মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মুসলিম ভাই, ফজর সালাত আদায়ে সহায়ক উপকরণ হচ্ছে তার ফযিলত জানা। বিভিন্ন হাদিসে এসেছে মসজিদে জামাতের সাথে সালাত আদায় করা একাকী সালাতের চেয়ে উত্তম।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«صلاةُ الرجل في جماعة تضعف على صلاته في بيته وفي سوقه خمسًا وعشرين ضعفًا؛ ذلك إذا توضأ فأحسن الوضوء ثم خرجَ إلى المسجد لا يخرجه إلا الصلاة؛ لم يَخْطُ خُطْوَةً إلا رُفعت له بها درجةٌ وحُطَّ عنه بها خطيئةٌ، فإذا صَلَّى لم تزل الملائكةُ تصلي عليه ما دام في مصلَّاه ما لم يحدث : اللهمَّ ارحمه . ولا يزال في صلاة ما انتظر الصلاة» . متَّفَقٌ عليه .
“জামাতের সাথে ব্যক্তির সালাত তার ঘরের সালাত ও বাজারের সালাতের তুলনায় পঁচিশগুণ ফজিলত রাখে। তার কারণ যখন সে অযু করে, খুব সুন্দরভাবে অযু করে, অতঃপর মসজিদের জন্য বের হয়, সালাত ব্যতীত অন্য কারণে নয়, তার প্রতি কদমে মর্তবা বৃদ্ধি পায় ও পাপ মোচন করা হয়। সালাত শেষ হলে ফেরেশতাগণ তার জন্য ইস্তেগফার করে, যতক্ষণ সে সালাতের জায়গায় বসে থাকে ও তার অযু ভঙ্গ না হয়। তারা বলে: “হে আল্লাহ তাকে রহম কর”। আর যতক্ষণ সে সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ সালাতেই থাকে”। [বুখারি ও মুসলিম।]
ইব্ন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি মারফু সনদে বর্ণনা করেন:
«مَنْ سَرَّه أن يَلْقَى اللهَ غدًا مسلمًا فليحافظ على هؤلاء الصلوات حيث يُنادى بهنَّ؛ فإنَّ الله – تعالى - شرع لنبيِّكم - صلى الله عليه وسلم - سننَ الهدى وإنهنَّ من سنن الهدى» . رواه مسلم .
“যে ব্যক্তি চায় যে, আগামীকাল সে আল্লাহর সাথে মুসলিম অবস্থায় সাক্ষাত করবে, সে যেন ফরয সালাত ঠিকমত আদায় করে যেখানে আযান দেয়া হয়। কারণ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হিদায়াতের পথ বাতলে দিয়েছেন, নিশ্চয় তা হিদায়াতের পথ”। [মুসলিম]
জামাতের সাথে সালাত আদায়ের জন্য মসজিদের সাথে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখবে, আল্লাহ অতিশীঘ্র তাকে নিজ ছায়ায় ছায়া দান করবেন, যে দিন তার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«سبعةٌ يُظلُّهم اللهُ بظلِّه يومَ لا ظلَّ إلا ظلّه ...». وذكر منهم : «ورجلٌ قلبُه معلَّقٌ بالمساجد» . متَّفق عليه .
“সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ নিজের ছায়ায় ছায়া দান করবেন, যে দিন তার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না ...,” তাদের মধ্যে উল্লেখ করেন: “ঐ ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পর্কিত”। [বুখারি ও মুসলিম।]
মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধি হলে জামাতের ফযিলত বৃদ্ধি হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«وإن صلاةَ الرجل مع الرَّجل أزكى من صلاته وحدَه، وصلاته مع الرَّجلين أزكى من صلاته مع الرجل، وما هو أكثرُ فهو أحبُّ إلى الله تعالى» . أخرجه أبو داود وحسَّنه الألبانيُّ .
“ব্যক্তির সালাত অপর ব্যক্তির সাথে তার একাকী সালাতের তুলনায় উত্তম। দু’জন ব্যক্তির সাথে তার সালাত একজন ব্যক্তির সাথে তার সালাতের তুলনায় উত্তম। সংখ্যা যত বেশী হবে, আল্লাহর নিকট তত প্রিয়”। [আবু দাউদ, শায়খ আলবানি হাদিসটি হাসান বলেছেন।]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমাতের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন, যুদ্ধের কঠিন, ভয়ানক ও বিপদসংকুল মুহূর্তেও তিনি জামাত ত্যাগ করননি, তবে পরিস্থিতির কারণে জামাতের আকৃতি পরিবর্তন হত। অসুস্থ অবস্থায়ও তিনি জামাতের প্রতি আগ্রহী ছিলেন, জামাতের নির্দেশ দিতেন ও তার খোঁজ-খবর নিতেন। তিনি বলেন:
«مَنْ صَلَّى أربعين يومًا في جماعة يدركُ التكبيرةَ الأولى كَتَبَ اللهُ له براءتان؛ براءةً من النَّار وبراءةً من النِّفاق» . أخرجه التِّرمذيُّ وصحَّحه الألبانيُّ .
“যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন জামাতের সাথে তাকবীরে উলাসহ সালাত আদায় করে, আল্লাহ তাকে দু’টি মুক্তির সনদ দেন: জাহান্নাম ও নিফাক থেকে মুক্তির সনদ”। [তিরমিযি, শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]
ফজর সালাত অন্যান্য সালাতের চেয়ে অধিক ফযিলতপূর্ণ। এ জন্য তাতে হাজির হতে অধিক উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে, যে ব্যক্তি ফজর সালাত যত্নসহ আদায় করে, অন্যান্য সালাতে অধিক গুরুত্ব দেয় সন্দেহ নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“সূর্য হেলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম কর এবং ফজরের কুরআন । নিশ্চয় ফজরের কুরআন (ফেরেশতাদের) উপস্থিতির সময়”। [সূরা ইসরা: (৭৮)]
এখানে প্রথমে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, অতঃপর বিশেষভাবে ফজর সালাত উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ তা ‘সালাতে মাশহুদা’ তথা ফেরেশতাদের উপস্থিতির সালাত। ফজর সালাতে সময় দিন-রাতের ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন, তাই এ সালাতের ফযিলত ও বরকত অধিক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“তোমরা সালাতসমূহ ও মধ্যবর্তী সালাতের হিফাযত কর এবং আল্লাহর জন্য দাঁড়াও বিনীত হয়ে”। [সূরা বাকারা: (২৩৮)]
“সালাতে উস্তা” সম্পর্কে বিভিন্ন অভিমত রয়েছে। কেউ বলেছেন ফজর সালাত, কেউ বলেছেন আসর সালাত। অনেকে আসর সালাতকে প্রধান্য দিয়েছেন। কারণ বুখারি, মুসলিম ও অন্যান্য সুনান গ্রন্থে আলি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
( كُنَّا نراها الفجر حتى سمعتُ رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول يومَ الأحزاب : «شَغَلُونا عن الصَّلاة الوُسْطَى صلاة العصر ملأ اللهُ أجوافهم وقبورَهم نارًا» .
[আমরা ফজর সালাতকে ‘উস্তা’ তথা মধ্যম সালাত মনে করতাম, অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাবের দিন বলেন: “তারা আমাদেরকে সালাতে উস্তা তথা আসর সালাত থেকে বিরত রেখেছে, আল্লাহ তাদের পেট ও কবরকে জাহান্নামের আগুনে ভরে দিন”।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:
«مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فهو في ذمَّة الله، فلا يطلبنَّكم اللهُ من ذمَّته بشيء؛ فإنَّ مَنْ يَطْلُبُه من ذمَّته بشيء يدركه، ثم يكبُّه على وجهه في نار جهنمَ» . رواه مسلم؛
“ফজরের সালাত যে আদায় করল সে আল্লাহর জিম্মায়, অতএব আল্লাহ যেন তার জিম্মাদারিতে হস্তক্ষেপের ধরুন তোমাদেরকে জবাবদিহি না করে, কারণ যে তার জিম্মাদারিতে হস্তক্ষেপ করবে, আল্লাহ তাকে পাকড়াও করবেন, অতঃপর চেহারায় ভর করে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন”। [মুসলিম।] অর্থাৎ ফজর সালাত আদায়কারী আল্লাহর নিরাপত্তা ও আশ্রয়ে, তার পিছু নেয়া বা তাকে কষ্ট দেয়া কারো পক্ষে সম্ভব নয়। যে তা করবে, আল্লাহ তাকে কঠোরভাবে জবাবদিহি করবেন, আল্লাহ যাকে জবাবদিহি করবেন সে পলায়নের জায়গা পাবে না। [আল-মুফহিম লিমা আশকালা মিন সাহিহে মুসলিম।]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ صَلَّى العشاءَ في جماعة فكأنَّما قام نصفَ اللَّيْل، ومَنْ صَلَّى الصُّبْحَ في جماعة فَكَأنَّما قامَ الليلَ كلَّه» رواه مسلم .
“যে এশার সালাত জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন অর্ধ রাত কিয়াম করল, আর যে ফজরের সালাত জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন পূর্ণ রাত কিয়াম করল”। [মুসলিম।] তিনি আরও বলেন:
«مَنْ صَلَّى البَردين دخل الجنةَ» . متفق عليه .
“যে ফজর ও আসর সালাত আদায় করল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে”। [বুখারি ও মুসলিম।] তিনি আরও বলেন:
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لو يَعْلم الناسُ ما في النِّداء والصَّفِّ الأَوَّل ثمَّ لم يَجدوا إلا أن يَسْتَهموا لاستهموا، ولو يَعْلمون ما في التَّهْجير لاستبقوا إليه، ولو يعلمون ما في العَتْمَة – صلاة العشاء – والصُّبْح – صلاة الفجر - لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا» . متَّفقٌ عليه .
“মানুষ যদি আযান ও প্রথম কাতারের ফযিলত জানত, অতঃপর লটারি ব্যতীত অংশ গ্রহণের সুযোগ না পেত, তাহলে অবশ্যই তারা লটারিতে অংশ গ্রহণ করত। তারা যদি দ্রুত মসজিদে যাওয়ার ফযিলত জানত, তাহলে দ্রুত যাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করত। তারা যদি এশা ও ফজর সালাতের ফযিলত জানত, তাহলে অবশ্যই তাতে অংশ গ্রহণ করত, যদিও উপুড় হয়ে হয়”। [বুখারি ও মুসলিম।]
অনুরূপ ফজর সালাত নিয়মিত আদায়কারী কিয়ামতের দিন আল্লাহর দর্শন লাভ করে ধন্য হবে। জারির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসে ছিলাম, হঠাৎ তিনি চাঁদের দিকে তাকালেন, অতঃপর বললেন:
«أَمَا إنَّكم سَتَرَوْنَ ربكم كما ترون هذا لا تُضامون ولا تضاهون في رؤيته، فإن استطعتم أن لا تُغلَبوا على صلاة قبلَ طلوع الشمس وقبلَ غروبها فافعلوا» . ثم قال : ﴿ وَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّكَ قَبۡلَ طُلُوعِ ٱلشَّمۡسِ وَقَبۡلَ غُرُوبِهَاۖ ١٣٠ ﴾ [ طه : ١٣٠ ] . رواه البخاريُّ .
“জেনে রেখ, তোমরা অতিসত্বর তোমাদের রবকে দেখবে যেমন এ চাঁদ দেখছ, তাকে দেখতে ভীর ও ঠাসাঠাসি হবে না। যদি তোমরা সূর্য উদিত ও সূর্যাস্তের পূর্বের সালাত ঠিক সময়ে আদায়ে সক্ষম হও, তাহলে তাই কর। অতঃপর বলেন: “এবং তাসবীহ পাঠ কর তোমার রবের প্রশংসা বর্ণনার মাধ্যমে, সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে” [সূরা ত্বহা: (১৩০)]। [বুখারি।]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ফজরের দু’রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও তাতে বিদ্যমান সবকিছু থেকে উত্তম, এবার ধারণা করুন ফজরের ফরযের ফযিলত কিরূপ?! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«رَكْعَتا الفجر خيرٌ من الدُّنْيا وما فيها» . رواه مسلم .
“ফজরের দু’রাকাত দুনিয়া ও তাতে বিদ্যমান সবকিছু থেকে উত্তম”। [মুসলিম।] যে আরও অধিক নেকি অর্জন করতে চায়, সে যেন ফজর সালাত শেষে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বসে থাকে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ صَلَّى الفجرَ في جماعة ثم قعد يذكر الله حتى تطلع الشمسُ ثم صلَّى ركعتين كانت له كأجر حجَّة وعمرة تامَّة تامَّة تامَّة» . رواه التِّرْمذيُّ وحسَّنَه الألبانيُّ .
“যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজর সালাত আদায় করল, অতঃপর সূর্য উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকল, অতঃপর দু’রাকাত সালাত আদায় করল, তার পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সাওয়াব হবে”। [তিরমিযি, শায়খ আলবানি হাদিসটি হাসান বলেছেন।]
এসব সাওয়াব তার জন্য যে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক সালাত আদায় করে, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা আরো অধিক দিবেন। পক্ষান্তরে যারা ঘুমের ঘোরে রাত কাটায় ও ফজরের সালাতে অলসতা করে তাদেরকে আল্লাহ মুনাফিক বলেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:
“তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং শীঘ্রই তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে”। [সূরা মারইয়াম: (৫৯)]
এখানে সালাত বিনষ্ট করা অর্থ কি বুঝানো হয়েছে সে বিষয়ে আলেমগণ বিভিন্ন অভিমত পেশ করেছেন। কেউ বলেছেন নির্দিষ্ট সময়ে আদায় না করা, কেউ বলেছেন সালাতের শর্ত পুরণ না করা, কেউ বলেছেন জামাত ত্যাগ করা, তবে প্রত্যেক অভিমত এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত হয়। [আদওয়াউল বায়ান, লি শানকিতি, দেখুন সূরা মারইয়ামের তাফসীর।] তিনি আরও ইরশাদ করেন:
“অতএব সেই সালাত আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, (৪) যারা নিজদের সালাতে অমনোযোগী”। [সূরা মাউন: (৪-৫)]
এখানে ‘সাহুন’ অর্থ সব সময় কিংবা অধিকাংশ সময় সালাতে দেরি করা, অথবা সালাতের রুকনে ত্রুটি করা, অথবা তাতে বিনয়ীভাব না থাকা, তবে সকল অর্থই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। [ইব্নে কারিস, তাফসীর সূরা মাউন: (৪/৬৮১)]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لقد هَمَمْتُ أن آمرَ فتيتي فيجمعوا لي حزمًا من حطب، ثم آتي قَوْمًا يُصَلُّون في بيوتهم ليست بهم علَّةٌ فَأَحْرقها عليهم» . رواه مسلم .
“আমি ইচ্ছা করেছি আমার যুবকদের নির্দেশ দিব, তারা আমার জন্য লাকড়ি জমা করবে, অতঃপর আমি তাদের নিকট যাব যারা বিনা কারণে ঘরে সালাত আদায় করে এবং তাদেরকে ঘরসহ জ্বালিয়ে দিব”। [মুসলিম।]
«مَنْ سمع النداءَ فلم يَمْنَعْه من اتِّباعه عذرٌ - قالوا : وما العذرُ؟ قال : خوفٌ أو مرضٌ - لم تُقْبَلْ منه صلاتُه التي صَلَّى» . رواه ابنُ داود وابنُ حبَّان في صحيحه وصحَّحَه الألبانيُّ .
“যে ব্যক্তি আযান শ্রবণ করল, অতঃপর কোন ওজর তাকে আযানের অনুসরণ থেকে বিরত রাখল না”, তারা বলল: ওজর কি? তিনি বললেন: “ভয় অথবা অসুস্থতা”। তার সালাত কুবল হবে না, যা সে আদায় করেছে”। [ইব্ন আবু দাউদ, ইব্ন হিব্বান, শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]
ইব্ন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু সনদে বর্ণিত:
«ولو أَنَّكم صَلَّيتم في بيوتكم كما يصلي هذا المتخلف في بيته لتركتم سنةَ نبيِّكم، ولو تركتم سنةَ نبيِّكم لَضَلَلْتُم» رواه مسلم .
“যদি তোমরা তোমাদের ঘরে সালাত আদায় কর, যেমন জামাত ত্যাগ করে এ ব্যক্তি ঘরে সালাত আদায় করে, তাহলে তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নত ত্যাগ করবে। যদি তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নত ত্যাগ কর তাহলে গোমরাহ হবে”। [মুসলিম।]
«... إنَّا أَتَيْنا على رجل مضطجع وإذا آخرُ قائمٌ عليه بصخرة، وإذا هو يهوي بالصَّخْرَة لرأسه فيثلغ رأسه فيتدهد الحجرُ ... أما الرجلُ الأولُ الذي أتيت يُثْلَغُ رَأْسُه بالحجر فإنَّه الرَّجلُ يأخذُ القرآنَ فيرفضه وينامُ عن الصَّلاة المكتوبة» . رواه البخاريُّ .
“... আমরা এক শায়িত ব্যক্তির নিকট আসলাম, যার নিকট অপর ব্যক্তি পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে। যখন সে তার মাথায় পাথর দ্বারা আঘাত করে, তার মাথা থেঁতলে যায় অতঃপর নিক্ষেপকারীর নিকট পাথর ফিরে আসে... প্রথম ব্যক্তি যার মাথা পাথর দ্বারা থেঁতলে দেয়া হত, সে ঐ ব্যক্তি যে কুরআন হাতে নিয়ে দূরে নিক্ষেপ করত ও ফরয না পড়ে ঘুমিয়ে যেত”। [বুখারি।]
আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:
«ما من ثلاثة في قرية ولا بدو لا تقام فيهم الصَّلاةُ إلا قد اسْتَحْوَذَ عليهم الشَّيطانُ، فعليك بالجماعة؛ فإنَّما يأكل الذِّئبُ القاصيةَ» . رواه أبو داود والنَّسائيُّ وحسَّنَه الألبانيُّ .
“যে গ্রাম কিংবা জনপদে তিন জন্য ব্যক্তি রয়েছে, যাদের মধ্যে সালাতের জামাত হয় না, তাদের উপর অবশ্যই শয়তান প্রভাব বিস্তার করবে। অতএব তুমি জামাত আঁকড়ে ধর, কারণ বাঘ দলছুট বকরিকেই খায়”। [আবু দাউদ, নাসায়ি, শায়খ আলবানি হাদিসটি হাসান বলেছেন।]
হে আল্লাহর বান্দা সতর্ক হন, আপনি দলছুট বকরির ন্যায় শয়তানের আক্রমণের শিকার হবেন না। জামাতের সাথে সালাত আদায় করুন ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতকে আঁকড়ে ধরুন। ইরশাদ হচ্ছে:
“তোমরা পরস্পরকে যেভাবে ডাকো রাসূলকে সেভাবে ডেকো না; তোমাদের মধ্যে যারা চুপিসারে সরে পড়ে আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে জানেন। অতএব যারা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌঁছার ভয় করে”। [সূরা নূর: (৬৩)]
প্রিয় পাঠক, কিয়ামতের দিন দু’দল ব্যতীত তৃতীয় কোন দল হবে না। এক দল মুমিন অপর দল কাফির। তাদের উভয়ের আমল যেমন সমান নয়, প্রতিদানও সমান হবে না। আপনি কোন দলের অন্তর্ভুক্ত হতে চান? আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“যে ব্যক্তি মুমিন সে কি ফাসিক ব্যক্তির মত? তারা সমান নয়। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের বাসস্থান হবে জান্নাত, তারা যা করত তার আপ্যায়ন হিসেবে। আর যারা পাপকাজ করে, তাদের বাসস্থান হবে আগুন; যখনই তারা তা থেকে বের হতে চাইবে, তাদেরকে তাতেই ফিরিয়ে দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমরা আগুনের আযাব আস্বাদন কর, যাকে তোমরা অস্বীকার করতে। আর অবশ্যই আমি তাদেরকে গুরুতর আযাবের পূর্বে লঘু আযাব আস্বাদন করাব, যাতে তারা ফিরে আসে”। [সূরা সেজদা: (১৮-২১)]
প্রিয় পাঠক, সতর্ক হন, আপনার জন্য বলছি, আপনি রবের দিকে ফিরে যান, ঠিক সময়ে সালাত আদায় করুন ও ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে ব্রতী হন। তাদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন:
“আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে, যাকে স্বীয় রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দেয়ার পর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। নিশ্চয় আমি অপরাধীদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী”। [সূরা সেজদা: (২২)]
আমরা যদি আমাদের পূর্ব পুরুষদের অবস্থা পর্যালোচনা করি, দেখব তারা জামাতের প্রতি খুব যত্নশীল ছিলেন। সহসা তাদের থেকে তাকবীরে তাহরীমা ছুটত না। তারা কিয়ামুল লাইলের প্রতি যত্নশীল ছিলেন। তারা ফরয আদায় করে নফলের প্রতি মনোযোগী ছিলেন, বরং তারা একে অপরকে কিয়ামুল লাইলের কারণে ভৎর্সনা করতেন, ফজরের সালাত তো বটেই। এভাবে তারা দুনিয়ার নেতৃত্ব, সম্মান ও কর্তৃত্বের মালিক হয়েছেন। যদি বর্তমান যুগের মুসলিম তাদের পূর্বাস্থায় ফিরে যায়, তারা তাদের ন্যায় নেতৃত্বের মালিক হবে, যা ফজরের জামাতে উপস্থিত হওয়া ব্যতীত সম্ভব নয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/82/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।