hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী মিডিয়ার উৎস, মূলনীতি ও ভিত্তিসমূহ

লেখকঃ ড. মো: আব্দুল কাদের

১৮
তিন. মানবিকতা
ইসলামী মিডিয়া ব্যাপকার্থে মানুষের স্বভাবজাত প্রকৃতিকে গুরুত্ব দেয়। কেননা শরীর, রূহ ও ‘আকল এ তিনের সমন্বয়ে মানব প্রকৃতি গঠিত। আল্লাহ তা‘আলা সর্বোত্তমভাবে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাতে রূহ প্রবেশ করিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,

﴿ لَقَدۡ خَلَقۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ فِيٓ أَحۡسَنِ تَقۡوِيمٖ ٤ ﴾ [ التين : ٤ ]

‘‘অবশ্যই আমরা সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে।’’ [.সূরা আত্-তীন : ৪।]

কুরআনের অন্যত্র এসেছে,

﴿ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ بِٱلۡحَقِّ وَصَوَّرَكُمۡ فَأَحۡسَنَ صُوَرَكُمۡۖ وَإِلَيۡهِ ٱلۡمَصِيرُ ٣ ﴾ [ التغابن : ٣ ]

‘‘তিনি সৃষ্টি করেছেন আসমানসমূহ ও যমীন যথাযথভাবে এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি করেছেন সুশোভন। আর ফিরে যাওয়া তো তাঁরই কাছে।’’ [.সূরা তাগাবুন : ৩।]

ইসলামী মিডিয়া সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টিকারী স্রষ্টার ইবাদত করার জন্য বান্দার সাথে আল্লাহর এক অন্তরঙ্গ সম্পর্ক সৃষ্টি করে থাকে। কেননা মানুষ সৃষ্টির মূলে স্রষ্টার একমাত্র উদ্দেশ্য হল তাঁর (আল্লাহ) ইবাদত। এ প্রসঙ্গে কুরআনে এসেছে,

﴿ وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ ﴾ [ الذاريات : ٥٦ ]

‘‘আর আমি সৃষ্টি করেছি জ্বিন এবং মানুষকে এজন্যই যে, তারা কেবল আমার ইবাদাত করবে।’’ [.সূরা আয্-যারিয়াত : ৫৬।]

আর মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক হবে ভাতৃত্ববোধের উপর পারস্পরিক কল্যাণ কামনা, ন্যায়বিচার ও ইহসান-এর ভিত্তিতে। মহান আল্লাহ এদিকে ইঙ্গিত করেই বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقۡنَٰكُم مِّن ذَكَرٖ وَأُنثَىٰ وَجَعَلۡنَٰكُمۡ شُعُوبٗا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓاْۚ إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٞ ١٣ ﴾ [ الحجرات : ١٣ ]

‘‘হে মানুষ! আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, আর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অন্যের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে ব্যক্তিই বেশী মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে বেশী তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।’’ [.সূরা হুজুরাত : ১৩।]

কুরআনের অন্যত্র এসেছে,

﴿ وَقُولُواْ لِلنَّاسِ حُسۡنٗا ٨٣ ﴾ [ البقرة : ٨٣ ]

‘‘আর মানুষকে উত্তম কথা বল।’’ [.সূরা আল্-বাকারাহ : ৮৩।]

অতএব, ইসলামী মিডিয়ার অন্যতম কাজ হল উত্তম কথা বা বক্তব্য উপস্থাপন। তবে এটি তখনই নিশ্চিত হবে উত্তম বলে, যদি তা ইনসাফপূর্ণ ও সত্য বক্তব্য হয়। ইনসাফ প্রতিষ্ঠার প্রতি আহ্বান জানিয়ে মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُونُواْ قَوَّٰمِينَ لِلَّهِ شُهَدَآءَ بِٱلۡقِسۡطِۖ وَلَا يَجۡرِمَنَّكُمۡ شَنَ‍َٔانُ قَوۡمٍ عَلَىٰٓ أَلَّا تَعۡدِلُواْۚ ٱعۡدِلُواْ هُوَ أَقۡرَبُ لِلتَّقۡوَىٰۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ٨ ﴾ [ المائ‍دة : ٨ ]

‘‘হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্য দানে তোমরা অবিচল থাকবে; কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে, এটা তাক্ওয়ার কাছাকাছি। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ্ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।’’ [.সূরা আল মায়িদা : ৮।]

এ পৃথিবীতে যত সৃষ্টি আছে সবই মানব কল্যাণে নিয়োজিত। মহান আল্লাহ অধিকাংশ সৃষ্টিকে মানুষের অধীন করে দিয়েছেন, যেন তা মানুষের কল্যাণে আসে। প্রাণীকুল, জীবজন্তু, মাটির উপর উদগত গুল্ম- সবকিছু সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণা করে একমাত্র মানুষ, যাতে তা নিজেদের উপকারে কাজে লাগানো যায়। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ أَلَمۡ تَرَوۡاْ أَنَّ ٱللَّهَ سَخَّرَ لَكُم مَّا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ ﴾ [ لقمان : ٢٠ ] ‘‘তোমরা কি দেখো না? নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য নিয়োজিত করেছেন আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে।’’ [.সূরা লুকমান : ২০।]

ইসলামী মিডিয়া মানুষের পারস্পরিক উপরোক্ত সম্পর্কের প্রতি দৃষ্টি রেখেই জীবন, জগৎ, আখেরাত প্রভৃতির প্রভূত কল্যাণ সাধনে ব্রতী হয়। তবে এক্ষেত্রে যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় এটা মূলতঃ আল্লাহর সুন্নাহর অন্তর্গত। তিনি কাউকে কাফির আবার কাউকে মু’মিন হিসেবে এ সমাজে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু মানবিকতা বিচারে প্রত্যেকেই তাঁর আলো, বাতাস, অক্সিজেনসহ নি‘আমতরাজি ভোগ করছে। আল্লাহ বলেন:

﴿ هُوَ ٱلَّذِي خَلَقَكُمۡ فَمِنكُمۡ كَافِرٞ وَمِنكُم مُّؤۡمِنٞۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٌ ٢ ﴾ [ التغابن : ٢ ]

‘‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কতক কাফির এবং কতক মুমিন। আর তোমরা যে আমল করছো আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।’’ [.সূরা তাগাবুন : ২।]

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহু বলেন- নিশ্চয় মানুষের পূর্ণতার পরিধি দু’টি মূলের উপর। বাতিল থেকে হককে জানা। হক বাস্তবায়ণ করা। সৃষ্টির স্থান সম্পর্কে যে ভিন্ন রূপ আল্লাহর নিকট দুনিয়া ও আখেরাতে পরিলক্ষিত হয় তা একমাত্র দু’টি মূলের ভিন্নতার কারণে তাদের মর্যাদায় হয়ে থাকে। আর উভয়টিকেই অনুগ্রহ করে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীগণকে দিয়েছেন। তিনি বলেন,

﴿وَٱذۡكُرۡ عِبَٰدَنَآ إِبۡرَٰهِيمَ وَإِسۡحَٰقَ وَيَعۡقُوبَ أُوْلِي ٱلۡأَيۡدِي وَٱلۡأَبۡصَٰرِ ٤٥ ﴾ [ص: ٤٥ ]

‘‘আর স্মরণ করুন, আমাদের বান্দা ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়া‘কূবের কথা, তাঁরা ছিলেন শক্তিশালী ও সূক্ষ্মদর্শী।’’ [.সূরা ছোয়াদ : ৪৫।]

আলোচ্য আয়াতে الأيدي বলতে সত্য বাস্তবায়নের শক্তি-সামর্থকে বুঝানো হয়েছে। الأبصار বলতে দ্বীনের ব্যাপারে অন্তর্দৃষ্টি দানকে বুঝায়। অতএব, এগুলো দ্বারা হককে পরিপূর্ণ পাওয়া ও তা বাস্তবায়নকে বুঝায়। এক্ষেত্রে মানুষকে চারভাগে বিভক্ত করা যায়। উপরোক্ত শাখাটি সৃষ্টির মধ্যে সর্বোত্তম শাখা হিসেবে বিবেচিত।

দ্বিতীয়ত: উপরোক্ত শাখার বিপরীত যার দ্বীনের ব্যাপারে কোনো দূরদৃষ্টি নেই এবং হক বাস্তবায়নের কোনো ক্ষমতা নেই। এ প্রকারের মধ্যে সৃষ্টির অধিকাংশ মানুষ অন্তর্ভুক্ত।

তৃতীয়ত: তাদের দীনের ব্যাপারে অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে এবং জ্ঞানও আছে। কিন্তু তার (দীনের) প্রতি আহ্বান জানানোর বা হক বাস্তবায়নের কোনো শক্তি নেই। এ স্তরে দুর্বল মুমিনগণ অন্তর্ভুক্ত।

চতুর্থত: যাদের শক্তি ও সাহস উভয়টি রয়েছে। কিন্তু দীনের কোনো জ্ঞান বা অন্তর্দৃষ্টি নেই। তারা রহমানের বন্ধু ও শয়তানের বন্ধুর মাঝে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে না। তাদের দৃষ্টিতে সবাই সমান। [.ইবনুল কাইয়্যেম, আল জাওয়াবুল কাফী লিমান সা‘আলা আনিদ দাওয়ায়ে শাফী, (রিয়াদ : মাকতাবাতুর রিয়াদ আল হাদীসাহ, ১৩৮৭ হি.), পৃ. ৮২।]

তবে উপর্যুক্ত প্রথম প্রকারকেই মহান আল্লাহ নেতৃত্বের জন্য মনোনীত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ وَجَعَلۡنَا مِنۡهُمۡ أَئِمَّةٗ يَهۡدُونَ بِأَمۡرِنَا لَمَّا صَبَرُواْۖ وَكَانُواْ بِ‍َٔايَٰتِنَا يُوقِنُونَ ٢٤ ﴾ [ السجدة : ٢٤ ]

‘‘আর আমরা তাদের মধ্য থেকে বহু নেতা মনোনীত করেছিলাম, যারা আমাদের নির্দেশ অনুসারে হেদায়াত করত; যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল। আর তারা আমাদের আয়াতসমূহে দৃঢ় বিশ্বাস রাখত।’’ [.সূরা আস্-সাজদা : ২৪।]

ইমাম কুরতুবী রাহেমাহুল্লাহ্‌ বলেন: جعلنا منهم أئمة অর্থাৎ নেতা সৃষ্টি যাদের আনুগত্য করা হয়। আর তারা হলো নবীগণ ‘আলা্ইহিমুস সালাম। তাঁরা হককে বাতিলের উপর অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তারাই মডেল বা অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। কেননা তারা মানুষের সাথে প্রকৃত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সহজাত প্রবৃত্তি, আল্লাহর উলুহিয়াত, রুবুবিয়াত প্রভৃতির প্রকৃত অর্থ নিয়ে আহ্বান জানিয়েছেন। [.ইমাম কুরতূবী, আল্-জামি লি আহকামিল কুরআন, (বৈরুত : দারুল কিতাবিল আরাবী, তা. বি.), ৪র্থ সংস্করণ, পৃ. ১০৮।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন