HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিরুদ্ধবাদীদের সাথে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ

লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের

(ক) ধৈর্য ও সংযম অবলম্বন
ধৈর্য ও সংযমকে আরবীতে ‘সবর’ বলা হয়। এটা দু’ধরনের হতে পারে।

এক. সৎকর্ম সম্পদনের বিষয়ে ধৈর্যধারণ।

দুই. অসৎকর্ম হতে বিরত থাকা।

ইসলামী দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে ‘সবর’ এর গুরুত্ব অপরিসীম। একে দা‘ওয়াতের মেরুদন্ড বললেও অত্যুক্তি হবে না। যুলুম নির্যাতন প্রতিরোধে ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শন একটি বিরাট অস্ত্র। মাযলুম ব্যক্তি যখন নির্যাতিত হবার পরও সবর ইখতিয়ার করে, তখন জালেমের অন্তর (আত্মা) অনেক সময় কেঁপে উঠে ও হৃদয় বিগলিত হয়। অপরদিকে সাধারণ মানুষও মাযলুমের প্রতি সমবেদনা অনুভব করতে থাকে। ফলে, সাধারণ জনমত স্বভাবতঃ (মাযলুমের) তার পক্ষে থাকে। একজন দা‘ঈ মাযলুম হবার পর ধৈর্য ও সংযম অবলম্বনের মাধ্যমে সাধারণ জনমতকে তার পক্ষে নিতে সক্ষম হয়। বিধায়, তার দা‘ওয়াতে সাধারণ মানুষের মাঝে ইতিবাচক সাড়া পড়ে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাতে ইসলামী দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে সর্বদা ধৈর্য অবলম্বনের পন্থা অবলম্বন করেছেন। কোনভাবেই প্রতিরোধের চেষ্টা করেন নি। এতে করে সাধারণ মানুষের নিকট ইসলামী দা‘ওয়াতের প্রকৃত উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। মানুষ বুঝতে পারে যে, এ দা‘ওয়াতে কারো ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্য নেই। এটি মানুষের কল্যাণ সাধনে পরিচালিত হয়। এজন্য সাধারণতঃ প্রতিশোধ না নিয়ে যথাসম্ভব ধৈর্য ধরার জন্য আল-কুরআনে অনেকবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে,

﴿ وَٱصۡبِرۡ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَٱهۡجُرۡهُمۡ هَجۡرٗا جَمِيلٗا ١٠ ﴾ [ المزمل : ١٠ ]

‘‘আর লোকেরা যে সব কথাবার্তা রচনা করে বেড়াচ্ছে, সে জন্যে আপনি ধৈর্যধারণ করুন এবং সৌজন্য রক্ষা করে তাদের থেকে সম্পর্কহীন হয়ে যান।’’ [আল-কুরআন, সূরা মুয্যাম্মিল : ১০।]

দা‘ওয়াতের কণ্টকাকীর্ণ পথে ধৈর্য ছাড়া টিকে থাকা খুবই অসম্ভব। এ কাজে বিভিন্ন মেযাজের লোকদের সাথে মিশতে হয়, শুনতে হয় বিভিন্ন ধরনের কটুকথা, হাসি-ঠাট্টা-বিদ্রূপ। সর্বদা প্রতিশোধ স্পৃহা নিয়ে কাজ করলে দা‘ওয়াতের কাজে ব্যাঘাত হবে। আল্লাহ তা‘আলা এগুলোর মাধ্যমে দা‘ঈদের পরীক্ষা করে থাকেন। সুতরাং এটি এক প্রকারের জিহাদও বটে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেনঃ

﴿ ۞لَتُبۡلَوُنَّ فِيٓ أَمۡوَٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡ وَلَتَسۡمَعُنَّ مِنَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَمِنَ ٱلَّذِينَ أَشۡرَكُوٓاْ أَذٗى كَثِيرٗاۚ وَإِن تَصۡبِرُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ ذَٰلِكَ مِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ ١٨٦ ﴾ [ ال عمران : ١٨٦ ]

‘‘অবশ্যই অবশ্যই ধন সম্পদে এবং জন-সম্পদে তোমাদের পরীক্ষা করা হবে এবং অবশ্য তোমরা পূর্ববর্তী আহলে কিতাব ও মুশরিকদের কাছ থেকে বহু অশোভন উক্তি শুনবে। আর যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর তবে তা হবে একান্ত সাহসের ব্যাপার।’’ [আল-কুরআন, সূরা আলে-ইমরান : ১৬৮।]

