hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাহের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

২১
তাবেঈদের যুগে সুন্নাহর গুরুত্ব প্রদান
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণের বিদায়ের পরই শুরু হল তাবেঈনদের যুগ। তাবেঈদের যুগের শুরুতেই প্রকাশ পেল ইসলামের নামে নানা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত। এ ষড়যন্ত্র মূলত: সাহাবীদের পরেই নয় বরং তা শুরু হয়েছে আরও আগেই। ইসলামের শত্রুরা যখন প্রকাশ্য মুকাবিলায় ব্যর্থতার শিকার হল, তখন শুরু হল সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত। এটা মূলত: দ্বিতীয় খলীফা আমীরুল মুমিনিন ওমার রাদিআল্লাহু আনহু-কে মাজুসী/অগ্নিপূজক এর মাধ্যমে হত্যার মধ্য দিয়েই শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ খলীফার ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একে একে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একনিষ্ঠ সহচর বা সাহাবীদের বিদায়ের পাশাপাশি ইসলাম আগ্রাসী অপশক্তির ছোবলের তেজ আরও প্রখর হতে লাগল। খাওয়ারেজ, রাফেযী, মুরজিয়া ও কাদেরীয়া ইত্যাদি ফেৎনার মুখোস উন্মোচন হল। ইসলামী বিষয়াদীতে সংশয়-সন্দেহ অনুপ্রবেশ ঘটতে লাগল। এমতাবস্থায় সুন্নাহ সংরক্ষণ একটি জরুরী ও জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়াল। এ সন্ধিক্ষণে তাবেঈগণ নানাভাবে সুন্নাহ সংরক্ষণ ও সংগ্রহ করে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রাখলেন। সুন্নাহ সংরক্ষণে তাঁদের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপসমূহ নিম্নরূপ :

১. العناية بحفظها হাদিস মুখস্থ করণে গুরুত্ব প্রদান।

২. السوال عن الاسناد হাদিসের সনদ/ সূত্রের সঠিকটা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ, অর্থাৎ সনদ যাচাই করণ।

البحث في أحوال الرجال ونقلة الأخبار হাদিস বর্ণনাকারী/রাবীদের জীবন-চরিত সম্পর্কে গবেষণা ও বিশ্লেষণ।

৪. تدوين السنة الذي بدأ بصحف وأجزاء ثم تطور বিভিন্ন পুস্তিকা ও খণ্ড খণ্ড গ্রন্থে হাদিস সংকলন, যাহা পরবর্তীতে বুখারী, মুসলিম ও মুয়াত্ত্বা ইত্যাদি সংকলনে রূপলাভ করে।

সাহাবীদের শেষ লগ্নে তাবেঈদের যুগে বিদ‘আত, খোরাফাত ইত্যাদির বিকাশ ঘটলে সরলভাবে হাদিস গ্রহণ করা হত না, বরং পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই করে ছিকাহ অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বস্ত রাবী/বর্ণনাকারীর হাদিসই শুধু গ্রহণ করা হত। কারণ এ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন:

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ قَالَ : يَكُونُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنْ الأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ

“সাহাবী আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শেষ যুগে কতক মিথ্যুক দজ্জালের আগমন ঘটবে, তারা তোমাদের কাছে এমন সব হাদিস পেশ করবে, যা তোমরা ও তোমাদের পূর্ব পুরুষরাও কখন শোনেনি, অতএব তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে যাও, তারা যেন তোমাদেরকে পথভ্রষ্টটা ও ফিতনা-ফ্যাসাদে নিপতিত করতে না পারে। [মুসলিম: ৭]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সতর্ক বাণীর আলোকে সাহাবীদের শেষ যুগে এবং তাবেঈদের যুগে হাদিস গ্রহণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম শুনলেই যথেষ্ট মনে করা হত না, বরং খুবই সতর্কতার সাথে যাচাই-বাছাই করে হাদিস গ্রহণ করা হত। ইমাম মুসলিম [রাহিমাহুল্লাহ] সাহাবী ও তাবেঈদের হাদিস গ্রহণের অবস্থাসমূহ স্বীয় গ্রন্থ সহীহ মুসলিমের ভূমিকায় সুন্দরভাবে আলোকপাত করেছেন, তন্মধ্যে কয়েকটি বর্ণনা নিম্নে প্রদত্ত হল:

[১] ইমাম মুসলিম [রাহিমাহুল্লাহ] স্বীয় সনদে প্রসিদ্ধ তাবেঈ মুজাহিদ [রাহিমাহুল্লাহ] হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: বাশীর বিন কা’ব আল আদাবী সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু-এর কাছে আসলেন এবং হাদিস বর্ণনা শুরু করলেন, বলতে লাগলেন: قَالَ رَسُولُ اللهِ ، قَالَ رَسُولُ اللهِ

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ইত্যাদি” কিন্তু সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু তাকে হাদিস বর্ণনার কোন সুযোগ দিলেন না। এমনকি তার দিকে দৃষ্টিপাতও করলেন না। বাশীর বিন কা’ব বললেন, হে ইবনু আব্বাস! কি ব্যাপার, আপনি আমার হাদিস শুনছেন না কেন? আমি আপনাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে হাদিস বর্ণনা করছি, আর আপনি কোন কর্ণপাত করছেন না? তার জবাবে ইবনু আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু বললেন, প্রথম পর্যায়ে কোন ব্যক্তিকে যখনই বলতে শুনতাম যে, قَالَ رَسُولُ اللهِ “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- সাথে সাথে তার কথায় আমরা মনোযোগী হতাম এবং খুব গুরুত্ব দিয়ে তার কথা শুনতাম, কিন্তু যখন মানুষ বিভিন্ন ছলচাতুরী শুরু করল, তখন হতে আমাদের জানা বিষয় ছাড়া সাধারণ মানুষ হতে অন্য কিছু শুনি না এবং গ্রহণ করি না”।

এ বর্ণনাটি প্রমাণ করে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদিস গ্রহণে তাঁরা কত সতর্ক ছিলেন। সাহাবী ছাড়া অন্য কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামে বর্ণনা করলেও নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সে হাদিস গ্রহণ করতেন না।

[২] প্রসিদ্ধ তাবেঈ মুহাম্মদ বিন সীরিন [রাহিমাহুল্লাহ] হতে বর্ণিত তিনি বলেন:

إِنَّ هَذَا الْعِلْمَ دِينٌ فَانْظُرُوا عَمَّنْ تَأْخُذُونَ دِينَكُمْ “নিশ্চয় হাদিসের জ্ঞান হল দ্বীনের অন্যতম অংশ, অতএব ভালভাবে লক্ষ কর তোমরা কাদের হতে তোমাদের দ্বীন গ্রহণ করছ”।

[৩] তিনি আরও বলেন, “হাদিসের সনদ/সূত্র ও রাবী বা বর্ণনাকারীদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হত না, কিন্তু যখন হতে [কাদেরীয়া, মুরজিয়া, জাবারিয়া ও রাফেযী ইত্যাদি বিদ’আতের] ফিতনা প্রকাশ পেল তখন হতে জিজ্ঞাসা শুরু হল: سموا لنا رجالكم ... “যাদের বরাতে হাদিস বর্ণনা করছ তাদের নাম উল্লেখ কর”, ব্যক্তিরা যদি সুন্নাতপন্থী হতেন তাহলে তাদের হাদিস গ্রহণ করা হত, আর যদি বিদ‘আাতী হতেন তাহলে তাদের হাদিস প্রত্যাখ্যান করা হত”।

[৪] আব্দান বিন উছমান মারওয়াযী [রাহিমাহুল্লাহ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: আব্দুল্লাহ বিন মুবারককে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন: اَلإِسْنَادُ مِنْ الدِّينِ لَوْلاَ الإِسْنَادُ لَقَالَ مَنْ شَاءَ مَا شَاءَ “হাদিসের সনদ/সূত্র দ্বীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ যদি এ সনদ বর্ণনার ব্যবস্থা না থাকত তাহলে যার যা ইচ্ছা হত তাই বলত”।

তাবেঈদের হাদিস সংগ্রহে এবং সংরক্ষণে এ নীতি অবলম্বন বিদাতী চক্রের ষড়যন্ত্র এবং ইসলামের শত্রুদের সুদূর পরিকল্পিত চক্রান্ত নস্যাৎ হয়ে যায়। হাদিসের নাম দিয়ে বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বরাতে মিথ্যাচারের পথে বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে সনদ বিহীন বর্ণনার সুযোগ ও মিথ্যুক দজ্জালদের দাজ্জালি ও মিথ্যাচার বন্দ হয়ে যায়, বা চালু থাকলেও পরিশেষে মিথ্যা প্রকাশ পেয়ে যায়।

তাবেঈদের এ নীতি অবলম্বন করে সর্বপ্রথম হাদিস শাস্ত্রের নীতিমালা প্রণয়ন করেন ইমাম শাফেয়ী [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর “আর রিসালাহ” ও “কিতাবুল উম্ম” গ্রন্থদ্বয়ে। এরপর এ শাস্ত্রের গভীর সমুদ্রে পাড়ি জমান ইমাম বুখারী [রাহিমাহুল্লাহ] ইমাম মুসলিম [রাহিমাহুল্লাহ] সহ আরও অনেকে। আল্লাহ তা’আলা তাদের সকলকে জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন