hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মদিনা শরিফের ফজিলত জিয়ারত ও অবস্থানকালীন আদব

লেখকঃ আব্দুল মুহসিন বিন হামাদ আল আববাদ আল বদর

বরকতময় এ মসজিদ সম্পর্কে আরো কয়েকটি বিষয় জানা প্রয়োজন:
প্রথমত: এ মসজিদে এক নামাজের সওয়াব হাজার নামাজের চেয়ে বেশি। এ ফজিলত শুধু ফরজের জন্য কিংবা শুধু নফলের জন্য বিশিষ্ট নয়। বরং, উভয় প্রকার নামাজের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম صلاة বা নামাজ শব্দটি ব্যাপক ও উন্মুক্ত রেখেছেন। কাজেই, এক ফরজ, হাজার ফরজের সমান। এক নফল হাজার নফলের ছাওয়াব বয়ে আনবে।

দ্বিতীয়ত: হাদিসে বর্ণিত সওয়াব শুধু ঐ ভূ-খন্ডের সাথে নির্দিষ্ট নয়, যতটুকু ভূ-খন্ড রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মসজিদ হিসেবে নির্দিষ্ট ছিল। বরং, এ হুকুম ঐ ভূ-খন্ড এবং অতিরিক্ত যতটুকু ভূ-খন্ড মসজিদের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে উভয়ের জন্য। এর দলিল দুই খলিফা হজরত ওমর রা. ও হজরত উসমান রা.-এর আমল। তারা মসজিদকে ইমামের অংশে সম্প্রসারিত করেছেন। আমরা জানি, বর্তমানে ইমামের স্থান, এবং ইমামের পিছনে যে কাতারগুলো সম্প্রসারিত করা হয়েছে, তা রাসূলের যুগে নির্দিষ্ট মসজিদভূমির বাইরে। তদুপরি তাদের যুগে অনেক সাহাবায়ে কেরাম বর্তমান ছিলেন, কেউ তাদের এ কাজে আপত্তি করেননি। এটাই পরিষ্কার দলিল যে বহু গুণ সওয়াব শুধু ঐ ভূ-খন্ডের জন্য বিশিষ্ট নয়, যে ভূ-খন্ড রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে মসজিদ হিসেবে নির্দিষ্ট ছিল।

তৃতীয়ত: মসজিদের ভিতর কিছু জায়গা আছে, যার সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এটি জান্নাতের একটি বাগান। এরশাদ হচ্ছে—

ما بين بيتي ومنبري روضة من رياض الجنة . ( رواه البخاري ومسلم .)

‘আমার ঘর এবং মিম্বার এর মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের একটি বাগান।’ (বোখারি ও মুসলিম)

গোটা মসজিদের ভিতর শুধু এ অংশকে এ নামে ভূষিত করার অর্থ হলো অত্র অংশটুকু বিশেষ ফজিলতপূর্ণ ও আলাদা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। নফল এবাদত ও জিকির এবং কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে উক্ত ফজিলত অর্জন করা যাবে। শর্ত হল, তথায় যাপন, অবস্থান ও গমনের ব্যাপারে কাউকে যেন কষ্টের সম্মুখীন করা না হয়। মনে রাখতে হবে, ফরজ নামাজ প্রথম কাতারে আদায়ই উত্তম। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—

خير صفوف الرجال أولها وشرها آخرها . ( رواه مسلم .)

‘পুরুষদের সর্বোত্তম কাতার প্রথমটি, নিকৃষ্টতম কাতার শেষেরটি।’ (মুসলিম)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন—

لو يعلم الناس ما في النداء والصف الأول , ثم لم يجدوا إلا أن يستهموا عليه لاستهموا عليه . ( رواه البخاري ومسلم .)

‘মানুষ যদি জানত, আজান দেওয়াতে ও প্রথম কাতারে শামিল হওয়াতে কত খায়ের ও বরকত রয়েছে, এবং লটারি ছাড়া তাতে সুযোগ না পাওয়া যেত, তবে অবশ্যই লটারিতে অংশ গ্রহণ করত।’’ (ইমাম মুসলিম ও ইমাম বোখারি হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।)

চতুর্থত: মুসল্লিদের দ্বারা মসজিদে নববী পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে যে উপস্থিত হবে, সে মসজিদের সামনের অংশ বাদ দিয়ে, তিন দিকে প্রশস্ত রাস্তাতে দাঁড়াবে এবং ইমামের সাথে নামাজ আদায় করবে। এতে জামাতে নামাজ আদায় করার সওয়াব পাবে, তবে হাজারের চেয়ে বহু গুণ বর্ধিত সওয়াব শুধু ঐ ব্যক্তির লাভ হবে, যে মসজিদের ভিতরে নামাজ আদায় করবে। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—

صلاة في مسجدي هذا أفضل من ألف صلاة فيما سواه إلا المسجد الحرام . ( رواه البخاري ومسلم .)

‘আমার এ মসজিদের ভিতর এক নামাজ অন্যান্য মসজিদের ভিতর হাজার নামাজের চেয়ে উত্তম, মসজিদুল হারাম ব্যতীত।’ (বোখারি ও মুসলিম)

সে হিসেবে যে রাস্তাতে নামাজ আদায় করল সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মসজিদে নামাজ আদায়কারী হিসেবে গণ্য হবে না। সুতরাং, এই বহু বহুগুণে বর্ধিত সওয়াবও তার হাসিল হবে না।

পঞ্চম: বহুল প্রচলিত একটি মত এই যে, মদিনাতে আগমনকারী প্রতিটি ব্যক্তির অবশ্য কর্তব্য হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। কারণ, ইমাম আহমদের ‘মুসনাদে’ হাদিস আছে, হজরত আনাস রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন—

من صلى في مسجدي أربعين صلاة لاتفوته صلاة كتبت له براءة من النار ونجاة من العذاب , وبرئ من النفاق . ( وهو حديث ضعيف لاتقوم به الحجة .)

‘যে ব্যক্তি আমার মসজিদে চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, এক ওয়াক্ত নামাজ ও ছুটবে না, তাকে জাহান্নাম হতে মুক্তি ও শাস্তি হতে নাজাতের সনদ প্রদান করা হবে এবং সে নেফাক হতে মুক্ত হয়ে যাবে।’ (এটি দুর্বল সনদের হাদিস। দলিল হিসেবে পেশ করার অযোগ্য।)

—বরং এক্ষেত্রে হুকুম ব্যাপক। এমন নয়,—যে ব্যক্তি মদিনাতে আসবে তার অবশ্য কর্তব্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক নামাজ আদায় করা। তবে, নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা অথবা নির্ধারিত কোন নামাজের শর্ত ছাড়াই এতে প্রত্যেক নামাজ হাজার নামাজের চেয়ে উত্তম।

ষষ্ঠ: ইসলামি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে, আমরা দেখতে পাই, মুসলমানগণ কবরকে কেন্দ্র করে এক ভয়ংকর জাহিলিয়াতে আক্রান্ত হয়ে আছেন—রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর মসজিদে নববীতে অবস্থিত,—এ যুক্তিতে তারা কবরের উপর নির্মাণ করছেন মসজিদ, কিংবা মসজিদে মৃতদের দাফন করছেন নির্দ্বিধায়। তাদের অযৌক্তিক ও খুবই বিভ্রান্তিকর প্রমাণ এই যে, রাসূলকে সমাহিত করা হয়েছে তারই নির্মিত মসজিদে নববীতে। আমরা তাদের এ ভ্রান্তির উত্তর হিসেবে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমনোত্তর কালে মসজিদে নববী নির্মাণ করেন, এবং উম্মাহাতুল মোমেনিনদের বসবাসের জন্য তার পাশেই নির্মাণ করেন কয়েকটি ঘর, তার একটি হজরত আয়েশা (রা:)-এর ঘর—ওফাতের পর রাসূলকে যেখানে সমাহিত করা হয়। উম্মাহাতুল মোমেনিনদের ঘরগুলো খোলাফায়ে রাশিদীন, আমিরে মুআবিয়া ও তার পরবর্তী অন্যান্য খলিফাদের আমলে মসজিদের আওতার বাইরে ছিল, পরবর্তীতে, বনু উমাইয়্যা গোষ্ঠীর শাসনামলে, মসজিদে নববীকে সম্প্রসারিত করা হয়, এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমাধি সহ হজরত আয়েশার গৃহটি মসজিদের আওতাভুক্ত করে নেয়া হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনেক সুস্পষ্ট হাদিস বর্ণিত আছে—যা রহিত হওয়াকে কবুল করে না এবং যার দ্বারা কবর সমূহকে মসজিদ রূপে গ্রহণ করা হারাম প্রমাণিত হয়। যেমন—জুনদুব বিন আব্দুল্লাহ আল বাযালীর রা. এর হাদিস। যে হাদিস রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তার মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে শুনেছেন। তাতে তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে বলতে শুনেছি—

إني أبرأ إلى الله أن يكون لي منكم خليل , فإن الله اتخذني خليلا كما اتخذ إبراهيم خليلا , ولو كنت متخذا من أمتي خليلا لاتخذت أبابكر خليلا , ألا وإن من كان قبلكم كانوا يتخذون قبور أنبيائهم وصالحيهم مساجد ألا فلا تتخذواالقبور مساجد فإني أنهاكم عن ذلك . ( رواه مسلم في صحيحه .)

‘তোমাদের কেউ আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু বা খলিল হবে এ থেকে আল্লাহ তাআলার নিকট নিষ্কৃতি চাই। কারণ, আল্লাহ তাআলা আমাকে খলিল নির্বাচন করেছেন। যেভাবে খলিল নির্বাচন করেছেন ইব্রাহীমকে। আমি যদি আমার উম্মত হতে কাউকে খলিল নির্বাচন করতাম, তাহলে অবশ্যই আবু বকরকে খলিল নির্বাচন করতাম। জেনে রেখো ! তোমাদের আগে যারা ছিল, তারা নবীদের এবং নেককার লোকদের কবর সমূহকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করতো। সাবধান ! তোমরা কবর সমূহকে মসজিদ রূপে গ্রহণ করো না। আমি এর থেকে তোমাদের নিষেধ করছি।’ (মুসলিম)

বরং, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রকৃত অবস্থা হলো, মৃত্যুর সায়াহ্নে, এক বেদনা বিধুর পরিবেশেও, তিনি ভোলেন নি এ ব্যাপারে উম্মতকে সতর্ক করতে। কবর সমূহকে মসজিদে রূপান্তর করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেন। যেমন বোখারি ও মুসলিমে আয়েশা রা. ও ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, তারা বলেছেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট মৃত্যু হাজির হল, একটি চাদর তিনি চেহারার উপর রাখতেন, যখন চিন্তিত হতেন, চেহারা হতে চাদর সরিয়ে নিতেন। এমতাবস্থায় তিনি বলেন—

لعنة الله على اليهود والنصارى اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد .

‘ইয়াহুদ-নাসারাদের উপর আল্লাহ তাআলার লা’নত। তারা তাদের নবীদের কবর সমূহকে মসজিদ বানিয়েছে।’

উম্মতের মাঝে তাদের কর্মের পুনরাবৃত্তির ব্যাপারে সতর্ক উচ্চারণ করেছিলেন। হজরত আয়েশা রা., ইবনে আববাস এবং হজরত জুনদুব রা. হতে বর্ণিত এ হাদিস গুলো সুস্পষ্ট। কোন অবস্থায় রহিত করণকে স্বীকার করে না। কারণ, হজরত জুনদুব রা. এর হাদিস রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেষ জীবনের এবং হজরত আয়েশা রা. ও ইবনে আববাস রা. এর হাদিস দু’টি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেষ মুহূর্তের। সুতরাং, সহিহ ও মুহকাম এ হাদিসগুলো, যা সুনিশ্চয়ভাবে প্রামাণ্য, উমাইয়্যা শাসনামলে গৃহীত একটি সিদ্ধান্তকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে তার বিরোধিতা করা কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। উমাইয়্যাদের সেই সিদ্ধান্তকে ভিত্তি করেই কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ বা মসজিদে দাফনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন