মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবদান
লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের
১৫
নারী অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায়
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/421/15
নারীর অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার বিষয়টি বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি। নারী মুক্তির প্রবক্তা হিসাবে আমরা হয়ত কেট মিলে (Kate Millet), জার্মেন গ্রীয়ার (Germaine Greer) বা অ্যানী নূরাকীন (Anne Nurakin) প্রমুখের নাম জানি; শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি মেরী উলস্টন, অ্যানী বেসান্ত, মার্গারেট সাঙ্গাঁর, সুলতানা রাজিয়া, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ মহীয়সী মহিলাদের সংগ্রামের ইতিহাস। কিন্তু মানব সভ্যতার ইতিহাসে নারীর অধিকার ও মর্যাদার জন্য যে ব্যক্তি প্রথম সোচ্চার হয়ে ওঠেন, নারীকে সংসার ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য ও অপরিহার্য অংশ হিসাবে যে ব্যক্তি প্রথম স্বীকৃতি দেন, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নারীর অধিকার পরিপূর্ণ আকারে যে ব্যক্তি প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন, সত্যিকার অর্থে নারী জাগরণ ও নারী মুক্তির ইযিন প্রবক্তা তিনি হচ্ছেন 'একজন পুরুষ' এবং তিনি আর কেউ নন- মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। একথা আদৌ অত্যুক্তি হবে না যে, জীবনে অন্য কিছু না করলেও শুধুমাত্র নারী জাগরণের ক্ষেত্রে তাঁর অবদানই বিশ্ব মনীষায় মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সুউচ্চ আসনে সুদৃঢ়ভাবে অধিষ্ঠিত করবে।" [.সৈয়দ আশরাফ আলী, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৩।]
নারীর প্রতি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দর্শন এসেছে মূলতঃ কুরআনের নীতি-দর্শন থেকে। প্রকৃতপক্ষে তাঁর জন্মকালে নারীকে বিশ্বের কোথাও এমনকি স্বাধীন মর্যাদাবান মানুষ হিসাবেও বিবেচনা করা হতো না। নারীকে 'ভোগের বস্তু', 'লাঞ্চনা' ও 'পাপের প্রতিমূর্তি' এবং কোথাও কোথাও অন্যান্য অস্থাবর সম্পত্তির মত 'সম্পত্তি' বলে মনে করা হতো। পবিত্র কুরআনে সূরা আন্-নাহল এ আল্লাহ পাক নিজেই তৎকালীন সমাজে নারী সম্পর্কে মানুষের মানসিকতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। "যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয় তার মুখমণ্ডল কালো হয়ে যায়, সে অসহনীয় মনসতাপে ক্লিষ্ট হয়। তাকে যে সংবাদ দেয়া হার গ্লানি হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হতে আত্মগোপন করে। সে চিন্তা করে হানীতা সত্ত্বেও সে তা রেখে দাবে না মাটিতে পুঁতে দেবে" (আয়াত ৫৮-৫৯)। এভাবে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, বড় বড় মনীষীরাও চিন্তা করতেন এবং বহুদিন এই দ্বন্দের সম্মুখীন ছিলেন যে, নারী প্রকৃতই মানুষ কিনা, খোদা তাদের মধ্যে আত্মা দিয়েছেন কিনা ইত্যাদি। এরূপ অবস্থায় শুধু আইনের দিক দিয়ে নয়, বরং মানবিক দিক দিয়েও ব্যতিক্রমী বিপ্লব আনয়ন করেছেন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ইসলাম। আজকাল নারী মুক্তি, নারী স্বাধীনতার যে স্লোগান শোনা যায়, তা ঐ বৈপ্লবিক বাণীরই প্রতিধ্বনি যা মুহাম্মাদ মুস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুখে চৌদ্দশ বছর পূর্বে উচ্চারিত হয়েছিল।" [.হাফেজা আসমা খাতুন, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.), সীরাত স্মরণিকা ১৪১৫ হিজরী, ইফাবা, ঢাকা, পৃ. ৫১।]
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রথম পদক্ষেপ ছিল কন্যা শিশু হত্যা বন্ধ করা। তিনি বরং কন্যা শিশুর লালন-পালনকে নানাভাবেব উৎসাহিত করেছেন এবং নিজেও তাঁর কন্যাদের লালন-পালন কালে সেটা করে দেখিয়েছেন। পিতাদের তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন: "কন্যা তার জন্য লজ্জাস্কর নয় বরং কন্যা সন্তান প্রতিপালন তার জন্য জাহান্নামের পথে বাধা এবং জান্নাত লাভের উসিলা হতে পারে।" তিনি আরো বলেন, "যদি কারো কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে এবং সে তাদেরকে সন্তুষ্ট চিত্তে লালন-পালন করে তাহলে তার জন্যে দোযখের প্রতিবন্ধক-ঢাল হবে।" [.নাসায়ী শরীফ, উদ্ধৃত, হাফেজা আসমা খাতুন, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫২।] আবু দাউদ শরীফের অন্য একটি হাদীস অনুযায়ী রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, "যার কন্যা সন্তান আছে সে যদি তাকে জীবন্ত কবর না দেয়, তাকে লাঞ্চিত না করে এবং তার তুলনায় পুত্র সন্তানদের অধিক গুরুত্ব না দেয়, তবে আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।" [.গাজী শাসুর রহমান, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬৫।] তাঁর এসব সুমহান বাণী সেকালে সন্তান সম্পর্কে মুসলিম অমুসলিম সকল মানুষের মনোভাবে আমুল পরিবর্তন আনে।
ঈমান, আমল বা ধর্মীয় সাধনায় উৎকর্ষতার ব্যাপারেও তিনি নারীকে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হওয়ার সমান সুযোগ দিয়েছেন। কারণ আল্লাহ পাক তার কুরআনে ঘোষণা করেছেন, "যে কেউ উৎকৃষ্ট আমল করবে, সে নারী হোক অথবা পুরুষ হোক, যদি সে ঈমানদার হয়, তাহলে এ ধরনের লোক বেহেশতে প্রবশ করবে এবং তাদের প্রতি তিল পরিমাণ অন্যায় করা হবে না।" [.আল্-কুরআন, সূরা নিসা : ১২৪।] রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোষণা করেন, "পুরুষদের জন্যে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে 'উত্তম স্ত্রী'।" অন্যদিকে নারীকে তিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পরে সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী করে বলেছেন, "আল্লাহ ও রাসূলের পরে সবচেয়ে বেশি সম্মান, মর্যাদা ও সদ্ব্যবহার পাবার যোগ্য 'মা'।" তিনি এও বলেছেন, "মা'র অবাধ্যতা এবং অধিকার হরণ আল্লাহ তা'আলা তোমার জন্য হারাম করে দিয়েছেন।" তিনি ঘোষণা করেন, "মায়ের পদতলেই সন্তানের বেহেশত।" [.বুখারী, মুসলিম ও নাসায়ী শরীফের হাদীস, উদ্ধৃত, হাফেজা আসমা খাতুন, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫২।] সন্তানের কাছে মায়ের এতবড় সম্মান, এত বড় মর্যাদা মানবোতাহাসে তাঁর মত করে আর কোন মহাপুরুষ বা রাষ্ট্রনায়ক প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন নি।
নারী মুক্তির দিশারী মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নারীকে শুধু বাঁচিয়ে রেখে সম্না ও মর্যাদা দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তিনি নারীকে যথাযথ অধিকার দিয়ে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। নারীকে তিনি অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাগত, আইনগত এবং ধর্মীয় সব দিক দিয়ে তার অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর বৈপ্লবিক সিদ্ধান্তসমূহকে সংক্ষেপে এভাবে উল্লেখ করা যায়:
ক. নারীকে পিতার সম্পত্তিতে, স্বামী, সন্তান ও মায়ের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী ধার্য করা হয়েছে
খ. বিয়ের সময় নারীকে মোহরানা বা দেনমোহর প্রাপ্তি আবশ্যিক করেছেন এবং তা আদায় না করার বা তা থেকে জোর করে ব্যয় করার অধিকার স্বামী, পিতা বা ভাই কাউকে দেয়া হয়নি;
গ. নারীকে স্বামী নির্বাচনের পূর্ণ অধিকার দেয়া হয়েছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে কোথাও বিয়ে দেয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে একজন অকর্মন্য, অত্যাচারী স্বামী থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের পূর্ণ অধিকার নারীকে দেয়া হয়েছে। একই সাথে বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীকে ২য় বিবাহের বা পুনঃর্বিবাহের পূর্ণ অধিকার দেয়া হয়েছে;
ঘ. দেওয়ানী ও ফৌজদারী আইনে নারী-পুরুষের মধ্যে কোন পার্থক্য করেননি তিনি;
ঙ. বিদ্যাশিক্ষা করা বা জ্ঞানার্জন করার ব্যাপারে নারীকে পুরুষের মতই সমান অধিকার দেয়া হয়েছে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, "জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর জন্য ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য";
চ. অত্যাচার, অপমান, অশালীনতা ও অবমাননা থেকে নারীকে রক্ষার জন্যে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মহিলাদের পোশাক পরিধানে ও জনসমক্ষে চলাফেরার সময় একটি অনুসরণীয় পোষাক-বিধি (Dress code) মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি যেসব বিধি বিধান দিয়েছেন আপাত দৃষ্টিতে তা কারো কারো কাছে নারীর অধঃস্তনতা মনে হলেও নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সেটা যে কতখানি সাফল্য আনতে পারে বিগত বহু শতাব্দী ধরে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে, আর তার ইপরীতে বর্তমানে ভোগবাদী বিশ্বের নারী-মুক্তির নামে যা কিছু চলছে তাতে প্রকৃত অর্থে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি না পেয়ে নারী বরং ভোগ্য পণ্য ও লালসার সামগ্রীতে পরিণত হচ্ছে ক্রমশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/421/15
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।