HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফজরের সালাত ও কিয়ামুল লাইলের জন্য সহায়ক উপকরণ

লেখকঃ ড. রুকাইয়্যাহ বিনতে মুহাম্মদ আল-মাহারিব

কিয়ামুল লাইলের পরকালীন উপকারিতা
১. কিয়ামুল লাইলের ফলে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল হয়। আল্লাহ তার বান্দাকে দেখে হাসেন, যখন সে আরামদায়ক বিছানা ও সুন্দরী স্ত্রী রেখে সালাতের জন্য দণ্ডায়মান হয়। আবুদ-দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«ثلاثة يحبُّهم الله ويضحك إليهم ويستبشر بهم ...». وذكر منهم : «والذي له امرأة حسناء وفراش لين حسن فيقوم من الليل؛ فيقول : يَذَرُ شهوتَه ويذكرني ولو شاء رقد» . رواه الطبرانيُّ، وقال المنذريُّ : إسناده حسن .

“তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ পছন্দ করেন, তাদের দেখে হাসেন ও তাদেরকে সুসংবাদ দেন...”, তাদের একজন: “যার সুন্দর স্ত্রী ও আরামদায়ক বিছানা রয়েছে, তবুও সে রাতে দণ্ডায়মান হয়। [আল্লাহ বলেন:] সে তার প্রবৃত্তিকে ত্যাগ করে আমাকে স্মরণ করছে, যদি সে চাইত শুয়ে থাকতে পারত”। [তাবরানি, শায়খ মুনযিরি বলেছেন, হাদিসটির সনদ হাসান।]

আল্লাহর হাসা তার সন্তুষ্টির দলিল, আল্লাহ আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আল্লাহ তা‘আলা রাতে কিয়ামকারীদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করেন। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«عجب ربُّنا من رجلين : رجل ثار عن وطائه ولحافه من بين حِبِّه وأهله إلى صلاته فيقول اللهُ لملائكته : انظروا إلى عبدي ثار عن فراشه ووطائه من بين حِبِّه وأهله إلى صلاته رغبةً فيما عندي وشفقةً مما عندي» . رواه الطَّبرانيُّ والبيهقيُّ وابن حبَّان وصحَّحه الألبانيُّ والأرناؤوط .

“আমাদের রব দু’জন ব্যক্তির কারণে আশ্চর্য হন: এক ব্যক্তি যে তার নরম বিছানা ও লেপ ছেড়ে, প্রিয় স্ত্রী ও পরিবার ত্যাগ করে সালাতে দণ্ডায়মান হয়, আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বলেন: দেখ আমার বান্দাকে, সে তার বিছানা ও খাট ছেড়ে, স্ত্রী ও পরিবার ত্যাগ করে আমার আশা ও ভয়ে সালাতে দণ্ডায়মান হয়েছে”। [তাবরাবি, বায়হাকি, ইবনে হিব্বান, শায়খ আলবানি ও শায়খ আরনাউত হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]

২. কিয়ামুল লাইলকারীদের জন্য রয়েছে জান্নাতুল মাওয়া, যার নিয়ামত কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শ্রবণ করেনি এবং কোন অন্তরে তার কল্পনা জাগ্রত হয়নি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ تَتَجَافَىٰ جُنُوبُهُمۡ عَنِ ٱلۡمَضَاجِعِ يَدۡعُونَ رَبَّهُمۡ خَوۡفٗا وَطَمَعٗا وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ ١٦ فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧ ﴾ [ السجدة : ١٦، ١٧ ]

“তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে আলাদা হয়।তারা ভয় ও আশা নিয়ে তাদের রবকে ডাকে।আর আমি তাদেরকে যে রিযক দান করেছি,তা থেকে তারা ব্যয় করে। অতঃপর কোন ব্যক্তি জানে না তাদের জন্য ‎‎ চোখ জুড়ানো কি জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে,তারা যা করত, তার বিনিময়স্বরূপ”। [সূরা সেজাদ: (১৬-১৭)]

আব্দুল্লাহ ইব্‌ন সালাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«يا أيُّها النَّاس أفشوا السلام، وأطعموا الطعام، وصلُّوا باللَّيل والناسُ نيامٌ تدخلوا الجنة بسلام» . رواه التِّرمذيُّ وصحَّحه الألبانيُّ .

“হে মানুষেরা, সালামের প্রসার কর, খাদ্য প্রদান কর ও রাতে সালাত আদায় কর, যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে জান্নাতে নিরাপত্তার সাথে প্রবেশ করবে”। [তিরমিযি, শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]

আলি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إنَّ في الجنة غرفًا يُرى ظاهرُها من بطونها وبطونُها من ظهورها» . فقام أعرابيٌّ فقال : لمن هي يا رسولَ الله؟ قال : «مَنْ أطاب الكلامَ وأطعمَ الطَّعامَ وأدامَ الصِّيامَ وصلَّى باللَّيل والنَّاسُ نيامٌ» . رواه التِّرمذيُّ وحسَّنه الألبانيُّ .

“নিশ্চয় জান্নাতে কতক প্রাসাদ রয়েছে, যার ভেতর বাহির থেকে ও বাহির ভেতর থেকে দেখা যায়”। জনৈক গ্রাম্য ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল: হে আল্লাহর রাসূল ঐ ঘর কার জন্য? তিনি বলেন: “তার জন্য যে সুন্দর কথা বলে, খাদ্য প্রদান করে, রীতিমত সালাত আদায় করে ও কিয়ামুল লাইল করে, যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে”। [তিরমিযি, শায়খ আলবানি হাদিসটি হাসান বলেছেন।] আল্লাহ যখন দুনিয়ার আসমানে আগমন করেন, তার সামনে হাজির না হয়ে আমরা কি স্বাদ আস্বাদন করি?! কিসের বিনিময়ে চিরস্থায়ী জান্নাত বিনষ্ট করছি?! যেখানে হাতাশা ও দুঃখ কিছুই নেই। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿ أَلَّا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ ١٧٠ ﴾ [ ال عمران : ١٧٠ ]

“ তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা ‎‎ দুঃখিতও হবে না”। [সূরা আলে-ইমরান: (১৭০)]

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ سَبَقَتۡ لَهُم مِّنَّا ٱلۡحُسۡنَىٰٓ أُوْلَٰٓئِكَ عَنۡهَا مُبۡعَدُونَ ١٠١ لَا يَسۡمَعُونَ حَسِيسَهَاۖ وَهُمۡ فِي مَا ٱشۡتَهَتۡ أَنفُسُهُمۡ خَٰلِدُونَ ١٠٢ لَا يَحۡزُنُهُمُ ٱلۡفَزَعُ ٱلۡأَكۡبَرُ وَتَتَلَقَّىٰهُمُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ هَٰذَا يَوۡمُكُمُ ٱلَّذِي كُنتُمۡ تُوعَدُونَ ١٠٣ ﴾ [ الانبياء : ١٠١، ١٠٣ ]

“আমার পক্ষ থেকে যাদের জন্য পূর্বেই কল্যাণনির্ধারিত রয়েছে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখাহবে। (১০১) তারা জাহান্নামের ক্ষীণতম শব্দও শুনতে পাবেনা। সেখানে তারা তাদের মনঃপুত বস্তুর মধ্যেচিরকাল থাকবে। মহাভীতি তাদেরকে পেরেশান করবে না। আর ‎‎ ফেরেশতারা তাদেরকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলবে,‘এটাই তোমাদের সেই দিন, যার ওয়াদা ‎‎ তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল”। [সূরা আম্বিয়া: (১০১-১০৩)]

প্রিয় পাঠক, আপনি অবশ্যই জান্নাতে যেতে চান, তবে তার জন্য চেষ্টা করেন না কেন?! আপনার বাধা কিসে?! নিশ্চয় শয়তান আপনাকে বাধা দিচ্ছে, তার কামনা আপনিও তার সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করেন। অতএব তাকে ছুঁড়ে ফেলুন, তার ডাকে সাড়া দিবেন না, তার প্ররোচনায় প্রতারিত হবেন না, কিয়ামুল লাইলের জন্য উঠে দাঁড়ান।

৩. রাতে কিয়ামকারী বান্দার উপর আল্লাহ রহমত নাযিল করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«رَحم اللهُ رجلاً قام من الليل فصلَّى وأيقظَ امرأتَه، فإن أَبَتْ نضح في وجهها الماءَ، ورحم اللهُ امرأةً قامت من اللَّيل فصلَّت وأيقظت زوجَها، فإن أبى نضحت في وجهه الماء» . رواه أبو داود، وقال الألبانيُّ : ( حسن صحيح ).

“আল্লাহ সে ব্যক্তিকে রহম করুন, যে রাতে দাঁড়াল ও স্ত্রীকে জাগ্রত করল, যদি সে অস্বীকার করে তার চোখে পানির ছিটা দিল। আল্লাহ সে নারীকে রহম করুন, যে রাতে দাঁড়াল ও স্বামীকে জাগ্রত করল, যদি সে অস্বীকার করে তার চোখে পানির ছিটা দিল”। [আবু দাউদ, শায়খ আলবানি বলেছেন: হাদিসটি হাসান ও সহিহ।]

এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে, নারী-পুরুষ উভয়ে আল্লাহর হক আদায় ও তার রহমত প্রাপ্তিতে সমান।

৪. যে দু’রাকাত সালাত আদায় করল, সে অধিক যিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রিয় পাঠক, আল্লাহ আপনাকে তাওফিক দিন, দেখুন রাতের আঁধারে দু’রাকাত সালাতের কি পরিমাণ ফযিলত, আপনি অধিক যিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। আর যে দু’রাকাতের অধিক আদায় করে, তার ব্যাপারে আপনার ধারণা কি!? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إذا أيقظ الرجلُ أهله من الليل فصلَّيا أو صلى ركعتين جميعًا كُتبا في الذاكرين والذاكرات» . رواه أبو داود وصححه الألباني .

“যখন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে রাতে জাগ্রত করে, অতঃপর উভয়ে সালাত আদায় করে অথবা উভয়ে মিলে দু’রাকাত আদায় করে, তাদেরকে অধিক যিকিরকারী পুরুষ ও অধিক যিকিরকারী নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়”। [আবু দাউদ, শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]

৫. কিয়ামুল লাইলের বদৌলতে ব্যক্তি গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয় না। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর ইব্‌ন আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ قام بعشر آيات لم يُكتب من الغافلين، ومن قام بمائة آية كُتب من القانتين، ومن قام بألف آية كُتب من المقنطرين» . رواه أبو داود وصحَّحه الألباني .

“যে ব্যক্তি রাতে দশ আয়াতসহ কিয়াম করল, তাকে গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না, আর যে একশো আয়াত নিয়ে কিয়াম করল, তাকে কানেতিনদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, আর যে এক হাজার আয়াত নিয়ে কিয়াম করল, তাকে মুকানতিরিনদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়”। [আবু দাউদ, শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।] মুকানতিরিন অর্থ অধিক সম্পদের মালিক। এখানে উদ্দেশ্য অধিক সাওয়াবের মালিক। ইব্‌ন হাজার রহ. বলেন: সূরা মুলক থেকে সূরা নাস পর্যন্ত এক হাজার আয়াত।

৬. যদি কেউ রাতে সালাত আদায়ের নিয়ত করে, দৃঢ় ইচ্ছা রাখে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে, সে সাওয়াবের অধিকারী হয়, যদিও সে জাগ্রত হতে না পারে। ঘুম তার জন্য সদকা স্বরূপ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«ما من امرئ تكون له صلاة بالليل فغلبه عليها النومُ إلا كُتب له أجرُ صلاته وكان نومُه صدقة عليه» . رواه أبو داود وصحَّحه الألبانيُّ .

“যে ব্যক্তিরই রাতে সালাতের ইচ্ছা রয়েছে, অতঃপর তার উপর ঘুম প্রবল হল, তার জন্য অবশ্যই সালাতের সাওয়াব লিখা হবে, আর ঘুম হবে তার উপর সদকা স্বরূপ”। [আবু দাউদ, হাদিসটি শায়খ আলবানি সহিহ বলেছেন।]

৭. কিয়ামুল লাইলের বদৌলতে পরকালের মাগফেরাত, রহমত ও চিরস্থায়ী নিয়ামত হাসিল হয়। কারণ এতে একটি মুহূর্ত রয়েছে যেখানে বান্দা যা চায় তাই প্রদান করা হয়। হাদিসে এসেছে:

«إن في الليل لساعة لا يوافقها رجلٌ مسلم يسأل الله خيرًا من أمر الدنيا والآخرة إلا أعطاه إياه وذلك كل ليلة» . رواه مسلم .

“নিশ্চয় রাতে একটি মুহূর্ত রয়েছে, সে সময় বান্দা আল্লাহর নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের যাই প্রার্থনা করুক, আল্লাহ তাকে তা প্রদান করেন। আর এটা প্রতি রাতেই হয়। [মুসলিম।]

৮. রাতে কিয়ামকারী ব্যক্তি দুনিয়ার আসমানে অবতীর্ণ আল্লাহর দরবারে হাজির হয়, যখন আল্লাহ বলেন: আছে কেউ প্রার্থনাকারী আমি যাকে প্রদান করব? আছে কেউ ইস্তেগফারকারী আমি যাকে ক্ষমা করব? বান্দার এর চেয়ে বড় পাওনা আর কি?

৯. কিয়ামুল লাইলের কারণে পাপ মোচন হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুয়ায রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন:

«ألا أَدُلُّك على أبواب الخير؛ الصوم جُنَّةٌ، والصَّدقةُ تطفئ الخطيئة كما يُطفئ الماء النار، وصلاة الرجل من جوف الليل» . ثم تلا : ﴿ تَتَجَافَىٰ جُنُوبُهُمۡ عَنِ ٱلۡمَضَاجِعِ حتى بلغ : يَعۡمَلُونَ ١٧ ﴾ . رواه التِّرمذيُّ وصحَّحه الألبانيُّ» .

“আমি কি তোমাকে কল্যাণের দরজা দেখাব! সিয়াম ঢাল স্বরূপ, সদকা পাপ মিটিয়ে দেয় যেমন আগুন পানি নিভিয়ে দেয় ও রাতের আধারে ব্যক্তির সালাত। অতঃপর তিনি পাঠ করেন: “তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে আলাদা হয়...” আয়াতের শেষ পর্যন্ত। [তিরমিযি, শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]

১০. কিয়ামুল লাইল কিয়ামতের দিন নূর হবে। আবুদ-দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«من مشى في ظلمة اللَّيل إلى المساجد لقي الله - عز وجل - بنور يوم القيامة» . رواه الطبرانيُّ وابن حبَّان في صحيحه، وصحَّحه الألبانيُّ .

“যে ব্যক্তি রাতের আঁধারে মসজিদের দিকে চলে, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সাথে নূরসহ সাক্ষাত করবে”। [তাবরনী, ইব্‌ন হিব্বান, শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]

১১. রাতে ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তিরা যখন কবরে কষ্ট ও সংকীর্ণতার সম্মুখীন হবে, তখন কিয়ামকারী ব্যক্তিরা প্রশস্ততা ও নূর হাসিল করবে। তার নেক আমল তার নিকট সুন্দর আকৃতিতে এসে উপস্থিত হবে, তার একাকীত্ব দূর করবে ও তাকে সান্ত্বনা দিবে। বারা ইব্‌ন আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إنَّ العبدَ المؤمن إذا كان في انقطاع من الدُّنيا وإقبال من الآخرة نزل إليه الملائكةُ من السَّماء بيضُ الوجوه كأنَّ وُجوهَهُم الشَّمسُ، مَعَهُم كَفَنٌ من أكفَان الجنة وَحَنُوطٌ مِنْ حَنُوط الجنة حتى يجلسوا منه مَدَّ البصر ...» إلى أن قال في وصف حال المؤمن في القبر :

«فَيُنادي مُنَادٍ في السَّماء أَنْ صَدَقَ عَبْدي فَأَفْرشوه مِن الجنَّة وَألبِسُوهُ منْ الجنةِ وَاْفتحُوا لَه بَابًا إلى الجنة» . قال : «فَيأتيه من رُوحها وطيبها ويُفْسَحُ لهُ في قَبْره مدَّ بَصَره» .

قَالَ : «ويأتيه رجلٌ حَسَنُ الوَجْه حَسَنُ الثياب، طَيَّبُ الريح، فيقولُ : أبشر بالذي يَسُرُّكَ، هذا يومك الذي كنتَ توعَد . فيقول له : من أنت؟ فوجهك الوجه يجيء بالخير . فيقول : أنا عملك الصالح . فيقول : رَبِّ أَقم الساعة حتى أرجع إلى أهلي ومالي» . رواه أحمد (4/362) ، وصحَّحه الألبانيُّ في أحكام الجنائز (156).

“নিশ্চয় মুমিন বান্দা যখন দুনিয়া থেকে প্রস্থান করার ও আখেরাতের দিকে অগ্রসর হওয়ার মুহূর্তে উপনীত হয়, তার নিকট আসমান থেকে সাদা চেহারার ফেরেশতাগণ নাযিল হয়, যেন তাদের চেহারা সূর্যের অবিকল। তাদের সাথে থাকে জান্নাতের কাফন ও সুগন্ধি, তারা তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত বসে যায়...” এরপর কবরে মুমিনের অবস্থার বর্ণনা দেন:

“অতঃপর আসমান থেকে এক আহ্বানকারী আহ্বান করে: আমার বান্দা সত্য বলেছে অতএব তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দাও”। তিনি বলেন: “অতঃপর জান্নাতের স্নিগ্ধ বাতাস ও সুঘ্রাণ তার নিকট আসতে থাকে এবং তার দৃষ্টির সীমানা পর্যন্ত তার কবর প্রশস্ত করা হয়”।

তিনি বলেন: “তার নিকট এক ব্যক্তি আগমন করে সুন্দর চেহারা ও সুন্দর ঘ্রাণসহ, এবং বলে: তুমি খুশির সংবাদ গ্রহণ কর, এ হচ্ছে তোমার প্রতিশ্রুত দিন। সে বলবে: তুমি কে? তোমার চেহারা শুধু কল্যাণ নিয়ে আসছে। সে বলবে: আমি তোমার নেক আমল। সে বলবে: হে আমার রব, কিয়ামত কায়েম করুন, যেন আমি আমার পরিবার ও সম্পদের নিকট ফিরে যেতে পারি”। [আহমদ, শায়খ আলবানি “আহকামুল জানায়েয”: (পৃ.১৫৬) গ্রন্থে হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]

এ হচ্ছে কিয়ামুল লাইলের কতক উপকারিতা, বান্দা যদি ঘুমের পূর্বে এসব স্মরণ করে নিশ্চয় রাতে উঠার দৃঢ় ইচ্ছা হবে, আর যদি ঘুম ভাঙার সময় স্মরণ করে অবশ্যই উঠে দাঁড়াবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন