, কুরআন তিলাওয়াত কিংবা অমূলক কেচ্ছা ও ফযীলত সর্বস্ব ওয়ায মাহফিল ও বয়ান শুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। অতএব, পারিভাষিক অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বলতে এমন মতবাদকে বুঝানো হয় যে মতবাদে যে কোনো ধর্মকে ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও আচরণের বিষয়রূপে গণ্য করা হয়। এ ছাড়া আর অন্য কোথাও নয়। তাদের মতে যে কোনো রাষ্ট্র কোনো বিশেষ ধর্মের পক্ষপাতিত্ব করতে পারে না। অন্য কথায় যে রাজনৈতিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র নীতিগতভাবে কোনো ধর্মের পক্ষপাতিত্ব কিংবা ধর্মকে ব্যবহার করে না। যদিও কোনো কোনো রাষ্ট্র কিংবা প্রশাসন জনগণের কঠিন চাপের মুখে কোনো না কোনো সময় যে কোনো ধর্মের পক্ষপাতিত্ব করে। তবে মনে রাখতে হবে এ জাতীয় ধর্মীয় পক্ষপাতিত্ব নীতিগত নয় বরং তা চাপের মুখে।

তাই বলতে হয় ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ একটি নতুন দর্শন ও একটি নতুন বিপ্লব। যা তার ভক্তদেরকে রাষ্ট্র থেকে যে কোনো ধর্মকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করে রেখে একমাত্র দুনিয়ার ক্ষণিকের ভোগ-বিলাসে মত্ত হওয়ার সবক শিখায়। তাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে দুনিয়া। তাদের অধিকাংশই আখিরাত ও আখিরাতের যে কোনো কর্মকান্ডের প্রতি তেমন একটা ভ্রূক্ষেপ করে না। তাই এদের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত বাণী যথাযথভাবে প্রযোজ্য।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«تَعِسَ عَبْدُ الدِّيْنَارِ وَعَبْدُ الدِّرْهَمِ، وَعَبْدُ الْـخَمِيْصَةِ، إِنْ أُعْطِيَ رَضِيَ، وَإِنْ لَمْ يُعْطَ سَخِطَ، تَعِسَ وَانْتَكَسَ، وَإِذَا شِيْكَ فَلاَ انْتَقَشَ، طُوْبَى لِعَبْدٍ آخِذٍ بِعِنَانِ فَرَسِهِ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ، أَشْعَثَ رَأْسُهُ، مُغْبَرَّةٍ قَدَمَاهُ، إِنْ كَانَ فِيْ الْحِرَاسَةِ كَانَ فِيْ الْحِرَاسَةِ، وَإِنْ كَانَ فِيْ السَّاقَةِ كَانَ فِيْ السَّاقَةِ، إِنِ اسْتَأْذَنَ لَمْ يُؤْذَنْ لَهُ، وَإِنْ شَفَعَ لَمْ يُشَفَّعْ»

“ধ্বংস হোক দীনার ও দিরহামের গোলাম! ধ্বংস হোক পোশাক-পরিচ্ছদের গোলাম! তাকে কিছু দিলে খুশি। না দিলে বেজার। ধ্বংস হোক! কখনো সে সফলকাম না হোক! সমস্যায় পড়লে সমস্যা থেকে উদ্ধার না হোক! (কাঁটা বিঁধলে না খুলুক)। জান্নাত ঐ ব্যক্তির জন্য যে সর্বদা আল্লাহর রাস্তায় ঘোড়ার লাগাম ধরেই আছে। মাথার চুলগুলো তার এলোমেলো। পা যুগল ধূলিমলিন। সেনাবাহিনীর পাহারায় দিলেও রাজি। পশ্চাতে দিলেও রাজি। ওপরস্থদের নিকট অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয় না। কারোর জন্য সুপারিশ করলে তার সুপারিশ গ্রহণ করা হয় না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৮৬, ২৮৮৭; বায়হাক্বী: ৯/১৫৯, ১০/২৪৫।]

সর্বদা কেউ দুনিয়া কামানোর নেশায় মত্ত থাকলে দুনিয়া যে নিশ্চিতভাবেই সম্পূর্ণরূপে তার হাতে ধরা দিবে তাও কিন্তু সঠিক নয়। বরং আল্লাহ তা‘আলা যাকে যতটুকু দিতে চাবেন সে ততটুকুই পাবে। এর বেশি কিছু সে পাবে না। আর ভাগ্যক্রমে সে তার চাহিদানুযায়ী দুনিয়ার সবটুকু পেলেও পরকালে তার জন্য নির্ধারিত থাকবে শুধু জাহান্নাম এবং তার সকল আমল বাতিল বলেই গণ্য হবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿مَّن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡعَاجِلَةَ عَجَّلۡنَا لَهُۥ فِيهَا مَا نَشَآءُ لِمَن نُّرِيدُ ثُمَّ جَعَلۡنَا لَهُۥ جَهَنَّمَ يَصۡلَىٰهَا مَذۡمُومٗا مَّدۡحُورٗا ١٨﴾ [ الاسراء : ١٨ ]

“কোন ব্যক্তি পার্থিব কোনো সুখ-সম্ভোগ কামনা করলে আমি যাকে ইচ্ছা এবং যা ইচ্ছা অতিসত্বর দিয়ে থাকি। অতঃপর আমরা তার জন্য নির্ধারিত করে রাখি জাহান্নাম। যাতে সে প্রবেশ করবে অপমানিত ও লাঞ্ছিতভাবে”। [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ১৮]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيۡهِمۡ أَعۡمَٰلَهُمۡ فِيهَا وَهُمۡ فِيهَا لَا يُبۡخَسُونَ ١٥ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَيۡسَ لَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ إِلَّا ٱلنَّارُۖ وَحَبِطَ مَا صَنَعُواْ فِيهَا وَبَٰطِلٞ مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٦﴾ [ هود : ١٥ ،١٦ ]

“যারা পার্থিব জীবন ও উহার সাজসজ্জা চায় আমরা তাদের কৃতকর্মের ফল পূর্ণভাবে দুনিয়াতেই দিয়ে দেবো। এতটুকুও তাদেরকে কম দেওয়া হবে না। এরা এমন যে, আখিরাতে তাদের জন্য জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। তাদের সকল আমল তখন অকেজো এবং নিষ্ফল বলে বিবেচিত হবে”। [সূরা হূদ, আয়াত: ১৫, ১৬]

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা যখন দুনিয়াকেই সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে থাকে চাই তা শরী‘আতসম্মত হোক বা নাই হোক তখন শরী‘আতের কোনো অনুশাসন তাদের স্বার্থ বিরোধী হলেই তারা তা কখনো আইনগতভাবে রহিত করবে অথবা কমপক্ষে তার বিরুদ্ধে বলবে।

অতএব, বলতে হয়, যারা বিচারের ক্ষেত্রে মানব রচিত বিধানকেই প্রাধান্য দেয় এবং শরী‘আতের বিধি-বিধানকে রহিত করে তারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী। যারা হারাম বস্তুসমূহ যেমন, ব্যভিচার, মদ্যপান, গানবাদ্য কিংবা সুদী কাজ-কারবার ইত্যাদি সমাজে চালু করে এ মনে করে যে, এগুলো নিষেধ করলে জনস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব হবে তারাও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী। যারা শরী‘আতের দণ্ডবিধি তথা হত্যাকারীকে হত্যা, ব্যভিচারীকে একশত বেত্রাঘাত করা অথবা সে বিবাহিত হলে তাকে পাথর মেরে সম্পূর্ণরূপে হত্যা করা, মদপানকারীকে আশিটি বেত্রাঘাত করা, চোরের হাত কাটা কিংবা সন্ত্রাসীকে হত্যা করা, ফাঁসী দেওয়া, বিপরীতভাবে তার হাত-পা কেটে ফেলা কিংবা তাকে দূরের কোনো জেলে আটকে রাখা ইত্যাদি অস্বীকার করে কিংবা আইনগতভাবে নিষেধ করে এ মনে করে যে, এগুলো বাস্তবায়ন করা বিশ্রী, কঠোরতা ও মানবতা বিরোধী তারাও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ যখন মানুষের ব্যক্তিগত জীবন ছাড়া আর কোথাও কোনো ধর্মের স্বীকৃতি দেয় না তাই তা হচ্ছে একটি শির্কী ও কুফুরী মতবাদ। কারণ, তাতে যেমন মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ধর্মের কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয় না তথা এ সকল ব্যাপারে শরী‘আতের বিধানের প্রতি কুফুরী করা হয় তেমনিভাবে এ সকল ক্ষেত্রে সংসদ বা আইন পরিষদকে আইন বা বিধান রচনার অধিকার দেওয়া হয় তথা এ সকল ব্যাপারে সাংসদ ও আইনজ্ঞদেরকে মহান আল্লাহ তা‘আলার অংশীদার করা হয় তাই তা একই সময়ে কুফুরী এবং শির্ক।

একজন মুসলিম তার জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে ইসলামের সকল বিধি-বিধান মানতে বাধ্য। আল্লাহ তা‘আলার নিকট একমাত্র ইসলাম ছাড়া অন্য অন্য কিছুই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, তিনিই তো স্রষ্টা। অতএব, তিনিই একমাত্র বিধানদাতা, আর অন্য কেউ নয়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُۗ﴾ [ ال عمران : ١٩ ]

“নিশ্চয় মহান আল্লাহ তা‘আলার নিকট ইসলামই একমাত্র (গ্রহণযোগ্য) ধর্ম”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ ال عمران : ٨٥ ]

“যে কেউ ইসলাম ব্যতিত অন্য কোনো ধর্ম অন্বেষণ করে তা কখনই গ্রহনযোগ্য হবে না এবং পরকালে সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]

নিজের ইচ্ছা মাফিক কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্মকে মানা আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্মকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু মানা এটা মূলতঃ ইয়াহূদীদেরই চরিত্র।

আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের সম্পর্কে বলেন,

﴿أَفَتُؤۡمِنُونَ بِبَعۡضِ ٱلۡكِتَٰبِ وَتَكۡفُرُونَ بِبَعۡضٖۚ فَمَا جَزَآءُ مَن يَفۡعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمۡ إِلَّا خِزۡيٞ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰٓ أَشَدِّ ٱلۡعَذَابِۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ﴾ [ البقرة : ٨٥ ]

“তবে কি তোমরা কিতাবের কিয়দংশ বিশ্বাস করো আর কিয়দংশ অবিশ্বাস করো। তোমাদের মধ্যে যারা এমন করবে তাদের জন্য এ পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা ও দুর্গতি ছাড়া আর কিছুই নেই। উপরন্তু তাদেরকে কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তির প্রতি সোপর্দ করা হবে। আর আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কর্মের প্রতি কখনোই গাফিল নন”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ৮৫]

আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে এ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের কুফুরী ও শির্কী চেতনা থেকে রক্ষা করুন। আমীন! ইয়া রাব্বাল-আলামীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন