মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিরুদ্ধবাদীদের সাথে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ
লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের
২
বিরুদ্ধবাদীদের সাথে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/416/2
ইসলামী দা‘ওয়াতের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয় বরং কণ্টকাকীর্ণ। হক ও বাতিলের মাঝে দ্বন্দ্ব চিরন্তন ও সতত। বাতিল পন্থী ও শয়তানের অনুসারীদের স্বভাব হলো সত্যপন্থীদের উপর অত্যাচার, অবিচার ও নির্যাতন করা। দা‘ঈর ব্যাপারে তাদের ভূমিকা অধিক কঠোর ও নির্লজ্জ ছিল। তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়, আর আল্লাহ স্বীয় নূরকে পরিপূর্ণতা দিতে চান। [ ﴿ يُرِيدُونَ لِيُطۡفُِٔواْ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَٰهِهِمۡ وَٱللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَٰفِرُونَ ٨ ﴾ [ الصف : ٨ ] আল-কুরআন, সূরা আছ ছফ : ৮।] তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাওয়াতী মিশনকে দুর্বল করে দেয়ার জন্য বিভিন্ন কুট-কৌশলের পঁয়তারা করে। মুসলিমদের মনোবল নষ্ট করার নিমিত্ত্বে দা‘ঈকে (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামকে) মিথ্যাবাদী, পথভ্রষ্ট, জাদুকর, পাগল, হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রূপের বস্তু, অলীক ধারণাপ্রসূত জ্ঞানের অধিকারী প্রভৃতি আখ্যা দেয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি করে। [তারা দা‘ঈর ব্যাপারে সংশয় সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন অপবাদে লিপ্ত হয়। যেমন: মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন পাগল। কুরআনে এসেছে, ﴿وَقَالُواْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِي نُزِّلَ عَلَيۡهِ ٱلذِّكۡرُ إِنَّكَ لَمَجۡنُونٞ ٦ ﴾ [ الحجر : ٦ ] ‘‘ওসব কাফেররা বললো, যার উপর কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, নিশ্চয়ই সে একটা পাগল।’’ সূরা আল-হিজর : ৬।কখনো কখনো তাঁর উপর জাদুকর ও মিথ্যাবাদী হওয়ার অপবাদ দেয়া হতো, যেমন কুরআনে এসেছে, ﴿وَعَجِبُوٓاْ أَن جَآءَهُم مُّنذِرٞ مِّنۡهُمۡۖ وَقَالَ ٱلۡكَٰفِرُونَ هَٰذَا سَٰحِرٞ كَذَّابٌ ٤ ﴾ [ص: ٤ ] ‘‘তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্য থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন। আর কাফেররা বলে, এ-তো এক মিথ্যাচারী জাদুকর।’’ সূরা ছোয়াদ : ৪।এ ছাড়াও এ কুরআনকে তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদ্ভাবনকৃত ও অলীক কাহিনী গ্রন্থ বলে আখ্যা দিত। ﴿وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِنۡ هَٰذَآ إِلَّآ إِفۡكٌ ٱفۡتَرَىٰهُ وَأَعَانَهُۥ عَلَيۡهِ قَوۡمٌ ءَاخَرُونَۖ فَقَدۡ جَآءُو ظُلۡمٗا وَزُورٗا ٤ وَقَالُوٓاْ أَسَٰطِيرُ ٱلۡأَوَّلِينَ ٱكۡتَتَبَهَا فَهِيَ تُمۡلَىٰ عَلَيۡهِ بُكۡرَةٗ وَأَصِيلٗا٥﴾ [ الفرقان : ٤، ٥ ] ‘‘কাফেররা বলে, এটা মিথ্যা বৈ কিছু নয়,যা তিনি উদ্ভাবন করেছেন এবং অন্য লোকেরা তাঁকে সাহায্য করেছে। অবশ্যই তারা অবিচার ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। তারা বলে,এগুলোতো পুরাকালের রূপকথা,যা তিনি লিখে রেখেছেন। এ গুলো সকাল-সন্ধায় তাঁর কাছে পাঠ করা হয়।’’ সূরা ফুরকান : ৪-৫।] শুধু তাই নয়, তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেশ ত্যাগের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছেঃ
‘‘কাফেররা রাসূলগণকে বলেছিল: আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে দেশ থেকে বিতাড়িত করে দেব অথবা তোমরা আমাদের মতাদর্শে ফিরে আসবে। তখন তাদের কাছে তাদের পালনকর্তা ওহী পাঠালেন যে, আমি যালিমদেরকে অবশ্যই ধ্বংস করে দেব।’’ [আল-কুরআন, সুরা ইবরাহীম : ১৩।]
এরূপে তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসারীদেরকে দেশত্যাগের হুমকি দিতে থাকে। সূরা আল-কাসাসে তাদের বক্তব্য নিম্নোক্তভাবে তুলে ধরা হয়েছেঃ
‘‘তারা বলে, আমরা যদি আপনার সাথে সৎপথ অনুসরণ করি তবে আমাদেরকে দেশ হতে উৎখাত করবে। আমি কি তাদেরকে এক নিরাপদ হারামে প্রতিষ্ঠিত করি নি? যেখানে সর্বপ্রকার ফলমূল আমদানী হয়, আমার দেয়া রিযিকস্বরূপ। কিন্তু তাদের অধিকাংশই এ বিষয়ে অবগত নয়।’’ [আল-কুরআন, সূরা আল-কাসাস : ৫৭।]
এক পর্যায়ে তারা চেষ্টা করেছিল যে, ইসলাম ও জাহেলিয়াতের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন রচনা করবে। অর্থাৎ পরস্পর পরস্পরকে কিছু ছাড় দিবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৌত্তলিকদের কিছু গ্রহণ করবেন এবং পৌত্তলিকরাও রাসূলের কিছু আদর্শ গ্রহণ করবে। [আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে এ সম্পর্কে বলেন ﴿ وَدُّواْ لَوۡ تُدۡهِنُ فَيُدۡهِنُونَ ٩ ﴾ [ القلم : ٩ ] ‘‘ওরা চায় যে, আপনি নমনীয় হবেন, তাহলে তারাও নমনীয় হবে।’’ আল-কুরআন, সূরা কলম : ৯।]
ইবন জারীর এবং তিবরানীর একটি বর্ণনায় এসেছে, পৌত্তলিকরা এ মর্মে প্রস্তাব দিল যে, একবছর আপনি আমাদের উপস্যদের উপাসনা করুন, আর এক বছর আমরা আপনার প্রভূর উপাসনা করব। আবদ ইবন হোমায়েদের বর্ণনায় আরও উল্লেখ রয়েছে যে, পৌত্তলিকরা বলল, আপনি যদি আমাদের উপাস্যদের মেনে নেন, তবে আমরাও আপনার প্রভুর ইবাদত করবো। [আল্লামা শাওকানী, ফতহল কাদীর, ৫ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫০৮।]
ইসলামী দা‘ওয়াত প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে দা‘ঈর উপর অন্যায়, অবিচার, যুলুম-নির্যাতন আসা দা‘ওয়াতী পথের প্রকৃত স্বভাবের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অতএব, দা‘ঈর উপর যুলুম আসাটা খুবই স্বাভাবিক। ইসলামের পন্ডিতবর্গও বিষয়টি বিভিন্ন দিক দিয়ে ব্যক্ত করেছেন। আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী বলেন, ‘‘ইসলামী দা‘ওয়াত যে নির্দেশ অন্তর্ভুক্ত করে তা হলো : তারা তাদের পূর্বপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করে, তা থেকে দূরে থাকে এবং সে ধর্মকে কুফর ও ভ্রান্ত হিসেবে আখ্যা দেয়। আর এগুলো তাদের অন্তরসমুহে বিষাক্ত গন্ডগোল সৃষ্টি করে হৃদয় বক্ষসমুহে হিংস্রতা উসকে দেয়। এ অবস্থায় হকপন্থী অধিকাংশ শ্রোতা হকের দা‘ঈকে বারণ করতে উদ্যত হয়। আর এটি প্রথমতঃ কখনো হত্যার মাধ্যমে দ্বিতীয়তঃ কখনো মারধর করার মাধ্যমে তৃতীয়তঃ কখনো গালমন্দ বলার মাধ্যমে হয়ে থাকে। [ইমাম ফখরুদ্দিন আর-রাযী ,আত্ তাফসীরুল কবীর, ১৯শ খন্ড, (মিসর: দারু ইহ্ইয়ইত্-তুরাছিল-‘আরাবী, তা.বি.), পৃ. ১৩৮।]
আল্লামা বায়দাভী বলেন, এ দা‘ওয়াত অবশ্যই ঐ ধরনের (যুলুম, অত্যাচারমূলক) তৎপরতা থেকে প্রায়ই মুক্ত থাকে না এ কারণে যে, এ দা‘ওয়াতে অন্তর্ভুক্ত থাকে (পূর্ববর্তী) আদত-অভ্যাস সমূহ বর্জন করা, প্রবৃত্তির তাড়নাসমূহ পরিত্যাগ করা, পূর্বসূরীদের ধর্মের নিন্দা করা এবং তাদেরকে কুফরী ও গোমরাহীতে আখ্যায়িত করা। [কাযী নাসিরুদ্দীন বায়দাভী, আনওয়ারুত্ তানযীল ওয়া আসরারুত্ -তা’বীল, (দামেশক; দারুল ফিকর তা.বি.), পৃ. ৩৬৯।]
অতএব, তৎকালীন সময়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাওয়াতকে প্রতিরোধ করার কারণসমূহকে আমরা নিম্নোক্ত ভাবে নির্দিষ্ট করতে পারি।
(ক) পূর্বপুরুষদের ধর্মের অন্ধ অনুকরণ প্রবণতা ;
(খ) নিজস্ব মত ও পথের প্রতি আসক্তি ও শ্রদ্ধাবোধ ;
(গ) সামাজিক কর্তৃত্ব ও প্রতিপত্তি হারানোর আশংকা ;
(ঘ) শয়তানের ষড়যন্ত্র ;
দা‘ঈ অত্যাচার নির্যাতনের মোকাবিলায় প্রতিশাধ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সে ক্ষেত্রে সীমালংঘন করা যাবে না। যে পরিমাণ নির্যাতন করা হয়েছে সে পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে কুরআনের নির্দেশ হল,
‘‘আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদের কষ্ট দেয়া হয়। যদি সবর কর, তবে তা সবরকারীদের জন্য উত্তম।’’ [আল-কুরআন, সূরা আন-নহল : ১২৬।]
আলাচ্য আয়াতে প্রতিশোধ গ্রহণ না করে ধৈর্য ধারণকেই মঙ্গলজনক বলা হয়েছে। ফলে বাহ্যত প্রতিরোধের কোনো প্রয়োজন নেই, নেই এর কোনো উপযোগিতা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এখানে সবর বলতে নীরবে সহ্য করাকে বুঝানো হয় নি, বরং ‘সবর’ মানে প্রতিরোধের প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় সংযম প্রদর্শন করা মাত্র। কেননা, অত্যাচারীকে তার অত্যাচার হতে নিবৃত করার জন্য জিহাদকে অত্যাবশ্যক করে দেয়া হয়েছে। যুলুমের প্রতিবাদে প্রতিশোধ না নিয়ে যদি শুধু ধৈর্যধারণ করা হয় তাহলে তা আল্লাহর বিধান জিহাদ এর সাথে অসংগতি দেখা দিবে। আল্লাহ তা‘আলা যথাসাধ্য শক্তি সঞ্চয়ের মাধ্যমে প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে,
‘‘তাদের মোকাবিলায় যথাসাধ্য শক্তি সঞ্চয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ কর।’’ [আল-কুরআন, সূরা আল-আনফাল : ৬০।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন একজন দা‘ঈ। তিনি মানুষদের আল্লাহর পথে আহবান জানানোর জন্যে প্রেরিত হয়েছিলেন, প্রতিশোধ নেবার জন্য নয়। তাঁর মূল লক্ষ্য দা‘ওয়াতে সফল হওয়া, প্রতিশোধ নেয়া নয়। বিধায়, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরুদ্ধবাদীদের ষড়যন্ত্র ও বিরোধিতা মোকাবিলায় বিভিন্ন ধরনের কৌশল ও মাধ্যম অবলম্বন করেছেন, যা পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের অভিজ্ঞতালব্দ জ্ঞান ও বাস্তবতার নিরিখে নির্ণীত হয়েছে। নিম্নে সেগুলো প্রদত্ত হলো:
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/416/2
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।