ধৈর্য মানুষকে দীনের পথে অটল ও অবিচল টিকে থাকতে সহায়তা করে। যুগে যুগে সকল নবী-রাসূলকে ধৈর্যের শিক্ষা দেয়া হয়েছে। সকলেই সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে অজস্র নির্যাতনের মুখেও তারা আদর্শ বিচ্যুত হয়ে অত্যাচারীর মত গ্রহণ করেন নি। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছেঃ

﴿ وَكَأَيِّن مِّن نَّبِيّٖ قَٰتَلَ مَعَهُۥ رِبِّيُّونَ كَثِيرٞ فَمَا وَهَنُواْ لِمَآ أَصَابَهُمۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَمَا ضَعُفُواْ وَمَا ٱسۡتَكَانُواْۗ وَٱللَّهُ يُحِبُّ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٤٦ ﴾ [ ال عمران : ١٤٦ ]

‘‘এমন অনেক নবী ছিলেন, যাদের সঙ্গী-সাথীরা তাদের অনুবর্তী হয়ে জিহাদ করেছে আল্লাহর পথে, তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে। কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরে যায় নি, ক্লান্তও হয় নি এবং দমেও যায়নি। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালবাসেন।’’ [আল-কুরআন, সূরা আল-ইমরান : ১৬৮।]

এ পথে চলতে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পাগল, মিথ্যুক, গণক, জাদুকর ইত্যাদি ধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ কটুকথা সহ্য করতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, শারিরীক নির্যাতনও ভোগ করতে হয়েছে। কখনো তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তাঁর সামনে তাঁর অনুসারীদের উপর চড়ানো হয়েছে ভয়াবহ নির্যাতন ও অত্যাচারের স্ট্রীমরোলার। বিলাল, খাববাব, সুমাইয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুম প্রমুখ নির্যাতিত মুসলিমদের ঘটনা সর্বজনবিদিত। তবুও তিনি ধৈর্যচ্যুত হন নি, বরং তাঁর সাথীদের পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের উপর অর্পিত নির্যাতনের কাহিনী শুনিয়ে অভয় দিয়েছেন। [খাববাব রাদিয়াল্লাহু আনহু মুসলিমদের উপর অত্যাচারের অবস্থা দেখে বলেনঃ شكونا الي رسول و هو متوسد بردة له في ظل الكعبة قلنا الاتنتصر لنا الا تدعو الله لنا قال كان الرجل فيمن قبلكم يحفرله في الأرض فيجعل فيه فيجاء بالمنشار فيوضع علي رأسه فيشق بإثنين و ما يصده عن دينه و يمشط بامشاط الحديد ما دون لحمه من عظم أو عصب و ما يصده ذلك عن دينه و الله ليتمن هذا الأمر حتي يسير الراكب من صنعاء إلي حضرموت لا يخاف إلا الله أو الذئب علي غنمه و لكنكم تستعجلون . ‘‘খাববাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট মক্কার কাফেরদের বিরোধিতার ব্যাপারে অভিযোগ করলাম। তিনি তখন চাদর মাথার নীচে রেখে কা‘বার ছায়ায় শুয়েছিলেন। আমরা তাঁকে বললাম : আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইবেন না? তাঁর কাছে আমাদের জন্য দো‘আ করবেন না ? তিনি বললেন: তোমাদের পূর্বেও অনেক মানুষকে ধরে নিয়ে মাটিতে গর্ত করে তাতে দাঁড় করানো হতো, কাউকে লোহার চিরুণী দিয়ে শরীরের গোশত ও হাড় আচড়িয়ে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হতো, তবুও কোনো কিছু তাকে তার দীন থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে নি। আল্লাহর শপথ ! এ দীনকে আল্লাহ অবশ্যই পূর্ণ করে দিবেন। এমনকি সেসময় আসবে যখন একজন পথচারী সান‘আ থেকে হাদরামাউত পর্যন্ত চলে যাবে, অথচ সে আল্লাহ, আর নিজের মেষ পালের জন্য নেকড়ে বাঘ ছাড়া আর কিছু ভয় করবে না। কিন্তু তোমরা বড্ড্ তাড়াহুড়া করছো। (ইমাম বুখারী, সহীহ বুখারী, প্রাগুক্ত, হাদীস নং ৩৬১২।)] মূলতঃ এ ধৈর্য ও সহনশীলতার ভিত্তি ছিল আল-কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত,

﴿ فَٱصۡبِرۡ كَمَا صَبَرَ أُوْلُواْ ٱلۡعَزۡمِ مِنَ ٱلرُّسُلِ ٣٥ ﴾ [ الاحقاف : ٣٥ ]

‘‘তুমি ধৈর্য ধারণ কর যেমন ধৈর্য ধারণ করেছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাসূলগণ।’’ [আল-কুরআন, সূরা আল-আহকাফ : ৩৫।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন