মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
পাঁচ. পথপ্রদর্শন এবং পথভ্রষ্টকরণ কি একমাত্র আল্লাহ্র হাতে?
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/44/24
আমরা ইতিপূর্বে বিচ্ছিন্নভাবে এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছি। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ্র অকাট্য বক্তব্য অনুযায়ী, একমাত্র আল্লাহই কাউকে পথ দেখান আবার কাউকে পথভ্রষ্ট করেন। এরশাদ হচ্ছে,
‘হে আমার বান্দারা! আমি যাকে হেদায়াত করেছি, সে ব্যতীত তোমাদের সবাই পথভ্রষ্ট। অতএব, তোমরা আমার নিকট হেদায়াত প্রার্থনা কর; আমি তোমাদেরকে হেদায়াত করব’। [. ছহীহ মুসলিম/১০৪০, হা/২৫৭৭, ‘সদাচরণ, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা এবং শিষ্টাচার’ অধ্যায়, ‘যুলম হারাম’ অনুচ্ছেদ।] এভাবে আরো বহু আয়াত এবং হাদীছ আছে, যেগুলি প্রমাণ করে, হেদায়াত এবং পথভ্রষ্টতা দু’টিই একমাত্র আল্লাহ্র হাতে।
কিন্তু কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আল্লাহই কাউকে পথভ্রষ্ট করেন আবার তিনিই তাকে শাস্তি দিবেন, এতে কি যুলম প্রমাণিত হয় না?!
আল্লাহ্র ন্যায়-ইনছাফের প্রতি সন্দেহ পোষণ করা মোটেই উচিৎ নয়। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অনেক জায়গায় স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, তিনি কারো প্রতি তিল পরিমাণও যুলম করেন না। যেমনঃ তিনি বলেন,
﴿وَمَا رَبُّكَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ﴾ [ سورة فصلت : 46]
‘আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি বিন্দুমাত্র যুলমকারী নন’ (ফুছছিলাত ৪৬)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,
‘তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। আপনার পালনকর্তা কারো প্রতি যুলম করবেন না’ (কাহ্ফ ৪৯)। [. আল্লাহ যে কারো প্রতি সামান্যতম যুলম করেন না, সে সম্পর্কে আরো জানতে হলে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ দেখুন: (আলে-ইমরান ১৮২, হজ্জ ১০, আনফাল ৫১, ক্বাফ ২৯, ইয়াসীন ৫৪, আম্বিয়া ৪৭, হূদ ১৭৭, যিলযাল ৭-৮ ইত্যাদি)। উল্লেখ্য যে, এসব আয়াতের অধিকাংশই ইতোপূর্বে গত হয়েগেছে।]
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহ বান্দাকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি, কর্মশক্তি, সুষ্ঠু বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে এবং ইসলামী স্বভাবের উপরে সৃষ্টি করেছেন। এরপর আসমানী কিতাব অবতীর্ণ করে এবং নবী-রাসূল (আলাইহিমুস সালাম) প্রেরণের মাধ্যমে তার সামনে হক্ব ও বাতিল দু’টি পথই তুলে ধরেছেন। এরশাদ হচ্ছে,
‘আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হোক, না হয় অকৃতজ্ঞ হোক’ (দাহ্র ৩)। কিন্তু এতকিছুর পরও যখন সে স্বেচ্ছায় গোমরাহীর পথ বেছে নিয়েছে, তখন সে আল্লাহ্র তাওফীক্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং আল্লাহ তার দায়িত্বভার তার স্কন্ধেই তুলে দিয়েছেন। ফলে সে পথভ্রষ্ট হয়েছে। এটিই হচ্ছে আল্লাহ কর্তৃক কাউকে পথভ্রষ্ট করার অর্থ এবং এতে আল্লাহ্র ন্যায়-ইনছাফ প্রমাণিত হয়। কেননা আল্লাহ কারো দায়িত্বভার ছেড়ে দিয়ে ব্যক্তির উপরেই তা চাপিয়ে দিলে সে নিশ্চিত পথভ্রষ্ট হবে। [. ছালেহ আলুশ্ শায়খ, জামেউ শুরূহিল আক্বীদাতিত ত্বহাবিইয়াহ, ১/৫৬৩-৫৬৫।] সেজন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এভাবে দো‘আ করতে বলতেন,
«فَلاَ تَكِلْنِى إِلَى نَفْسِى طَرْفَةَ عَيْنٍ»
‘আপনি আমাকে আমার নিজের উপর এক পলকের জন্যও ছেড়ে দিবেন না’। [. সুনানে আবূ দাঊদ, হা/৫০৯০, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, ‘সকালে কি বলবে’ অনুচ্ছেদ, ইমাম আলবানী হাদীছটিকে ‘হাসান’ বলেছেন।]
পক্ষান্তরে আল্লাহ কর্তৃক কাউকে হেদায়াত দানের অর্থ হচ্ছে, তাকে তাওফীক্ব দেওয়া এবং কল্যাণকর কাজে তাকে সহযোগিতা করা। সেজন্য সত্যিকার অর্থে কেউ হেদায়াত প্রত্যাশী হয়ে তদ্নুযায়ী প্রচেষ্টা চালালে আল্লাহ তার সামনে কল্যাণের দুয়ার খুলে দেন। আর এতে মহান আল্লাহ্র রহমত এবং অনুকম্পাই প্রমাণিত হয়। [. ছালেহ আলুশ্ শায়খ, জামেউ শুরূহিল আক্বীদাতিত ত্বহাবিইয়াহ, ১/৫৬৩-৫৬৫।]
শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিইয়াহ (রহেমাহুল্লাহ) বলেন, মহান আল্লাহ বান্দাকে এককভাবে তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করতে বলেছেন, বরং এই উদ্দেশ্যেই তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি তাকে ইসলামী স্বভাব দিয়েই পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। কিন্তু সে আল্লাহ্র উদ্দেশ্য এবং তার নিজস্ব সৃষ্টিগত স্বভাবের বিরুদ্ধাচরণ করার শাস্তিস্বরূপ আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন। [. মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ইবনে তায়মিইয়াহ, ১৪/৩৩১-৩৩৩।]
শায়খ ফাওযান [. ছালেহ ইবনে ফাওযান ইবনে আব্দুল্লাহ আল-ফাওযান একজন বিখ্যাত আলেমে দ্বীন। তিনি ১৩৫৪ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন। ‘শারী‘আহ’ অনুষদ থেকে ১৩৮১ হিজরীতে তিনি অনার্স ডিগ্রী লাভ করেন। ‘ফিক্বহ’ বিভাগ থেকে এম. এ. এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তাঁর শিক্ষকমণ্ডলীর মধ্যে শায়খ আব্দুল আযীয ইবনে বায এবং মুহাম্মাদ ইবনে আমীন শানক্বীত্বী-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বর্তমান তিনি সঊদী আরবের ‘উচ্চ ওলামা পরিষদ’ এবং ‘গবেষণা ও ফৎওয়া বোর্ড’-এর একজন অন্যতম সদস্য। শায়খ ফাওযান ‘মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ফিল আক্বীদাতি ওয়াল ফিক্বহ’ (৪ খণ্ড), ‘শারহু কিতাবিত্ তাওহীদ’, ‘আহকামিল আত্ব‘ইমা ফিল ইসলাম, ‘আত-তাহক্বীক্বাতুল মারযিইয়াহ ফিল মাবাহিছিল ফারাযিইয়াহ’ সহ আরো অনেক মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন (শায়খ ফাওযান রচিত ‘আল-ফাতাওয়া’ গ্রন্থের ভূমিকা, (রিয়ায: মাত্বাবে‘উল মাদীনা, প্রথম প্রকাশ: ১৪১৫হিঃ), ১/৫-৮)।] (হাফেযাহুল্লাহ) বলেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দেন এবং যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন। যে ব্যক্তি হেদায়াত ও কল্যাণ পেতে চায় এবং তা পাওয়ার জন্য আত্মনিয়োগ করে, আল্লাহ তার জন্য অনুগ্রহ করে তার হেদায়াতের পথ সহজ করে দেন। এরশাদ হচ্ছে,
﴿فَأَمَّا مَنْ أَعْطَىٰ وَاتَّقَىٰ , وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَىٰ , فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَىٰ﴾ [ سورة الليل : 5-7]
‘অতএব, যে দান করে, আল্লাহভীরু হয় এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে, আমি তাকে সুখের বিষয়ের জন্য সহজ পথ দান করব’ (লায়ল ৫-৭)। পক্ষান্তরে যে হেদায়াত প্রাপ্তি কামনা করে না; বরং হেদায়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, আল্লাহ তার এমন ঔদ্ধত্য আচরণের শাস্তিস্বরূপ তার জন্য গোমরাহীর পথ সহজ করে দেন। মহান আল্লাহ বলেন,
﴿وَأَمَّا مَن بَخِلَ وَاسْتَغْنَىٰ , وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَىٰ , فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَىٰ﴾ [ سورة الليل : 8-10]
‘আর যে কৃপণতা করে ও বেপরওয়া হয় এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, আমি তাকে কষ্টের বিষয়ের জন্য সহজ পথ দান করব’ (লায়ল ৮-১০)। সেজন্য আল্লাহ পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে বলেন,
﴿وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾
‘আর আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না’ (বাক্বারাহ ২৫৮, আলে ইমরান ৮৬, তওবাহ ১৯ ও ১০৯, জুমু‘আহ ৫, ছফ ৭)। তিনি আরও বলেন,
﴿وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ﴾
‘নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না’ (বাক্বারাহ ২৬৪, তওবাহ ৩৭)। তিনি অন্যত্র বলেন,
﴿وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ﴾
‘আর আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না’ (মায়েদাহ ১০৮, তওবাহ ২৪ ও ৮০, ছফ ৫)। দেখা গেল, তাদের যুলম, কুফরী ও পাপাচারের কারণেই আল্লাহ তাদেরকে হেদায়াত করেন না। অতএব, বান্দা নিজেই নিজের পথভ্রষ্টের জন্য দায়ী এবং সে নিজেই নিজের উপর যুলম করে। এরশাদ হচ্ছে,
‘আল্লাহ তাদের প্রতি অবিচার করেননি; বরং তারাই স্বয়ং নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল’ (নাহ্ল ৩৩)। [. জামেউ শুরূহিল আক্বীদাতিত ত্বহাবিইয়াহ, ১/২১৩।]
ধরা যাক দুই ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। তাদের একজন মসজিদে প্রবেশ করল। কিন্তু অপরজন গেল নাইট ক্লাবে! তাহলে আল্লাহ কি নাইট ক্লাবে গমনকারীর প্রতি যুলম করলেন?! কখনই না, আল্লাহ্র কসম করে বলছি, তিনি তার প্রতি যুলম করেন নি। কারণ তিনি তাকে সেখানে যেতে বাধ্য করেন নি। বরং আল্লাহ উভয়ের মনের গতি সম্পর্কে সম্যক অবগত। অতএব মসজিদে প্রবেশকারীর মনের কথা জেনেই তিনি তাকে মসজিদে প্রবেশের পথ সহজ করে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় নাইট ক্লাবে গমনকারীর সেখানে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা জেনেই তিনি ঘৃণা এবং রাগ সত্ত্বেও তার পথও সহজ করে দিয়েছেন। [. হালিল ইনসান মুসাইয়্যার আও মুখাইয়্যার?/২৪।] বুঝা গেল, আল্লাহ কারো প্রতি সামান্যতম যুলম করেন না। মহান আল্লাহ বলেন,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি সামান্যতম যুলম করেন না, কিন্তু মানুষ নিজেই নিজের উপর যুলম করে’ (ইউনুস ৪৪)।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/44/24
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।