HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফজরের সালাত ও কিয়ামুল লাইলের জন্য সহায়ক উপকরণ

লেখকঃ ড. রুকাইয়্যাহ বিনতে মুহাম্মদ আল-মাহারিব

১২
কিয়াম থেকে বঞ্চিতকারী উপকরণ
রাতে কিয়ামের সহায়ক যেমন কতক উপকরণ রয়েছে, অনুরূপ কিছু উপকরণ রয়েছে রাতের কিয়াম থেকে বঞ্চিতকারী, যেমন আল্লাহ থেকে অন্তরের গাফেল হওয়া, তার নিয়ামত ভুলে যাওয়া, তার শাস্তির কথা স্মরণ না করা, তার সন্তুষ্টি ও গোস্বার পরোয়া না করা ইত্যাদি। ফলে বান্দা নিজের দীন, রব ও রবের আদেশ-নিষেধ নিয়ে কোন চিন্তা করে না। শুধু জানে লোক দেখাদেখি সালাত আদায় করা, ঘুমিয়ে থাকলে জাগ্রত হওয়ার তাওফিক পায় না, বরং জাগিয়ে দিলে বিরক্ত হয়। এরূপ যার অবস্থা সে কিভাবে নাজাত পাবে, এ তো মুনাফিকদের হালত। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন:

" ولقد رأيتُنا ولا يتخلَّف عنها إلا منافقٌ معلومُ النفاق ". رواه مسلم .

“আমাদেরকে দেখেছি জামাত থেকে মুনাফিক ব্যতীত কেউ বিরত থাকত না, যার নিফাক ছিল সবার নিকট স্পষ্ট”। [মুসলিম।] কারণ রাতের কিয়াম কষ্টকর, যা ধৈর্যধারণকারী ও আল্লাহর নিকট সাওয়াব প্রত্যাশাকারী ব্যতীত কোন কপটের পক্ষে সম্ভব নয়”।

অধিক পাপ ও পাপের মধ্যে মগ্নতার ফলে বান্দা কিয়ামুল লাইল থেকে বঞ্চিত হয়, যদিও পাপ হয় ছোট। পাপের কারণে বান্দা সবচেয়ে বড় রিযিক আল্লাহর সাক্ষাত ও তার মোনাজাত থেকে মাহরুম হয়। হাসান রহ.-কে জনৈক ব্যক্তি বলল:

«يا أبا سعيد؛ إنِّي أَبيتُ معافى، وأحبُّ قيامَ الليل، وأُعدُّ طهوري؛ فما لي لا أقوم؟ فقال : ذنوبُك قَيَّدَتْك» .

“হে আবু সাইদ, আমি সুস্থাবস্থায় রাত যাপন করি, রাতে উঠতে চাই, পবিত্র অবস্থায় ঘুমাই, তবুও কেন উঠতে পারি না? তিনি বললেন: তোমার পাপ তোমাকে আটকে রেখেছে”।

প্রবৃত্তির অনুসরণ ও বিদআত করার ফলে কিয়ামের তাওফিক হ্রাস হয়, অতএব গায়ে যখন শক্তি থাকে তখন সুন্নত মোতাবেক আমল করুন ও বিদআত পরিহার করুন। যেমন কারো থেকে বর্ণিত আছে, তিনি পূর্ণ রাত সালাত আদায় করতেন ঘুমাতেন না; অথবা বর্ণিত আছে, তিনি এক রাতে পূর্ণ কুরআন খতম করতেন। এটাই বিদআত ও সুন্নতের পরিপন্থী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জাতীয় আমল থেকে নিষেধ করে গোস্বা জাহির করে বলেছেন:

«من رغب عن سنتي فليس مني» .

“যে আমার সুন্নত থেকে বিরত থাকল, সে আমার দলভুক্ত নয়”।

একটি উদাহরণ: ওহাব ইব্‌ন মুনাব্বেহ সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়, তিনি ত্রিশ বছর জমিনে পার্শ্ব রাখেননি, তিনি বলতেন: আমি যদি আমার ঘরে শয়তান দেখি, তাই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয় বালিশ দেখার চেয়ে, কারণ বালিশ ঘুমের দিকে আহ্বান করে”। এ কথা তার থেকে প্রমাণিত নয়, যদি প্রমাণিত হত আমরা গ্রহণ করতাম না, যদিও তিনি তাবীঈদের একজন। কারণ তার এ কর্ম সুন্নতের খিলাফ, বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পার্শ্ব জমিনে রাখতেন, ঘুমাতেন ও বালিশের উপর ভর দিতেন এবং ঘরে শয়তানের অবস্থানকে অপছন্দ করতেন। আপনি কতক বইয়ে দেখবেন সালাফদের ইবাদত সম্পর্কে বাড়াবাড়ি রয়েছে, যেখানে সুন্নতের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যেমন আবু নুআইমের “হুলইয়াতুল আউলিয়া” ও গাজালি রচিত “এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন”। এসব কিতাবের লেখকগণ বর্ণনার শুদ্ধতা যাচাই করেননি।

আপনার কর্তব্য আপনি নিজের দীনের ব্যাপারে সতর্ক হন, সলফদের যেসব ঘটনা সুন্নত মোতাবেক গ্রহণ করুন, যা সুন্নত পরিপন্থী তা ত্যাগ করুন। সুন্নত পরিপন্থী আমল নিয়ে তাদের সাথে ঈর্ষা কিংবা প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হবেন না, কারণ তা বিদআত ও বৈরাগ্য, ইসলামে যার কোন অংশ নেই। সূফীরা যোগী ও সন্ন্যাসীদের অনুসরণ করে তাদের থেকে অনৈসলামিক এসব কর্মকাণ্ড ইসলামে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে, এ জন্য জাল হাদিস রচনা করেছে, অতঃপর মানুষদের তার দিকে আহ্বান করেছে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবাদাতের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন, যা শরীরের জন্য কষ্টকর তার নির্দেশ আল্লাহ দেননি। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন দু’টি খুঁটির সাথে একটি রশি বাঁধা ছিল, তিনি বললেন: “এটা কার?” তারা বলল: জয়নাবের, যখন তার অলসতা অথবা দুর্বলতা আসে, রশি ধরে দাঁড়িয়ে যান। তিনি বললেন: “এটা খুলে ফেল, তোমরা প্রত্যেকে আগ্রহ পর্যন্ত সালাত আদায় কর, অতঃপর যখন অলসতা অথবা দুর্বলতা আসে বসে পড়”। [বুখারি ও মুসলিম।]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إذا نعسَ أحدُكم في الصلاة فليرقد حتى يذهب عنه النومُ؛ فإنَّ أحدَكم إذا صَلَّى وهو ناعسٌ لعله يذهبُ يستغفر فيسبّ نفسه» . رواه البخاريُّ ومسلم .

“যখন তোমাদের কেউ সালাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়, তার উচিত ঘুমানো, যেন ঘুম চলে যায়। কারণ তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় তোমাদের কেউ যখন সালাত আদায় করবে, তখন ইস্তেগফার করতে গিয়ে হয়তো নিজেকে গালি দিবে”। [বুখারি ও মুসলিম।]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, একদা হাওলা বিনতে তুওয়াইব তার কাছ দিয়ে অতিক্রম করেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পাশেই ছিলেন, তিনি বলেন: এ যাচ্ছে হাওলা বিনতে তুওয়াইব, মানুষের ধারণা তিনি রাতে ঘুমান না, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:

«لا تنام الليل ! خذوا من العمل ما تطيقون؛ فو الله لا يسأم الله حتى تسأموا» . متَّفقٌ عليه، واللَّفظُ لمسلم .

“সে রাতে ঘুমায় না! তোমরা তোমাদের সাধ্যানুসারে আমল কর, নিশ্চয় আল্লাহ বিরক্ত হন না, যতক্ষণ না তোমরা বিরক্ত হও”। [বুখারি ও মুসলিম।]

রাত জাগা ও দেরিতে ঘুমানোর ফলে কিয়ামুল লাইলে বিঘ্ন ঘটে, শরীরের ঘুম পূর্ণ না হলে উঠা কঠিন হয়। বর্তমান যুগে আমাদের রাত-জাগা অধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা রাতের অর্ধেক না হতে ঘুমাই না। এ রাত-জাগা যদি কোন কল্যাণে হত, কিংবা ইলম অন্বেষণে হত, কিংবা জিহাদের জন্য হত, কিংবা ন্যূনতম পক্ষে বৈধ কাজে হত কথা ছিল না, কিন্তু আমাদের রাত-জাগা হয় খেল-তামাশা ও অযথা কাজে। কেউ রাত জাগে অশ্লীল ম্যাগাজিন দেখে, কেউ রাত জাগে টেলিভিশনের পর্দায় বসে ইত্যাদি। এ রাত জাগায় ফরয বিনষ্ট না হলেও হারাম, কিন্তু যখন এ কারণে ফরয বিনষ্ট হয়?! এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার পর কথাবার্তা অপছন্দ করতেন। আবু বারযা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

( كان النبيُّ صلى الله عليه وسلم يكرهُ النومَ قبلَ صلاة العشاء والحديثَ بعدها ). رواه البخاريُّ

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার পূর্বে ঘুম ও তার পর কথাবার্তা অপছন্দ করতেন”। [বুখারি।] তবে ইলম অন্বেষণ, স্ত্রীর সাথে আলাপ ও সফরের জন্য রাত জাগলে সমস্যা নেই, শর্তে হচ্ছে ফরয সালাত যেন বিনষ্ট না হয়, ফরয সালাত বিনষ্ট হলে এসবও হারাম। আল্লাহ ভালো জানেন।

ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এশার সালাতের পর মানুষদেরকে বেত্রাঘাত করতেন, আর বলতেন: “প্রথম রাত জেগে শেষ রাতে ঘুমাবে?!” [ইব্‌ন আবি শায়বাহ।]

দিন ভর খেলা-ধুলা ও অযথা কাজে লিপ্ত থাকার ফলে রাতে কিয়াম করা সম্ভব হয় না, অন্তর কঠিন হয়ে যায়, শয়তান তার উপর প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়।

অধিক পানাহারের কারণে কিয়াম কঠিন হয়, কারণ অধিক পানাহার প্রবল ঘুমের কারণ। জনৈক শায়খ ছাত্রদের বলেন: বেশী খেয়ো না, তাহলে বেশী পান করবে ও বেশী ঘুমাবে, অবশেষে মৃত্যুর সময় বেশী আফসোস করবে”। গাজালি রহ. বলেন: এটাই মূল নীতি, সর্বদা পেটকে খাদ্যের বোঝা থেকে হালকা রাখুন।

হারাম খাদ্যের ফলে অন্তর কঠিন হয় ও তাতে আবরণের সৃষ্টি হয়, ফলে হারাম খাদ্য ভক্ষণকারী কিয়াম থেকে বঞ্চিত হয়, বরং সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়, সবচেয়ে বড় কল্যাণ হচ্ছে আল্লাহর সাথে মোনাজাত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন