hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবেশ বিপর্যয় রোধে ইসলাম

লেখকঃ মাওলাই মোস্তাফা বারজাওয়ী

১৭
গৃহপালিত পশুকে ক্ষতি থেকে রক্ষা এবং তার প্রতি মমতা:
ড. মুস্তাফা আস-সিবাঈ রহ. আমাদের সামনে প্রাণীর প্রতি সহমর্মিতার এক অনন্য দিক তুলে ধরেছেন, মুসলিম ফিকহবিদগণ যা নির্ধারণ করেছেন। তা হলো প্রাণীদের মালিকের ওপর প্রাণীর খরচাদি ওয়াজিব। যদি তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন, তবে তাকে বাধ্য করা হবে। তিনি প্রাণীকে বিক্রি করবেন নয়তো তার ওপর খরচ করবেন অন্যথায় তাকে এমন স্থানে ছেড়ে দেবেন যেখানে তার খাদ্য ও থাকার জায়গা পাবে। [ড. মুস্তাফা আস-সিবাঈ, ‘মিন রাওয়ায়ি‘ হাযারাতিনা’, পৃষ্ঠা: ১১৩।]

তাছাড়া সাধারণভাবে ইসলাম জীবনের সকল ক্ষেত্রে নম্রতার নীতিতে নির্ভর করে। কোমলতাকে মুমিনের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য বানায়। এমন উপকরণ বানায় যা ঈমানকে শক্তিশালী করে এবং আমলকে সৌন্দর্য দান করে। এ সম্পর্কেই সেই হাদীস আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«يَا عَائِشَةُ إِنَّ اللَّهَ رَفِيقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِى الأَمْرِ كُلِّهِ» .

“হে আয়েশা, নিশ্চয় আল্লাহ নরম আচরণকারী, সব জিনিসের মধ্যেই তিনি নরম আচরণ ভালোবাসেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯২৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪০২৭।] আরেক হাদীসে রয়েছে,

«إِنَّ اللَّهَ رَفِيقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ وَيُعْطِى عَلَى الرِّفْقِ مَا لاَ يُعْطِى عَلَى الْعُنْفِ وَمَا لاَ يُعْطِى عَلَى مَا سِوَاهُ» .

“নিশ্চয় আল্লাহ নরম আচরণকারী, তিনি নরম আচরণকেই ভালোবাসেন এবং নরম আচরণের মাধ্যমে তিনি এত দেন যা তিনি কঠোর আচরণকারীকে বা নরম আচরণকারীকে ছাড়া অন্য কাউকে দেন না।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৭৬৬।]

আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ الرِّفْقَ لاَ يَكُونُ فِى شَىْءٍ إِلاَّ زَانَهُ وَلاَ يُنْزَعُ مِنْ شَىْءٍ إِلاَّ شَانَهُ» .

“যে জিনিসেই নরম আচরণ থাকুক না কেন, তা তাকে সৌন্দর্য দান করে। আর যা থেকেই তা তুলে নেওয়া হোক না কেন তা তাকে অসম্মানিত করে।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৭৬৭।]

প্রাণীকুলের প্রতি দয়া ও মমতা করা যে এক ধরনের ইবাদত সে সম্পর্কে প্রচুর হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যা কখনো সর্বোচ্চ নেকীতে পৌঁছায় এবং মাগফিরাত বা ক্ষমা প্রাপ্তির সবচে জোরাল কারণ হয়। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أَنَّ امْرَأَةً بَغِيًّا رَأَتْ كَلْبًا فِى يَوْمٍ حَارٍّ يُطِيفُ بِبِئْرٍ قَدْ أَدْلَعَ لِسَانَهُ مِنَ الْعَطَشِ فَنَزَعَتْ لَهُ بِمُوقِهَا فَغُفِرَ لَهَا» .

“একজন কুলটা মহিলা কোনো এক গরমের দিনে একটি কুকুর দেখল একটি কূপের উপর পিপাসার তাড়নায় তার জিহ্বাকে বের করে দিয়েছে। সে গিয়ে তার মোজা দিয়ে পানি তুলে তাকে খাওয়াল। অতঃপর এ জন্যই তাকে ক্ষমা করা হয়।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯৯৭।]

চিন্তা করে দেখুন আল্লাহ তা‘আলা একটি ইতর প্রাণীর প্রতি দয়া করার উসীলায় পতিতাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন!

ইসলামী শরী‘আহ যে পরিমাণ প্রাণীর প্রতি দয়া দেখিয়েছে, প্রাণীর প্রতি মমত্ববোধকে ইবাদত গণ্য করেছে, ঠিক সেভাবেই আবার প্রাণীর প্রতি অনাচার এবং তাকে কষ্ট দেওয়াকে গর্হিত পাপ ও কঠিন গুনাহ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِى هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ لاَ هِىَ أَطْعَمَتْهَا وَسَقَتْهَا إِذْ حَبَسَتْهَا وَلاَ هِىَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ» .

“এক মহিলাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এই অপরাধে যে, সে একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখেছিল। আর সে মারা গিয়েছিল। ফলে সে এ কারণে জাহান্নামে যায়। তাকে আটক রেখে না সে দানা পানি দিয়েছে। আর না তাকে ছেড়ে দিয়েছে যাতে সে মাটির কীট-মূষিকাদি থেকে খেতে পারে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪৮২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯৮৯।]

উপসংহার: হে মুসলিমগণ, আমরা আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব এবং পৃথিবীকে আবাদ করার দায়িত্ব থেকে মুক্ত হব না। যেমন, আমাদের রব আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন,

﴿هُوَ أَنشَأَكُم مِّنَ ٱلۡأَرۡضِ وَٱسۡتَعۡمَرَكُمۡ فِيهَا﴾ [ هود : ٦١ ]

“তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে এবং সেখানে তোমাদেরকে আবাদকারী বানিয়েছে।” [সূরা হূদ, আয়াত: ৬১]

নাকি আমরা নগর-শহর এবং বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও কারিগরি উৎকর্ষ পরিহার করে মরুভূমি এবং অসভ্য প্রকৃতিতে বসবাস করব। কখনো নয়; আমাদের দায়িত্ব হবে প্রকৃতির সঙ্গে মমতা ও সুবিবেচনার সাথে আচরণ করা। যেমন আমরা এই মাত্র বলে এলাম। অতএব, আমরা পরিবেশ ধ্বংস করব না। পরিবেশ নিয়ে খেলব না। কিংবা আমরা তাকে এমনভাবে বিনাশ করব না যে তাকে আর নতুনভাবে জীবিত না করা যায়। যাকে বলা হয় টেকসই উন্নয়ন। পরিবেশ সংক্রান্ত বিধি-বিধানগুলোকেও উপেক্ষা করব না। কারণ, এতে সব কিছুই পরিমিত ও যথাযথ পরিমাণে প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَكُلُّ شَيۡءٍ عِندَهُۥ بِمِقۡدَارٍ ٨﴾ [ الرعد : ٨ ]

“আর তাঁর কাছে প্রতিটি বস্তু নির্দিষ্ট পরিমাণে রয়েছে।” [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ০৮]

তিনি আরও বলেন,

﴿إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ ٤٩﴾ [ القمر : ٤٩ ]

“নিশ্চয় আমরা সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী।” [সূরা আল-কামার, আয়াত: ৪৯] আল্লাহ আমাদের সকলকে পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হবার তাওফীক দিন। আমীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন