HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফজরের সালাত ও কিয়ামুল লাইলের জন্য সহায়ক উপকরণ

লেখকঃ ড. রুকাইয়্যাহ বিনতে মুহাম্মদ আল-মাহারিব

ফজর সালাতে শিথিলতা প্রদর্শন:
আমার বিশ্বাস এ বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই যে, ফজর সালাতের জমাতে উপস্থিতি অথবা ঠিক সময়ে ফজর আদায়কারীর সংখ্যা অন্য ফরজের তুলনায় খুব কম। যারা মাগরিব অথবা এশার সালাতে মুসল্লিদের পর্যবেক্ষণ করেন, তারা যদি ফজর সালাতের মুসল্লিদের দেখেন, তাহলে খুব সহজে এ পার্থক্য বুঝবেন ও উপস্থিতির ব্যবধান নিরূপণে সক্ষম হবেন।

সন্দেহ নেই যারা ফজর সালাত আদায় করেন, তাদের সংখ্যা মাগরিব সালাত আদায়কারীদের এক চতুর্থাংশের কম হবে, [“মাজাল্লালুত দাওয়াহ” পত্রিকায় (২০/১০/১৪১১হি.) তারিখে “ফজর সালাতের মুসল্লিদের সংখ্যা এক চতুর্থাংশ” শিরোনামে একটি কলাম ছাপা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকজন ইমামের সাক্ষাতকারও রয়েছে, যারা স্বয়ং মুসল্লিদের ব্যবধান প্রত্যক্ষ করেছেন। দেখুন: (১২৯০) সংখ্যা।] এরূপ কেন?!

সকল ফরয কি ফজরের সমান নয়? সকল সালাতের সাওয়াব কি সমান নয়? তবে কেন এ বিভক্তি? বরং ফজর সালাতের কিছু ফযিলত রয়েছে যা অন্য সালাতের নেই, যেমন আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করেন, তাই ফজর সালাতকে সালাতে মাশহুদাহ বলা হয়, কারণ এ সালাতে ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন। যে ফজর সালাত জামাতের সাথে আদায় করল, সে পূর্ণ রাত সালাত আদায় করল, যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। আর আল্লাহ স্বয়ং বলেছেন ফজর সালাত উপস্থিতির সালাত, ইরশাদ হচ্ছে:

﴿ وَقُرۡءَانَ ٱلۡفَجۡرِۖ إِنَّ قُرۡءَانَ ٱلۡفَجۡرِ كَانَ مَشۡهُودٗا ٧٨ ﴾ [ الاسراء : ٧٨ ]

“সূর্য হেলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকারপর্যন্ত সালাত কায়েম কর এবং ফজরেরকুরআন। নিশ্চয় ফজরের কুরআন ‎‎ (ফেরেশতাদের) উপস্থিতির সময়”। [সূরা ইসরা: (৭৮)]

মুফাসসিরগণ বলেছেন: এখানে “কুরআনুল ফাজর” দ্বারা উদ্দেশ্য ফজর সালাত। “কুরআনাল ফাজর” বলার কারণ এ সালাতে অধিক কুরআন তিলাওয়াত করা হয়। আর এ সালাতে দিন-রাতের ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন, তাই এ সালাতকে মাশহুদাহ বলা হয়, অর্থাৎ ফেরেশতাদের উপস্থিতির সালাত। [তাফসীরে শাওকানী।]

নিশ্চয় এ অলসতা আল্লাহর ক্রোধের কারণ। কেন ক্রোধের কারণ হবে না, অথচ তিনি রাতের এক তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন, আর তার বান্দারা তার সাক্ষাত, মোনাজাত ও তার নিকট প্রার্থনার উপর ঘুম ও আরামকে প্রাধান্য দেয়! অথচ তিনি বরকতময়, সম্মানিত ও মহা মহীয়ান।

আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ থেকে কোথায় অবস্থান করছি? অথচ তার পূর্বাপর সকল পাপ মোচন করে দেয়া হয়েছে, তবুও তিনি দীর্ঘ কিয়াম করতেন, তার দু’পা ফুলে যেত। মুগিরা ইব্‌ন শুবা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন:

«قام رسولُ الله صلى الله عليه وسلم حتى تفطَّرت قدماه فقيل له : أمَا قد غُفر لك ما تقدَّم من ذنبك وما تأخَّر؟ قال : «أفلا أكون عبدًا شكورًا» . متفق عليه .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ কিয়াম করলেন যে তার দু’পা ফুলে গেল, তাকে বলা হল: আপনার কি পূর্বাপর সকল পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়নি? তিনি বললেন: “আমি কি শোকর গোজার বান্দা হবো না”। [বুখারি ও মুসলিম।]

গাজালি –রাহিমাহুল্লাহ- বলেন: এ কথার অর্থ হল তার অধিক মর্যাদার প্রতি ইঙ্গিত প্রদান, কারণ শোকর দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ لَئِن شَكَرۡتُمۡ لَأَزِيدَنَّكُمۡۖ ٧ ﴾ [ ابراهيم : ٧ ]

“যদি তোমরা শোকর আদায় কর, আমি তোমাদের অবশ্যই বাড়িয়ে দিব” [সূরা ইবরাহীম: (৭)]। [ইহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন: (১/৩৫৩)]

এ থেকে বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রবের ইবাদতে কি পরিমাণ মগ্ন ছিলেন, অথচ তার উপর পাহাড়ের চেয়ে কঠিন বাণী নাযিল হত:

﴿ إِنَّا سَنُلۡقِي عَلَيۡكَ قَوۡلٗا ثَقِيلًا ٥ ﴾ [ المزمل : ٥ ]

“নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি এক অতিভারী বাণী নাযিল করছি”। [সূরা মুযযামমিল: (৫)]

আল্লাহু আকবার!! এরপরও তার উপর নাযিল হয়েছে:

﴿ وَإِن كَادُواْ لَيَفۡتِنُونَكَ عَنِ ٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ لِتَفۡتَرِيَ عَلَيۡنَا غَيۡرَهُۥۖ وَإِذٗا لَّٱتَّخَذُوكَ خَلِيلٗا ٧٣ وَلَوۡلَآ أَن ثَبَّتۡنَٰكَ لَقَدۡ كِدتَّ تَرۡكَنُ إِلَيۡهِمۡ شَيۡ‍ٔٗا قَلِيلًا ٧٤ إِذٗا لَّأَذَقۡنَٰكَ ضِعۡفَ ٱلۡحَيَوٰةِ وَضِعۡفَ ٱلۡمَمَاتِ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ عَلَيۡنَا نَصِيرٗا ٧٥ ﴾ [ الاسراء : ٧٣، ٧٥ ]

“আর তাদের অবস্থা এমন ছিল যে, আমি ‎‎ তোমাকে যে ওহী দিয়েছি, তা থেকে তারা ‎‎ তোমাকে প্রায় ফিতনায় ফেলে দিয়েছিল, যাতেতুমি আমার নামের বিপরীত মিথ্যা রটাতেপার এবং তখন তারা অবশ্যই তোমাকে বন্ধুরূপেগ্রহণ করত। আর আমি যদি তোমাকে অবিচল না রাখতাম,তবে অবশ্যই তুমি তাদের দিকে কিছুটা ঝুঁকেপড়তে। তখন আমি অবশ্যই তোমাকে আস্বাদন করাতামজীবনের দ্বিগুণ ও মরণের দ্বিগুণ আযাব। ‎ ‎ তারপর তুমি তোমার জন্য আমার বিরুদ্ধে কোনসাহায্যকারী পাবে না”। [সূরা ইসরা: (৭৩-৭৫)‎]

আরও নাযিল হয়েছে:

﴿ وَلَقَدۡ أُوحِيَ إِلَيۡكَ وَإِلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكَ لَئِنۡ أَشۡرَكۡتَ لَيَحۡبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٦٥ ﴾ [ الزمر : ٦٤ ]

“আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমারপূর্ববর্তীদের কাছে ওহী পাঠানো হয়েছে যে,তুমি র্শিক করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবেই।আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। সূরা যুমার: (৬৪)‎

এখানেই শেষ নয়, আরও নাযিল হয়েছে:

﴿ ۞يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُۥۚ ٦٧ ﴾ [ المائ‍دة : ٦٧ ]

“হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমারনিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও আরযদি তুমি না কর তবে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছালেনা। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষাকরবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কেহিদায়েত করেন না”। [সূরা মায়েদা: (৬৭)‎] এখানেই শেষ নয়, আরও নাযিল হয়েছে:

﴿ مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَن يَكُونَ لَهُۥٓ أَسۡرَىٰ حَتَّىٰ يُثۡخِنَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ تُرِيدُونَ عَرَضَ ٱلدُّنۡيَا وَٱللَّهُ يُرِيدُ ٱلۡأٓخِرَةَۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٦٧ لَّوۡلَا كِتَٰبٞ مِّنَ ٱللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمۡ فِيمَآ أَخَذۡتُمۡ عَذَابٌ عَظِيمٞ ٦٨ ﴾ [ الانفال : ٦٧، ٦٨ ]

“কোন নবীর জন্য সঙ্গত নয় যে, তার নিকটযুদ্ধবন্দি থাকবে (এবং পণের বিনিময়ে তিনিতাদেরকে মুক্ত করবেন) যতক্ষণ না তিনি যমিনে ‎‎ (তাদের) রক্ত প্রবাহিত করেন। তোমরা দুনিয়ারসম্পদ কামনা করছ, অথচ আল্লাহ চাচ্ছেনআখিরাত। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান। (৬৭) আল্লাহর লিখন অতিবাহিত না হয়ে থাকলে,অবশ্যই তোমরা যা গ্রহণ করেছ, সে বিষয়ে ‎‎ তোমাদেরকে মহাআযাব স্পর্শ করত”। [সূরা আনফাল: (৬৭-৬৮)]

আল্লাহু আকবার! কিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতগুলো ধারণ করলেন?! নিশ্চয় ইহা ধৈর্য ও অন্তরে গভীর ইমানের প্রমাণ। ইহা আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করার মোজাহাদা, তার শরীয়তকে জমিনে প্রতিষ্ঠিত করার সাধনা, যা তার প্রতি পরিপূর্ণ মহব্বতের প্রমাণ।

এ জন্যই তিনি রাতের দুই তৃতীয়াংশ, অর্ধেক ও এক তৃতীয়াংশ কিয়াম করতেন। বিনয়াবনত ও ক্রন্দন করে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। নিশ্চয় চোখের নীরবতা, রাতের অন্ধকার ও স্তব্ধতা ভেঙ্গে আল্লাহর সমীপে দণ্ডায়মান হওয়া তার প্রতি গভীর মহব্বতের প্রমাণ। অথচ আল্লাহ তার পূর্বাপর সকল পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন। এ হচ্ছে প্রিয়জনের সাথে মোনাজাতের স্বাদ, যা আস্বাদনকারী ব্যতীত কেউ বুঝতে সক্ষম নয়।

সন্দেহ নেই, আল্লাহর সমীপে দণ্ডায়মানের ফলে অন্তরে তৃপ্তি মিলে, চেহারায় নূর ভাসে, আল্লাহর তার ওপর সন্তুষ্ট হন, তাকে দেখে তিনি হাসেন, কারণ সে আরামের বিছানা ও সুন্দর স্ত্রীদের ত্যাগ করে তার সমীপে দাঁড়িয়েছে।

কেন সন্তুষ্ট হবেন না, তিনিই তো বলেছেন:

﴿ مَّا يَفۡعَلُ ٱللَّهُ بِعَذَابِكُمۡ إِن شَكَرۡتُمۡ وَءَامَنتُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ شَاكِرًا عَلِيمٗا ١٤٧ ۞لَّا يُحِبُّ ٱللَّهُ ٱلۡجَهۡرَ بِٱلسُّوٓءِ مِنَ ٱلۡقَوۡلِ إِلَّا مَن ظُلِمَۚ وَكَانَ ٱللَّهُ سَمِيعًا عَلِيمًا ١٤٨ ﴾ [ النساء : ١٤٧، ١٤٨ ]

“যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবংঈমান আন তাহলে তোমাদেরকে আযাব দিয়েআল্লাহ কি করবেন? আল্লাহ পুরস্কার দানকারী,সর্বজ্ঞ। মন্দ কথার প্রচার আল্লাহ পছন্দ করেন না,তবে কারো উপর যুলম করা হলে ভিন্ন কথা। আরআল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী”। [সূরা নিসা: (১৪৭-১৪৮)‎]

প্রিয় ভাই ও বোনেরা চিন্তা করুন, আল্লাহর বাণী: “যদি তোমরা শোকর আদায় কর”, আরো চিন্তা করুন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:

«أفلا أكون عبدًا شكورًا» .

“আমি কি শোকর গুজার বান্দা হবো না”।

শোকর গুজার বান্দা হতে চাই, শুধু মুখের কথা ও অন্তরের ইচ্ছা যথেষ্ট নয়, ইবাদাত ও আমল দ্বারা তার প্রমাণ দিতে হবে। আমরা রাতের এক বা এক-চতুর্থাংশ ঘণ্টা ব্যাপী আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামতের কি শোকর আদায় করি?!

আমরা অনেকে মুখে-অন্তরে আল্লাহর শোকর আদায় করি, কিন্তু যখন আমলের কথা বলা হয়, তখন বলি: আল্লাহ আমাদের হিদায়াত করুন ও আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।

হিদায়াত ও মাগফেরাতের দোয়া জরুরী সন্দেহ নেই, কিন্তু হিদায়াত ও মাগফেরাতের জন্য আমরা কি ত্যাগ করি বা তার জন্য প্রস্তুত আছি?!

আমরা যদি তার জন্য প্রস্তুত থাকি, তাহলে তার উপায় ও উপকরণ নিয়ে আলোচনা করা যাক। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি, তিনি আমাদেরকে উপকারী বস্তু শিক্ষা দিন, এবং যা শিক্ষা দিয়েছেন তার দ্বারা উপকৃত হওয়ার তাওফিক দিন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন