hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কতিপয় দীনী বিষয় যা একজন মুসলিমের জানা প্রয়োজন

লেখকঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইবন আব্দুল আযীয আল-মাদানী

ইসলাম বিধ্বংসী দশটি বিষয়
প্রিয় দীনী ভাইয়েরা! দশটি এমন মারাত্মক কাজ ও বিশ্বাস রয়েছে যার কোনো একটি কারোর মধ্যে পাওয়া গেলে (ইচ্ছায়, অনিচ্ছায়, ভয়ে, ঠাট্টাবশত যেভাবেই হোক না কেন) সে ইসলামের গন্ডী থেকে বের হয়ে যাবে এবং নির্ঘাত কাফির হিসেবে পরিগণিত হবে। তাই সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিৎ। সে বিষয়গুলো নিম্নরূপঃ

১. আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা। মৃত ব্যক্তির নিকট কোনো কিছু প্রার্থনা করা, তাদের নিকট কোনো ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করা, তাদের জন্য কোনো পশু জবাই করা অথবা তাদের জন্য কোনো কিছু মানত করা ইত্যাদি শির্কের অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ﴾ [ النساء : ٤٨ ]

“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করবেন না তাঁর সাথে কাউকে শরীক করা তবে তিনি এছাড়া অন্যান্য সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন যার জন্য ইচ্ছে করেন”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৮]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ﴾ [ المائ‍دة : ٧٢ ]

“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা যে ব্যক্তি তার সাথে কাউকে শরীক করেন তার ওপর জান্নাতকে করেন হারাম এবং জাহান্নামকে করেন তার শেষ ঠিকানা। আর তখন এরূপ অত্যাচারীদের কোনো সাহায্যকারী থাকবে না”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৭২]

২. বান্দা ও আল্লাহ তা‘আলার মাঝে এমন কাউকে স্থির করা যাকে বিপদের সময় ডাকা হয়, তার সুপারিশ কামনা করা হয়, তার ওপর কোনো ব্যাপারে ভরসা করা হয়। এমন ব্যক্তি সকল আলিমের ঐক্যমতে কাফির।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَدۡعُ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَۖ فَإِن فَعَلۡتَ فَإِنَّكَ إِذٗا مِّنَ ٱلظَّٰلِمِينَ ١٠٦﴾ [ يونس : ١٠٦ ] ﴿وَإِن يَمۡسَسۡكَ ٱللَّهُ بِضُرّٖ فَلَا كَاشِفَ لَهُۥٓ إِلَّا هُوَۖ وَإِن يُرِدۡكَ بِخَيۡرٖ فَلَا رَآدَّ لِفَضۡلِهِۦۚ يُصِيبُ بِهِۦ مَن يَشَآءُ مِنۡ عِبَادِهِۦۚ وَهُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ١٠٧﴾ [ يونس : ١٠٧ ]

“আর তুমি আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া এমন কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে ডাকো না যা তোমার কোনো উপকার বা ক্ষতি করতে পারবে না। এমন করলে সত্যিই তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে। যদি আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে কোনো ক্ষতির সম্মুখীন করেন তাহলে তিনিই একমাত্র তোমাকে তা থেকে উদ্ধার করতে পারেন। আর যদি তিনি তোমার কোনো কল্যাণ করতে চান তাহলে তাঁর অনুগ্রহের গতিরোধ করার সাধ্য কারোর নেই। তিনি নিজ বান্দার মধ্য থেকে যাকে চান অনুগ্রহ করেন। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও অতিশয় দয়ালু”। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৬-১০৭]

তিনি আরো বলেন,

﴿قُلِ ٱدۡعُواْ ٱلَّذِينَ زَعَمۡتُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ لَا يَمۡلِكُونَ مِثۡقَالَ ذَرَّةٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَا لَهُمۡ فِيهِمَا مِن شِرۡكٖ وَمَا لَهُۥ مِنۡهُم مِّن ظَهِيرٖ ٢٢ وَلَا تَنفَعُ ٱلشَّفَٰعَةُ عِندَهُۥٓ إِلَّا لِمَنۡ أَذِنَ لَهُ٢٣﴾ [ سبا : ٢٢ ،٢٣ ]

“আপনি বলুন: তোমরা যাদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে পূজ্য মনে করতে তাদেরকে ডাকো। তারা আকাশ ও পৃথিবীতে অণু পরিমাণ কিছুরও মালিক নয়। এতদুভয়ে তাদের কোনো অংশীদারিত্বও নেই এবং তাদের কেউ তাঁর সহায়কও নয়। তাঁর নিকট একমাত্র অনুমতিপ্রাপ্তদের পক্ষেই কোনো সুপারিশ ফলপ্রসূ হতে পারে”। [সূরা সাবা, আয়াত: ২২-২৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلۡخَالِصُۚ وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَ مَا نَعۡبُدُهُمۡ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَآ إِلَى ٱللَّهِ زُلۡفَىٰٓ إِنَّ ٱللَّهَ يَحۡكُمُ بَيۡنَهُمۡ فِي مَا هُمۡ فِيهِ يَخۡتَلِفُونَۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي مَنۡ هُوَ كَٰذِبٞ كَفَّارٞ ٣﴾ [ الزمر : ٣ ]

“জেনে রেখো, একনিষ্ঠ আনুগত্য শুধু আল্লাহরই জন্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কাউকে সাহায্যকারীরূপে গ্রহণ করে তারা বলে, আমরা এদের পূজা-অর্চনা এজন্যই করি যে, এরা আমাদেরকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেবে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের কলহপূর্ণ বিষয়ের ফায়সালা দিবেন। প্রত্যেককে যথোচিত প্রতিদান দিবেন। আল্লাহ তা‘আলা মিথ্যাবাদী ও কাফিরকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৩]

৩. কোনো কাফির ব্যক্তিকে কাফির মনে না করা অথবা সে ব্যক্তি যে সত্যিই কাফির এ ব্যাপারে সন্দেহ করা কিংবা তাদের ধর্ম-বিশ্বাস তথা জীবন ব্যবস্থাকে সঠিক মনে করা।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قَدۡ كَانَتۡ لَكُمۡ أُسۡوَةٌ حَسَنَةٞ فِيٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ إِذۡ قَالُواْ لِقَوۡمِهِمۡ إِنَّا بُرَءَٰٓؤُاْ مِنكُمۡ وَمِمَّا تَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ كَفَرۡنَا بِكُمۡ وَبَدَا بَيۡنَنَا وَبَيۡنَكُمُ ٱلۡعَدَٰوَةُ وَٱلۡبَغۡضَآءُ أَبَدًا حَتَّىٰ تُؤۡمِنُواْ بِٱللَّهِ وَحۡدَهُ﴾ [ الممتحنة : ٤ ]

“তোমাদের জন্য ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ; তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল: তোমরা এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যে মূর্তিসমূহের ইবাদাত করছো তা হতে আমরা সম্পূর্ণরূপে মুক্ত-পবিত্র। তোমাদেরকে আমরা অস্বীকার করছি এবং আজ থেকে চিরকালের জন্য আমাদের ও তোমাদের মাঝে বলবৎ থাকবে শত্রুতা ও বিদ্বেষ, যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনো”। [সূরা আল-মুমতাহিনাহ, আয়াত ৪]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ قَالَ : لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَكَفَرَ بِمَا يُعْبَدُ مِنْ دُوْنِ اللهِ حَرُمَ مَالُهُ وَدَمُهُ وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ»

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই বলে স্বীকার করেছে এবং আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত সকল উপাস্যের প্রতি অস্বীকৃতি জানিয়েছে তার জান ও মাল অন্যের ওপর হারাম এবং তার সকল হিসাব-কিতাব একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার হাতে ন্যস্ত”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩।]

৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনিত জীবনাদর্শ ব্যতীত অন্য কোনো জীবনাদর্শকে উত্তম মনে করা অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনিত বিচারব্যবস্থার চাইতে অন্য বিচারব্যবস্থাকে উন্নত কিংবা সমপর্যায়ের মনে করা। তেমনিভাবে মানবরচিত বিধি-বিধানকে ইসলামী বিধি-বিধানের চাইতে উত্তম মনে করা অথবা এমন মনে করা যে, ইসলামী বিধি-বিধান এ আধুনিক যুগে বাস্তবায়নের উপযুক্ত নয় অথবা ইসলামী সনাতন বিধি-বিধানকে আঁকড়ে ধরার কারণেই আজ মুসলিমদের এই অধঃপতন অথবা ইসলাম হচ্ছে ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের জন্য; রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতির সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য, দণ্ডবিধি ইত্যাদির ক্ষেত্রে মানব রচিত বিধি-বিধান প্রযোজ্য যেমনিভাবে ইসলামী বিধি-বিধান এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এটি যে ইসলাম বিধ্বংসী এ ব্যাপারে আলেমদের কোনো মতভেদ নেই।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ﴾ [ المائ‍دة : ٤٤ ]

“যারা আল্লাহ অবতারিত বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করে না তারা সম্পূর্ণরূপে কাফির”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৪৪]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ يَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠﴾ [ المائ‍دة : ٥٠ ]

“তবে কি তারা জাহেলি যুগের বিধান কামনা করে? মুমিনদের জন্য আল্লাহর বিধান চাইতে অন্য কোনো বিধান উত্তম হতে পারে কি”? [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৫০]

তিনি আরো বলেন,

﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَرَجٗا مِّمَّا قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسۡلِيمٗا ٦٥﴾ [ النساء : ٦٥ ]

“অতএব, আপনার (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতিপালকের কসম! তারা কখনো মুমিন হতে পারবে না, যে পর্যন্ত আপনাকে তাদের আভ্যন্তরীণ বিরোধের ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে না নেয়, এমনকি আপনি যে ফায়সালা করবেন তা দ্বিধাহীন হৃদয়ে গ্রহণ না করে এবং তা হৃষ্টচিত্তে মেনে না নেয়”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫]

৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনীত শর‘ঈ বিধানের কোনো একটির প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা, যদিও সে তদানুযায়ী আমল করুক না কেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَرِهُواْ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأَحۡبَطَ أَعۡمَٰلَهُمۡ ٩﴾ [ محمد : ٩ ]

“তা (দুর্ভোগ ও কর্মব্যর্থতা) এজন্যে যে, তারা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধানকে অপছন্দ করেছে। সুতরাং আল্লাহ তাদের কর্ম নিষ্ফল করে দিবেন”। [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৯]

৬. ইসলামের কোনো বিষয় নিয়ে বিদ্রূপ করা অথবা উহার কোনো পুণ্য কিংবা শাস্তি-বিধিকে উদ্দেশ্য করে ঠাট্টা করা।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ ٦٦﴾ [ التوبة : ٦٥ ،٦٦ ]

“হে রাসুল! আপনি বলে দিন: তবে কি তোমরা আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমুহ এবং তাঁর রাসুলের সাথে হাসি-ঠাট্টা করছিলে? তোমাদের কোনো কৈফিয়ত গ্রহণ করা হবে না। তোমরা ঈমান আনার পর এখন কাফির হয়ে গিয়েছ”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৫-৬৬]

৭. যাদু শেখা কিংবা শেখানো অথবা তাতে বিশ্বাস করা। তেমনিভাবে যে কোনো পন্থায় কারোর মাঝে আকর্ষণ কিংবা বিকর্ষণ সৃষ্টি করা ইত্যাদি।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا كَفَرَ سُلَيۡمَٰنُ وَلَٰكِنَّ ٱلشَّيَٰطِينَ كَفَرُواْ يُعَلِّمُونَ ٱلنَّاسَ ٱلسِّحۡرَ وَمَآ أُنزِلَ عَلَى ٱلۡمَلَكَيۡنِ بِبَابِلَ هَٰرُوتَ وَمَٰرُوتَۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنۡ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَآ إِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةٞ فَلَا تَكۡفُرۡ﴾ [ البقرة : ١٠٢ ]

“সুলাইমান ‘আলাইহিস সালাম কুফুরী করেন নি, তবে শয়তানরাই কুফুরী করেছে, তারা লোকদেরকে যাদু শেখাতো বাবেল শহরে বিশেষ করে হারূত-মারূত ব্যক্তিদ্বয়কে। (জিবরীল ও মীকাঈল) ফিরিশতাদ্বয়ের ওপর কোনো যাদু অবতীর্ণ করা হয় নি (যা ইয়াহূদীরা ধারণা করতো), তবে ব্যক্তিদ্বয় কাউকে যাদু শিক্ষা দিতো না যতক্ষণ না তারা বলতো: আমরা পরীক্ষাসরূপ মাত্র। অতএব, তোমরা কুফুরী করো না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১০২]

যাদুকরের শাস্তি হচ্ছে, কারো ব্যাপারে তা সত্যিকারভাবে প্রমাণিত হলে তাকে হত্যা করা। এ ব্যাপারে সাহাবীদের ঐকমত্য রয়েছে।

জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«حَدُّ السَّاْحِرِ ضَرْبَةٌ بِالسَّيْفِ»

“যাদুকরের শাস্তি তলোয়ারের কোপ তথা শিরশ্ছেদ”। [তিরমিযী, হাদীস নং ১৪৬০।]

জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু শুধু এ কথা বলেই ক্ষান্ত হন নি, বরং তিনি তা বাস্তবে কার্যকরী করেও দেখিয়েছেন।

আবু উসমান নাহদী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ عِنْدَ الْوَلِيْدِ رَجُلٌ يَلْعَبُ، فَذَبَحَ إِنْسَاناً وَأَبَانَ رَأْسَهُ، فَعَجِبْنَا فَأَعَادَ رَأْسَهُ، فَجَاءَ جُنْدُبٌ الْأَزْدِيْ فَقَتَلَهُ»

“ইরাকে ওয়ালীদ ইবন উক্ববার সম্মুখে জনৈক ব্যক্তি খেলা দেখাচ্ছিলো। সে জনৈক ব্যক্তির মাথা কেটে শরীর থেকে ভিন্ন করে ফেলে। এতে আমরা খুব বিস্মিত হলে লোকটি কর্তিত মাথা খানি যথাস্থানে ফিরিয়ে দেয়। ইতোমধ্যে জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে তাকে হত্যা করে”। [সহীহ বুখারী/আত্তা’রীখুল্ কাবীর: ২/২২২ বায়হাক্বী : ৮/১৩৬।]

তেমনিভাবে উম্মুল মুমিনীন হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহার ক্রীতদাসীকেও যাদুকর প্রমাণিত হওয়ার পর হত্যা করা হয়।

আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«سَحَرَتْ حَفْصَةَ بِنْتَ عُمَرَ ـ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا ـ جَارِيَةٌ لَهَا، فَأَقَـرَّتْ بِالسِّحْرِ وَأَخْرَجَتْهُ، فَقَتَلَتْهَا، فَبَلَغَ ذَلِكَ عُثْمَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَ فَغَضِبَ، فَأَتَاهُ اِبْنُ عُمَرَ ـ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا ـ فَقَالَ : جَارِيَتُهَا سَحَرَتْهَا، أَقَرَّتْ بِالسِّحْرِ وَأَخْرَجَتْهُ، قَالَ : فَكَفَّ عُثْمَانُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَ قَالَ الرَّاوِيْ : وَكَأَنَّهُ إِنَّمَا كَانَ غَضَبُهُ لِقَتْلِهَا إِيَّاهَا بِغَيْرِ أَمْرِهِ»

“হাফসা বিনতে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে তার এক ক্রীতদাসী যাদু করে। এমনকি সে এ ব্যাপারটি স্বীকার করে এবং যাদুর বস্তুটি উঠিয়ে ফেলে দেয়। এতদকারণে হাফসা ক্রীতদাসীকে হত্যা করে। সংবাদটি উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট পৌঁছলে তিনি রাগান্বিত হন। অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা তাকে ব্যাপারটি বুঝিয়ে বললে তিনি এ ব্যাপারে চুপ হয়ে যান তথা তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। বর্ণনাকারী বলেন, উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর অনুমতি না নিয়ে ক্রীতদাসীকে হত্যা করার কারণেই তিনি রাগান্বিত হন”। [আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং ১৮৭৪৭; বায়হাক্বী: ৮/১৩৬।]

অনুরূপভাবে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তার খিলাফতকালে সকল যাদুকর পুরুষ ও মহিলাকে হত্যা করার আদেশ জারি করেন।

বাজালা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَتَبَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهَ أَنِ اقْتُلُوْا كُلَّ سَاحِرٍ وَسَاحِرَةٍ، قَالَ الرَّاوِيْ : فَقَتَلْنَا ثَلاَثَ سَوَاحِرَ»

“উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজ খেলাফতকালে এ আদেশ জারি করে চিঠি পাঠান যে, তোমরা সকল যাদুকর পুরুষ ও মহিলাকে হত্যা করো। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমরা চারজন মহিলা যাদুকরকে হত্যা করি”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৩০৪৩; বায়হাকী: ৮/১৩৬; ইবন আবী শাইবাহ, হাদীস নং ২৮৯৮২, ৩২৬৫২; আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং ৯৯৭২; আহমাদ, হাদীস নং ১৬৫৭; আবু ইয়ালা, হাদীস নং ৮৬০, ৮৬১।]

উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকালে উক্ত আদেশের ব্যাপারে কেউ কোনো বিরোধিতা দেখায় নি বিধায় উক্ত ব্যাপারে সবার ঐকমত্য রয়েছে বলে প্রমাণ করে।

৮. মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফির ও মুশরিকদের সহযোগিতা করা।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ﴾ [ المائ‍دة : ٥١ ]

“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইয়াহূদী ও খ্রীস্টানদের সাথে বন্ধুত্ব করবে নিশ্চয় সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সুপথ দেখান না”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৫১]

৯. অধিক আমলের দরুন কিংবা অন্য যে কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি শর‘ঈ বিধি-বিধান মানা থেকে অব্যাহতি পেতে পারে এমন ধারণায় বিশ্বাসী হওয়া।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ ال عمران : ٨٥ ]

“যে কেউ দীন ইসলাম ব্যতিত অন্য কোনো ধর্ম অন্বেষণ করে তা কখনই গ্রহণযোগ্য হবে না এবং পরকালে সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]

১০. ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া (দীনি কোনো কথা শুনেও না তেমনিভাবে আমলও করে না) অর্থাৎ দীনের কোনো ধার ধারে না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِ‍َٔايَٰتِ رَبِّهِۦ ثُمَّ أَعۡرَضَ عَنۡهَآۚ إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَ مُنتَقِمُونَ ٢٢﴾ [ السجدة : ٢٢ ]

“যে ব্যক্তিকে তাঁর রবের নিদর্শনাবলী স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলো; অথচ সে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নিলো তার অপেক্ষা অধিক অত্যাচারী আর কে হতে পারে? আমি অবশ্যই অপরাধীদেরকে শাস্তি দেবো”। [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ২২]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ ١٢٤﴾ [ طه : ١٢٤ ]

“যে ব্যক্তি আমার কুরআন থেকে বিমুখ হবে তার জীবন যাপন হবে সংকুচিত এবং আমরা তাকে উত্থিত করবো অন্ধাবস্থায় কিয়ামত দিবসে”। [সূরা ত্বাহা, আয়াত: ১২৪]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন