মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এক: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনাকে ( طيبة ) ‘তাইবাহ’ ও ( طابة ) ‘তাবাহ’ নামে অভিহিত করেছেন। (অর্থ: পবিত্র ও উৎকৃষ্ট) বরং সহিহ মুসলিমে আছে, আল্লাহ তাআলা মদিনাকে ‘তাবাহ’ নামে অভিহিত করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—
إن الله سمى المدينة طابة . ( مسلم )
‘আল্লাহ তাআলা ( طابة ) ‘তাবাহ’ মদিনার নামকরণ করেছেন।’ (মুসলিম)
‘তাইবাহ’ ও ‘তাবাহ’ এ দু’টি শব্দ ( طيب ) ‘তাইয়্যেব’ শব্দ হতে তৈরি হয়েছে (অর্থ: পবিত্র)। এর প্রয়োগও ‘তাইয়্যেব’ বা পবিত্র বস্ত্তর জন্য করা হয়। শব্দ দুটিকে পবিত্র ভূমির জন্য প্রয়োগ যথার্থ প্রয়োগ।
দুই: ঈমান মদিনাতে ফিরে যাবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—
إن الإيمان ليأرز إلى المدينة كما تأرز الحية إلى جحرها . ( رواه البخاري ومسلم )
‘অবশ্যই ঈমান মদিনাতে প্রত্যাবর্তিত হবে। যেমন সাপ প্রত্যাবর্তিত হয় তার গর্তে।’ (বোখারি ও মুসলিম হাদিসটি বর্ণনা করেছেন)
অর্থাৎ ঈমান মদিনাতে ফিরে যাবে, অতঃপর কেবল সে ভূমিই হবে ঈমানশূন্য পৃথিবীর মাঝে একমাত্র ঈমানের আধার, ঈমানের আশ্রয়স্থল। মুসলমানগণ মদিনার প্রতি আবেগাপ্লুত হবে এবং সেখানে সফর করবে। কারণ, ঈমানের মোহনিয়, তীব্র আবেদন, আল্লাহর পক্ষ হতে হারাম ও পবিত্রতার ঘোষণা প্রাপ্ত বরকতময় ভূ-খন্ডের সক্রিয় মহববত তাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে, ও উৎসাহ দেবে।
তিন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে মদিনার বর্ণনা এসেছে, তিনি বলেছেন মদিনা এমন একটি জনপদ যে অন্যান্য জনপদ খেয়ে নিঃশেষ করে তার আওতাভুক্ত করে নিবে। তিনি বলেন -أمرت بقرية تأكل القرى ‘আমাকে এমন এক জনপদের আদেশ দেয়া হয়েছে যে অন্যান্য জনপদ খাবে।’ অর্থাৎ তাকে ঐ জনপদে হিজরতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, জনপদ অন্যান্য জনপদকে আক্রান্ত করবে। يقولون لها يثرب . ‘তারা যে জনপদকে ইয়াসরিব বলে।’ وهي المدينة . ( رواه البخاري ومسلم .) ‘আর তা-ই হল মদিনা।’ (বোখারি ও মুসলিম)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী تأكل القرى ‘জনপদসমূহ খাবে’—এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মদিনা অন্যান্য জনপদকে জয় করবে, সক্ষম হবে অন্যান্য জনপদকে বশীভূত করতে। আরো বলা হয়েছে, আল্লাহর রাস্তায় জেহাদে প্রাপ্ত গনিমত এখানে নিয়ে আসা হবে এবং স্থানান্তরিত হবে এখান থেকেই। উভয় ব্যাখ্যা কার্যত, আমরা দেখতে পাই, বাস্তব হয়েছে এবং অন্যান্য শহরের উপর এর আধিপত্য বিস্তার লাভও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এর সূচনা হয়েছিল, যখন এ ভূমির আশীর্বাদ ধুলো মেখে সংস্কারক, পথপ্রদর্শক, বিজয়ী বীরগণ মানব জাতিকে তাদের প্রভুর ইচ্ছায় অন্ধকার হতে মুক্ত করে আলোর পথে নিয়ে আসার অভিযানে যাত্রা করেন। ফলে তাদের বৃহৎ একটি অংশ, মানবজাতির সফলতম জনগোষ্ঠী হেদায়েতের আলো বিধৌত আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করে। মানবজাতির যেটুকু ভালো, কল্যাণময় এবং হেদায়েতের আলোকশিখায় প্রদীপ্ত, তা একদিন উৎসারিত হয়েছিল এ ভূমি থেকেই। অতএব ‘অন্যান্য জনপদ আক্রান্ত করবে’—এর বাস্তব দেখতে পাই, অন্যান্য জনপদের উপর এর বিজয়ের নিশান উড়তে দেখে। যার উদাহরণ ইসলামের প্রথম কল্যাণ যুগ। মুসলমানদের অগ্র-পথিক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবা ও হেদায়াতপ্রাপ্ত খলিফাদের যুগ। আল্লাহ তাআলা তাদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং সন্তোষ দান করেছেন তাদের। তদ্রূপ, গনিমতের মাল অর্জন এবং এ স্থানে জড়ো করার সে ভবিষ্যদ্বাণীও বাস্তবে পরিণত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোম-পারস্যের সম্পদের ভান্ডার আল্লাহ তাআলার রাস্তায় ব্যয় হওয়ার সংবাদ দিয়েছেন—বাস্তবে পরিণত হয়েছে সে উক্তিও। সম্পদের সে ভান্ডার বরকতময় মদিনাতে নিয়ে আসা হয় এবং বণ্টিত হয় হজরত উমরের হাতে।
চার: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার প্রতিকূলতা ও কষ্টের উপর ধৈর্যধারণ করতে উৎসাহ প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, المدينة خير لهم لوكانوا يعلمون . ‘মদিনা তাদের জন্য কল্যাণকর। যদি তারা জানত !’ তিনি এ কথা ঐ সমস্ত লোকদের ব্যাপারে বলেছিলেন, যারা মদিনা ছেড়ে আরাম-আয়েশ, প্রশস্ত রিজিক ও অনেক ধন-সম্পদের জায়গায় চলে যাওয়ার চিন্তা করেছিল। এরশাদ হচ্ছে:—
المدينة خير لهم لوكانوا يعلمون , لايدعها أحد رغبة عنها إلا أبدل الله فيها من هو خير منه , ولايثبت أحد على لأوائها وجهدها إلا كنت له شفيعا أو شهيدا يوم القيامة . ( رواه مسلم .)
‘মদিনা তাদের জন্য কল্যাণকর, (আফসোস !) যদি তারা জানত ! যে আগ্রহ হারিয়ে মদিনা ত্যাগ করবে, আল্লাহ তাআলা তার পরিবর্তে তার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিকে মদিনাতে নিয়ে আসবেন। আর যে প্রতিকূলতা ও কষ্ট সহ্য করে মদিনাতে অবস্থান করবে, আমি কেয়ামতের দিন তার সুপারিশকারী বা সাক্ষী হব।’ (মুসলিম)
অত্র হাদিস মদিনার ফজিলত এবং যে ব্যক্তি মদিনাতে প্রতিকূলতা, কষ্ট ও দুঃখ-ক্লেশের শিকার হবে, তার ধৈর্যের ফজিলত প্রমাণ করে। সুতরাং, এ ধরনের পরিবেশ যেন তাকে মদিনা ছেড়ে আরাম-আয়েশ বা পার্থিব সচ্ছলতার অন্বেষণে অন্য কোথাও যেতে প্রলুব্ধ না করে। বরং, এতে সমস্যার সম্মুখীন হলে ধৈর্যধারণ করবে। এর জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে পুরস্কার ও অনেক সওয়াবের প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে।
পাঁচ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার পবিত্রতা ঘোষণা করার সাথে সাথে এর মর্যাদা ও এতে দুষ্কর্মের ভয়াবহ পরিণতির বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন—
المدينة حرم ما بين عير إلى ثور , من أحدث فيها , أو آوى محدثا فعليه لعنة الله والملائكة والناس أجمعين , لايقبل الله منه صرفا ولا عدلا . ( رواه البخاري ومسلم )
‘আইর এবং সউর পর্বত মধ্যবর্তী অংশ মদিনা হারাম। যে এখানে কোন দুষ্কর্ম করবে, অথবা কোন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দেবে তার উপর আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতা, এবং সমস্ত মানুষের অভিশাপ। আল্লাহ তাআলা তার ফরজ, নফল কোন ইবাদত কবুল করবেন না।’ (বোখারি ও মুসলিম)
ছয়: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার বরকতের জন্য দোয়া করেছেন। যেমন বলেছেন—
اللهم بارك لنا في ثمرنا , وبارك لنا في مدينتا , وبرك لنا في صاعنا , وبارك لنا في مدنا . ( رواه مسلم )
‘হে আল্লাহ! আমাদের ফলে বরকত দিন, বরকত দিন আমাদের শহরে, আমাদের খাদ্য-শস্যের মাপ-জোকে বরকত দিন।’ (মুসলিম)
সাত: মদিনাতে মহামারি ও দাজ্জাল প্রবেশ করবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
على أنقاب المدينة ملائكة , لايدخلها الطاعون ولاالدجال . ( رواه البخاري ومسلم .)
‘মদিনার প্রবেশ পথে ফেরেশতা নিযুক্ত রয়েছে। তাতে মহামারি ও দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বোখারি ও মুসলিম)
মদিনার ফজিলতের ব্যাপারে হাদিসের সংখ্যা অনেক বেশি। এখানে আমি যা উল্লেখ করেছি, তা মূলতঃ বোখারি-মুসলিম হতে সংগৃহীত এবং তা কার্যত খুবই যৎসামান্য।
মদিনার ফজিলতের ব্যাপারে যত কিতাব লেখা হয়েছে, তার মধ্যে শাইখ ড. সালেহ বিন হামেদ আল-রেফায়ীর কিতাব সবচেয়ে সুন্দর, বৈশিষ্ট্যমন্ডিত, যা রচনা করেছিলেন তিনি জামেয়া ইসলামিয়া, মদিনা হতে পি,এইচ,ডি ডিগ্রী অর্জনের জন্য। উক্ত অভিসন্দর্ভের শিরোনাম ছিল— الأحاديث الواردة في فضائل المدينة جمعا ودراسة . ‘ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সহ মদিনার ফজিলতের ব্যাপারে বর্ণিত হাদিস সংকলন’। অনুসন্ধিৎসুদের এ কিতাবটি সংগ্রহ করতে এবং এর থেকে উপকৃত হতে সবিনয় পরামর্শ দিচ্ছি।
মদিনা নগরী যা কিছু অন্তর্ভুক্ত ও নিজের করে নিয়ে পুণ্যময় ও বরকতের আধার হয়েছে, তন্মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ দু’টি মসজিদ উল্লেখযোগ্য। যথা:—
মসজিদে নববী বা রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদ।
মসজিদে কুবা।
মসজিদুর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদের ফজিলতের ব্যাপারে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
যেমন—রসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী—
لاتشد الرحال إلا إلى ثلاثة مساجد : المسجد الحرام , مسجدي هذا , والمسجد الأقصى . ( رواه البخاري ومسلم .)
‘তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কিছুর জন্য (সওয়াবের আশায়) সফর করা যাবে না,—মসজিদুল হারাম, আমার এ মসজিদ এবং মসজিদুল আক্বসা।’ (বোখারি ও মুসলিম)
সুতরাং, এ মদিনাতেই নবীগণ কর্তৃক নির্মিত সেই ঐতিহ্যপূর্ণ তিনটি মসজিদের একটি অবস্থিত, যে তিনটি মসজিদকে অনন্য এ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে যে, তাদের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোথায় এবাদতের জন্য সফর করা যাবে না, সফর করা হবে শরিয়ত বিরুদ্ধ।
আরো হাদিস আছে, যা এ মসজিদের ফজিলত প্রমাণ করে, যেমন এর ভিতর এক নামাজ এক হাজার নামাজের চেয়ে উত্তম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—
صلاة في مسجدي هذا أفضل من ألف صلاة فيما سواه إلا المسجد الحرام . ( رواه البخاري ومسلم .)
‘এই মসজিদের এক নামাজ, অন্যান্য মসজিদের হাজার নামাজের চেয়ে উত্তম, মসজিদুল হারাম ছাড়া।’ (বোখারি ও মুসলিম)
এ, নিশ্চয়, অনেক বড় ফজিলত, আখেরাতের মৌসুমি বায়ুর সংবাদবাহী, এতে অর্জন বহুগুণ;— দশ বা একশতে সীমাবদ্ধ নয়, বরং, এর গন্ডি হাজার ছাড়িয়ে অসংখ্যে।
আমরা জানি, পার্থিব মুনাফা লাভে তীব্র আকাঙ্ক্ষী ব্যবসায়ীগণ যখন জানতে পারে, তাদের পণ্য কোন নির্দিষ্ট এক মৌসুমে ভাল বাজার পাবে। তখন তারা সেজন্য তৈরি হয় ও প্রস্ত্ততি গ্রহণ করতে থাকে। লাভ যদিও অর্ধেক বা দ্বিগুণ হয়। সে তুলনায় আমাদের এখানে কি করা উচিত ! এখানে তো আখেরাতের ব্যবসা। দশ গুণ নয়। একশত গুণ নয়। পাঁচ শত গুণ নয়। ছয় শত গুণ নয়। বরং হাজার গুণের চেয়েও বেশি লাভ?!!
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/784/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।