মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অনেকেই বলে তাক্বদীর সম্পর্কে আলোচনা করা মোটেই ঠিক নয়। কারণ এ সম্পর্কে আলোচনা করলে হৃদয়ের মণিকোঠায় সন্দেহের ধূম্রজাল বাসা বাধতে পারে। তবে বিষয়টি আসলে তেমন নয়। কারণঃ
১. তাক্বদীর ঈমানের অন্যতম একটি রুকন। এর প্রতি ঈমান না আনয়ন করা পর্যন্ত কারো ঈমান পূর্ণ হবে না। কিন্তু এ সম্পর্কে আলোচনা না করলে একজন মুসলিম তা কিভাবে বুঝবে?!
২. অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদীছ ‘হাদীছে জিবরীল’-এ প্রসঙ্গে আলোচনা এসেছে। বলা বাহুল্য যে, জিবরীল (‘আলাইহিস্সালাম) মানুষের রূপ ধরে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-এর নিকটে হাদীছটি নিয়ে এসেছিলেন এবং ঘটনাটি ছিল রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর শেষ জীবনে। সেদিন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন,
‘এটি একটি বরকতময় কিতাব। এটিকে আমি আপনার উপর অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ গবেষণা করে’ (ছোয়াদ ২৯)। তাহলে আমরা কিভাবে বলতে পারি যে, এ বিষয়ে আলোচনা করা ঠিক নয়?!
৪. তাক্বদীর সম্পর্কে অনেক হাদীছ এসেছে। ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে তাক্বদীরের সূক্ষ্ম বিষয়েও জিজ্ঞেস করতেন এবং তিনি তাঁদেরকে সঠিক জবাব দিতেন। অনুরূপভাবে ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)ও তাঁদের ছাত্র তাবেঈনকে তাক্বদীর বিষয়ে শিক্ষা দিতেন।
৫. ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)সহ আমাদের পূর্বসূরী প্রায় সকল আলেম তাক্বদীর সম্পর্কে কথা বলেছেন, পৃথক বই-পুস্তক, প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তাহলে কি তাঁরা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নির্দেশের বিরোধিতা করেছেন? কখনই না। মানুষ যাতে পথভ্রষ্ট না হয়ে যায় এবং তারা যাতে জাগ্রত জ্ঞান সহকারে দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারে, সেজন্য তাদেরকে তাক্বদীর বিষয়ক হক্ব কথাটি বুঝানো কি উচিৎ নয়? এ বিষয়ে উত্থাপিত নানা প্রশ্ন এবং জটিলতার সঠিক জবাব দেওয়া কি করণীয় নয়?
৬. আমরা যদি তাক্বদীর সম্পর্কে আলোচনা করা ছেড়ে দিই, তাহলে সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে অজ্ঞ হয়ে যাবে। এই সুযোগে বাতিল মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এবং তাক্বদীর সম্পর্কে মুসলিমদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর পথ সহজ হয়ে যাবে।
কিন্তু প্রশ্ন হল, তাহলে যেসব হাদীছে তাক্বদীরের আলোচনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেগুলির সঠিক ব্যাখ্যা কি? এক্ষণে, আমরা নীচে এজাতীয় কয়েকটি হাদীছ এবং সেগুলির সঠিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করছিঃ
‘আমরা তাক্বদীর নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছিলাম, এমন সময় আমাদের নিকট রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আসলেন। অতঃপর তিনি ভীষণ রেগে গেলেন, রাগের প্রচণ্ডতায় তাঁর চেহারা মোবারক লাল হয়ে গেল; মনে হচ্ছিল, তাঁর কপোলদ্বয়ে ডালিম ভেঙ্গে তার রস লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি বললেন, তোমরা কি এমন তর্ক-বিতর্ক করার জন্য আদিষ্ট হয়েছ নাকি আমি এ মর্মে তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছি! তোমাদের পূর্ববর্তীরা তো তখনই ধ্বংস হয়েছিল, যখন তারা এ বিষয়ে ঝগড়া করেছিল। তোমাদের প্রতি আামার কঠোর নির্দেশ রইলো যে, তোমরা এ নিয়ে তর্ক করবে না’। [. জামে‘ তিরমিযী, ‘তাক্বদীর’ অধ্যায়, ‘তাক্বদীর নিয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া থেকে কঠোরতা’ অনুচ্ছেদ (রিয়ায: মাকতাবাতুল মা‘আরেফ, প্রথম প্রকাশ: তা. বি.), হা/২১২৩; শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ‘হাসান’ বলেছেন।]
হাদীছগুলির সঠিক ব্যাখ্যাঃ
১. হাদীছগুলির উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাক্বদীর নিয়ে বিনা দলীলে এবং বিনা জ্ঞানে অহেতুক এবং বিভ্রান্তিকর আলোচনা করা যাবে না। মহান আল্লাহ বলেন,
‘যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, সে বিষয়ে তুমি মাথা ঘামাইও না’ (ইসরা ৩৬)। কারণ কুরআন-হাদীছের দিকনির্দেশনা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞান দ্বারা তাক্বদীরের সবকিছু অনুধাবন আদৌ সম্ভব নয়। অতএব, বিতর্কমূলক এবং আল্লাহ্র সিদ্ধান্তে সামান্যতম আপত্তিকর কোন আলোচনা করা যাবে না।
তবে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দলীল ভিত্তিক তাক্বদীর বুঝার উদ্দেশ্যে এ প্রসঙ্গে আলোচনা করা যাবে; বরং আলোচনা করা উচিৎ।
২. হাদীছগুলিতে তাক্বদীর নিয়ে আপত্তিকর প্রশ্ন উত্থাপন করতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমনঃ কেউ একগুঁয়েমী প্রশ্ন করতে পারে, আল্লাহ কেন অমুককে হেদায়াত করলেন, আর অমুককে পথভ্রষ্ট করলেন? এত সৃষ্টি থাকতে আল্লাহ কেন মানুষের উপর শরী‘আতের দায়িত্ব ভার অর্পণ করলেন? আল্লাহ কেন অমুককে ধনী করলেন, আর অমুককে গরীব করলেন? ইত্যাদি...সেজন্য আবূ হুরায়রাহ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বর্ণিত উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় মোল্লা আলী ক্বারী তাক্বদীর নিয়ে ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-এর ঐদিনের আলোচনার ধরণ তুলে ধরেন এভাবে, আমরা তাক্বদীর নিয়ে বিতণ্ডা করছিলাম। আমাদের কেউ কেউ বলছিলেন, সবকিছু যদি তাক্বদীর অনুযায়ী হয়ে থাকে, তাহলে কেন বান্দাকে সুখ বা শাস্তি দেওয়া হবে? যেমনটি মু‘তাযিলারা বলে থাকে। আবার কেউ কেউ বলছিলেন, একদলকে জান্নাতী এবং অপর দলকে জাহান্নামী হিসাবে নির্ধারণ করার তাৎপর্য কি? এর জবাবে তাঁদের কেউ কেউ বলছিলেন, কেননা বান্দার নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। এর জবাবে আবার কেউ কেউ বলছিলেন, তাহলে তার সেই ইচ্ছাশক্তি কে সৃষ্টি করেছেন? [. মোল্লা আলী ক্বারী, মিরক্বাতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাছাবীহ, তাহক্বীক্ব: জামাল আয়তানী, ১/২৭৭, হা/৯৮, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘তাক্বদীরের প্রতি ঈমান আনা’ অনুচ্ছেদ, (বৈরূত: দারুল কুতুবিল ইলমিইয়াহ, প্রথম প্রকাশ: ২০০১ইং)।] আর এমন বিতণ্ডার কারণেই সেদিন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রেগে গিয়েছিলেন এবং তাঁদেরকে এত্থেকে নিষেধ করেছিলেন।
তবে কেউ সত্যিকার অর্থে তাক্বদীর জানার জন্য প্রশ্ন করলে তাতে কোন দোষ নেই।
৩. ইবনে মাসঊদ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বর্ণিত উক্ত হাদীছেই আমরা আমাদের এ মতের পক্ষে বক্তব্য পাই। কেননা হাদীছটিতে বলা হয়েছে, ছাহাবায়ে করাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-এর কথা উঠলে তোমরা আলোচনায় প্রবৃত্ত হবে না। তার মানে কি এই যে, তাঁদের মর্যাদা-মাহাত্ম্যের কথা বলা যাবে না? নিশ্চয়ই তা নয়। বরং এখানে তাঁদের মাঝে সৃষ্ট মতানৈক্য, কলহ-দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোচনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। তাক্বদীরের ক্ষেত্রেও বিষয়টি ঠিক তদ্রূপই।
৪. রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসব হাদীছে ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম) কে তাক্বদীর নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে নিষেধ করেছেন। কারণ তর্ক-বিতর্ক হলে মতানৈক্য সৃষ্টি হয় আর মতানৈক্য সৃষ্টি হলে সেখানে অসত্য প্রবেশ করে। তবে ভ্রান্ত ফের্কাগুলির বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের জবাব দেওয়া নিষিদ্ধ আলোচনার অন্তর্ভুক্ত নয়; বরং তা হক্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সংগ্রামের শামিল।
একটি প্রশ্ন এবং তার সমাধান: বিদ্বানগণ বলছেন, তাক্বদীর আল্লাহ্র এক গোপন রহস্য। তাহলে আমরা কিভাবে এমন একটি বিষয়ে কথা বলতে পারি? জবাবে বলব, আমরাও অকপটে স্বীকার করি, তাক্বদীর আল্লাহ্র গোপন রহস্য। কিন্তু তাক্বদীর গোপন রহস্য হওয়ার বিষয়টি বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আল্লাহ্র বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের হিকমতের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন: আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন, পথ প্রদর্শন করেন, মৃত্যু ঘটান, জীবন দান করেন, কাউকে দেন আবার কাউকে মাহরূম করেন ইত্যাদি বিষয়ে আল্লাহ্র হিকমত জানতে চাওয়া বৈধ নয়। [. ড. আব্দুর রহমান ইবনে ছালেহ আল-মাহমূদ, আল-ক্বাযা ওয়াল-ক্বাদার ফী যউয়িল কিতাবি ওয়াস্-সুন্নাহ ওয়া মাযাহিবিন্-নাস ফীহি, (রিয়ায: দারুল ওয়াত্বান, দ্বিতীয় প্রকাশ: ১৯৯৭ইং), পৃ: ২৪-২৭; মুহাম্মাদ ইবনে ইবরাহীম আল-হামাদ, আল-ঈমানু বিল-ক্বাযা ওয়াল-ক্বাদার, (রিয়ায: দারু ইবনে খুযায়মা, দ্বিতীয় প্রকাশ: ১৯৯৮ইং), পৃ: ১১-১৫।]
হাযার চেষ্টা সত্ত্বেও তাক্বদীরের সবকিছু বুঝা সম্ভব নয়। কারণ, তাক্বদীরের জ্ঞান গায়েবী বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত; যা আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ জানেন না, তিনি যদি কাউকে না জানিয়ে থাকেন, তবে অন্যরা সেটা কিভাবে জানবে? এমনকি আল্লাহ্র নিকটতম কোন ফেরেশতা এবং নবী-রাসূল (আলাইহিমুস সালাম)গণও গায়েবের কোনই খবর রাখেন না। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানুষ স্বয়ং রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে লক্ষ্য করে মহান আল্লাহ বলেন,
‘আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু আল্লাহ চান, তা ব্যতীত। আর আমি যদি গায়েবের কথা জানতাম, তাহলে অনেক কল্যাণ অর্জন করতে পারতাম এবং কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করতে পারত না। আমি ঈমানদারগণের জন্য শুধুমাত্র একজন ভীতিপ্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা বৈ আর কিছুই নই’ (আ‘রাফ ১৮৮)।
মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে তাক্বদীরের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ে গভীর চিন্তা করলে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। অতএব একজন প্রকৃত মুমিনের আল্লাহ্র বিধানের কাছে আত্মসমর্পণ ছাড়া দ্বিতীয় কোন পথ নেই। একজন মুমিনকে রীতিমত সৎকর্ম করে যেতে হবে এবং অসৎকর্ম বর্জন করতে হবে। [. শায়খ ছালেহ আল-ফাওযান, জামে‘উ শুরূহিল আক্বীদাতিত-ত্বহাবিইয়াহ (কায়রো: দারু ইবনিল জাওযী, প্রথম প্রকাশ: ২০০৬ইং), ২/৫৩০ ও ৫৪৩ ।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/44/3
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।